নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেওয়ান তানভীর আহমেদ

দেওয়ান তানভীর আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমকামিতা: The Taboo!!! (পর্ব-১)

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪১

কৈফিয়তঃ

অনেকদিন থেকেই এই বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করেও লেখা হয়ে উঠছিলো না সময়ের অভাবে। মূলত এই প্রসঙ্গে আমাদের সমাজের উন্নাসিক মনোভাব দেখেই নিজের ভেতরে একটা তাগাদা অনুভব করছিলাম এটা নিয়ে একটা কিছু লেখার জন্যে। আজ সময় পেলাম, তাই বসে গেলাম লেখার প্রস্তুতি নিয়ে।
আজ থেকে পাঁচ বছর আগে আমাদের তথাকথিত ভদ্র সমাজের “ভদ্রলোক”দের মত আমিও সমকামিতাকে দেখতাম একটা মানসিক ব্যাধি হিসেবে, আর সমকামীদেরকে মনে করতাম বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন। কিন্তু আমার ভুল ভাঙলো তখন, যখন আমি এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করলাম। আমি বরাবরই পাঠ্যবইয়ের তুলনায় বাইরের বই বেশি পড়ি। আর সমকামিতা নিয়ে পড়তে গিয়ে আমি টের পেলাম, কত বড় ভুল ধারণার মধ্যেই না আমি ডুবে ছিলাম! আর আমাদের সমাজ তো এখনো ডুবে আছে সেই অজ্ঞতার মহাসাগরে!
যদি প্রশ্ন করা হয়, সমকামিতা কী? তাহলে অধিকাংশ “ভদ্রলোক”-ই যে উত্তর দেবেন, তা হল-
#সমকামিতা একটা মানসিক রোগ।
#সমকামিতা বিকৃত রুচি ছাড়া কিছুই নয়!
#সমকামিতা হচ্ছে প্রকৃতি বিরুদ্ধ যৌনাচার!
#সমকামিতা বিকৃত মানসিকতার পরিচয়।
#সমকামিতা হারাম!!!
“ভদ্রলোক”রা তো সমকামিতাকে কোন অপবাদ দিতেই বাকি রাখে নি! আসলে তাদেরও দোষ দেয়া যায় না। প্রথমত, তথাকথিত ভদ্রসমাজ তাদের হাতে পায়ে বেড়ি লাগিয়ে দিয়েছে, তাই উঠতে বসতে তাদের কেবল একই চিন্তা- লোকে কী বলবে? আর দ্বিতীয়ত, তাদের জানার অভাব। অন্যান্য দেশের কথা নাহয় বাদ-ই দিলাম, আমাদের দেশেই ক’জন লোক বই পড়ে? অনেক খুজলেও লাখে একজন পাওয়া মুশকিল! আর যারা একটু পড়ে, তারাও অনেক সময় কঠিন বা ভারী বই দেখলে ভিরমী খায়(কারণ তারা পড়ে হয় “ঠাকুরমার ঝুলি” আর নাহয় “আরব্য রজনী”)। যেহেতু বই পড়ার প্রতি তাদের এই অনীহা, সেহেতু “সমকামীতা” সম্পর্কেও তাদের জ্ঞান থাকবে শূন্যের কোঠায়, এটাই স্বাভাবিক। আর অল্প বিদ্যার ফল সর্বদাই ভয়ঙ্কর!

