![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেয়েদের ঋতুস্রাব স্রষ্টা প্রদত্ত খুব স্বাভাবিক একটি জীবন যাপনের পন্থা! কিন্তু এই নিয়ে একটি মেয়েকে আজীবন কেমন চোরের মত জীবন যাপন করতে হয়, যেন সে বড় ধরণের কোনো চুরির সাথে ব্যক্তিগত ভাবে জড়িত। একটা মেয়ে চোরের মত করে ফার্মেসি যায় স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনার জন্যে।দাঁড়িয়ে থাকে কখন ভীর কমবে আর সে বলবে তার প্রয়োজনের কথা। এখানেই শেষ নয় মেয়েটির চাহিদা প্রকাশ করার সাথে সাথে তার প্রস্তুতি থাকতে হবে দোকানদারের লোলুপ চোখকে উপেক্ষা করার জন্যে। যেন প্যাডের কথা বলার মাঝে কোনো রগরগে যৌনতা আছে! এখানে শেষ হলে ভালই ছিল কিন্তু তা হবার নয়। দোকানী প্যাড দেবে মেয়েটিকে খবরের কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে যেন মেয়েটি নিষিদ্ধ কিছু কিনে নিয়ে গেল অথচ একই কাউন্টারে দাঁড়িয়ে একটি যুবক নির্বিকার ভাবে ছেলেদের জন্মনিয়ন্ত্রণ এর মাধ্যমটি(কনডম) কিনে নিয়ে যায় খোলা হাতে করেই।
মেয়েটিকে নিয়ম করে রমজান মাসে পিরিয়ড এর সাতদিন সেহরি-ইফতার খেতে হয়! বাবা-ভাইএর সাথে ইফতারের টেবিল থেকে নামাজের জন্যে উঠে যেতে হয় অথচ এই বাবাই তাকে পৃথিবীতে এনেছেন যার কিনা মেয়েদের নাড়ী নক্ষত্র সব কিছুই জানা। ভুলে দিনের বেলা পানি খেতে দেখে ফেললে এই বাবাই বলে উঠেন.....কি রে আজ রোজা রাখিস নাই ক্যান? কি উত্তর দেবে মেয়েটি তার সবজান্তা বাবাকে? মাটিতে মিশে যাওয়া ছাড়া আর কিই বা করার থাকে মেয়েটির!
নারীত্বের পূর্ণতার প্রথম ধাপ আসে ঋতুস্রাব এর মধ্য দিয়ে।। ঋতুস্রাব এর মাধ্যমে একটি মেয়ে বারো কিংবা তেরো বছর বয়স থেকে প্রতি মাসে ভয়াবহ ত্যাগী হয়, ভোগ করে কমপক্ষে পাঁচ দিনের বর্ণনাতীত কষ্ট। ঋতুস্রাব এর মধ্য দিয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকে একটি মেয়ে তার অনাগত সন্তানের মা হবার জন্য। যেখানে প্রতি মাসের কষ্টের ভয়াবহতার মাঝ দিয়ে একটি মেয়ে তৈরি হতে থাকে তার প্রসববেদনা সহ্য করবার জন্য সেখানে এই ঋতুস্রাব যেন মেয়েটির আজন্ম লজ্জার কারণ হয়ে থাকে।
কি অদ্ভুত এই সমাজব্যবস্থা। কি অদ্ভুত এই পুরুষ হয়ে থাকা সমাজ আমাদের, যেখানে নারীর জন্য নির্দিষ্ট স্রষ্টার শারীরিক নিয়মকে ধরে নেয়া হয় একধরণের রগরগে যৌনতা হিসেবে।
মনের দিক থেকে কোনো মেয়েই মেয়ে হয়ে জন্মায় না! সারাজীবন ধরে ক্রমাগত অসংখ্য লজ্জা অসংখ্য বিব্রতবোধ আর সংকীর্ণতা দিয়ে আমরা নিজেরাই একটা মেয়েকে দেহে-মনে সম্পূর্ণ মেয়ে বানিয়ে ফেলি। বানিয়ে ফেলি মানুষ নয় মেয়েমানুষ! অসহায় অবলা মেয়েমানুষ। "এনাটমি ইজ হার ডেস্টিনি"---শরীরই তার নিয়তি।(sganik-10/2/2016)
©somewhere in net ltd.