নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেওয়ান তানভীর আহমেদ

দেওয়ান তানভীর আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমকামিতা: The Taboo!!! (পর্ব-২)

১৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:০৪

১.
মফিজ মিয়ার অনেক ক্ষমতা। সেই ক্ষমতার দাপটে আজ সে পুরো গ্রাম দাপিয়ে বেড়ায়! সাথে থাকে তার অনুগত একপাল সাঙ্গপাঙ্গ, যারা তার হুকুমে যে কারো মুণ্ডু কেটে নিয়ে আসতে প্রস্তুত! আর তাই মফিজ মিয়ার ভয়ে পুরো গ্রামবাসী সবসময় তটস্থ থাকে!
ক’দিন যাবত মফিজ মিয়া ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছে। তার দুশ্চিন্তার বিষয় হল চোখ। নীল চোখ তার একদম পছন্দ না। তার নিজের চোখের মণির রঙ কালো, তার সাঙ্গপাঙ্গদের চোখের মণিও কালো। গ্রামের সবারই চোখ কালো। কিন্তু কয়েকদিন হল সে খেয়াল করেছে এ গ্রামেরই দু’জন কিশোরের চোখের রঙ নীল। নীল চোখের এই দুই কিশোরকে দেখলেই এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করতে শুরু করে মফিজ মিয়ার ভেতরে, এই অস্বস্তির সঠিক কারণ তার নিজেরও জানা নেই। যতই সে ঐ দুই কিশোরের নীল চোখ দেখে, ততই তার অস্বস্তি বাড়তে থাকে। এ কেমন কথা? যেখানে তার চোখ কালো, গ্রামের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকজনের চোখ কালো, সেখানে কারো চোখ নীল কেন থাকবে?! নাহ! এটা মেনে নেয়া যায় না! কিছুতেই না! সবার চোখের রঙ কালোই হতে হবে। সে ফতোয়া জারি করল- “নীল চোখের মানুষেরা সব শয়তানের পূজারী, তাই ওদের চোখ শয়তানের চোখের মতই নীল! ওদের দেখা মাত্রই পাথর ছুড়ে, পানিতে ডুবিয়ে কিংবা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করো!!” মফিজ মিয়ার এহেন ফতোয়া শুনে তার মুরিদরা হৈ হৈ করতে করতে ছুটলো “শয়তানের পূজারী” দুই কিশোরকে হত্যা করতে। আর মফিজ মিয়া? একটা তৃপ্তির ঢেকুর তুলে মুচকি হাসল সে। যাক! তার এতদিনের অস্বস্তির একটা সমাধান হল তবে!!

২.

এতক্ষণ ধরে যারা মফিজ মিয়ার গল্পটি পড়লেন তারা হয়ত ভাবছেন, এটা কী করে সম্ভব? শুধুমাত্র চোখের রঙ অপছন্দ হওয়ার কারণে একটা মানুষের আরেকটা মানুষের প্রতি এত বিদ্বেষ? আপনারা হয়ত মানতেই পারছেন না, একটা মানুষের পক্ষে এতটাও অমানবিক হওয়া সম্ভব! তাও আবার নিজের ব্যক্তিগত অস্বস্তির কারণে!! যারা মানতে পারছেন না, তাদেরকে এবারে একটু নিজের কল্পনাশক্তি (যদি থাকে) কাজে লাগাতে হবে। ধরুন, আপনি-ই মফিজ মিয়া। হ্যা, নিজেকে “চোখ সংখ্যাগরিষ্ঠ” মফিজ মিয়ার জায়গায় দাড় করান, আর “চোখ সংখ্যালঘু” নীল চোখের কিশোরদের জায়গায় দাড় করান যৌন সংখ্যালঘু সমকামীদের। জানি, এ পর্যন্ত পড়েই অনেকে তেড়ে আসবেন। কিন্তু একবার নিজের বিবেক বোধ(যদি থাকে) থেকে ভাবুন তো, ভিন্ন ভিন্ন চোখের রঙ বিশিষ্ট মানুষ যদি এ সমাজে থাকতে পারে, তবে ভিন্ন যৌন প্রবৃত্তি বিশিষ্ট মানুষেরা কেন থাকতে পারবে না?
একজন মানুষের চোখের রঙ নীল হওয়া, গায়ের রং কালো হওয়া, চুলের রং সোনালি হওয়া ইত্যাদি যেমন তার প্রকৃতি প্রদত্ত বৈশিষ্ট্য, তেমনি সকামিতাও একজন মানুষের প্রকৃতি প্রদত্ত বৈশিষ্ট্য। এক্ষেত্রে তার নিজের কিছুই করার নেই। সমকামিতা যে কোন প্রকৃতি বিরুদ্ধ যৌনাচার নয়, বরং সম্পূর্ণরূপে প্রাকৃতিক, এ বিষয়ে সমকামিতা নিয়ে আমার লেখা পূর্ববর্তী প্রবন্ধে আমি আলোচনা করেছি(“সমকামিতাঃ The Taboo!!! (পর্ব-১)” লিংকঃ http://bit.ly/2uwaNJ3 )। এখানে তারই কিছু খুঁটিনাটি বিষয় আরো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব।

৩.

