নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেওয়ান তানভীর আহমেদ

দেওয়ান তানভীর আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুভি এবং ওয়েব সিরিজ সাজেশন(পর্ব-০২)

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:৫৩

হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে থাকতে যারা হাপিয়ে উঠছেন, কী করে সময়গুলো পাড় করবেন ভেবে পাচ্ছেন না এবং হাঁসফাঁস করছেন বাইরে বেরোবার জন্য, তাদেরকে আমি কাহিনী সংক্ষেপ সহ কিছু মুভি সাজেস্ট করছি। এই মুভিগুলো দেখতে দেখতে আপনার সময় কোন দিক দিয়ে কেটে যাবে, আপনি টেরও পাবেন না!
আপনাদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, আপনারা বাসায় বসে মুভি দেখুন, ওয়েব সিরিজ দেখুন, বাসায় যদি বই থাকে এবং বই পড়ার নেশা যদি থাকে তবে বই পড়ুন। তবুও প্লিজ আপনারা বাসা থেকে বেরোবেন না। এই মুহুর্তে নিজে নিরাপদ থাকার জন্য এবং আশেপাশের সবাইকে নিরাপদে রাখার জন্য গৃহবন্দী হয়ে থাকাটাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা... :)

মুভি সাজেশনঃ

১) ঢাকা অ্যাটাকঃ

লাশের পকেটে হাসি কেন? ভাড়াটে অপরাধীরা একে একে খুন হয়ে কীসের অশনি সংকেত দিতে চাইছে? পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে ধাঁধাঁয় ফেলে দেয়া মাস্টারমাইন্ড আতঙ্কবাদী আসলে কী চায়? তার উদ্দেশ্য কী? তার পরবর্তী টারগেট কে? বা কারা?? পুলিশ কি পারবে তাকে ধরতে? পারবে তার পৈশাচিক ধ্বংসলীলা থামাতে?? নাকি সেই চিতার চাইতেও ধূর্ত আতঙ্কবাদীর বোণা জালে পুলিশও জড়িয়ে পড়বে?? পুলিশও কি তবে তার পৈশাচিক আনন্দের খোরাকে পরিণত হবে??? তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার অধিকারী এসি আবিদ রহমান কি পারবে খলনায়কের তৈরি করা জটিল ডিজাইনের বোম্বটি ডিফিউজ করতে? সোয়াট কমান্ডার আশফাক কি নিজের ডিউটি ছেড়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর কাছে ছুটবেন? মানসিক বিকারগ্রস্থ জিসানেরই বা কী পরিণতি হবে??!!!
ওপরের সব প্রশ্নের উত্তর একে একে পাওয়া যাবে, কিন্তু সেটা অবশ্যই টানটান উত্তেজণায় ভরপুর এই চলচ্চিত্র "ঢাকা অ্যাটাক" দেখার পর।

২) কালের পুতুলঃ

রশিদ আহমেদ নামের এক রয়স্যময় ব্যক্তির আমন্ত্রণে একটি জনমানবশূণ্য পাহাড়ের চূড়ায় একটি নিরিবিলি রিসোর্টে বেড়াতে আসেন দশজন অতিথি, যাদের একজন রাজনীতিবিদ, একজন জমির দালাল, একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার, একজন সমাজসেবী, একজন ব্যবসায়ী, একজন সেই ব্যবসায়ীর নেশাগ্রস্ত প্রেমিকা, একজন নার্স, একজন মডেল, একজন ফটো জার্নালিস্ট এবং একজন ভাড়াটে খুনী। তাদেরকে সেখানে স্বাগত জানায় সেখানকার কেয়ারটেকার কেনেডি। কেনেডি মাত্র অল্প কয়েকদিন আগেই এই রিসোর্টের কেয়ারটেকার হিসেবে চাকরি নিয়েছে। এবং আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, যেই রশিদ আহমেদের রিসোর্টে সে কেয়ারটেকারের চাকরি করছে, সেই রশিদ আহমেদকে সে কখনো দেখেই নি!
রহস্যময় রশিদ আহমেদ তো আর তাদের সামনে আসে না, কিন্তু এক এক করে খুন হতে থাকে রিসোর্টের সবাই। আর যতবারই নতুন একজন খুন হয়, প্রত্যেকবারই শোকেসের ওপর সাজিয়ে রাখা পুতুলগুলোর ভেতর থেকে একটা করে পুতুল অদৃশ্য হয়ে যায়!
(চলচ্চিত্রটির কাহিনী আগাথা ক্রিস্টির "And then there were none" উপন্যাসটি থেকে অনুপ্রাণিত।)

