![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার দাদার বাড়িতে ঘর থেকে মাত্র ১০০ কদম দূরেই কবরস্থান।
নানার বাড়িতেও ঠিক তাই। বাড়িতে ঢুকার একটা মাত্র রাস্তা। বাড়িতে আসতে হলে কিংবা বাইরে যেতে হলে কবরের সামনে পড়তেই হয়। বিকল্প কোনো রাস্তা নাই।
.
আজকে কবর দুইটার কথা খুব মনে পড়ছে। আমি কবর এর ওই জায়গাটাকে মারাত্মক ভয় পাই। কবর ঘিরে অনেকগুলো মিথ প্রচলিত আছে আমাদের বাড়িতে। ওশব গল্প অন্য একদিন বলবো।
.
ছোটবেলার বেশ কয়েকটা ঈদের রুটিন ছিলো বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। আব্বা তখন চাকরি করতেন। উনার চাকরির ছুটিতে আমরা প্রতিবার গ্রামে গিয়ে ঈদ করতাম। পদ্মা বাসে করে যেতে যেতে এক হালি বার বমি করতাম। আম্মাও বাসে চড়তে পারেন না। খুব বমি করেন। আবার লঞ্চে চড়তেও ভয় পান। তখন খুব লঞ্চ ডুবতো। প্রতিবার বমি করতে করতে আধমরা হয়ে যখন গ্রাম যেতাম তখন আব্বা দাদা দাদীর সামনে গিয়ে বলতো, এই কান ধরলাম। এইগুলারে নিয়া আর গ্রামে আসা যাবে না। হাজীগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড এর ওইদিকে সৌদিয়া হোটেল আর গাউছিয়া হোটেল ছিলো। আমার খুব প্রিয়। বিশেষ করে চা। বাস থেকে নেমে আব্বা হোটেল এ নিয়ে পরটা , দই আর চা খাওয়াইতেন। বলতেন, আর কিছু খাইলে খা, সমস্যা নাই।
.
গ্রামে ঢুকার আগে আগে আব্বা আমাদের ভদ্রতা জ্ঞ্যান দিতেন। আব্বার একটা বদ অভ্যাস আছে। এক কথা বার বার বলেন।
.
-বাড়ি গিয়ে কিন্তু দাদা দাদীরে সালাম দিবি।
-আচ্ছা।
-মুরুব্বিদের সালাম দিবি।
আচ্ছা।
-কি বলছি মনে আছে?
-জ্বি।
-কি বলছি।
-সালাম দিবো।
.
গ্রামে গিয়ে সবাইকে সালাম দিতাম। সামহাউ এই অভ্যাসটা এখনো রয়ে গেছে। আমার পরিচিত বড় ভাই, টিচার সহ এমন অনেক মানুষকেই সালাম দেই যারা হয়ত সালাম আশাও করে না।
.
গ্রামে কিছু কিছু মানুষ বেশ আদর করতো। কেনো এত স্নেহ পেতাম জানি না। রাফেজ ভাই এর আম্মা দাদীর বয়সী ছিলেন। তার ঘরে গেলে জোর করে আচার, পিঠা, সেমাই, নুডুলস রান্না করে খাওয়াতেন। পাশের বাড়িতে খালেদা আপু, রোকসানা আপুরা, মুক্তা আপুরা কি যে খুশি হতো বাড়ি গেলে। এখন অবশ্য তাদের কেউ নাই বাড়িতে। বিয়ে টিয়ে করে কোথায় আছে কে জানে। নানুর বাড়িতে একজন ছিলেন গোলাপী নানী। উনার ছেলে মেয়ে কেউ নাই। হয়ত আছে। আমি দেখি নাই। আমার সাথে যা মজা করতেন। বিল্লালের মা নামে একজন ছিলেন। যাকে আব্বা খালা বলে ডাকেন। তিনিও খুব আদর করতেন। অনেকেই ছিলেন এমন। কিন্তু, আমার স্মৃতিশক্তি জনিত সমস্যায় অনেকের নামই এখন আর মনে পড়ে না। ভুলে গেছি। ব্রেইন ভর্তি হয়ে আছে অপ্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে।
.
তাদের কথা ভাবতে গিয়েই কবর দুইটার কথা মারাত্মক মনে পড়ছে। ছোট থাকতে কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে ভয়ে চোখ দুইটা বন্ধ করে রাখতাম। কি আশ্চর্য, ওই কবর দুইটাতেই এখন থাকে আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষগুলো। যারা কি আরামে চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে আছে। নিশ্চয়ই সেখান থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকবেন একদিন তারা। যে ডাক উপেক্ষা করা যাবে না। কেউ করতে পারে না...
২| ২৮ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:০০
ফারগুসন বলেছেন: তারা কবর থেকে ডাকুক আর নাডাকুক প্রভূ ঠিকই একদিন ডাকবেন।
৩| ২৮ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৫০
মক্ষীরাজা বলেছেন: ভাইয়ুমণিতা!!!!!!!!!
বাহ!!!!!!!!
মুগ্ধ মুগ্ধ মুগ্ধ!!!!!!!!
ঠিক পরীর দেশের রাজণ্যদের লেখা !!!!!!!!
উলে জাদুরে। উম্মা
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুন, ২০১৭ রাত ৩:৩৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
পুর্ব পুরুষেরা তাদের নতুন জেনারেশনের মৃত্যু চাহে না; সুতরাং কবর থেকে ডাকার ভাবনা ভুল।