নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ব্লগারের সকল লেখাই সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

ধ্রুবক আলো

লেখকরা মনে মনে যত লেখা লিখেন তার ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ লিখেন কাগজে-কলমে। - হুমায়ুন আহমেদ

ধ্রুবক আলো › বিস্তারিত পোস্টঃ

উচ্চ মাধ্যমিক সনদ পরীক্ষার ফলাফল, দুরবর্তী ভবিষ্যত এবং সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে কিছু কথা

১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:০৭

অনেকদিন প্রতিক্ষিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে গতকাল ১৮ ই অগাস্ট বৃহস্পতিবার । যে সকল ছাত্রছাত্রীরা ভালো ফলাফল করে কৃতকার্য হয়েছে তাদের আন্তরিক প্রিতি ও শুভেচ্ছা রইলো আর যারা রেজাল্ট ভালো করতে পারেনি তাদের কে সান্তনা এবং সমবেদনা জানাই, পাশ ফেল পরীক্ষায় আছে এবং থাকবে। মন খারাপ করার কিছু নেই, সামনে জীবন আরও পরে আছে সেখানে মনোসংযোগ করতে হবে।
এবার রেজাল্ট এবং সুদূর ভবিষ্যতের ব্যপারে কিছু কথায় আসি। এবারের পাশের হার ৭৪.৭০% এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫৮হাজার২৭৬ জন, পাশের হার বেড়েছে ৫.০৪% ( সংবাদ থেকে পাওয়া)। এবার পাশের হারে মেয়েরা এগিয়ে আর ছেলেরা জিপিএ৫.০০ বেশি পেয়েছে। ভালো রেজাল্ট করা ও জিপিএ ৫.০০ পাওয়া খুবই আনন্দের এবং গর্বের বিষয়। কিন্তু আমরা যে রেসের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করছি তা কি সঠিক রেখায় আছে কি না তা চিন্তা করেছি কখনো। পাশ তো করেছি কিন্তু কি শিখলাম তা কি চিন্তা করে দেখেছে কেউ কখনো!!? এরপর আছে ভর্তি পরীক্ষার টিকে থাকা মানে ভালো মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার চ্যালেন্জ। তার মধ্যে সীট সঙ্কট এবং কোটার বেড়াজাল তো আছেই। আর প্রাইভেট ভার্সিটি তে তো সবাই পড়ালেখা করতে পারবেনা, এটাও একটা বড় সমস্যা! রেস কিন্তু থেমে নেই এবং থামার কোন সম্ভাবনাই নেই। "থ্রি ইডিয়টস্" মুভির একটা কথা বারবার মনে পরে, "Life is a Race" । কথা কিন্তু সত্য, জীবন টা আসলেই ঘোড়াদৌড়। কারন, কোথাও আমাদের থেমে থাকলে হবেই না, সবাই সবাইই প্রতিযোগিতা য় ব্যস্ত "প্রথম" হওয়ার প্রতিযোগিতা।

কি বিচিত্র জীবন, ভালো মানসম্পন্ন কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে না পড়তে পারলে ভালো শিক্ষা পাওয়া যাবে না। ভালো শিক্ষা না পেলে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা যাবে না। আর ভালো ফলাফল না করলে ভালো চাকুরী হবেনা, ব্যাংক ব্যালেন্স, বাড়ি-গাড়ি করা যাবে না। আর কোন বাবা তার মেয়েকে এরকম অযোগ্য ছেলের কাছে বিয়ে দিবেনা। সাভাবিক বিষয় বর্তমান জগতে তাই চলে আসছে।
কিন্তু রেস আর দুশ্চিন্তা থেমে নেই, চলছে অবিরত। কে কার আগে যাবে শুধু এটার রেস।! এটাই কি জীবন, আসলে এখন এটাই জীবনের প্রতিনিয়ত নিয়ম হয়ে গেছে। এরকম হওয়ার কথা ছিলো কখনো, সম্ভবত না। আজকাল আমরা কি শিক্ষা নিচ্ছি আর কি শিক্ষা দিচ্ছি। শুধু ভালো ফলাফল কি একজন মানুষের জীবনের সবকিছু। ভালো ফলাফল করতে পারলে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকা যাবে না হলে বাহির! জীবন ঝুলে আছে পাবলিশ্ড রেজাল্ট শীটের বোর্ডে অথবা ইন্টারনেটের ওয়েব পেজে। শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। কিধরনের শিক্ষা মেরুদন্ড হওয়া উচিত প্রশ্ন ফাস হওয়া শিক্ষা নাকি বানানো রেজাল্টের শিক্ষা। সুশিক্ষা বিলিন হয়ে যাচ্ছে কেমন করে যেন। শ্রেনীকক্ষের শিক্ষা এখন কোচিং সেন্টারে চলে গেছে, শুধু পাশ আর ভালো রেজাল্টের শিক্ষা। কোথায় যাচ্ছে দেশ, জাতি, সমাজ, শিক্ষা আর ভবিষ্যত।