৩) এক যে ছিলো রাজাঃ

মহারাজা মহেন্দ্রকুমার চৌধুরী তার জীবনে দু'টো ভূমিকায় অভিনয় করেন। প্রথমত, এমন একজন রাজা, যে কিনা মদ এবং পতিতা নিয়ে আমোদ ফূর্তি করতে ভালোবাসে। দ্বিতীয়ত, এমন একজন রাজা, যে কিনা তার প্রজাদের অসম্ভব ভালোবাসে এবং নিজের সর্বশক্তি দিয়ে হলেও প্রজাদের গায়ে ফুলের টোকাও লাগতে দেয় না। তার দ্বিতীয় ভূমিকার জন্যে বেশিরভাগ প্রজারাই যেমন তাকে ভালোবাসে, তেমনি তার প্রথম ভূমিকার জন্যে অনেকেই তাকে প্রচণ্ড ঘৃণাও করে। দ্বিতীয় যারা তাকে প্রচণ্ড ঘৃণা করে, তাদের ভেতরে অন্যতম তার নিজের শ্যালক-ও। শ্যালকের ষড়যন্ত্রের জালে জড়িয়ে এক পর্যায়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন মহারাজা। তাকে দার্জিলিং-এর একটি শ্মশানঘাটে নিয়ে গিয়ে দাহ-ও করা হয়।
কিন্তু কয়েক বছর না যেতেই একজন সন্ন্যাসী এসে দাবি করেন তিনিই মহারাজা মহেন্দ্রকুমার চৌধুরী। কিন্তু তিনি যদি মহারাজা হন, তবে চিতায় যাকে পোড়ানো হলো সে কে? সে কি তবে অন্য কেউ?!
মহারাজা কি তবে সত্যি সত্যিই সন্ন্যাসীর বেশে ফিরে এলেন? নাকি সন্ন্যাসীর বেশে মহারাজা মহেন্দ্রকুমার চৌধুরীর মত দেখতে এই লোকটি স্রেফ একজন তৃতীয় শ্রেণির প্রতারক?!

৪) শাহজাহান রিজেন্সিঃ

শঙ্করের "চৌরঙ্গী" পড়া আছে? হ্যাঁ, ২০১৮ সালে "শাহজাহান রিজেন্সি" চলচ্চিত্রটি মূলত মণি শঙ্কর মুখার্জি ওরফে শঙ্করের লেখা উপন্যাস "চৌরঙ্গী"-এরই জাতিস্মর। ১৯৬২ সালে লেখা সেই "চৌরঙ্গী" উপন্যাসটিকে আধুনিকায়ন করেই নির্মাণ করা হয়েছে এই চলচ্চিত্রটি।
দেশের বড় বড় শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, সমাজসেবী থেকে শুরু করে নামকরা চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা, অভিনেত্রী, মডেলদের ভেতরের আসল রূপটা বেরিয়ে আসে শাহজাহান রিজেন্সির মত ফাইভ স্টার হোটেলগুলোর জোড়া স্যুইটে ঢোকার পর। ভেতরে-বাইরে একই রকম রয়ে যায় কেবল ফাইভ স্টার হোটেলগুলোর একেকজন স্টাফ, যারা প্রত্যেকেই এই সবকিছুর নীরব দর্শক এবং স্বাক্ষী।