প্রথমেই আসা যাক, সমকামীদের মস্তিষ্ক প্রসঙ্গে। যেহেতু প্রাণীদেহের সমস্ত কার্যক্রম নিয়ন্ত্রিত হয় মস্তিষ্কের দ্বারা, সেহেতু স্বাভাবিকভাবেই প্রাণীদের যৌনপ্রবৃত্তিও মস্তিষ্কের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হবে। আবার যেহেতু একজন নারী এবং একজন পুরুষের যৌন প্রবৃত্তি “প্রাকৃতিক নিয়ম” অনুযায়ী পরস্পর থেকে আলাদা হওয়া উচিত, তাই স্বাভাবিকভাবেই নারী এবং পুরুষের মস্তিষ্কের যৌন প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণকারী অংশের গঠনও আলাদা হওয়া উচিত। এই বিশ্বাস থেকেই ১৯৭৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা শুরু করেছিলেন ইঁদুরদের মস্তিষ্ক বিশ্লেষণের মাধ্যমে। এরই ধারাবাহিকতায় রজার গোর্কি আবিষ্কার করেন পুরুষ ইঁদুরের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস স্ত্রী ইঁদুরের হাইপোথালামাস অপেক্ষা তিনগুণ বড়। এই হাইপোথ্যালামাস হচ্ছে মস্তিষ্কের সেই অংশ, যেখানে প্রাণীর যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টি এবং নিয়ন্ত্রিত হয়। পরবর্তীতে বানরের মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েও বিজ্ঞানীরা একই ফলাফল পান। ইঁদুর এবং বানরের মস্তিষ্ক আরো সুক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের মধ্যে “মেডিয়াল প্রি-অপটিক” নামক একটি অংশ আছে, এই অংশটি কোনো কারণবশত ক্ষতিগ্রস্ত হলে কিংবা এই অংশে কোনো রকম পরিবর্তন দেখা দিলে যৌনতার পরিবর্তন দেখা দেয়। এর ফলে পুরুষ ইঁদুর বা বানর স্ত্রী ইঁদুর বা বানরের প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। এর থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে মস্তিষ্কের যৌন প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণকারী অংশ হাইপোথ্যালামাসের গঠনগত ভিন্নতার কারণেই প্রাণীদের যৌন প্রবৃত্তিতেও ভিন্নতা দেখা দেয়।

একই ঘটনা ঘটে মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষেত্রেও। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রজার গোর্কি এবং তার ছাত্রী লরা এলেন ইঁদুর এবং বানরের মস্তিষ্কের পর যখন মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন, তখন তারা দেখতে পান নারী এবং পুরুষ মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের প্রথম, দ্বিতীয় এবং চতুর্থ ইন্টারস্টিয়াল নিউক্লিয়ি অব দ্য এ্যান্টেরিয়র হাইপোথ্যালামাস(INAH1, INAH2 এবং INAH4)-এর গঠন অনেকটা একই রকম। অনেকেই হয়ত ভাবছেন, হাইপোথ্যালামাসের তিনটা নিউক্লিয়াসেরই গঠন একই রকম হলে নারী এবং পুরুষের যৌনতায় পার্থক্যটা তাহলে কীভাবে হয়? পার্থক্যটা হয় মূলত তৃতীয় ইন্টারস্টিয়াল নিউক্লিয়ি অব দ্য এ্যান্টেরিয়র হাইপোথ্যালামাস(INAH3)-এর কারণে। রজার গোর্কি এবং লরা এলেনের গবেষণালব্ধ ফলাফল অনুযায়ী INAH1, INAH2 এবং INAH4-এর গঠন প্রায় একই রকম হলেও INAH3-এর গঠন নারী এবং পুরুষের মস্তিষ্কে আলাদা হয়। পুরুষদের মস্তিষ্কের INAH3 নারীদের মস্তিষ্কের INAH3 অপেক্ষা অন্তত তিনগুণ বড় হয়! এরপর ১৯৯০ সালে আমেরিকান স্নায়ুবিজ্ঞানী সিমন লেভি সমকামীদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস বিশ্লেষণ করার কথা ভাবলেন। তিনি ১৬ জন পুরুষ সমকামী এবং ৬ জন স্ত্রী সমকামীর হাইপোথ্যালামাসের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করলেন। দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষা চালানোর পর তিনি যে ফলাফল পেলেন তা হল, সমকামী পুরুষদের INAH3 বিষমকামী পুরুষদের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ ছোট। অর্থাৎ সমকামী পুরুষদের INAH3-এর আকার নারীদের INAH3-এর সমান! আর এই কারণেই সমকামী পুরুষদের যৌন প্রবৃত্তি হয় নারীদের মত। যাদের যৌন প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণকারী অংশের গঠনই নারীদের মত, তাদের যৌনপ্রবৃত্তি তো নারীদের মতই হবে, তাই না? তর্কের খাতিরে কেউ কেউ হয়ত বলবেন, কারো মস্তিষ্কের একটা অংশের গঠন কাকতালীয় ভাবে ভিন্ন হতেই পারে। কেউ কেউ হয়ত আরো এক ধাপ এগিয়ে এসে মস্তিষ্কের একটা অংশের গঠন ভিন্ন হওয়ার কারণে সমকামীদেরকে প্রতিবন্ধীদের কাতারেই ফেলে দেবেন! সেসব ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলব, একজন দুইজনের মস্তিষ্কের গঠন ভিন্ন হলে সেটা কাকতালীয় ব্যাপার হতে পারে, সেটাকে হয়ত প্রতিবন্ধীতার কাতারেও ফেলা যেতে পারে। কিন্তু সব সমকামীদের মস্তিষ্কের গঠন যেখানে বিষমকামীদের মস্তিষ্কের তুলনায় একই রকমভাবে আলাদা, সেখানে ব্যাপারটাকে কাকতালীয় বলা যায় কি? এক্ষেত্রে ব্যাপারটা কাকতালীয় তো নয়ই, বরং কোনো ধরনের প্রতিবন্ধিতাও নয়। সমকামীরা “প্রাকৃতিক নিয়ম” অনুযায়ী-ই সমকামী।

