![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতিধ্বনি না হয়ে কণ্ঠস্বর হও.....
ধরুন, কেউ এসে আমার বাবাকে খুন করলো। ঠান্ডা মাথায়, নির্মমভাবে। এরপর মামলা হলো, বিচার হলো, সাক্ষী-প্রমাণে প্রমাণিত হলো যে সেই মানুষটাই খুনি। বিচারক রায় দিলেন—যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
আমি থমকে যাই। একটা মানুষের জীবন নিয়ে নিলো, আর বিনিময়ে সে কয়টা বছর জেলে থাকবে? আমার বাবা কি ফিরে আসবে?
বিচার শেষ। খুনি এখন জেলখানায়।
জেলখানায় সে খাচ্ছে, ঘুমাচ্ছে, চিকিৎসা পাচ্ছে—সবকিছু সরকারি খরচে। আর এই "সরকারি খরচ" আসে কোথা থেকে? আমাদের কাছ থেকে। আমার কাছ থেকে।
আমি প্রতিদিন বাজার করি, ভ্যাট দিই। বিদ্যুৎ বিল দিই, কর দিই। প্রতিটি লেনদেনে আমি টাকা দিচ্ছি সরকারকে, সেই টাকা দিয়ে সরকার চলছে—আর তার একটা অংশ খরচ হচ্ছে জেলখানায় থাকা কয়েদিদের পেছনে।
মানে দাঁড়ায়, আমার টাকায়—আমার বাবার খুনিকে খাওয়ানো হচ্ছে?
এই চিন্তা মাথায় এলে আমার গলা শুকিয়ে আসে। বুকের ভিতর একটা অসম্ভব যন্ত্রণা কাজ করে। এটা তো শুধু একটা দণ্ড নয়, এটা একটা তামাশা।
বাবা হারানোর পর আমি এখনো সেই কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছি, অথচ খুনি মানুষটা হয়তো এখন দুপুরে গরম ভাত আর ডাল খাচ্ছে—আমারই টাকায়।
হ্যাঁ, আমি জানি রাষ্ট্র একটা নিয়মে চলে।
রাষ্ট্র বলে, আইন সবার জন্য সমান। এমনকি খুনিরও কিছু মৌলিক অধিকার আছে।
রাষ্ট্র বলে, আমরা প্রতিশোধের সমাজে বাস করি না।
রাষ্ট্র বলে, সঠিক বিচার মানে প্রতিশোধ নয়, বরং শাস্তির মাধ্যমে সংশোধন।
আমি সব জানি।
কিন্তু আমার কষ্টগুলো কি রাষ্ট্র বোঝে?
আমার মনে হয়, এই সমাজে খুনির অধিকার আছে, কিন্তু খুন হওয়া মানুষের পরিবারের আবেগের কোনো জায়গা নেই। আমি কাঁদি, ভেঙে পড়ি, বাবার ছবি জড়িয়ে রাত কাটাই—এতেও কারো কিছু যায় আসে না।
রাষ্ট্র শুধুই বলে, “আপনার বাবা ন্যায়বিচার পেয়েছেন।”
তবে কি এটা ন্যায়?
একজন খুনিকে বাঁচিয়ে রাখা, আর খুন হওয়া মানুষের পরিবারকে ধুকে ধুকে বাঁচতে বাধ্য করা—এটাই কি সভ্যতা?
আমি চাই না কাউকে মেরে ফেলা হোক। আমি চাই না রাষ্ট্র অমানবিক হোক।
কিন্তু আমি প্রশ্ন করি, অন্তত এইটুকু কি রাষ্ট্র স্বীকার করতে পারে না যে, আমার কাছ থেকে কর নিয়ে, আমার বাবার খুনিকে খাওয়ানোটা একটা চরম মানসিক অবমাননা?
রাষ্ট্র হয়তো বলবে—এটা আবেগের কথা, বাস্তবতা না।
কিন্তু আমি বলি, এটাই তো বাস্তবতা।
কারণ প্রতিদিন আমি টাকাটা দিচ্ছি, আর প্রতিদিনই মনে পড়ছে—সেই টাকায় কেউ একজন খাচ্ছে, যে আমার বাবাকে মেরে ফেলেছে। এভাবে আমি প্রতিদিন একটু একটু মরে যাই।
৩১ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৫
ইএম সেলিম আহমেদ বলেছেন: আপনার প্রশ্নটি যৌক্তিক, কিন্তু মূল বক্তব্যটা একটু ভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে।
কেউ যদি জেলে থাকে, রাষ্ট্র তাকে খাওয়াবে - এটা ঠিক। রাষ্ট্রের মানবিক কাঠামো সেভাবেই তৈরি হয়েছে।
কিন্তু আমি যা বলতে চেয়েছি, তা হলো এই কাঠামোর মাঝেও ভুক্তভোগীর আবেগ ও যন্ত্রণা যেন অদৃশ্য না হয়।
একজন খুনির ‘অধিকার’ রাষ্ট্র রক্ষা করে, অথচ যিনি খুন হয়েছেন - তার পরিবারের ক্ষত, মানসিক ট্রমা, ন্যায়ের বোধ - সেগুলো অনেক সময় রাষ্ট্রের কাছে একেবারে গৌণ হয়ে যায়। মানবিকতা শুধু অপরাধীর জন্যই কেন থাকবে? নিহত পরিবারের জায়গাটাও রাষ্ট্রীয় বিবেচনায় আসা দরকার।
আমি বলছি না, হাজতিদের খাবার বন্ধ করা হোক। আমি চাই, রাষ্ট্র অন্তত স্বীকার করুক - ভুক্তভোগীর যন্ত্রণাও বাস্তব এবং রাষ্ট্রীয় ভাষ্যে তার স্থান থাকা উচিত।
আমরা একটা ন্যায়ের সমাজ চাই—যেখানে খুনি শুধুই ‘কোনো এক কয়েদি’ না, বরং সে একজন মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে, সেটা মাথায় রেখেই তার ‘মানবিক অধিকার’ নির্ধারণ হোক।
এটাই আমার প্রশ্ন, এটাই আমার যন্ত্রণা।
২| ০৩ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:৩৮
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: ন্যায্য সমাজ পেতে চাইলে
সমস্ত কাঠামো ভেঙ্গে নুতন সমাজব্যবস্হা চালু করুন ।
...........................................................................
তাহলে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধঁবে কে ?
আমাদের কতটুকু যোগ্যতা ও মানসিকতা আছে যে,
রোবটের মত আবেগ শুণ্য হয়ে কাজ করবে ?
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: তাহলে ১০ লাখ হাজতিদের খাবারের টাকা কে দিবে?