৫) গুমনামিঃ

জীবন-মৃত্যুর দোলাচলে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু কখনও বেঁচে ছিলেন, কখনও শহীদ হয়েছিলেন। কখনো প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একজন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে, আবার কখনো সম্মানিত হয়েছেন বৃটিশ বিরোধী সংগ্রামের এক অকুতোভয় নেতা এবং বীর সৈনিক হিসেবে। কখনো বলা হয় তিনি প্লেইন ক্র্যাশে মারা গিয়েছিলেন, আবার কখনো শোনা যায় তিনি স্বাধীন ভারতে ফিরে এসেছিলেন এক সন্ন্যাসীর বেশে।
নেতাজী কি আসলেই মারা গিয়েছিলেন প্লেইন ক্র্যাশে? সেই প্লেইন ক্র্যাশ কি আদৌ হয়েছিলো? যদি প্লেইন ক্র্যাশ আসলেই হয়ে থাকে, এবং সেই প্লেইন ক্র্যাশে যদি নেতাজী সত্যি সত্যিই মারা গিয়ে থাকেন, তবে কে এই ফৈজাবাদের রহস্যময় সন্ন্যাসী গুমনামি বাবা?!

৬) দ্বিতীয় পুরুষঃ

২৫ বছর আগের পুরনো প্যাটার্ন অনুসরণ করে হয়ে চলেছে একের পর এক খুন। পচিশ বছর আগের মতই খুন করার পর মৃতদেহগুলোর কপালে খোদাই করে লিখে দেয়া হচ্ছে- "খোকা"। আর মৃতদেহগুলো উদ্ধারও হচ্ছে ঠিক সেই জায়গাগুলো থেকেই, যেই জায়গাগুলোতে পচিশ বছর আগের সেই কুখ্যাত সন্ত্রাসী খোকা মানুষ খুন করে রেখে যেত, এবং যাবার আগে মৃতদেহের কপালে নিজের নাম খোদাই করে লিখে দিত। এই কেসের তদন্তে নিযুক্ত করা হয় নামকরা পুলিশ অফিসার অভিজিৎ পাকড়াশিকে। হ্যাঁ, সেই অভিজিৎ পাকড়াশি, "২২শে শ্রাবণ"-এ যে প্রবীর রায়চৌধুরীর খুনে কবির কেস সমাধান করেছিলো।
(এই মুভিটাকে "২২শে শ্রাবণ"-এর সিক্যুয়াল ভেবে এবং সৃজিত মুখার্জির মুভি ভেবে দেখলে দর্শককে কিছুটা হতাশ-ই হতে হবে প্রচণ্ড রকমের খাপছাড়া কাহিনী এবং প্রচুর প্লটহোলের কারণে। কিন্তু তারপরেও মুভিটা সবার দেখা উচিত অনির্বাণের অসাধারণ অভিনয় এবং শেষ পনেরো মিনিটের ভয়াবহ ট্যুইস্টের জন্য!)

৭) বর্ণ পরিচয়ঃ

একের পর এক খুন করে চলেছে এক অসুস্থ সিরিয়াল কিলার। এবং প্রতিটা খুন করার সঙ্গে সঙ্গে সে দিয়ে যাচ্ছে পরবর্তী খুনের ইঙ্গিত এবং একই সঙ্গে বলে দিয়ে যাচ্ছে তার পরবর্তী টারগেটকে বাঁচাবার উপায়। কিন্তু তার দিয়ে যাওয়া সেই মেসেজ সবার বোধগম্য হয় না। কারণ সেই মেসেজ বোধগম্য হতে হলে জানতে হবে- বর্ণ পরিচয়!

৮) Vikram Vedha:

বিক্রম বেতালের কাহিনী পড়া আছে? ঐযে রাজা বিক্রম আদিত্য যতবার বেতালকে বন্দী করে আনতে যায়, প্রত্যেকবারই বেতাল রাজা বিক্রমকে একটা করে নতুন গল্প শুনিয়ে পালিয়ে যায়? দক্ষিণ ভারতীয় থ্রিলার ঘরানার চলচ্চিত্র "Vikram Vedha" মূলত সেই "বিক্রম বেতাল"-এরই আধুনিক সংস্করণ, যেখানে রাজা বিক্রমের জায়গায় দেখা যাবে সৎ এবং নিষ্ঠাবান পুলিশ অফিসার বিক্রমকে, আর বেতালের জায়গায় দেখা যাবে অপরাধ জগতের মুকুটবিহীন সম্রাট(তথাকথিত) ভেধাকে।
(তথাকথিত কেন বললাম, সেটা চলচ্চিত্রটি দেখলেই দর্শক বুঝতে পারবেন।)