সমকামিতা ও প্রকৃতিঃ

এখন দেখা যাক, সমকামিতা আসলেই প্রকৃতি বিরুদ্ধ কিনা। আমি এখানে খুব সরল ভাষায় সমকামিতার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছি, যাতে করে এই সহজ বিষয়টি সবার বোধগম্য হয়। এরপরেও যদি কারও বুঝতে কোন কষ্ট থাকে, তাহলে বুঝতে হবে- হয় আমার চেষ্টায় কোন ত্রুটি থেকে যাচ্ছে, আর নাহয় আপনারা বুঝেও বুঝতে চাচ্ছেন না।
কিছুদিন আগে ড. অভিজিৎ রায়ের লেখা ‘সমকামিতা” বইটা পড়লাম। আর সেটা পড়তে গিয়েই পেলাম ‘সমকামিতা প্রকৃতি বিরুদ্ধ কিনা’-এই প্রশ্নের জবাব। এই প্রশ্নের জবাব দেয়ার আগে আমি একটা প্রশ্ন করতে চাই- “প্রকৃতি বিরুদ্ধ কাজ তথা প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ কারা করতে পারে?” উত্তরঃ “যারা প্রকৃতির ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করতে পারে।” এবং পৃথিবী নামক এই গ্রহে প্রকৃতির ওপর কর্তৃত্ব স্থাপনকারী প্রাণী একমাত্র মানুষ। সুতরাং এই মানুষ-ই প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাবার ক্ষমতা রাখে। আর যারা প্রকৃতির ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করতে পারে না, তাদেরকে প্রকৃতির প্রচলিত নিয়ম অনুসরণ করেই চলতে হয়। প্রকৃতি বিরোধী কোন কাজ করার ক্ষমতা তাদের থাকার কথা নয়। কিন্তু সম্প্রতি জানা গেছে “হুইপটেইল” নামক এক জাতের গিরগিটির কথা, যারা কিনা তথাকথিত ভদ্র সমাজের বাসিন্দাদের মতে “প্রকৃতি বিরুদ্ধ” কাজ করেই যাচ্ছে[সূত্রঃ Click This Link ]! আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, হুইপটেইল জাতের গিরগিটিদের কোন পুংলিঙ্গ নেই, তারা সবাই-ই স্ত্রী লিঙ্গের। এরা বিশেষ প্রক্রিয়ায় নিজ দেহের ভেতরেই শুক্রাণু উৎপাদন করে, ডিম্বাণুর সাথে শুক্রাণুর মিলন ঘটায় এবং তারপর নিষেক ঘটে। অর্থাৎ সম্পুর্ণ জনন প্রক্রিয়া ঘটে এদের দেহের ভেতরেই, তাই এদের যৌন সংগম করারও প্রয়োজন হয় না। কিন্তু তবুও মাঝে মাঝে দেখা যায়, দুটো স্ত্রী হুইপটেইল গিরগিটি পরস্পরের সাথে যৌন সংগম করছে! অর্থাৎ সমকামিতা তাদের মধ্যেও রয়েছে যাদের কিনা প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাওয়ার ক্ষমতাই নেই! শুধু হুইপটেইল গিরগিটিই নয়; ডলফিন, ভাল্লুক, আফ্রিকার রাজা সিংহ সহ প্রায় ১৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যেও সমকামিতা দেখা গেছে। এখনও কী কেউ বলবেন যে সমকামিতা প্রকৃতি বিরুদ্ধ?

