নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Euphrocinous

I always know the ending that is where I start...

ইউফ্রোসিনাস

I sell mirrors in the city of blinds; I play music amidst the forest of deafs; I wait to hear from the dumbs..

ইউফ্রোসিনাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টি ভেজা টাইম ট্রাভেল

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬

রংতুলি দিয়ে ছবি যখন আঁকতাম, তখন বৃষ্টি ভেজা আকাশের রং দিতাম ধূসর, সাদা আর কালো দিয়ে মেশানো নীল, কালচে বেগুনী।

বৃষ্টি ভেজা একটু আধার ঘেরা সকাল গুলো টাইম মেশিনের মত। হালকা শব্দে বেজে চলা রবীন্দ্র সংগীত, ধোয়া ওঠা চা/কফির মগ হাতে নিয়ে আপনি ফিরে যাবেন সেই শৈশবে,

যখন স্কুল ফাকি দেয়ার জন্য জোর করে ঘুমের ভান করে থাকতেন, মনে পড়বে সেই দিনটার কথা যখন মায়ের হাত ধরে ছাতার নিচে করে স্কুলে গিয়েছিলেন, ভেজা ভেজা গায়ে গ্রিলে ঝুলে থাকা বৃষ্টির ফোটা নিয়ে খেলেছিলেন। একটু ভিজতে না দেয়ায় ঠোট ফুলিয়ে ছিলেন।



আবার মনে পড়বে সেই কৈশোর, যখন ক্লাস নাইনে স্কুল ড্রেস পড়েই বন্ধুদের সাথে হইহুল্লো করে রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে ভিজেছিলেন।

সেই পানি জমে যাওয়া মাঠ, ফুটবল টানতে গিয়ে পানিতে ঠেকে যাচ্ছিলো। খেলার চেয়ে কে কাকে পানিতে চুবিয়ে ছাড়বে সেটাই ছিলো জয়-পরাজয়।



আবার মনে পড়বে কলেজ লাইফের কথা, সেই উদাস করা ভেজা সকালটা, নীল জামা পরা ওই মায়াবী চেহারার মেয়েটা, হালকা ভেজা চুল খুলে কোচিং এ এসেছিলো। সেদিনের ম্যাথ ক্লাসটায় শুধুই স্যারের ঠোট নড়েছিলো, আর আপনি ছিলেন অবাক মুগ্ধতায়, আড় চোখে লুকিয়ে লুকিয়ে ভেজা চুল আর গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া ফোটা ফোটা বৃষ্টির পানি, আর বুকের মধ্যে কেমন যেন করে ওঠা এক টোল পড়া হাসি। হঠাৎ সে ভেজা পাপড়ি আর ভ্রু নিয়ে কেমন মায়াবী ভাবে আপনার দিকে ফিরে তাকিয়েছিলো, আপনি অপলক তাকিয়ে, হঠাৎ বন্ধুর কনুই এর গুতো, সামনে তাকিয়ে দেখেন স্যার আপনার দিকে তাকিয়ে।



আবার মনে পড়বে ভার্সিটি লাইফ, বৃষ্টির দিনে একটা ছাতা আর আপনারা দুজন, ও কাছে ঘেষতে চাইছিলো কিন্তু পারছিলো না। আপনিও বার বার বলে ফেলি করেও, মরে যাচ্ছিলেন তবু বলতে পারেন নি। শেষমেশ ছাতাটা বন্ধ করে একসাথে ভিজলেন। অনেক দ্বিধা আর সংকোচ নিয়ে আলতো করে তার আংগুল দুটো কয়েকবার অনিচ্ছাকৃত স্পর্শ করার ভান করে ধরে ফেললেন। সে সাথে সাথে শক্ত করে আংগুল ধরে অনেক অসহায় ভাবে আপনার চোখের দিকে তাকালো। আর আপনি ভাবছিলেন শুধু শুধু ভয় পেয়ে আপনার এতদিন লাগলো। অনেকটা পথ আঠার মত তাকে আংগুলে লাগিয়ে ক্যাম্পাসের পথ দিয়ে হেটেছিলেন। বৃষ্টি ভেজা মাটি আর ওর দেহের ঘ্রান মিলেমিশে আপনাকে পাগল করে ফেলেছিলো। নিজেকে তখন এতটাই পূর্ণ মনে হয়েছিলো, সারা পৃথিবী এনে দিলেও এমনটা বোধ হয় মনে হত না।



আবার সংসার জীবন, বউ ধোয়া ওঠা খিচুরি বানিয়ে টেবিলে দিয়ে গেছে, আপনি গালে হাত দিয়ে উদাস ভাবে তাকিয়ে আকাশ দেখছিলেন, মনে পড়ছিলো, এমন বৃষ্টির দিনে মা খিচুরি রান্না করতো আপনি অনেক হইহুল্লো করে খেতে বসতেন কিন্তু মা মেখে না দিলে একগালও মুখে তুলতেন না। সেই ঘ্রান অবচেতন মনে আবার নাকে নাড়া দেবে। হঠাৎ সম্বিত ফিরবে কোমল কন্ঠে " এই খাচ্ছো না কেন? "- শুনে।



আবার বজ্রপাত শুনে আপনার ছোট ছেলেটা কোলে লুকোবে, আর আপনি জড়িয়ে ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভেজা ভেজা চোখে বাবার কথা মনে করবেন।



স্মৃতি গুলো মনের ডাইরিতে জমে থাকে, শুধু দরকার এমন কিছু মুহূর্ত, টাইম ট্রাভেল করতে আর তখন ফিজিক্স লাগবে না, এক কাপ চা হাতে নেবেন আর মৃদু একটা গান, শরীরের হরমোনের উন্মত্ততা আপনাকে বিভিন্ন সময়ে ভ্রমন করিয়ে দেবে।



https://www.facebook.com/euphrocinous

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার লেখেন আপনি।

২| ০৮ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:০৬

ইউফ্রোসিনাস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.