৯) Adanga Maru:

সুভাষ একজন সৎ এবং নিষ্ঠাবান সাব-ইনস্পেক্টর, যে আইপিএস পরীক্ষার জন্যে পড়াশোনা করছে। কিন্তু তার পুলিশের চাকরি থেকে সে বরখাস্ত হয় চারজন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করার কারণে। ধর্ষক চারজনের পরিবার শুধুমাত্র তাকে বরখাস্ত করিয়েই ক্ষান্ত দেয় না, তারা সুভাষের পরিবারের সবাইকে ভাড়াটে খুনী পাঠিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। তারা ভাবে এতে করে সুভাষের মনোবল সম্পূর্ণরূপে ভেঙে যাবে। কিন্তু না! সুভাষ অভিনব পন্থায় প্রতিশোধ নিতে শুরু করে। সে পুরো ছক এমনভাবে সাজায়, যেন চারজন ধর্ষকেরই মৃত্যু তাদের নিজেদের সেই বাবাদের হাতেই হয়, যাদের ক্ষমতার দাপটে আজ তারা ধর্ষণকেও কোনো অপরাধ বলেই মনে করে না!
(বিষয়বস্তু খুব কমন হলেও মুভিটা অসাধারণ)

১০) Gang Leader:

শুরুতেই দর্শকরা দেখতে পাবেন শহরের এক ব্যাংক থেকে ৩০০ কোটি টাকা রাতের আধারে চুরি করছে পাঁচজন লোক। সব টাকা চুরি হয়ে যাবার পর ব্যাংকের সামনে সেই পাঁচজনের লাশ পাওয়া যায়। টাকার কোনো হদিস-ই পাওয়া যায় না। অর্থাৎ ষষ্ঠ কেউ এই পাঁচজনকে মেরে সব টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে! যারা খুন হয়েছে তারা কোনো পুরনো আসামী নয়। তারা এর আগে কখনোই কোনো ধরনের কোনো অপরাধ করেনি। তাহলে তারা কেন এত বড় রকমের টাকা চুরি করার পরিকল্পনা করলো? অবশ্যই এর মধ্যে কোন খটকা আছে। চুরির ঘটনায় মারা যাওয়া পাঁচ ব্যাক্তির মধ্যে এক বুড়ি দাদীর নাতী একজন। ভারালাক্সমি নামের এক মহিলার ছেলে তাদের একজন। প্রিয়া নামের এক মেয়ের হবু স্বামী অভিনেশ তাদের একজন। সোয়াতির বড় ভাই কার্তিক এবং একটা বাচ্চা মেয়ের বাবাও তাদের মধ্যে একজন। সবার প্রিয়জন সেদিন ব্যাংক ডাকাতির পরে খুন হয়েছিলো। এখন এই পরিবারের সবাই চায় আসল অপরাধী যেন শাস্তি পায়। আর তাই তারা শরণাপন্ন হয় পেন্সিল পার্থসারথী নামের একজন রিভেঞ্জ থ্রিলার লেখকের, যার এ পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা আটাশ। কিন্তু যেই লেখক নিজেই লিখে বিদেশী সিনেমার কাহিনী নকল করে, তার মাথা থেকে কীভাবে বেরোবে প্রতিশোধের পরিকল্পনা?!
(৮ এবং ৯ নম্বরের হিন্দি ডাব বের হলেও এই সিনেমাটির হিন্দি ডাব এখনো আসে নি। এটা সাবটাইটেল দিয়েই দেখতে হবে।)
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

শীঘ্রই আমি আবার আসছি এই পোস্টের তৃতীয় পর্ব নিয়ে। তৃতীয় পর্বে থাকছে বেশ কিছু ওয়েব সিরিজের সাজেশন, সঙ্গে সিরিজগুলোর সিনোপসিস।
ততক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন, ঘরে থাকুন এবং সাবধানে থাকুন... :)

#Stay_at_home

মন্তব্য ১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।
সাউথ মুভি গুলয় সব গুলোই দেখছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.