বিজ্ঞান কী বলেঃ

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, সমকামীদের মস্তিষ্কের “হাইপোথ্যালামাস” নামক অংশের গঠন আমাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের মত নয়; তাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের গঠন ভিন্ন। হাইপোথ্যালামাস হচ্ছে মস্তিষ্কের সেই অংশ, যেখানে যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। সমকামীদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের গঠন ভিন্ন হয় হাইপোথ্যালামাসের একটি বিশেষ অংশের আকারের ভিন্নতার কারণে; সেই অংশটি হচ্ছে- Interstitial Nucleus of the Anterior Hypothalamus(সংক্ষেপে INAH3)। এখন, যাদের মস্তিষ্কের যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী অংশটির গঠনই আলাদা, তাদের যৌন প্রবৃত্তি যে আলাদা হবে এটাই তো স্বাভাবিক, তাই না?
আসলে সমকামিতা হচ্ছে একটা জিনগত বৈশিষ্ট্য, যা জিনের মাধ্যমে বাহিত হয়। যারা বিজ্ঞানের ছাত্র এবং জেনেটিক্স পড়েছেন তারা এই ব্যাপারটা ভালো বুঝবেন। একজন সমকামী, যে কিনা সমকামের জিন বহন করছে, তার জিন তাকে সবসময়ই সমলিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার জন্য সিগন্যাল প্রেরণ করবে। তাই সে চাইলেও তার বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারবে না। এখন যদি তাকে জোর করেও বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে বিয়ে দেয়া হয়, কিংবা সমাজের ভয়ে সে যদি অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের বিপরীত লিঙ্গের কাউকে বিয়ে করে; তাহলেও তার কাম জাগবে সর্বদাই সমলিঙ্গের প্রতি, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি নয়। জিনগত ব্যাপার, চাইলেই তো আর ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেয়া যায় না!
জেনেটিক্স নিয়ে যারা পড়েছেন, তারা অবশ্যই এটাও জানবেন যে জিন কখনো বিলুপ্ত হয় না বা ধ্বংস হয় না। বরং বংশ থেকে বংশান্তরে বাহিত হতে থাকে। তাই একজন সমকামীকে যতই বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে বিয়ে দেয়া হোক না কেন, আর সেই সমকামী যতই নিজেকে লুকিয়ে রাখুক না কেন; তার সমকামের জিন কিন্তু হারিয়ে যাবে না। সে নিজেকে নিজে চেপে রাখলেও তার সেই জিন বাহিত হবে তার সন্তান সন্ততির দেহে। যদি সেই সন্তান সন্ততির দেহে সমকামের জিন প্রচ্ছন্নও থাকে, তাহলেও কিন্তু সেই জিন হারিয়ে যাচ্ছে না। বরং সেই জিন আবার তাদের সন্তানদের দেহে বাহিত হবে, এবং প্রকট রূপে ধরা পড়বে! তখন দেখা যাবে, একজন সমকামীর সন্তানরা সমকামী না হলেও তার নাতি-নাতনিদের মধ্য থেকে একজন না একজন সমকামী বেরিয়ে আসবেই। অথচ সমকামীরা যদি নিজেদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়, তাহলে ব্যাপারটা কী দাঁড়াবে? কেউ একবারও ভেবে দেখেছেন কি? সমকামীরা নিজেদের মধ্যে বিয়ে করে সংসার করলেও তারা প্রজনন করতে পারবে না, নতুন কোনো সন্তানের জন্ম দিতে পারবে না। তাই তাদের কোনো বংশধরও থাকবে না। ফলে তাদের সমকামিতা বহনকারী জিন, যা বংশপরম্পরায় তারা বহন করে আসছে, সেই জিন তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে এবং তাদের মৃত্যুর পরে তাদের সাথেই হারিয়ে যাবে। অর্থাৎ তাদের থেকে আর নতুন করে কোনো সমকামীর জন্ম হবে না! সুতরাং সমকামী বিবাহ নিষিদ্ধ করে এবং একজন সমকামীকে বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে বিয়ে দিলেই যে সমকামীতা বলে কিছু থাকবে না, এটা নিতান্তই ভুল ধারনা! বরং এ পর্যন্ত আমরা যা কিছু আলোচনা করেছি, তা থেকে এটাই পরিষ্কার হয় যে সমকামী বিবাহকে বৈধতা দিলেই একটা সময় সমকামিতা বিলুপ্ত হতে শুরু করবে। আর সমকামী বিবাহকে অবৈধ ঘোষণা করে আমরা যদি সমকামীদেরকে তাদের বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে বৈবাহিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করি, তাহলে সমকামীদের সংখ্যা তো কমবেই না, বরং ভবিষ্যতে তাদের সংখ্যা বেড়ে এখনকার তুলনায় তিনগুণ হয়ে দাঁড়াবে!