(সূত্রঃ
* “A Difference in Hypothalamic Structure Between Homosexual and Heterosexual Men”- Simon Levay. PDF: http://bit.ly/2tVKdZ6
* “সমকামিতাঃ একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান”- অভিজিৎ রায়)

৪.
এবারে আসি সমকামীদের জীন প্রসঙ্গে, যাকে “গে জীন” বলা হয়ে থাকে। ১৯৯৩ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের জীনতত্ত্ববিদ ডিন হ্যামার এই গে জীন সনাক্তকরণের লক্ষ্যে সমকামী পুরুষদের ১১৪ টি পরিবারের ওপর গবেষণা করে দেখলেন, এই সমকামী পুরুষদের মামা এবং মাতৃসম্পর্কীয় আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে উচ্চমাত্রার সমকামিতা রয়েছে, কিন্তু পিতৃসম্পর্কীয় আত্মীয়স্বজনদের মাঝে সেরকমটা নেই। অর্থাৎ সমকামিতার বৈশিষ্ট্য তারা তাদের মায়ের দিক থেকে পেয়েছে। এ থেকে ডিন হ্যামার অনুমান করেন, যেহেতু পুরুষ সন্তানরা এক্স-ক্রোমোজোমের প্রতিলিপি তাদের মায়ের কাছ থেকে পেয়ে থাকে(পুরুষ দেহে দুই ধরনের ক্রোমোজোম থাকে, একটি হল Y-ক্রোমোজোম যা সে তার বাবার কাছ থেকে পায়, অন্যটি X-ক্রোমোজোম যা সে তার মায়ের কাছ থেকে পায়), তাই এক্স-ক্রোমোসোমের সঙ্গে সমকামিতার কোনো না কোনো যোগসূত্র অবশ্যই আছে। আর একারণেই মাতৃসম্পর্কীয় পূর্বসূরীদের মাঝে সমকামিতা থাকলে সেই মায়ের পুরুষ সন্তানদের মধ্যেও সমকামিতা ত্বরান্বিত হয়। এরপর হ্যামার দুই সমকামী ভাইয়ের এক্স-ক্রোমোজোমের জেনেটিক মার্কার নানাভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন। ফলশ্রুতিতে দুই ভাইয়ের এক্স-ক্রোমোজোমের Xq28 অংশের মার্কারের মধ্যে লক্ষণীয় ভাবে উচ্চমাত্রার মিল খুজে পাওয়া যায়। এ থেকে বোঝা যায় পুরুষের সমকামিতার সঙ্গে Xq28-এর একটি সম্পর্ক রয়েছে। ডিন হ্যামার প্রাথমিকভাবে এই অঞ্চলের জীনকেই গে জীন হিসবে চিহ্নিত করেন।
তবে এই Xq28 মার্কারটি সমকামী প্রবৃত্তির অত্যাবশ্যকীয় নিয়ামক কিনা, এই নিয়েও এক পর্যায়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ডিন হ্যামার ৪০টি সমকামী ভ্রাতৃযুগলের এক্স-ক্রোমোজোমের ওপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে দেখলেন, ৩৩টি যুগলের মধ্যেই Xq28 মার্কারের যথেষ্ট মিল রয়েছে, বাকি ৭টি যুগলের Xq28 মার্কারে কোনো মিল পাওয়া যায় নি। যদি এই জেনেটিক মার্কারটি(Xq28) সমকামিতার অত্যাবশ্যকীয় নিয়ামক হত, তাহলে তো বাকি ৭ জোড়া ভাইয়ের মধ্যেও মিল থাকত। কিন্তু সেরকমটা তো নেই! আবার সমকামিতার সাথে যে এই মার্কারটির কোনো সম্পর্কই নেই, এরকমটা বলারও কিন্তু কোনো উপায় নেই। কারণ সমকামিতার সঙ্গে যদি এই Xq28 জীনের কোনো সম্পর্ক না-ই থাকত, তবে বাকি ৩৩ জোড়া ভাইয়ের মধ্যেও Xq28-এর কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যেত না। অথচ এখানে দেখা যাচ্ছে যে ৩৩ জোড়া ভাইয়ের Xq28-এর মধ্যে উচ্চমাত্রার মিল রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে পুরুষের সমকামী প্রবৃত্তির সাথে এই Xq28-এর কিছুটা হলেও সম্পর্ক রয়েছে। আর বাকি ৭ জোড়া ভাইয়ের মধ্যে Xq28-এর মিল না থাকায় এটাও প্রমাণিত হয় যে, Xq28-ই সমকামী প্রবৃত্তির একমাত্র নিয়ামক নয়, বরং এক্স-ক্রোমোজোমেই এমন আরো জেনেটিক মার্কার রয়েছে যা বংশানুক্রমে সমকামিতাকে ত্বরান্বিত করে থাকে।
ডিন হ্যামারের এই গবেষণায় সমকামী প্রবৃত্তির প্রধান বা অত্যাবশ্যকীয় নিয়ামক তথা “গে জীন” সুনির্দিষ্টভাবে সনাক্ত না হলেও এটা অন্তত নিশ্চিতভাবেই প্রমাণিত হয়েছে যে সমকামিতা একটি জীন তাড়িত বৈশিষ্ট্য, যাকে গায়ের জোরে পরিবর্তন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
(সূত্রঃ
*NCBI জার্নালে প্রকাশিত ডিন হ্যামারের গবেষণাপত্রঃ http://bit.ly/2tfRapf
* Dean Hamer Talks About Gay Gene Study and Research on Sexual Orientation: https://youtu.be/9zno8e4R6gA )

