নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ব্লগারের সকল লেখাই সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

ধ্রুবক আলো

লেখকরা মনে মনে যত লেখা লিখেন তার ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ লিখেন কাগজে-কলমে। - হুমায়ুন আহমেদ

ধ্রুবক আলো › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার হাস্যকর ভুল কিংবা ত্রুটি - পর্ব ৫ ( ছাতা হারানোর বিড়ম্বনা..)

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১১

বর্ষাকাল হোক আর শরৎ বৃষ্টির দিনে যখন তখন বৃষ্টি হতেই পারে স্বাভাবিক। কিন্তু অস্বাভাবিক বিষয় হলো সাথে একটা ছাতা না থাকা। ধরেন, খুব সুন্দর শার্ট, প্যান্ট, টাই পড়ে আর নতুন এ্যপেক্সের চকচকে পলিশ করা সুজ পায়ে দিয়ে একটা চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন কিংবা কোন লিখিত পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন ঠিক এমন সময় একটা হালকা বর্ষন হলো তখন কি করা যায় এটা ভাবার সময় পাবেন!! তাই ছাতা সাথে রাখাটা খুবই দরকারই। তবে ছাতা সাথে রাখলেও এটা হারানোরও একটা চিন্তা থাকে, বলা যায় একধরনের দুশ্চিন্তা! আর যদি ছাতা হারানোর পর ওই ছাতা ছাড়া বাসায় যাওয়া যায় তাহলে কাজ হইয়া গেছে!!




এবার আমার ছাতা হাড়ানোর কিছু দুঃখ ভরা হাস্যকর বিড়ম্বনার ঘটনা বলি। ছাতা হারানোটা খুবই কষ্টের এবং অনেক টা বিড়ম্বনার। আর কিছু হারাক আর না হারাক ছাতা হারাইলেই আপনি বাড়ির আশেপাশেই খুব নামকরা হয়ে যাবেন যা খুবই হাস্যকর!!

অনেক বছর আগের ঘটনা তখন স্কুলে পড়ি। একদিন সকাল ৯ টায় পরীক্ষা এর মাঝে রাতভর মাঝারি ধরনের বৃষ্টি সকালেও একি অবস্থা! আর পরীক্ষা, না দিলে তো সর্বনাশ। বড়বোনের একটা আর আমার একটা ছাতা ছিলো যেটা আব্বা কলকাতায় ঘুরতে গিয়েছিল তখন ক্রয় করে আনছিলেন। তো ছাতা নিয়েই বের হতে হবে নতুবা অন্য কোন উপায় নেই, অন্তত রিকশা পাওয়ার আগ পর্যন্ত। আম্মি বলে দিয়েছিলেন কোন ভাবেই যেন ছাতা না হারায়। তো পরীক্ষার হল পর্যন্ত গেলাম ভেজা ছাতা খুলেই বাইরে পানি ঝরতে দিলাম। পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল, পরীক্ষা শেষে এতো বন্ধুদের সাথে এত এক্সাইটেড ছিলাম যে ছাতার কথা মনেই নেই, তার উপর বৃষ্টিও থেমে গেছে।। বড়বোন এসে বলল তোর ছাতা কই? তৎখনাত আমি ছাতা খোজা শুরু করলাম কিন্তু ছাতা আর পাই কোথায়!? এরপর বাসায় যাওয়ার পর যা ঘটলো তা আর খুলে বলতে চাই না।