পরিশিষ্টঃ
যারা এতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে পুরো লেখাটা পড়ে এ পর্যন্ত এসেছেন, তাদের এতক্ষণে অবশ্যই এটা বুঝে যাওয়ার কথা যে সমকামীতা কোন মানসিক রোগ নয়, আর প্রকৃতি বিরুদ্ধ তো নয়-ই। সমকামীতা মানুষের একটি অতি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। আমাদের কাছে যেমন ওদের সমলিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হওয়াকে আজব মনে হয়, ওদের কাছেও ঠিক তেমনি আমাদের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হওয়াকে আজব মনে হয়।
আর পুরোটা পড়ার পরেও যদি আপনার মনে হয় যে সমকামী বিবাহ নিষিদ্ধ হওয়া উচিত, তাহলে আপনার কাছে আমার প্রশ্ন- “ধরুন, আপনার বাবা একজন সমকামী, এবং তিনি চান যে আপনার বিয়ে আপনার সমলিঙ্গের কারো সাথে হোক। কিন্তু আপনি সমকামী নন। এখন যদি আপনার ওপর জোরপূর্বক সমকামিতা চাপিয়ে দিয়ে আপনাকে সমলিঙ্গের কাউকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়, তাহলে আপনার কেমন লাগবে?!” আপনার সে সময়কার অনুভুতি হবে হুবহু একজন সমকামীর ঠিক সেই সময়কার অনুভুতির মতই, যখন তাকে সমাজের চাপে বাধ্য হয়ে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে বিয়ে করতে হয়!

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৩৫

বারিধারা বলেছেন: একজন পুরুষ আরেকজন পুরুষের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করলে সেটা কোন যুক্তিতে স্বাভাবিক হয়? লুত (আ) এর কওমের আগে মানুষ সমকামিতা ব্যাপারটা জানতোই না, তার মানে কি? এর আগে কারো মধ্যে সমকামী জিন ছিলনা? শয়তান কওমে লুতের মধ্যে সমকামিতা চালু ও জনপ্রিয় করে তোলে। আল্লাহ তায়ালা এই অসভ্য জাতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেন। এই জাতির মধ্যে কেবল লুত (আ) এবং তার তিন মেয়ে ছাড়া কেউই বাঁচেনি। এ থেকে কি বুঝা যায়? সমকামিতা এতটাই ঘৃণ্য যে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে এদের চিহ্নই রাখেননি।

যে গিরগিটির কথা আপনি বললেন, তাদের মধ্যে পুরুষ বলে কিছু নেই, তারা তারা অন্য নারীর সাথে সংগম করে। মানুষের ব্যাপারে কি এই যুক্তি খাটে?

১৯ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৫৭

দেওয়ান তানভীর আহমেদ বলেছেন: মানুষের বেলায় গিরগিটির যুক্তি অবশ্যই খাটে না। গিরগিটি, ডলফিন ইত্যাদির কথা এই কারণে বলা হয়েছে যে প্রকৃতিবিরুদ্ধ কাজ শুধুমাত্র তারাই করতে পারে যারা প্রকৃতির উর্ধে। আর "কিতাব" অনুযায়ী একমাত্র মানুষই এরকম প্রাণী । সমকামিতা যদি প্রকৃতিবিরুদ্ধই হয়, তবে নিম্নশ্রেণীর প্রাণীদের মধ্যে সমকামিতা এলো কোথা থেকে?? তারা কি প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে???
আর সমকামিতা যদি জেনেটিক না-ই হবে, তবে সব সমকামীদের ধ্বংস করে দেয়ার এত হাজার বছর পরেও পৃথিবীতে সমকামিতা টিকে থাকলো কীভাবে??

২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:২৩

টারজান০০০০৭ বলেছেন: যুক্তিবিদ্যার এই এক অপকারিতা ! এমনকি হোগাজীবী বা তাহাদের সমর্থকরাও পুটুকামীতার পক্ষে লিখিতে পারে !

