নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস

এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাইবার ক্রাইম ও সামাজিক গুপ্তঘাতকরা

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৬





সাইবার ক্রাইম ও সামাজিক গুপ্তঘাতকরা
ফকির ইলিয়াস
------------------------------------------
বাংলাদেশে সাইবার ক্রাইম একটা অন্যতম অপরাধ হিসেবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। যারা এই ক্রাইম করছে- এরা খুবই চালাক। এরা বিভিন্নভাবে মানুষকে হেনস্তা করছে। গোটা বিশ্বে এই অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে অস্বীকার করার উপায় নেই। এই ক্রাইমের বিভিন্ন প্রশাখাগুলো- সাইবার পর্নোগ্রাফি, হ্যাকিং, স্প্যামিং, সামাজিক হেনস্থা, এ্যাকশন গেম ইত্যাদি।

বাংলাদেশে ফেসবুক একটি জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম। কিন্তু দেখা যায়, বিনা অনুমতিতে কারো নামে একাধিক পেজ খোলা হয়। সম্প্রতি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা, ই-মেইল ও ব্যাংক একাউন্ট হ্যাক করা, ব্যক্তিগত আক্রমণ, আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও শেয়ার করাসহ বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিও। এসব অপরাধ দমনে বর্তমান সরকার কী করছে? এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। ২৩ জুন ২০১৫ তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন- আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে দেশে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করতে ৮৫ জন সরকারি কর্মকর্তা দেশের বাইরে থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর এবং ভারতের ইএসআই ট্রেনিং ইনস্টিটিউট তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এ তালিকায় যুক্ত হবেন সব মিলে ২৫০০ সরকারি কর্মকর্তা। আগামীতে যুক্তরাষ্ট্রও এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবে।

এ জন্য আর্থিক সহযোগিতা করবে বিশ্বব্যাংক। এলআইসিটি প্রকল্পের অধীনে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা, বিসিসির ডাটা সেন্টারের সম্প্রসারণ, ই-গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠা, সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণসহ বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক ৫৬০ কোটি টাকা ঋণ-সহায়তা দিচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় সরকার প্রশিক্ষণ ছাড়াও দেশে একটি ন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজ ফর আর্কিটেকচার (এনইএ) গড়ে তুলতে চাইছেন। এনইএ-এর লক্ষ্য হচ্ছে, সরকারের এক প্রতিষ্ঠানের তথ্য ও ডাটা যাতে সরকারের অন্য প্রতিষ্ঠানও শেয়ার করে কাজে লাগাতে পারে সে ব্যবস্থা করা।

এ প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দপ্তর, অধিদপ্তর ও বিভাগ আলাদা আলাদাভাবে সফটওয়্যার ও আইটি সিস্টেম গড়ে তুলেছে। এতে এক প্রতিষ্ঠানের তথ্য ও ডাটা প্রযুক্তি অন্য প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে পারে না। তদুপরি ঘটে যায় ডুপ্লিকেশন। এতে করে অযথা শ্রম ও সময়েরও অপচয় ঘটে। অর্থের সাশ্রয়সহ সব মিলিয়ে সরকার তথ্য ও ডাটা ব্যবহারের নিমিত্তে একটি অভিন্ন প্লাটফর্ম গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এটা বাস্তবায়ন সম্ভব হলে কাজের গতি বাড়ার পাশাপাশি জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

তিনি আরো লিখেছিলেন বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষার আলোকে সরকার এলআইসিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও তরুণদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়ক এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ৭০ মিলিয়ন বা ৭ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। বাংলাদেশে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি এলআইসিটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। এ লক্ষ্যে গত বছরের শেষ দিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক শীর্ষ স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ‘আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং’কে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৫ বছরের জানুয়ারি থেকে তারা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশই তরুণ। এমনই চিন্তা থেকে সরকার অন্যান্য খাতের মতো আইটি খাতেও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এ খাতের বিকাশে মানবসম্পদ তৈরির নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে একটি হচ্ছে লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্প। প্রকল্পটি গ্রহণে বিশ্বব্যাংকের একটি সমীক্ষাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সরকার।?

