নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের কথার প্রকাশ

দ্বিদল

আমি একজন সাধারন মানুষ। দু বেলা খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে চাই ।

দ্বিদল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজকের আন্দোলন ও কিছু কথা

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৮

আজ বেশ কিছু দিন পর আবার লিখছি। আশা করি সকলে বেশ কুশলেই আছেন। আমার আজকের বিষয় হল বর্তমান চলমান আন্দোলন ও বাংলাদেশের রাজনীতি ।

চলমান আন্দোলন মানে শাহবাগের আন্দোলন ও এর বিরোধী ইসলামী দল গুলোর আন্দোলন উভয় ই বুঝাচ্ছি কারণ দুটি আবার একই সূত্রে গাঁথা । আমি এই লেখাটা কে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে লিখছি।

প্রথমেই দেখা যাক শাহাবাগ আন্দোলনের পটভূমি কি ছিল? শাহাবাগ এর প্রজন্মের এই জাগরণ শুরু হয়েছে যদিও কাদের মোল্লাকে সর্বচ্চো শাস্তি না দেবার কারনে। কিন্তু এই বিস্ফোরন কি হটাত করেই হয়েছে মাত্র এক দিনেই? আমার কিন্তু তা মনে হয় না। ৪১ বছর ধরে মানুষের মনে জমে থাকা ক্ষোভ (ছাঁই চাপা আগুন) হটাত করে জ্বলে উঠেছে। আমাদের সাধারণ মানুষ অনেক দিন অপেক্ষা করে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দেখছে তখন স্বাভাবিক ভাবেই জনগণ চাওয়া আর পাওয়ার হিসাবের খাতাটা মিলিয়ে দেখার চেষ্ঠা করছে। আর সে হিসাবে মানুষ অনেক গড়মিল দেখতে পাচ্ছে। মানে যুদ্ধাপরাধীদের যে সাঁজা হবে বলে জনগণের প্রত্যাশা ছিল তা পূরণ হচ্ছে না বলেই আপাত ভাবে দেখে মনে হচ্ছে। তাই আজ জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাস্তায় নেমে এসেছে। অনেক অপেক্ষা করেছে এই মানুষগুলো আর তাদের সয্য ক্ষমতা নেই। অপেক্ষার বাঁধ ভেংগে গেছে। আমাদের বাংলাদেশীদের মধ্যে এত জাতীয়তা বোধ যে এখন বেঁচে আছে তা হয়ত অনেকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আমাদের মধ্যে এখনও দেশপ্রেম শেষ হয়ে যায়নি। এখনও দেশের জন্য বিলিয়ে দেবার মত মানব সম্পদ আমাদের আছে ভাবতেও ভাল লাগে। শাহাবাগ এর এই গণ জমায়েত যেন খুব বেশি প্রয়োজন ছিল এই জাতীয়তা বোধকে জাগিয়ে তোলার জন্য।