১৯ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৩৭

দেওয়ান তানভীর আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার কমেন্টের জন্য। কিন্তু আমার এখানে খালি কলস বাজানো গ্রহণযোগ্য না। যান, আগে কলসে পানি ভরে নিয়ে আসুন, তারপর সেই পানি ভর্তি কলসে আমরা জলতরঙ্গ শুনব। :)
বেস্ট অফ লাক... :) :)

৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৪২

নতুন নকিব বলেছেন:



সমকামিতা নিয়ে ব্লগার 'স্বতু সাঁই' 'সৈকত বিআইএইচআর' এর 'আনন্দ উৎসব থেকে সমকামী যুবক গ্রেফতার: মানবাধিকারে ওপর চপেটাঘাত!' পোস্টে একটি মন্তব্য করেন। মন্তব্যটি সবিশেষ প্রনিধানযোগ্য মনে হওয়ায় এখানে হুবহু কপি পেস্ট করা হল। তার জবানীতে শুনি-

''আমার এক বন্ধু সমকামীদের অধিকার নিয়ে কাজ করতো। শুধু তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করতো তা নয়, সে সমকামীতে আসক্ত অনেক আগে থেকেই। বহুদিন পর তার সাথে দেখা। সে তার কাজের অভিজ্ঞতার কথা এসে আমাকে বলতো। সমকামীর পক্ষে যুক্তি দেখানোর জন্য অনেক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও দিতো। আমি কোন মন্তব্য করতাম না, শুধু ওর কথাগুলো শুনতাম। একদিন সে আমাকে বলে,''

"কি হয়েছে তোর, তুই আমার কাজের ব্যাপারে কি মোটেও সন্তুষ্ট না?" আমি বললাম,

"কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি।"

"বল।"

"সমকামীদের বিষয়ে তুই নিজেই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনেক শুনিয়েছিস আমাকে। এটা অনেকটা নাকি জেনেটিক্যাল বিষয়। তোর কথা সব মেনে নিলাম এবং সে কারণেই তুই তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছিস। বেশ ভালো কথা। এখানে আমার একটা প্রশ্ন। তোর ছেলেটা বড় হলো। জেনেটিক্যালী সেও তোর মতই সমকামী হলো। এক রাতে তোর সাথেই শুয়ে আছে। মধ্য রাতে বুঝতে পারলি যে তোর ছেলে তোর লুঙ্গী তুলে তোর গুহ্যে তার শিশ্ন প্রবেশ করানোর চেষ্টা করছে। তখন কি তুই তাকে বাধা দিতে পারবি? কারণ তুই সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছিস। সেখানে তোর বাধা দেওয়ার কোন অধিকার নেই। অতএব বিনা বাক্য ব্যয়ে তোকে তোর সন্তানের দ্বারা যা হওয়ার তাই হতে হবে। এই হয়ে যাওয়ার ঘটনার কথা কি তুই গর্বভরে সকলের কাছে বলতে পারবি, আমার পুত্র আমাকে এই করেছে? এ কাজ তোর পুত্র করতেই পারে কারণ সমকামীদের তো আর কোন বিধি বিধান নাই যে পুত্র পিতার সাথে সহবাস করা অবৈধ। সহবাসের বিধি বিধান তো শুধুু বিপরীতকামীদের ক্ষেত্রে। অতএব তোর পুত্র গোপনে লুঙ্গী না তুলে প্রকাশ্যে বলে, বাবা আজ আমি তোমার সাথে শুবো। তাহলেও তার আশা পূর্ণ করতেই হবে। কারণ তুই তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি।" আমার কথাগুলো শুনতে শুনতে তার মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যায়। আমাকে আর কোন উত্তর না করে, উঠে চলে যায়। আমিও তাকে পিছন থেকে ডাকি নি। সে ঘটনার বহুদিন পর আবার এসেছিলো আমার কাছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম,

"কি রে কেমন চলছে তোদের কাজ কর্ম?" সে উত্তরে বললো,

"ছেড়ে দিয়েছি ঐসব কাজ।"

স্বতু সাঁইকে অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম জটিল এবং কঠিন একটি স্মৃতিচারন করায়। তার সেই মন্তব্যে যেতে চাইলে নিচের লিঙ্ক থেকে যেতে পারেন-

আনন্দ উৎসব থেকে সমকামী যুবক গ্রেফতার: মানবাধিকারে ওপর চপেটাঘাত!