পরিশিষ্টঃ
মফিজ মিয়া আজ বেচে নেই। তার সাঙ্গপাঙ্গদেরও অনেক বয়স হয়ে গেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই গ্রামে শান্তি ফিরে আসার কথা। কিন্তু না, গ্রামে শান্তি ফিরে আসে নি। বরং অশান্তি যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে! আর এই অশান্তির কারণ মফিজ মিয়ার সাঙ্গপাঙ্গদের নাতিপুতিরা। তারা এখন পশু শিকারের মতই পুরো গ্রামে নীল চোখের মানুষ শিকার করে বেড়ায়! যখনই খবর পায় এ গ্রামের কারো চোখ নীল, সঙ্গে সঙ্গে দলবল নিয়ে হামলা চালায় তার বাড়িতে, তাকে মারধর করে, তার ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে ভস্ম করে দেয়! এ গ্রামে তারা কারো নীল চোখ বরদাস্ত করবে না। কিছুদিন আগে তারা খবর পেয়েছিল গ্রামের পাঠশালায় নীল চোখের এক কিশোর পড়ে। ওমনি তারা লাঠিসোটা, রামদা, চাপাতি নিয়ে পুরো পাঠশালা ঘেরাও করল। পাঠশালার গুরুমশাই বেচারা আর কী করবে? এদের কথা না শুনলে যে তার পাঠশালাই থাকবে না আর! অগত্যা গুরুমশাই সেই নীল চোখের ছেলেটিকে বের করে দেন পাঠশালা থেকে। এরপর কতদিন যে তাকে "চোখ সংখ্যাগরিষ্ঠ"দের হাতে থেকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে, তা সে নিজেও জানে না!
যাক মফিজ মিয়ার গ্রামের কথা! এবার মফিজ মিয়ার গ্রাম থেকে আমাদের শহরে ফিরে আসা যাক। কিছুদিন আগে ISTT থেকে বের করে দেয়া হয় সেখানকার এক ছাত্রকে, তার নাম নাবিল। নাবিলের অপরাধ- সে একজন সমকামী এবং সম্প্রতি সে একটা ইউটিউব চ্যানেলের ইন্টারভিউতে নিজেকে সমকামী বলে আত্মপ্রকাশ করেছে। আচ্ছা, নাবিলের নিজেকে সমকামী বলে আত্মপ্রকাশ করাটা বড় অপরাধ, নাকি সমকামী হয়েও বিষমকামী সাজা, চারপাশের সবার কাছে নিজেকে বিষমকামী বলে মিথ্যাচার করা, বিপরীত লিঙ্গের কাউকে বিয়ে করে একই সঙ্গে নিজের এবং তার জীবন নষ্ট করে দেয়াটা বড় অপরাধ? আমাদের আশেপাশে এমন অনেক সমকামীরাই আছে যারা সমাজের ভয়ে বিষমকামী সেজে থাকে এবং একটা সময় পর সমাজের চাপে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে বিয়ে করে ফেলে। কিন্তু শত হলেও তো সে একজন সমকামী! একজন বিষমকামীর সঙ্গে সে কী করে সংসার করবে? ফলাফল স্বরূপ তাদের দু’জনের জীবনেই নেমে আসে অশান্তির কালো ছায়া। এভাবে দু দু’টো জীবন হয়ত নষ্ট হত না, যদি সে আগেই নিজেকে সমকামী বলে আত্মপ্রকাশ করতে পারত। ঠিক এই কারণেই নাবিল নিজের সমকামিতাকে চেপে রেখে বিষমকামী সেজে থাকতে চায় নি, সে চায় নি দ্বিতীয় কারো জীবন নষ্ট হওয়ার কারণ হতে! আর তাই সে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে আত্মপ্রকাশ করেছে। তার এই সাহসিকতা নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাবার যোগ্য।