এবার দেখি কেন শাহাবাগ থেকে শুধু মাত্র রাজাকারদের ফাঁসি চাওয়া হয়েছে? আমার মনে হয়েছে যে গাছের গোঁড়া দূর্বল সে গাছের থেকে ভাল ফল পাবার আশা করাটা নির্বুদ্ধিতার পরিচয় তুলে ধরে। জাতিগত(বাংলাদেশী) ভাবে আমরা এখন নিজেদের গোঁড়াই যখন শক্ত করতে পারিনি তখন কিভাবে দূর্নীতি সহ দেশের অন্য ক্ষেত্র গুলো ঠিক করবো আগে তো নিজের পরিচয় তারপর না কর্ম।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল (বিএনপি) কি সত্যিকার অর্থে জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। নামটা যদিও জাতীয়তাবাদি কিন্তু এখনো কি তারা বাংলাদেশ এর জাতীয়তা বাদ এর এই মহা আন্দোলন এর থেকে দূরে সরে থাকবে? সেটা আমরা দলটির উপরেই ছেড়ে দিই। যাই হোক মনে হয়েছে যে এই স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে তাদের সমর্থন দেয়াটা হয়তো ভোটের রাজনীতির কারণে আপাত ভাবে দেওয়া যাচ্ছে না কিন্তু তাতে করে কি তারা পিছিয়ে পড়ছে না ? সত্যিকার অর্থে জাতীয়তাবাদ জাতীয়তাবোধ প্রতিষ্ঠা করতে হবে আমাদের সকলের মধ্যে। আজ শাহাবাগ কিন্তু বিভক্ত শুধু মাত্র বাংলাদেশ প্রশ্নে তাদের একটিই দাবি এ দেশের মানুষ হয়ে যেন বুক ফুলিয়ে আমরা আমাদের পরিচয় বিশ্ব দরবারে দিতে পারি। যারা বাংলাদেশের নাগরিক তারা বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদ বুকে ধারন করে উন্নত শিঁরে বিশ্বের সর্বত্র বিরাজ করবে এটা হল সকল মনে প্রানে বাংলাদেশী মানুষের পরিচয় হবার কথা। কিন্তু আমাদের এই দেশে এখনো অনেক লোক রয়ে গেছে যারা মনে করে আমরা পাকিস্তানী, বাংলাদেশ যুদ্ধ করে ভূল করেছিল। আজ যদি এই সমস্ত যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি দিতে না পারে স্বাধীন বাংলাদেশ তাহলে ঐ যুদ্ধের অপরাধে বাংলাদেশের পক্ষে অবস্তান করা মুক্তিকামীদের ই হয়ত তারাই বিচার করবে।

আমাদের দেশের মানূষ বেশ ভাল করেই জানে যে বাংলাদেশে জামাত-শিবির কি? ধর্মের নামে তারা টিকে আছে কিন্তু ধর্ম তাদের রাজনৈতিক হাতিয়ার ছাড়া আর কিছুনা। ব্লগার রা ব্লগে ধর্মের নামে কুতসিত রচনা করে থাকলে তা কেন আমারদেশ আগে মানে ব্লগার জীবিত থাকতে বললেন না আমি বুঝতে পারলাম না। একটু যদি দেখি যে কেন আজ প্রজন্ম চত্বর থেকে মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতারের কথা বলা হচ্ছে তাহলে দেখা যাবে তিনি অত্যন্ত সু-পরিকল্পিত ভাবে ব্লগারদের নামে কিছু অপবাদ জুরে দিয়ে লেখা ছাপছেন যা কিনা আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ইসলাম সম্প্রদায় বিরোধী। মানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাঁনোর চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন তিনি। আর এই দাঙ্গা যদি বাধাঁনো যায় তবে সবচে লাভ হবে যুদ্ধাপরাধীদের। মাহমুদুর একজন সাংবাদিক না হয়ে যখন একটি পত্রিকার সম্পাদক হন তখনি বোঝা উচিত যে তিনি কোন স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এই দ্বায়িক্ত নিচ্ছেন আজ তা প্রমানিত সত্য । যদি তর্কের ক্ষাতিরে ধরে নিই যে ব্লগে ইসলাম বিরোধী কথা ছিল তবে তা প্রকাশ করে কি আরো বড় অপরাধ করে নি আমারদেশ পত্রিকাটি। পত্রিকার নামটা কিন্তু খুব সুন্দর আমারদেশ । আমার তার কাছে সবিনয়ে জানতে ইচ্ছা করে আপনার দেশটা কি পাকিস্তান না বাংলাদেশ ? কাকে আপনি আমারদেশ বলছেন ? আমারদেশ বা মাহমুদুর রহমানের কারো প্রতিই আমার কোন বিদ্ধেষ নেই কারন আমি আমারদেশ এর অনিয়মিত অনলাইন পাঠক আর মাহমুদুর রহমান কে ব্যাক্তিগত ভাবে চিনি না। কিন্তু তিনি ও পত্রিকাটি যা করছে বা লিখছে তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বিনষ্ঠ করছে। যা একজন বাংলাদেশী হিসাবে কোন মতেই চাওয়া হতে পারে না। যুদ্ধাপরাধীদের সঠিক বিচার করতে হলে এই দাঙ্গা বাধাঁনোর প্রকিয়া বন্ধ করতে হবে তাই মাহমুদুর রহমানে গ্রেফতারে প্রশ্ন আজ সামনে এসে গেছে। তবে এক মাহমুদুর রহমান ই নয় এই রকম আরো অনেকের অস্ত্বিত্ব আছে আমাদের এই দেশে তাই একজন কে ধরে কি হবে তা আগামীদিনই বলতে পারবে বলে মনে হয়।