আরেক বৃষ্টির দিন, এটা স্কুল জীবন শেষ করার পর যখন কলেজে পড়ি তখনকার ঘটনা। কলেজে একটা খুবই গুরুত্বপূর্ন ক্লাস ছিলো। হিসাব বিজ্ঞানের ক্লাস, তো স্যারের কড়া হুশিয়ারী সবাইকেই থাকতেই হবে এই ক্লাসে, না হলে খুব বড় শাস্তি দেয়া হবে। তো এই ভয়ে আমরা সব ছাত্ররা কাইত। আর বৃষ্টি সেইদিনই আশার খুব প্রয়োজন ছিলো। আমি খুব টেনশনে পরে গেলাম এরকম বৃষ্টিতে কিভাবে বের হই বাসা থেকে!! একে তো ভারি বর্ষন তার উপর ছাতাও নাই। আমার তো ছাতা হারাইছে বহুত আগেই পরে আর কোন ছাতাও কিনি নাই। তাই বড় বোনের কাছে ছাতা চাইলাম সরাসরি উত্তর, দেয়া যাবে না তুই ছাতা হারায়া ফেলবি। বাসায় এক্সট্রা একটা ছাতা ছিলো না, তাই বড় বোন কে খুব বুঝিয়ে উনার ছাতা টা ম্যানেজ করে সেটা নিয়া বের হবো ঠিক ওই সময় আম্মার সতর্কবানী , ছাতা হারাইস না মনে করে নিয়ে আসিস। তো কলেজে গেলাম, ক্লাস্ শেষে এক স্যারের বাসায় গেলাম ভুলি নাই ছাতা হাতে করেই নিয়ে গেছি। সমস্যা হলো সেখানে গিয়েই, বাইরে বৃষ্টি নেই বাসায় স্যারও নাই তো এক বন্ধু বলল চল ক্যারম খেলি কাজ তো আর নাই। আমি রাজি হলাম কিন্তু ছাতা হলো একটা বোঝার মত কি করি কই রেখে যাই চিন্তা করলাম কতক্ষন। স্যার নেই বাসায় তারপরও স্যারের বাসায় রেখে গেলাম। এরপর বন্ধুর বাসায় ক্যারম খেলতে ছাতার কথা ভুলেই গেছি। বাসায় ফিরলাম ছাতা না নিয়েই, আম্মা রাতেই জিজ্ঞেস করলো ছাতা কই? একটু মাথা নুইয়ে বললাম মনে নাই সম্ভবত স্যারের বাসায় রেখে আসছি!! কিছুক্ষন পর স্যারের বাসায় ফোন দেই কিন্তু ছাতাটা স্যারের বাসায় ছিল না । দুই দিন পর অবশ্য ছাতা পাইছি স্যারের ওয়াইফ নাকি ছাতা নিয়ে বাইরে গিয়েছিল তাই....!!!! কিন্তু এই দুই দিন বৃষ্টিও থামে নাই কথাও না!!

তারপরের কান্ডটা হলো ভার্সিটি লাইফে। ভার্সিটিতে একটা পরীক্ষা ছিলো আর সেদিনও ছিলো চির অনাকাঙ্খিত বৃষ্টি। কেমন জানি বৃষ্টি আর পরীক্ষার সাথে খুব ঘনিষ্ট একটা সম্পর্ক আছে, অদ্ভুত! তো ছাতা চাইতেই আম্মিজানের উত্তর, সব গুলাই হারাইছত কোন টা নিয়া যাবি এখন। তো ছোটবোনের একটা ছাতা ছিলো যেটা সে খুব কমই ব্যবহার করেছে। তো ছাতাটা চাইতেই দিলো বললো যদি হারাও এটা নতুন কিনে দিতে হবে কিন্তু। আমিও ঠিক আছে বলে নিলাম ভার্সিটির পরীক্ষা একটু দূরেই ছিট পরতো তাই বাসে করেই যেতে হতো ( জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনে ছিলো তাই ) । সমস্যা বাধলো আসার সময়, প্রশ্ন নিয়ে কথা বলতে বলতে ছাতার কথা ভুলেই যাই যে ওটা বাসের সিটের এক কোনায় রেখে দিয়েছিলাম। তো বাস থেকে নেমে বাসায় যাবো ঠিক ওই সময় মনে পরলো ছাতা তো রাইখা আসছি এবং ততক্ষনে বাস এক দের কিলোমিটার দূরে ভাগছে।। যাই হোক বাসায় যাওয়ার পর তিনদিন পর্যন্ত বুঝ দিলাম ছাতা আছে বাসাতেই। কিন্তু সত্য কি আর চাপা থাকে ধরা খেয়ে গেলাম আম্মার কাছে আর চিরকাঙ্খিত কথাবুলি ষ্টার্ট, তোরে ছাতা দেওয়াটাই ভুল হইছে !
৩ বছর আগে সকালে বের হবো বাইরে ভালোই বর্ষন হচ্ছিলো, তখন আমি একটা ছোটখাটো কোম্পানিতে ইন্টার্নি করি। তো আম্মিজানের কাছে ছাতা চাইতেই উনার কড়া উত্তর, ছাতা নাই আর যদিও থাকে তোকে দেয়া যাবে না। আসলেই ঘরে ছাতা ছিল কিনা তা জানি না আর যেই পরিমান ছাতা হারাইছি থাকার কথাও না!! তাই হাত দিয়া মুখের হাসিটারে চাপা দিয়া বৃষ্টিতেই ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম। আসলেই এক জীবনে এতো ছাতা একটা মানুষ কিভাবে হারাতে পারে!!