যারা এই ভেবে সমকামীদের সমাজ ছাড়া করতে ব্যস্ত যে তাদের দেখাদেখি সমাজের বিষমকামীরাও সমকামী হয়ে যাবে, তারা একটু চিন্তা করে একটা প্রশ্নের উত্তর দিন তো! সমকামীরা কি তাদের আশেপাশের বিষমকামীদের দেখে বিষমকামী হয়ে যায়? না, যায় না। তাহলে আপনাদের মনে এই ধারণা কোথা থেকে এলো যে বিষমকামীরা আশেপাশের সমকামীদের দেখে সমকামী হয়ে যাবে?! আরো একটা কথা, চোখে কালো রঙের লেন্স পড়লেই যেমন নীল চোখ সত্যি সত্যি কালো হয়ে যায় না, তেমনি সমাজের চাপে একজন সমকামী বিষমকামী সাজলেই সে বিষমকামী হয়ে যায় না। ইতোমধ্যেই বলা হয়েছে, সমকামীদের মস্তিষ্কের তৃতীয় ইন্টারস্টিয়াল নিউক্লিয়ি অব দ্য এ্যান্টেরিয়র হাইপোথ্যালামাস(INAH3)-এর গঠনের ভিন্নতা এবং এক্স-ক্রোমোজোমে “গে জিন”-এর উপস্থিতির কারণেই মূলত তারা সমকামী হয়। সুতরাং একজন সমকামী হাজার চেষ্টা করলেও কখনোই বিষমকামীতে পরিণত হতে পারবে না। তার সমকামিতা তার হাতে নয়, প্রকৃতির হাতে। আর প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাওয়ার ফলাফল যে বরাবরই অশুভ, ইতিহাসই তার সাক্ষী!
পরিশেষে একটা কথাই বলব- গল্পের নীল চোখওয়ালাদের প্রতি মফিজ মিয়া, মফিজ মিয়ার সাঙ্গপাঙ্গ এবং তাদের নাতিপুতিদের যে নিষ্ঠুর আচরণ, তার চাইতেও অনেক বেশি নিষ্ঠুর আচরণ আমরা যুগ যুগ ধরে করে আসছি সমকামীদের সঙ্গে! আমরা তাদের ওপর জোরপূর্বক বিষমকামিতা চাপিয়ে দিচ্ছি; তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের চাপের মুখে পড়ে বিষমকামী সাজছে, আর বাকি যারা বিষমকামী সাজতে পারছে না তাদেরকে আমরা একঘরে করে দিচ্ছি। একবার নিজেদের জায়গায় তাদের এবং তাদের জায়গায় নিজেদের দাঁড় করিয়ে ভাবুন তো, এভাবে বেঁচে থাকার অনুভূতিটা ঠিক কীরকম! কী? ভাবনার শক্তি কিছু অবশিষ্ট্ আছে তো? নাকি সেটাও সপে দিয়েছেন মফিজ মিয়াদের কাছে?!

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:২৮

গ্যাব্রিয়ল বলেছেন: সমকামী ছেলেরা যদি স্বাভাবিক মেয়েদের মত হয় আর সমকামী মেয়েরা যদি স্বাভাবিক ছেলেদের মত হয় তাহলে সমকামী মেয়েরা সমকামী ছেলেদের বিয়ে করুন। তারপর ছেলে মেয়ের মত আর মেয়ে ছেলের মত সংসার করতে থাকলো। ... :D :D X( :D

১৮ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:১৪

দেওয়ান তানভীর আহমেদ বলেছেন: অত্যন্ত অযৌক্তিক একটা কথা বললেন। সমকামীরা সবসময়ই সমলিঙ্গের প্রতিই আকৃষ্ট হয়। সমকামী ছেলেরা সমকামী হলেও তারা ছেলেই, তাই তারা ছেলেদের প্রতিই আকৃষ্ট হবে। একই কথা সমকামী মেয়েদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আর সমকামী ছেলেরা স্বাভাবিক মেয়েদের মত এবং সমকামী মেয়েরা স্বাভাবিক ছেলেদের মত কেন হবে??
সমকামী আর বিষমকামীদের মস্তিষ্কের মধ্যে শুধু একটা অংশেরই পার্থক্য থাকে, যেটা এই প্রবন্‌ধে অনেকবার উল্‌লেখ করা হয়েছে! ঐ একটা অংশের কারণে তাদের কেবল যৌন প্রবৃত্তিই আলাদা হয়, আর কিছুই না।

