মিথ্যে আর অপসংস্কৃতি দিয়ে সত্য চাপা দেয়া যাবে না......সত্যের বিজয় হবেই...

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৪

আজ যখন দেখলাম আমার ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে বাংলার মাটি......আমি চুপ করে থাকতে পারলাম না....আমি কখনো এতটা ধারণা করিনি যে বাংলাদেশের মাটিতে কুনো মানুষকে ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার আর কুত্সা রচনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রাণ দিতে হবে......তবে পাঞ্জাবি পায়জামা আর টুপি পড়লে যে হয়রানির শিকার হবে তা আগেই ভেবেছিলাম.....এই ভাবনার পিছনে কারণও আছে......



আমরা দাবি করি আমরা তরুণ,আমরা বুদ্ধিমান.....আমাদের বিবেক জাগ্রত......তবে আমাদের বিবেককে এই প্রশ্নগুলো করি????



১ >আমার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে কেউ একজন কতক্ষণ আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে???



২>আর আমার চিন্তা-চেতনা,আমার দৃষ্টিভঙ্গি,আমার চলন-বলন সবকিছুই যদি অন্যকেউ পাল্টে তারমত করে নেয় তবে সে কতক্ষণ আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে?????



আমি এর উত্তরে যা পেয়েছি.....



১>ততক্ষণ পর্যন্ত অন্যকেউ আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে যথক্ষন অস্ত্র আমার মাথায় ঠেকানো তাকবে অথবা যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি তার মাথায় আরেকটা অস্ত্র ঠেকাতে পারব......



এখানে অস্ত্র মানে শারীরিক বা বাহ্যিক শক্তি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বোঝানো হচ্ছে.....আমার মতে এই ধরনের নিয়ন্ত্রনের স্তায়িত্ব অনেক কম....ক্ষমতা চলে গেলেই আর নিয়ন্ত্রণ থাকে না.....



এটা অনেকটা একটা গাড়ির ম্যানুয়াল কন্ট্রোল এর মত....চালক যখন স্টিয়ারিং ঘুরাবেন তখন গাড়ি তার কথা মত চলবে.....স্টিয়ারিং ছাড়লেই গাড়ি আপন গতিতে চলবে....



২>কেউ যদি তার ভাবনাকে আমার ভাবনা বানিয়ে দেয়.....তার সপ্ন কে আমার সপ্ন বানিয়ে দেয় আমার অজ্ঞাতে....তবে তার দ্বারা আমাকে দির্ঘস্তায়ী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়ে যায়.....



আসলে কৌশলে যদি কারো অবচেতন মনের উপর প্রভাব ফেলা যায়...তার প্রতিফলন ঘটে সচেতন মনের কর্মকান্ডে....



এইটা আবার অনেকাংশে একটা গাড়ির অটো-কন্ট্রোলের মত.....একবার ভিতরের ফাংসনগুলো সেট করে দিতে পারলেই হলো.....চালকের ভুমিকা তখন অতি নগন্য হয়ে যায়....



ভাবছেন এসবের সাথে টুপি-পাঞ্জাবিওলাদের সম্পর্ক কি????এর উত্তরও খুব সহজ....



১৯৭১ সালে দেশপ্রেমিক জনতা জীবন দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন....আবার কিছু নির্মম সার্থান্বেষী লোক হানাদার বাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে অন্যায়-অবিচার করেছে.....



এখন আপনি কি মনে করেন যারা এইসব ভয়ঙ্কর অপরাধ করেছে তারা সবাই পাঞ্জাবি-টুপি পরত????এরা সবাই আলেম ছিল????এরা মসজিদের ইমাম ছিল????

যদি কারো মাথায় সামান্য পরিমানও ঘিলু থাকে,একথা বলবে না....



অথচ আজ অবধি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত নাটক-সিনেমায় সব রাজাকার টুপি আর পাঞ্জাবি ছাড়া আর কিছু পরেনি....বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখানো হয় রাজাকাররা আলিম বা ইমাম.....আমার জানামতে সমাজের প্রভাবশালী লোক যেমন স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বাররাই রাজাকার হিসেবে হানাদার বাহিনী কে সাহায্য করেছে.....



২০১৩ নব-জাগরণ.....এখানেও টুপি-পাঞ্জাবিওলাদের উপর সব আক্রোশ....যুদ্ধ অপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত সকল আলেমদেরকেই কেবল ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে.....আর যাদের বিরুদ্ধে সয়ং একজন বীরপ্রতিক মুক্তিযুদ্ধা সাক্ষী দিতে চান তাদের বিরুদ্ধে একটি স্লোগানও শুনা যায় না....



এইসব কর্মকান্ডে কি এটাই প্রমান করেনা যে টুপি-পাঞ্জাবিওলাদের উপর কিছু লোকের ক্ষুব অনেক পুরনো...এরা এ দেশের জন্মসূত্র থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সহ্য করতে পারছে না.....তারা চায়না এ দেশের মাটিতে ইসলাম থাকুক....

আর আমরা আমজনতা ওদের এই পরিকল্পনা না জেনে ওদেরকে সাহায্য করছি....কারণ ওরা আমাদের অবচেতন মনকে অনেক আগে থেকেই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে......



এখন আমাদের মধ্যে যাদেরকে ওরা এখনো অবচেতন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না....তাদের কে অস্ত্র ঠেকিয়ে নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছে.....আর তাই তারা আজ সাধারণ মুসল্লিদের উপর মসজিদে ঢুকে অত্যাচার করতে বিব্রতবোধ করছে না....নিরপরাধ কিশোরের বোকে গুলি করতে হাত কাপছে না....



অপসংস্কৃতি দিয়ে.....মিথ্যে দিয়ে ওরা সত্যকে আড়াল করতে চায়.....কিন্তু ওরা জানেনা তা অসম্ভব......কারণ আল্লাহ বলছেন



"ওরা চায় আল্লাহর নূরকে তাদের মুখ দিয়ে নিভিয়ে দিতে..কিন্তু আল্লাহ তার নূরকে পূর্ণাঙ্গ করতেই যাচ্ছেন,যদিও অবিশ্বাসীরা অপছন্দ করে."

(সূরা আস-স্বাফ, আয়াত-৮)



আসুন সবাই সত্য কে জানি...সত্য জানার চেষ্টা করি....এবং সত্যকে

সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে আকড়ে ধরে সর্বোত্তম কৌশল অবলম্বন করে ওদের মোকাবেলা করি...

যারা সত্যের পথে আজ ওদের অত্যাচার-অবিচারের শিকার...তাদের বলছি হতাশ হবেন না...আল্লাহ বলছেন ...



"অতএব দুর্বলচিত্ত হয়ো না ও অনুশোচনা করো না, কারণ তোমরাই হবে উচ্চপদস্থ যদি তোমরা বিশ্বাসী হও"

( সুরা আল-ইমরান,আয়াত ১৩৯ )

০ টি +০/-০