এই তো কয়েক মাস আগেরই ঘটনা; একদিন ঢাকায় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো, এমত সময় এক বন্ধুর কাছে ছাতা দেখে ওর ছাতাটা ধার চাইছিলাম, ছাতাটা খুব সুন্দর ছিলো। কিন্তু খুব সুন্দর কইরা বইলা দিলো- তোমারে দিলে আমি বাসায় যাবো কিভাবে আসলে ভুলেই গেছিলাম যে দুজনের বাড়ি দুইদিকে। ইসস্ তখন আমার হারানো ছাতাগুলার কথা খুব মনে পরছিলো সাথে আম্মার বকুনিটাও!!
বৃষ্টির দিনগুলোতে এরকম ছাতা হারানোর ঘটনা গুলো খুব মনে পরে কি অদ্ভুত হাস্যকর বিড়ম্বনা আমার আর একটা বড় সত্যকথা হলো আমি খুব মন ভোলা টাইপ মানুষ। এখানে তো মাত্র তিনটা ঘটনা বললাম আরও ৬ থেকে ৭ বার ছাতা হারাইছি। তবে খুব হাসি পায় একটা কথা মনে জাগলে, এত ছাতা হারাইলে তো গিনেস বুকে আমার নাম আইসা পরার কথা।

[ বানানের ভুল সহ অন্যান্য ভুল সমগ্র ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখিবেন ]

সবাই ভালো থাকবেন..

ছবিসূত্র:- গুগল মামা দায়ী


গত পর্বের লিংকটা দিয়ে দিলাম

আমার হাস্যকর ভুল কিংবা ত্রুটি - পর্ব ৪ ( পুরোনো এক দিনের কথা.. )

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৪

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: ইসস্ তখন আমার হারানো ছাতাগুলার কথা খুব মনে পরছিলো সাথে আম্মার বকুনিটাও!! :) :)

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৭

ধ্রুবক আলো বলেছেন: হ্যা ভাই ছাতা হারাইলে বকুনিটা ফ্রি !!! আর বৃষ্টির দিনে এইসকল কথা খুব মনে পরে।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৯

তানভীরএফওয়ান বলেছেন: oh brother u r like me.i already lost more than 100 umb in my life.

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৩

ধ্রুবক আলো বলেছেন: Oh thank you brother, I was thinking I am the only man in this planet who lost lots of umbrella,
কিন্তু ভাই, আপনি আমার রেকর্ডও ভেঙে দিলেন!!!

৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৫

জনৈক অচম ভুত বলেছেন: ছাতা হচ্ছে সেই জিনিস যা তৈরিই হয় হারানোর জন্য। জীবনে ছাতা হারায়নি এমন মানুষ অতিমানব শ্রেণীর অন্তর্গত। :#)

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৬

ধ্রুবক আলো বলেছেন: ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ১০০০% খাটি একখানা কথা বলছেন।।

৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:১৮

প্রামানিক বলেছেন: হা হা হা ছাতা কাহিনী ভালো লাগল।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৪

ধ্রুবক আলো বলেছেন: শুনে খুব ভালো লাগলো, আপানাকে হাস্যোজ্জল একখানা ধন্যবাদ,,,

৫| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪৪

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: হা হা হা B-)

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৩

ধ্রুবক আলো বলেছেন: আপনাকে হাস্যোজ্জল একখানা ধন্যবাদ

৬| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৪৪

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:


ভায়া বিসমিল্লায় গলদ করে দিছেন!

শরৎ হবে শরত না।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩

ধ্রুবক আলো বলেছেন: জানতাম আপনি ভুল টা ধরবেন, হা হা হা,,,
আপনাকে ধন্যবাদ,,,

৭| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব ভাল লাগলো আপনার এই রসিয়ে রসিয়ে বলা ছাতা হারানোর গল্পগুলো পড়ে।
পোস্টে ভাল লাগা + +

১৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

ধ্রুবক আলো বলেছেন: লেখা ভালো লেগেছে জেনে খুব অনুপ্রানিত হলাম, প্লাসে প্রীত হলাম। অনেকদিন আগের লেখা, সময় নিয়ে পাঠদান করেছেন, মন্তব্য রেখেছেন, কৃতজ্ঞ র'লাম।

অনেক শুভ কামনা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.