১৯ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:১৯

দেওয়ান তানভীর আহমেদ বলেছেন: অত্যন্ত অযৌক্তিক একটা কথা বললেন। আচ্ছা, বিষমকামী ছেলেরা কি তাদের মায়ের সাথে এসব করে? না, করে না। বিষমকামী মেয়েরা কি তাদের বাবার সাথে এসব করে? না, করে না। তাহলে আপনার কেন মনে হয় যে সমকামী ছেলেরা তাদের বাবাদের সাথে এসব করবে?? এই ধরনের কুরুচিকর কথা যারা বলে এবং তাদের এসব কথাকে যারা সমর্থন করে, তারা যে মানসিকভাবে কতটা অসুস্থ সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আর বিষমকামিতা মানেই কি শুধু ছেলে আর মেয়ের মধ্যে সেক্স? আর কিছুই না?? না, বিষমকামিতা মানেই শুধু সেক্স না। তেমনি সমকামিতা মানেই শুধুমাত্র সেক্স না। কারো অধিকারের পক্ষে কথা বলার মানেই শুধুমাত্র তার সেক্সের অধিকারের কথা বলা না। আমরা তো কত শ্রেণীর মানুষের অধিকার নিয়েই কথা বলি, তারমানে কি সেসব ক্ষেত্রেও তাদের সেক্সটাই প্রধান??
এক শ্রেণীর মানুষ আছে, যারা সমকামিতার প্রসঙ্গ উঠলেই কেবল সেক্সের প্রসঙ্গ টেনে আনে, যেন সমকামীরা সারাদিন শুধু সেক্স-ই করে। সমকামীরাও তো আমাদের বিষমকামীদের মতই মানুষ, আমাদের সাথে তাদের পার্থক্য শুধুমাত্র তাদের যৌনপ্রবৃত্তিতে, আর কিছুতেই না। কই, আমরা তো সারাদিন সেক্স করি না! তাহলে সমকামীরা সারাদিন শুধু সেক্স-ই করে, এমন ধারনা আপনাদের কোথা থেকে হলো?!
আর কমেন্টের এই গল্পে লেখকের যেই বন্ধুটির কথা বলা হয়েছে, তার ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। একজন লিমিটলেস আহাম্মকের ব্যাপারে আর কী-ই বা বলব??!

৪| ১৯ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৩৯

নতুন নকিব বলেছেন:



ভাই,
সারা দিন তর্ক করেও কোন লাভ হবে না, যদি সত্যকে মেনে নেয়ার প্রবৃত্তি আমার ভেতরে জাগ্রত না হয়!

আপনার নাম দেখে অনুমান করতে অসুবিধা হচ্ছে না, আপনি একজন মুসলিম। আশা করি, আপনি জেনে থাকবেন, ইসলাম ধর্মে পাপের শ্রেনিবিন্যাস রয়েছে। ছোট পাপ, বড় পাপ ইত্যাদি। ছগিরাহ গোনাহ, কবিরাহ গোনাহ বলি আমরা যেগুলোকে। সমকামিতা কুরআন হাদিসের দৃষ্টিতে জঘন্যতম পাপ, অন্যতম কবিরাহ গোনাহ। মানব প্রকৃতির বিপরীত এই ন্যাক্কারজনক অপকর্মে যারা যুক্ত থাকেন তাদের প্রতি আল্লাহ পাকের অভিসম্পাত!