২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:১১

রিয়াদ হাকিম বলেছেন: চোখের উদাহরণ টি সুন্দর হয়েছে।

1. আমি এমন কিছু পুরুষ মানুষ দেখেছি যাদের সেক্সের জন্য প্রায়োরিটি মেয়ে, কিন্তু মেয়ে মানুষ না পেলে তারা যৌন তাড়না নিবৃত্ত করার জন্য কম বয়সী সুন্দর ছেলেদের সাথে সেক্স করতে আগ্রহী হয়।

2. শুনেছি, রাজা বাদশাহ রা (স্বেচ্ছায়) তাদের হেরেমে মেয়েদের সাথে অল্প বয়সী সুন্দর ও কোমল ছেলেদের ও রাখতেন। বা আজকের যুগে অনেক বিবাহিত পুরুষ ও কখনো কখনো কাজটা করে থাকে। এটা হচ্ছে - মুখে অরুচি ধরে গেছে তাই অনেকটা তরকারির মধ্যে একটু ভিন্ন স্বাদের মসলা দেওয়ার মতো একটা ব্যপার।

এই দুই শ্রেণীর ব্যপারে আপনার মন্তব্য কি? এদের কি সমকামী (বা উভকামী) বলা যায়? কিন্তু এদের কাউকেই কিন্তু ছেলেদের সাথে বিয়ে করার অনুমতি ও বৈধতা দেয়া হলেও এর করবেনা। কারণ এদের সেক্সের জন্য প্রায়োরিটি কিন্তু মেয়ে।

১৮ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:১২

দেওয়ান তানভীর আহমেদ বলেছেন: প্রথম কথা হচ্ছে, একজন সমকামী কখনোই বিষমকামী হতে পারে না, আর একজন বিষমকামীও পারে না চাইলেই সমকামী হতে। এটা বায়োলজিক্যাল ব্যাপার, "চাইলেই হয়ে গেলাম" টাইপ ব্যাপার না।
এখন আসি আপনার প্রশ্নের উত্তরে। একটা মানুষ যখন বিপরীত লিঙ্গের কারো প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে, তখনই চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায় যে সে আপনার আমার মতই বিষমকামী। তার কোনোভাবেই সমলিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কথা না। কিন্তু তবুও অনেক সময় দেখা যায় একজন লোক বিষমকামী হয়েও কমবয়সী ছেলেদের সাথে যৌনকর্ম করছে। এরকমটা বেশি দেখা যায় মাদ্রাসা, বয়েজ স্কুল, ক্যাডেট কলেজ, জেলখানা এসব জায়গায়। এই ধরনের লোকদের যৌনতার নেশা সাধারণত অনেক বেশি হয়, এতটাই বেশি যে কখনও কখনও তাদের মনে হয় যে দিনে একবার যৌনকর্ম করতে না পারলে যেন তারা মারা যাবে! এই ধরনের সেক্স কাতর লোকেরা যখন দীর্ঘদিন নারীসঙ্গ থেকে দূরে থাকে, তখন তারা আশেপাশে যাকে পায় তাকে দিয়েই নিজের যৌন চাহিদা মিটিয়ে নিতে চায়। এরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কমবয়সী ছেলেদেরকে নারীর বিকল্প কিংবা নারী হিসেবে কল্পনা করে নিয়ে তাদের দিয়ে নিজের চাহিদা মেটায়। অর্থাৎ তারা বলতে গেলে নিজেরাই নিজেদের সাথে এক প্রকার প্রতারণা করতে থাকে। আর নিজেদের সাথে প্রতারণা করে যারা আনন্দ পায়, তাদের মানসিকভাবে অসুস্থই বলা চলে। এধরনের লোকদের কোনোভাবেই সমকামী বলা যেতে পারে না। কারণ তারা ছেলে শিশুদের মেয়ে হিসেবে কল্পনা করে নিয়ে সেক্স করছে একটা সাময়িক প্রশান্তির জন্য, তারা ছেলেদের প্রতি আকর্ষণ থেকে এটা করছে না। আর একটা সময় পর যখন তারা নারীসঙ্গ পাচ্ছে, তখন তারা এই সময়টার কথা ভুলে যাচ্ছে। এদেরকে বড়জোর উভকামী বলা যেতে পারে। এবং এদের প্রবৃত্তিকে অসুস্থতার কাতারে ফেললেও সেটা ভুল হবে না।
এই ধরনের অসুস্থ মানুষদের জন্য আমরা অবশ্যই সমকামীদের দোষারোপ করতে কিংবা শাস্তি দিতে পারি না। এদের মানসিক অসুস্থতার দায়ভার তো আর সেই সমকামীদের না যারা কিনা জন্মগতভাবেই সমকামী!

৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৪২

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: অতি দুর্বল সব যুক্তি দিয়েছেন। সমকামীতা একটি বিকৃত মানসিক অবস্থা।
ডাক্তারি পরিভাষায় সমকামীতাকে সমর্থন করা হয়েছে বলা হলেও সেটাও অযুহাত
মুলত এই বিষয়টা ডাক্তারী ভাষায় হিজড়াদের বলা হয়েছে।

হিজড়া আর সমাকামী এক নয় বুজতে হবে।

যদি মানসিক বিকৃতিকে জায়েজ করতে চান , তাইলে রেপিস্ট , শিশু যৌনতাকেও জায়েজ করা হবে এই জায়েজ প্রকল্পের ২য় ধাপ।

আমার যুক্তি মানবেন না জানি, কিন্‌তু আমি একজন সোশ্যাল সাইকো কাউন্সিলর, আমি আমার একাধীক কাউন্সিলিং ক্লায়েন্ট যারা সমাকামী তাদের কাউন্সিলিং এর অভিজ্ঞতা থেকেই বললাম। বিষয়টা সম্পুর্ন মানসিক বিকৃতি ব্যাতিত আর কিছুই নয়। হিজড়াদের
প্রেক্ষিতে বলা যুক্তিটা সমাকামীরা নিজেদের বলে চালায় দিতেছে আর কিছু টাউট ডাক্তার স্বার্থে বিষয়টাকে বাতাস দিতেছে।

৪| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৭

নতুন নকিব বলেছেন:



সমকামিতা নিয়ে আমার কিছু মতামত ব্যক্ত করেছি 'সৈকত বিআইএইচআর' এর 'আনন্দ উৎসব থেকে সমকামী যুবক গ্রেফতার: মানবাধিকারে ওপর চপেটাঘাত!' পোস্টে।

দেওয়ান তানভীর আহমেদ,
আপনি যদি দয়া করে ঐ পোস্ট থেকে আমার মন্তব্যগুলোতে একটু চোখ বুলিয়ে আসতেন! লিঙ্ক দিচ্ছি-

আনন্দ উৎসব থেকে সমকামী যুবক গ্রেফতার: মানবাধিকারে ওপর চপেটাঘাত!

ভাল থাকুন।

৫| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৪২

রিফাত_হাসান বলেছেন: ১। সামান্য নীল চোখের জন্য দুই কিশোরকে হত্যা করতে বলা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত খারাপ কাজ। ছেলে দুটির জন্য আমার সমবেদনা!

২। গায়ের রঙ কালো হওয়া, চোখে রঙ নীল হওয়া, চুলের রঙ সোনালী হওয়া আর সমকামী হওয়া একই ব্যাপার। হা হা হা।

৩। গবেষণায় কোন সমকামী মহিলাকে নেওয়া হয়নি। ১৯ জন ছিলেন পুরুষ হোমোসেক্সুয়াল (যার মধ্যে সকলেই এইডস রোগী)। ১৬ জন ছিলেন পুরুষ হেটেরোসেক্সুয়াল আর ৬ জন ছিলেন নারী হেটেরোসেক্সুয়াল।

জার্নালের একদম শেষে লেখক বলেছেন INAH3 এর আকার ছোট বড়- সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেসন (হেটেরো বা হোমো সেক্সুয়াল) এর কারণে হতে পারে আবার উল্টোটাও হতে পারে, মানে হেটেরো বা হোমো সেক্সুয়াল বলেই INAH3 এর আকার ছোট বড় হতে পারে। এছাড়া হোমো সেক্সুয়াল পুরুষদের সবাই এইডস রোগী ছিলেন, এটাও INAH3 এর আকারের জন্য দায়ী হতে পারে।

** তিনি ১৬ জন পুরুষ সমকামী এবং ৬ জন স্ত্রী সমকামীর হাইপোথ্যালামাসের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করলেন। দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষা চালানোর পর তিনি যে ফলাফল পেলেন তা হল, সমকামী পুরুষদের INAH3 বিষমকামী পুরুষদের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ ছোট। অর্থাৎ সমকামী পুরুষদের INAH3-এর আকার নারীদের INAH3-এর সমান! অন্যদিকে সমকামী নারীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, তাদের INAH3 আকারে বিষমকামী নারীদের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বড়, অর্থাৎ পুরুষদের INAH3-এর সমান! আর এই কারণেই সমকামী পুরুষদের যৌন প্রবৃত্তি হয় নারীদের মত, এবং সমকামী নারীদের যৌন প্রবৃত্তি হয় পুরুষদের মত।**

এই কথা কোথায় পাইলেন ভাই।

৪। ক্রোমোজমের মার্কার আর জিন এক জিনিস না। অবশ্য আপনিও এটা মেনে নিয়েছেন। মজার ব্যাপার হল, ধর্ষকদের মধ্য গবেষণা করেও জেনেটিক সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ধর্ষণের দায়ে জেলে গিয়েছে, তাদের পরিবারের অন্যান্য পুরুষেদের নরমাল পুরুষ থেকে পাঁচগুণ বেশি ধর্ষক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এর মানে এই না যে ধর্ষণকে একটি প্রাকৃতিক ব্যাপার বলে চালিয়ে মেনে নিতে হবে বা এর পক্ষে সাফাই গাইতে হবে।