আমাদের দেশে কিছু ইসলামী দল ইসলামকে অবমাননার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে । এর প্রেক্ষাপট ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। এই সব ধর্ম ভিত্তিক দলগুলো দাবি করছে জামাত এর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই হরতাল তাদের নিজেদের ছিল কিন্তু যে সমস্ত মারামারি জাতীয় পতাকা পুড়ানো, শহীদ মিনার ভাঙ্গা সহ অন্য কিছুর সাথে তারা জরিত নয়। তাহলে এ গুলো কারা করলো ? তাদের ভাষ্যমতেই যদি তারা জামাতকে আওয়ামীলীগের চেয়েও বেশি অপছন্দ করে থাকে তবে এই অপকর্ম তারা নিজেরাই করেছে এ দায় ভার তাদের কি নেওয়া উচিত না? তারা দায় নিতে রাজিনা আবার অন্য কেউ করেছে সেটাও মানতে রাজি না এটা কেমন নীতি বুঝলাম না।

এবার রাজনৈতিক অবস্তা একটু দেখা যাক, এ দেশে রাজনীতি এখন প্রধানত দুটি ভাগ হয়ে গেছে একটি বাংলাদেশের পক্ষে আর অন্যটি এর বিপক্ষে অবস্তান করছে। বাংলাদেশ নামক দেশের অভ্যন্তরের রাজনীতির এমন ধারা হওয়াটা সত্যি খুব দুঃখ জনক ব্যাপার কারন এদেশে ভিন্ন মত থাকতেই পারে তাই বলে এ দেশ নিয়ে ভিন্ন মত! এটা কোন ভাবেই আমাদের কাম্য নয়। সাথে যুক্ত হয়েছে ধর্ম। বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা এখানে বাস করে থাকে। এত দিন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকলেও এখন এসে দেখা যাচ্ছে সেখানে যেন ফাঁটল ধরেছে। কিছুদিন আগের রামু ঘটনা দিয়ে যার নতুন সূত্রপাত হয়েছে। আমারদেশ এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী হিন্দুর মুসলিম নাম ব্যবহার করার কথা বলা হয় কিন্তু আশ্চর্য হই তখন যখন দেখি তাদের কথা অনুযায়ী সে একটি ছদ্মনাম ব্যবহার করে ব্লগ লেখে কিন্তু আমার প্রশ্ন হল সে হিন্দু হয়ে যখন মুসলিম নাম নিয়েছে মানেই তো ছদ্মনাম নিয়েছে তাহলে তার আরো একটি ছদ্মনাম কেন নিতে হবে? শাহাবাগের আন্দোলন নিয়ে অনেকেই অনেক রকম কথা বলে বেরাচ্ছে যা হয়ত আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত কিন্তু কেন তারা এই সব কথা বলছে? কারণ একজন মানুষের স্বতন্ত্র একটি বিশ্বাসের জায়গা থাকে। যদি কখনো তার সেই বিশ্বাসের জায়গাতে আঘাত লাগে তখন সে কান্ডজ্ঞানহীন হয়ে পড়তে পারে। আমরা ধর্মবিশ্বাস পেয়েছি জন্মসূত্রে তাই এই বিশ্বাসের ভিত অনেক গভীরে। এই বিশ্বাসে আঘাত লাগলে আমাদের অস্ত্বিত্বে আঘাত লাগে কিন্তু একই সাথে আমাদের দেশ হিসাবে যে বাংলাদেশকে পেয়েছি তার বেলায় কি আমাদের আবেগ কাজ করেনা? হ্যাঁ অবশ্যই করে সে কারনেই শাহাবাগে এতো জনতার ভির দেখছি। সবশেষে সকল বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ সর্বপরি জন সাধারনের কাছে জিজ্ঞাসা একটাই আমরা কোন জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী বাংলাদেশী নাকি ...... ?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.