এই আল্লাহ দ্রোহী কাজের যারা সাফাই গেয়ে ফায়দা অর্জন করার চেষ্টায় ব্যাপৃত, বিশ্বাস করুন, আল্লাহর কসম করে বলছি, তাদের প্রতিও মহান আল্লাহর লা'নত, অভিসম্পাত, অভিশাপ অন্তহীন।

অন্য ধর্মের ভাইদের প্রতি আমাদের পক্ষ থেকে কোন বাধ্য বাধকতা নেই। তারা তাদের ব্যাপারে জবাবদিহী করবেন। কিন্তু, এ্যাজ এ মুসলিম, আমাদের অবশ্যই কুরআন মেনে চলা উচিত। কুরআনের একটি আদেশ নিষেধ অমান্য করার সুযোগ সত্যিকারের কোন ঈমানদার মুসলিমের কখনও থাকতে পারে না।

কুরআন যে জঘন্য গর্হিত অন্যায় কাজকে মহাপাপ বলে আখ্যায়িত করেছে, তার পক্ষে সাফাই একজন মুসলিম কিভাবে গাইতে পারেন, আমাদের ক্ষুদ্র জ্ঞানে তার কোন ব্যাখ্যা নেই! মহান প্রতিপালকের প্রতি আমরা কতটাই না অকৃতজ্ঞ! তাঁর সীমাহীন দয়াকে আমরা কতভাবেই না অবজ্ঞা করে চলেছি! হায় হায়, আমাদের কি উপায় হবে! আল্লাহ পাক দয়া পরবশ হয়ে আমাদের যদি ক্ষমা করেন!

আমার কথায় কষ্ট নিবেন না, প্লিজ। আপনার মঙ্গল কামনা করছি। ভাল থাকুন নিরন্তর।

৫| ১৯ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৫২

তাতিয়ানা পোর্ট বলেছেন: @নতুন নকিব,

What the hell, man?

৬| ১৯ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:১৩

নতুন নকিব বলেছেন:



তাতিয়ানা পোর্ট,

সামুতে আপনার অবস্থান শক্ত পোক্ত হোক। আপনাকে স্বাগত। এখানে সকলের সাথে আপনারও গড়ে উঠুক আত্মার আত্মীয়তা। অবিচ্ছেদ্য বন্ধন হৃদয়ের।

আপনার জানার ইচ্ছের প্রতি শ্রদ্ধা। আপনি যদি দয়া করে নিচের লিঙ্ক থেকে বই দু'টি একটু কষ্ট করে দেখে নেন, আশা করি আপনার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর পেয়ে যাবেন।

১. মৃত্যুর ওপারে

২. মরণের পরে কি হবে? বা দোযখের আযাব ও বেহেশতের সুখ শান্তি

আপনি বাংলা লিখতে সমস্যা ফিল করছেন, দেখলাম। আচ্ছা, আপনি কি পিসি ইউজ করছেন, না কি মোবাইল? মোবাইলের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে এই জাতীয় সমস্যা থেকে থাকে। চেষ্টা করুন, আশা করি দ্রুত সমস্যা কেটে যাবে।

ভাল থাকুন নিরন্তর।

৭| ২১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:৫২

দেওয়ান তানভীর আহমেদ বলেছেন: অনেকেই না জেনে না বুঝে শুধুমাত্র তর্কের খাতিরেই নানান রকমের খোড়া যুক্তি দেখিয়ে যাচ্ছেন! আপনাদের কমেন্ট-ই বলে দিচ্ছে আপনাদের পড়াশোনার দৌড় কোন পর্যন্ত! তর্কের খাতিরেই কমেন্ট করুন, আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু একটাই অনুরোধ, যে বিষয়ে তর্ক করবেন, সে বিষয়ে অন্তত পড়াশোনা করে আসুন। কোনো রকম স্টাডি ছাড়াই পুরনো ধ্যান ধারনাকে আকড়ে ধরে রেখে অন্ধের মত তর্ক করে যাওয়া পাবলিকদের সাথে কোনো রকম কথা বাড়াতে আমি রাজি নই।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.