![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পুলিশ ট্রেনিং শেষ করার পর দেশের একটি জেলায় যোগদান করার পর দেখতে দেখতে পাঁচ মাস পার হয়ে গেল।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অসংখ্য বিচিত্র রকম ঘটনার সাক্ষী হয়েছি এ সময়ে।
অক্টোবর মাসের কোন এক বিকেল। প্রায় ষাট বাষট্টি বছরের এক বৃদ্ধ কে গ্রেফতার করলাম বিপুল পরিমান ফেন্সিডিল সহ। গ্রেফতার করার পর বৃদ্ধের এক হাতে হাতকড়া লাগিয়ে তার বাড়ির খুঁটির সাথে বসিয়ে রেখেছিলাম। কিছুক্ষন পর তিন/চার বছর বয়সি এক বাচ্চা ছেলে বৃদ্ধের কোলে এসে বসলো। জানলাম বৃদ্ধের দ্বিতীয় পক্ষের ছোট সন্তান। বৃদ্ধ পরম মমতায় এক হাত দিয়ে সন্তানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল। শেষবারের মত আদর, অনেকদিন আর দেখা হবে না সন্তানের প্রিয়মুখ।
এক হাত হাতকড়ায় আটকানো, অন্য হাতে সন্তানকে মমতার আদর ; শেষ বিকেলের আলোয় এই অপূর্ব নির্মম দৃশ্য কখনই ভুলবার নয়।
আরেকবার অপারাশনে গিয়েছি ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা। বিদেশী পিস্তলসহ এক ব্যক্তি কে গ্রেফতার করলাম তার বাসাতে। গ্রেফতারের পর সিজার লিস্ট, সাক্ষীদের স্বাক্ষর নেয়া এসব আনুষ্ঠানিকতা সারা হচ্ছিল। এমন সময় ৫/৬ বছরের একটা বাচ্চা মেয়ে আমার কাছে এসে বলল, কত টাকা দিলে আমার আব্বু কে ছেড়ে দিবেন। নিজের চোখকান কে বিশ্বাস করতে পারসিলাম না, এতটুকুন বাচ্চা মেয়ে বলে কি! বললাম, পাঁচ টাকা দিলেই তোমার আব্বু কে ছেড়ে দিব। বয়সে ছোট্ট হলেও মেয়েটি আমার কথার অর্থ বুঝতে পারল। উত্তর দিল, পাঁচ টাকা দিলে তো জীবনেও ছাড়বেন না। নির্দয় সত্য হল পাঁচ কোটি টাকা দিলেও অস্ত্র ব্যবসায়ির ছাড়া পাবার কোন উপায় নেই।
এরকম ক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন অনুভূতি কাজ করে। একজন মাদক অথবা অস্ত্র ব্যবসায়ি কে প্লান করে ফাঁদে ফেলে গ্রেফতার করার তৃপ্তিদায়ক অনুভূতি। অপরদিকে সন্তানের নিকট থেকে তাদের প্রিয় পিতাকে বিচ্ছিন্ন করার গুমোট বেদনা।
দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে মুদ্রার অপরপিঠ ও। কিছুদিন আগের ঘটনা। অফিসে বসে আছি। একজন বয়স্ক ভদ্রলোক দেখা করতে এলেন। উনি বললেন, আমি শুনলাম। তার কথার সারমর্ম হল, তার নিজের মাদকাসক্ত ছেলেকে ধরে আনতে হবে, সম্ভব হলে মেরে ফেলতে হবে। আমি বিনয়ের সাথে জানালাম কাউকে ধরে এনে মেরে ফেলা আমাদের কাজ নয়। ভদ্রলোক হতাশ হয়ে চলে গেলেন। উপলব্ধি করলাম পরিস্থিতি কতটা খারাপ হলে বাবা তার ছেলের সম্পর্কে এমন কথা বলতে পারে। এই ছেলেও একদিন ছোট ছিল, সেই সময় বাইরে বের হয়ে বাবার নিশ্চয় মন উতলা হত তার ছোট্ট ছেলেটার কথা ভেবে। ছেলেটি যখন প্রথম আধোবুলিতে বাবা আব-বা ডাকা শুরু করে, বাবার হয়তো তার জীবনের অন্যতম সুখানুভূতি হয়েছিল। আর আজ সময়ের নিষ্ঠুর আবর্তনে কে কোথায়।
সব সন্তানেরা বাবামায়ের মমতায় বেড়ে উঠুক, বড় হয়ে হোক বাবামায়ের আদর্শ সন্তান। কোন শিশুর সামনে তার বাবা কে যেন গ্রেফতার করতে না হয়, আবার কোন বাবাকে যেন অদ্ভুত আবদার নিয়ে পুলিশ অফিসে আসতে না হয়।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৬
দিকশূন্য বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৭
চলন বিল বলেছেন: আহারে
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৭
দিকশূন্য বলেছেন:
৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৩৪
অন্যসময় ঢাবি বলেছেন: ভালো লেখেছেন
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪১
দিকশূন্য বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১০
নাইট রাইটার বলেছেন: জীবন বড়ই করুণ
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৫
দিকশূন্য বলেছেন: কখনো কখনো।
৫| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১৪
সুমন কর বলেছেন: ভাল লাগল।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৯
দিকশূন্য বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৫:১৩
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
আর আজ সময়ের নিষ্ঠুর আবর্তনে কে কোথায় ।
সব সন্তানেরা বাবামায়ের মমতায় বেড়ে উঠুক, বড় হয়ে হোক বাবামায়ের আদর্শ সন্তান । কোন শিশুর সামনে তার বাবা কে যেন গ্রেফতার করতে না হয়, আবার কোন বাবাকে যেন অদ্ভুত আবদার নিয়ে পুলিশ অফিসে আসতে না হয় ।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭
দিকশূন্য বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:০১
প্রশান্ত মহাসাগর বলেছেন: it's looks you are a good man. if I'm right then, you need Bangladesh police but i afraid Bangladesh police no need a good man like you.
wish you all the best. good luck.
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৩
দিকশূন্য বলেছেন: Brother, there are many bright and honest officers in Bangladesh Police who really want to change the image of Bangladesh police. Thanks for your opinion.
৮| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১৩
কলমের কালি শেষ বলেছেন: কঠিন অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ারে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪
দিকশূন্য বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৪
জামান শেখ বলেছেন: ধন্যবাদ পুলিশ ভাই।
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২১
দিকশূন্য বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
১০| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৮
রঙতুলি বলেছেন: সত্যি মুদ্রার এ পিঠি ও পীঠ দু - পিঠ ই থাকে ।।
আপনার লেখা ভাল লাগল
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২৪
দিকশূন্য বলেছেন: ধন্যবাদ রঙতুলি।
১১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২২
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
আপনার কঠিন অভিঙ্গতাগুলো শুণে ভালো লাগল।
আরোও শেয়ার করুণ।
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২৬
দিকশূন্য বলেছেন: কিছু কিছু অভিজ্ঞতা সত্যিই খুব কঠিন। ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫২
বাড্ডা ঢাকা বলেছেন: ভালো লেখেছেন