![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজ গ্রামের সাথে সংযোগ রক্ষার উপায় খুঁজছিলাম। শিকড়ের টান তো বটেই, পাশাপাশি কিছু সচেতনতাও এক্ষেত্রে কাজ করেছে। আমরা পরিবারের সকল সমস্যা জানি বলে সেগুলো সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিতে পারি, পরিবারটা নিজের বলে সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য আমরা মরিয়া হই। এরপরেই আসে নিজ গ্রাম, গ্রামটা আমার, আমি জানি কী তার সমস্যা, জানি বলেই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারি। গ্রামে অনেক সমস্যা রয়েছে। তবে সবচে’ বড় সমস্যা সেখানে আধুনিক শিক্ষার অভাব, গ্রামের বেশিরভাগ লোক তাদের মত করে একটা কিছু ভেবে বসে আছে--যা সঠিক নয়। তাই আধুনিক শিক্ষাপকরণ, বিশেষ করে নানান ধরনের বই তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে কিছু একটা করার তাগিদ অনুভব করছিলাম বহুদিন ধরে। এমনভাবে কিছু করতে চাচ্ছিলাম যাতে বিষয়টি টেকসই হয়। গ্রাম পাঠাগার বা এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, কিন্তু ফান্ড এবং ব্যবস্থাপনার অভাবে কিছুদিনের মধ্যেই উদ্যোগটি ধুলিসাৎ হয়ে যায়। তাই সে ধরনের অনুদান নির্ভর কিছু না করে ভিন্ন পন্থায় এগোতে চেয়েছিলাম। ভাবলাম- মফস্বলের বাজারে একটি বইয়ের দোকান করে দিই। তাতে গ্রামের একজন লোকের কর্মসংস্থান হবে, পাশাপাশি সেখানে আগ্রহীদের বই পড়ার ব্যবস্থাও করা যাবে। দোকানটি করলাম, পরপর তিনজন বসিয়ে এ পর্যন্ত চেষ্টা করেছি, কিন্তু সফল হতে পারিনি। কেউ-ই আন্তরিক হয় না, টাকা-পয়শা উলোটপালোট করে ফেলে, যে বইগুলো ফ্রি দেওয়ার কথা--সেগুলো দেয় না। দোকানঘর মালিক স্বেচ্ছাচারী আচরণ করে, এলাকাবাসী বাঁকা চোখে তাকায়, ইত্যাদি হাজারটা সমস্যা। দোকানে এ পর্যন্ত দুই লাখ টাকা আমি নষ্ট করেছি এবং যথারীতি দোকানটি চালাতে গিয়ে মানুষের কাছে অার্থকভাবে ঋণী হয়েছি। বেশ বড়সড় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে ছিলাম। ইচ্ছা ছিল- এক পাশে বিক্রী হবে এবং অন্যপাশে টেবিল-চেয়ার বসানো থাকবে, তাকে বইপত্র এবং পত্রিকা থাকবে, সেখানে মানুষ বসে পড়বে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইচ্ছে অনুযায়ী কাজ হয়নি। যাকে যে দায়িত্ব দিয়ে আসি তা সে আন্তরিকভাবে পালন করে না। হেলাফেলা করে এমন একটা কিছু করে--তাতে কার্যকর কিছু হয় না। তবে এখনো হাল ছাড়িনি। শুরু করা ভাল, তবে শেষ না করা খুব খারাপ। তাই চেষ্টা চালিয়ে যেতে চাইছি। আমার মত মানুষের পক্ষে দুই লক্ষ টাকা নষ্ট করা চারটিখানি কথা নয়, তারপরেও নেশার ঘোরে পেশা ছেড়ে এসব নিয়েই তো আছি।
©somewhere in net ltd.