![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলার চাষীকুলের বড় শত্রু বলে, যদি কোনো গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা হয়, আমি বলব, এক্ষেত্রে কিছু কবি-লেখক-শিল্পীরা-ই এগিয়ে রয়েছে। রাজনীতিকদের যতই দোষ দেয়া হোক, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ যেমন তুলনামুলক ভালো রয়েছে, লেখক কবিদের মধ্যেও বাস্তববোধ-সম্পন্ন কিছু রয়েছে। কিন্তু হতাশ হতে হয়, যখন দেখি এঁদের সংখ্যা অতি নগণ্য। চাষীকুলের দৈন্য-দশা অনেক লেখক-শিল্পীকে আবেগ-আপ্লুত করেছে, আবার অনেককে দিয়েছে অপমান করার তীব্র সুযোগ। কেউ কেউ তাই চাষীকুলকে নিয়ে রচনা করেছে, মনোমুগ্ধকর কাহিনী বা গান বা কাব্য। যা সুখীজনের সুখ-সময়ে অনেক রসের যোগান দেয়। কারণ, সেখানে কাব্যিকরা বা শিল্পীরা, চাষীদেরকে সম্বোধন করেছে, ' আমাদের চাষী ভাই হিসেবে' ! শুনলেও হাসি পায়।
রাজনীতিক ভোটের জন্য বলে থাকে, আমাদের চাষী ভাই। এ চাষীভাই-বোনেরা কোনদিনই একজন মন্ত্রীর সাথে করমর্দনের বা সাক্ষাত করার সুযোগ পাবে না। যদি না নির্বাচনকালীন গণ-প্রেম-জোয়ারে ভাসার সুযোগ মিলে। আর বাস্তব-বর্জিত এই লেখক-শিল্পী-রাজনীতিকদের ধারাবাহিকতায়, শিক্ষিত সমাজের বড় অংশ, একই রকম কথা বলে। যাদের অনেকেই গ্রামে যায় নি কোনোদিন, তথাপি বলার সময়, দরদ এবং বিশেষণ একত্রিত করে, চাষী-ভাইবোনদের জীবিত অবস্থায় স্বর্গে পাঠিয়ে দেয়। এত প্রেম !!
** এবারে দেখা যাক্ কেন অপমানের কথা বলা হচ্ছে? আমরা সবাই একটি নোংরা-সত্যকে উচ্চারিত হতে শুনি। যে আমাদের দেশের চাষীরা নাকি, সোনার ফসল ফলায়? এ কেমন অপমান? লেখক গোষ্ঠীর একটি বড় অংশ, দীর্ঘদিন যাবতই এই অপমানজনক মিথ্যাকে, কলমের ছোঁয়াতে সত্য বলে চালিয়ে যাচ্ছে। এই লেখকদেরকে আমার মনে হয়, এগুলো লুটেরা-গোষ্ঠীর দালাল। যারা সোনার ফসল ফলায়, তাদের কেন দারিদ্র্য থাকবে? ঋণের দায়ে তারা কেন আত্মহত্যা করবে? এদের জীবন যারা কাছে থেকে দেখেছেন, তারা ' সোনার ফসল ফলানোর' এই যে মিথ্যাচার, কতটুকু ভয়ংকর-নগ্ন, তা উপলব্ধি করেছেন। তবুও এ-রকম বলার উন্নতি হলো না। এ মিথ্যা চলছে তো চলছেই।
**চাষীর বধূদের শরীরে, সোনার অলংকার, কে কতটুকু দেখেছেন? যদি এই সবুজ-শ্যামল বাংলায় আপনার জন্ম হয়ে থাকে, তবে তা আপনার জানার কথা। যারা সোনার ফসল ফলায়, তাদের ঘরের মানুষের সোনার অলংকারের সাধ থাকতে কি নেই? এই মিথ্যা কি আপনাকে আহত করে না, আপনার বিবেকে নাড়া দেয় না? যারা দেশের উদর পূর্ণ করে, তাদের উদর যে সবসময় পূর্ণ হয় না, সে-কথা বড় করে প্রচার করার মত, বিবেকসম্পন্ন সুশিক্ষিতের সংখ্যা হয়ত হাতে গোনা যাবে। চাষী-ভাইয়ের দরদী শিল্পী-লেখক-কবিরা, বাস্তবের চোখে দেখে, তবেই কথা বলো আর তোমাদের ন্যাংটা কলমের / তুলির লজ্জা নিবারণের জন্য একটু ভাবার অনুরোধ করি।(sganik-10-2-16)
©somewhere in net ltd.