এমনই একজন সাইবার অপরাধী আবার আলোচনায়। তার নাম আব্দুল হক। একে একে মন্ত্রী থেকে এমপি, লেখক, বুদ্ধিজীবীসহ অন্তত ১৫৩ জনকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনি। পুলিশের রিমান্ডেও তিনি অকপটে এসব বিষয় স্বীকার করেছেন। অন্যের সিম ক্লোন করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হুমকি দিয়ে তিনি অসংখ্য সহজ-সরল মানুষকে বিপদে ফেলেছেন। ভয়ঙ্কর এই সাইবার ক্রিমিনাল আবদুল হক ও তার সহযোগী আমিনুর রহমানকে এক দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতের বিচারক মামুনুর রহমান ছিদ্দিকী তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে হত্যার হুমকি প্রদানের মামলায় রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে তোলা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক শিবেন্দ্র চন্দ্র দাশ জানান, আইনমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির মামলায় গত ১১ জানুয়ারি আবদুল হক ও আমিনুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মন্ত্রী, এমপি, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, লেখক-সাংবাদিকসহ দেশের ১৫৩ জন বিশিষ্ট নাগরিককে হত্যার হুমকির অভিযোগে সাইবার জঙ্গি আবদুল হককে গত বছরের ২৪ নভেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এতে সারা দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। আবদুল হক সিলেটের জকিগঞ্জ শাহবাগ জামিয়া কাসিমুল উলুম মাদ্রাসার কম্পিউটার শিক্ষক ছিলেন। ২০১৪ সালের ২৭ জুন আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্পুফিং করে অন্যের মোবাইল ফোন নাম্বার ব্যবহার করে তিনি আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে হত্যার হুমকি দেন। সূত্র জানায়, ২৪ নভেম্বর আবদুল হক গ্রেপ্তারের পর দেশের ১৫৩ জন বিশিষ্ট নাগরিককে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের তদন্ত শাখার (ডিবি) পরিদর্শক শাহ মো. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় দুই দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে ২ ডিসেম্বর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আবদুল হক ও তার সহযোগী আমিনুর রহমান। সেই জবানবন্দিতে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের হুমকির পাশাপাশি আইনমন্ত্রী আনিসুল হককেও হত্যার হুমকির কথা স্বীকার করেন আবদুল হক।

অন্যদিকে আমরা দেখছি- একটি মহল এই আবদুল হকের মুক্তি চেয়ে ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছে। এরা কারা? সাহিত্য গ্রুপের নামে এরা কী করতে চাইছে? বিষয়গুলো দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খোঁজা দরকার।

বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৬ ধারায় বলা হয়েছে,

(১) যদি কোনো ব্যক্তি জনসাধারণের বা কোনো ব্যক্তির ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বা ক্ষতি হবে জানা সত্ত্বেও এমন কোনো কাজ করেন, যার ফলে কোনো কম্পিউটার রিসোর্সের কোনো তথ্য বিনাশ, বাতিল বা পরিবর্তিত হয় বা তার মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাস পায় বা অন্য কোনোভাবে একে ক্ষতিগ্রস্ত করে। (২) এমন কোনো কম্পিউটার সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করার মাধ্যমে এর ক্ষতিসাধন করেন যাতে তিনি মালিক বা দখলদার নন, তাহলে তার এই কাজ হবে একটি হ্যাকিং অপরাধ। কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং অপরাধ করলে তিনি অনূর্ধ্ব ১০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন বা উভয়দণ্ড দেয়া যেতে পারে।

তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে বা যার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করা হয়, তাহলে তার এই কাজ অপরাধ বলে গণ্য হবে।

আমরা জানি, ফোন এখন মানুষের হাতে হাতে। এটার ভালো দিক, মন্দ দিক আছে। যারা এটাকে অপরাধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে এদের বিরুদ্ধে মানুষকে দাঁড়াতে হবে। সামাজিক গুপ্তঘাতকরা আজ বড় বেশি তৎপর। এরা তাদের নখর দেখাচ্ছে সর্বত্র। বাংলাদেশে সামাজিক অপরাধ বাড়ছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- মানুষের ধৈর্য-সহ্য শক্তি কমে যাওয়া; খাদ্যে ভেজাল; অর্থের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত লোভ; সামাজিক অবস্থানে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অসম প্রতিযোগিতা; নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়; সামাজিক, রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক ও সাংস্কৃতিক অস্থিরতা; অন্য দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর অযথা চেষ্টা; দাম্পত্য কলহ ও স্বামী-স্ত্রীর প্রতি বিশ্বাসহীনতা; স্বল্পসময়ে ধনী হওয়ার ইচ্ছা; সামাজিক উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ না নেয়া; সুস্থ বিনোদনের অভাব; এ বিষয়ে রাষ্ট্রের উদাসীনতা এবং বিষণ্ণতা ও মাদকাসক্তি। এসবের সুযোগ কখনো নিচ্ছে তৃতীয় পক্ষ। তারা মানুষের দুর্বলতাকে কাজে লাগাচ্ছে। মূলত এরাই সামাজিক সর্প। যারা যে কাউকেই ছোবল দিতে পারে। প্রজন্মকে বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ এই প্রবণতা আমাদের মানবিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দেবে, তা কারো কাম্য হতে পারে না।
---------------------------------------------------------------------------------
দৈনিক ভোরের কাগজ ॥ ঢাকা ॥ শনিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৫

আহলান বলেছেন: হুম এই দেশ আর আমদের নয় মনে হচ্ছে ...অনেকের খেলার পুতুল মনে হয়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.