জন্মের পর থেকেই আমাদের শিক্ষা দেয়া হয় বড় হতে হবে, শিক্ষিত হতে হবে ডাক্তার কিংবা ইন্জিনিয়ার হতে হবে। মগজে এরকম কিছু শক্ত পেরেক ঠুকে দেয়া হয়। নিজের মতন করে একটুও বেচে থাকা হয়না। শুধু রেস আর প্রতিযোগিতা এভাবে বেচে থাকা। কতকাল আর এভাবে চলবে, কতকাল এই ধরনের রেইস চলবে। জীবনের অধিকাংশ সময়ই পড়ালেখায় শেষ হয়ে যাচ্ছে এটাই কি কাম্য ছিলো।
সকল ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যত ওই পাবলিশ্ড বোর্ডে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তুমি ভালো জিপিএ পেয়েছো তুমি প্রতিযোগিতায় টিকে গেছো আর তুমি খারাপ জিপিএ পেয়েছো তুমি টিকতে পারলে না। আবারও পিছিয়ে পরা। মানুষের মধ্যে "বৈষম্য" ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা জীবন থেকেই শিখিয়ে দেয়া হচ্ছে। ভালো কলেজ ভালো বিশ্ববিদ্যালয় মানেই ভালো শিক্ষা, উচ্চমান স্তরে পৌছে যাওয়া। এটাই এখন লক্ষ্য।

খবরের পত্রিকায় ইন্টারনেটে প্রকাশিত হাত উচু করে বিজয় চিহ্ন উচিয়ে ধরা মুখ গুলো সবাই সফল হতে পারে না। এর জন্য কে দায়ী, ভাগ্য নাকি যোগ্যতা নাকি সমাজ ব্যবস্থা!?
প্রশ্ন উঠে যায় অনেক প্রশ্ন উত্তর মেলেনা শুধুই সান্তনা, আর আবার রেসের জন্য প্রস্তুতি। অনেকে দ্বিমত পোষন করতে পারেন আমার বক্তব্যের সাথে, সবার চিন্তা এক রকম নাও হতে পারে। তবে এখানে কথা গুলো বাস্তব চিত্র থেকে নেয়া যা প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে। কাউকে কষ্ট বা প্রেষনা ভঙ্গের জন্য লেখিনি । কথা গুলো সত্যের আধার যতটুকু পেরেছি ততটুকু লেখেছি। তবে এর মধ্যে কিছু আছে কথা যা সত্যি খুবই গুরুত্বপুর্ন যা সবাইকে অবশ্যই ভেবে দেখা প্রয়োজন।।

আর শেষে একটা কথা, পত্র-পত্রিকার সাথে জড়িত কেউ যদি থাকেন তাহলে তাদেরকে বলি ভাই পরীক্ষা শুধু মেয়েরাই দেয়নি আর জিপিএ ৫.০০ ছেলেমেয়ে সবাই পাইছে। সুতরাং পত্রিকা প্রথম পাতায় বা ভিতরের পাতায় ছবিটা শুধু মেয়েদের টাই দিয়েন না প্লিজ। কিছু টা ভালো বুদ্ধি সুদ্ধি কাজে লাগান।।
---
ভালো থাকবেন সবাই..

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৫৩

ক্লে ডল বলেছেন: এখন জ্ঞান কেউ অর্জন করে না, প্রতিষ্ঠানে গিয়ে জ্ঞান গিলে খায়! পরীক্ষা হলে গিয়ে যে যত উগরাতে পারে সে তত মেধাবী!!

পোষ্ট খুব ভাল লেগেছে।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:০১

ধ্রুবক আলো বলেছেন: আপনিও খুব বলছেন, অনেক ধন্যবাদ
তবে এইসকল বিষয় নিয়ে সকলকেই ভাবতে হবে। জ্ঞান গিলে খেয়ে পরীক্ষায় উগরানোর বিষয়ে পরিবর্তন আনা খুব জরুরী।

২| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার লেখা থেকে ভাল লাগা দুটো কথাঃ
*জীবন ঝুলে আছে পাবলিশড রেজাল্ট শীটের বোর্ডে অথবা ইন্টারনেটের ওয়েব পেজে।
*শ্রেণীকক্ষের শিক্ষা এখন কোচিং সেন্টারে চলে গেছে।
ভাবনাগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৯

ধ্রুবক আলো বলেছেন: অনেক পুরোনো একটা লেখা, সময় নিয়ে পাঠদান করেছেন খুব ভালো লাগলো। প্লাসে প্রীত হলাম।

ভাবনা গুলো আরও শেয়ার করতে চাই কিন্তু তেমন রেসপন্স পাই না, কেউই সচেতন হচ্ছি না।

অনেক ধন্যবাদ ভাই, ভালো থাকুন সদা।
শুভ কামনা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.