৬| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৮

মানুষ জিহাদ হাসান বলেছেন: লেখক খুব সুন্দর গোছানো লেখায় অভ্যস্থ বুঝা যায়।বিগ্যানের গবেষনা লব্ধ বেশ কিছু বিশ্লেষন দিয়েছেন।সর্বোপরি সমকামিতার পক্ষে মতামত ও যুক্তি উপস্থাপন করেছেন।মফিজ মিয়ার স্থলে যদি একজন (একদল)ধর্ষক/গ্যাং রেপার কল্পনা করি,স্বাভাবিক যৌনতা যারা অপছন্দ করে।পৃথিবী প্রায় সব সমাজে/দেশে এরকম মন মানসিকতার সংখ্যা লঘু মানুষ থাকে।তাদের ব্রেন নিয়ে গবেষনা করেও যদি এরকমই তথ্য পাওয়া যায় যে,তারা স্বাভাবিক সেক্সে সন্তুষ্ট থাকতে পারে না,তাই ধর্ষন/গ্যাং রেপ ইত্যাদি তাদের সাধারন যৌন চাহিদা,সম্মানিত লেখক ভাই তখন কি তাদের জন্যও সাধারন,অবলা নারীদেরকে শিকার বানানোর লইসেন্স দিতে হবে? দয়া করে উত্তর দিবেন,(গবেষনার ফল আসার জন্য অপেক্ষা করতে বলবেন না)।

৭| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৯

দেওয়ান তানভীর আহমেদ বলেছেন: অনেকেই অনেক রকম কমেন্ট করেছেন। ধন্যবাদ সবাইকে কমেন্ট করে নিজেদের মূল্যবান মতামত জানাবার জন্য।
অনেকেই সমকামিতার বিপক্ষে খোড়া থেকেও খোড়া সব যুক্তি দেখিয়েছেন। কেউ কেউ তো আবার "ধর্ষণকে প্রাকৃতিক ব্যাপার বলে চালানো", "ধর্ষকদের লাইসেন্স দেওয়া" ইত্যাদি নানান ধরনের অযৌক্তিক এবং অবান্তর কথাবার্তা টেনে আনছেন! এই লেখাটিতে কী বলা হয়েছে তা ঠিকমত না বুঝেই আপনারা চলে এসেছেন তর্ক করতে, যেন আপনারা একদম শপথ নিয়ে বসে আছেন যে সমকামীদের পক্ষে যতই অকাট্য যুক্তি থাকুক আপনারা কিছুতেই তা মানবেন না! এই ধরনের লোকদেরকে আমার সত্যিই কিছু বলার নেই।
আর যারা উপরিউক্ত শ্রেণীভুক্ত নন, যারা যৌক্তিক আলোচনা করতে চান, তাদের জন্য আমি কিছু সোর্স দিয়ে দিচ্ছি। আশা করি আপনারা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ।

*Byne W, Tobet S, Mattiace LA, et al.(September 2001). "The interstitial nuclei of the human anterior hypothalamus: an investigation of variation with sex, sexual orientation, and HIV status". Horm Behav 40(2): 86-92.
*Allen LS, Gorski RA(1992). "Sexual orientation and the size of the anterior commissure in the human brain". Proc. Natl. Acad. Sci. USA. 89(15): 7199-202. doi: 10.1073/pnas.89.15.7199
*Simon Levay and Dean H. Hamer, Evidence for a Biological Influence in Male Homosexuality, Scientific American, May 1994.
*"সমকামিতাঃ একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান"- অভিজিৎ রায়
*সমকামিতা কি মানসিক ব্যাধি? Click This Link

৮| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৮

তাতিয়ানা পোর্ট বলেছেন: Vai, jara show kichu religion er upor base kore taderke echo journal diye kono lav nei.

২১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:২১

দেওয়ান তানভীর আহমেদ বলেছেন: @তাতিয়ানা পোর্ট, ঠিক বলেছেন। কিন্তু সত্যিটা সবার সামনে তুলে ধরতে তো দোষ নেই। আজ এরা এদের অজ্ঞতার কারণে যেটা বুঝতে পারছে না, কাল যখন জানবে তখন ঠিকই বুঝবে।

৯| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৯

তাতিয়ানা পোর্ট বলেছেন: eshob*

১০| ২১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:২২

দেওয়ান তানভীর আহমেদ বলেছেন: অনেকেই না জেনে না বুঝে শুধুমাত্র তর্কের খাতিরেই নানান রকমের খোড়া যুক্তি দেখিয়ে যাচ্ছেন! আপনাদের কমেন্ট-ই বলে দিচ্ছে আপনাদের পড়াশোনার দৌড় কোন পর্যন্ত! তর্কের খাতিরেই কমেন্ট করুন, আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু একটাই অনুরোধ, যে বিষয়ে তর্ক করবেন, সে বিষয়ে অন্তত পড়াশোনা করে আসুন। কোনো রকম স্টাডি ছাড়াই পুরনো ধ্যান ধারনাকে আকড়ে ধরে রেখে অন্ধের মত তর্ক করে যাওয়া পাবলিকদের সাথে কোনো রকম কথা বাড়াতে আমি রাজি নই।
ধন্যবাদ।

১১| ২১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:২৭

তাতিয়ানা পোর্ট বলেছেন: You gave the most accurate reply to Nokib's comment in the previous post. Good job!

১২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৪৬

দেওয়ান তানভীর আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.