নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস

এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রবাসে বাংলাভাষা চর্চা

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২১




প্রবাসে বাংলাভাষা চর্চা
ফকির ইলিয়াস
---------------------------------------
একটি ভাষা শিখলে তা তার প্রফেশনের কাজে লাগবে, এমন একটা চমক সবাইকে আলোড়িত করে।
‘অভ্র’ একটি ভাষা বিপ্লব ঘটিয়েছে গোটা বিশ্বে। এর জনক মেহেদী হাসান খান। একজন তরুণ প্রফেশনাল। তিনি বিদেশে বাংলা ভাষাভাষী তরুণ প্রজন্মের আইকন। তার উদ্ভাবিত সফটওয়্যার দিয়েই ফেসবুক, অনলাইনে প্রতিদিন বাংলা লিখছে লাখ লাখ বাংলা ভাষাভাষী।

বিদেশের বিভিন্ন দেশে বাংলা ভাষাভাষীদের সংখ্যা বাড়ছে। যারা নতুন প্রজন্ম, তারা অন্যান্য ভাষায় দক্ষ হলেও নিজ মাতৃভাষা বাংলার প্রতি তাদের আগ্রহ আমাদের আশান্বিত করে। তারা জানতে চায় বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতির কথা। তারা জানতে চায় বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা। আমাদের মহান একুশে, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ছাড়াও বৈশাখ বরণ, রবীন্দ্র-নজরুল-জীবনানন্দ জয়ন্তী, বসন্ত উৎসব, বইমেলাও বিদেশে বাঙালি প্রজন্মের কাছে ক্রমশ করণীয় হয়ে উঠছে। এটা খুবই আনন্দ সংবাদ।

একটি বিষয় আমরা লক্ষ্য করছি, বিদেশে বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠনের আয়োজনে মহান একুশের অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক তরুণ প্রজন্ম অংশ নিচ্ছে। এরা ছবি এঁকেছে। গান গেয়েছে। নাটকে অংশ নিয়েছে। গীতিনকশা করেছে। কবিতা পাঠ করেছে। কাজগুলো সম্ভব হয়েছে এখানের সংগঠন ও অভিভাবকদের আন্তরিকতার কারণে।প্রবাসে বাংলাভাষা চর্চা
এটা একটি জাতিসত্তার শিকড়ের সন্ধান। এই সন্ধান অব্যাহত রাখতে না পারলে বহুজাতিক, বহুভাষিক মানুষের মাঝে নিজ সংস্কৃতির উজ্জ্বলতা তুলে ধরা যায় না।

এরই আলোকে এখন বিশ্বে কাজ হচ্ছে। আমি বারবারই আমার বিভিন্ন লেখায় বলেছি, বর্তমান বিশ্বে একটি জাতির ভাষা ও সাহিত্যের স্থান নির্ণীত, নির্ধারিত হয় সে রাষ্ট্রটির অবস্থান কোন ইকোনমিক জোনে অর্থাৎ দেশটির অর্থনীতির সম্ভাবনা কতোটুকু উজ্জ্বল- তার ওপর। বিশ্বের সামন্তবাদীরা যদি দেখে ঐ দেশটি অর্থনীতির ক্ষেত্রে সাফল্য দেখাচ্ছে, তখনই তারা ঐ ভাষার সাহিত্য নিয়ে মাতামাতি করতে এগিয়ে আসে। বাংলাদেশের ইংরেজি ভাষার লেখক ও সাহিত্য নিয়ে কাজ হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্লাটফর্মে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত হয় সাহিত্যপত্র ‘ওয়ার্ল্ড লিটারেচার টুডে’। বিশ্ববিশ্রুত সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক এ জার্নালটির বর্ষ ৮৭, সংখ্যা ৩, মে-জুন ২০১৩ সংখ্যার প্রচ্ছদ কাহিনী ছিল- ‘বাংলাদেশ অন দ্য ওয়ার্ল্ড স্টেজ’। এই সংখ্যাটিতে ইংরেজি ভাষায় লেখা ও অনূদিত বাংলাদেশের সমসময়ের সাহিত্যকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নরম্যানস্থ ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিমাসিক এ জার্নালটির প্রকাশক। এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯২৭ সালে। বিশ্ববিদ্যালয়টির আধুনিক ভাষা বিভাগের তৎকালীন প্রধান রয় টেম্পেল হাউস এর সূচনা করেছিলেন। সমকালীন আন্তর্জাতিক সাহিত্যকে প্রাধান্য দিয়ে পাঠকদের বিশ্বসাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পর্কে অবহিত করাই এর প্রধান লক্ষ্য। প্রথম পর্যায়ে এর নাম ছিল ‘বুকস অ্যাব্রড’। ১৯৭৭ সাল থেকে জার্নালটির নাম বদলে হয় ‘ওয়ার্ল্ড লিটারেচার টুডে’।

এই সংখ্যাটিতে ‘এ গোল্ডেন এইজ’ খ্যাত তাহমিনা আনাম, ‘গুড নাইট মি. কিসিঞ্জার এন্ড আদার স্টোরিজ’ গল্পগ্রন্থের দ্রষ্টা কাজী আনিস আহমেদ, ‘লাইফলাইনস : নিউ রাইটিং ফ্রম বাংলাদেশ’ সংকলনের সম্পাদিকা ফারাহ গজনভি ও ‘কিলিং দ্য ওয়াটার’ উপন্যাসের লেখক মাহমুদ রহমান- এই পাঁচজনের সাক্ষাৎকার ছিল। ছিল ‘তালাশ’ উপন্যাসখ্যাত লেখিকা শাহীন আখতারের ‘সখী রঙ্গমালা’ উপন্যাসের অংশবিশেষের তর্জমা, যা ইংরেজিতে রূপান্তর করেছেন মাহমুদ রহমান। মাহমুদ রহমান এর আগে মাহমুদুল হকের ‘কালো বরফ’ উপন্যাসটি ইংরেজিতে তর্জমা করেছেন ‘ব্ল্যাক আইস’ নামে। তার এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে এ রকম আরো সাহিত্যকর্ম তরুণ সব তর্জমাকারীর মাধ্যমে সার্থকভাবে ইংরেজিতে ভাষান্তরিত হবে এমন প্রত্যাশা আমরা করতেই পারি।

এই সংখ্যায় লসঅ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দা কবি, অনুবাদক, সম্পাদক ডেভিড শুক তার ছোট ভূমিকায় ভাষা আন্দোলনের প্রসঙ্গটি টেনে বলার চেষ্টা করেছেন, কীভাবে বাংলাভাষা আমাদের উন্মেষ ও বিকাশে আত্মার মতো জড়িয়ে আছে। রবীন্দ্রনাথ ও কাজী নজরুল- এ দুই মহীরুহের উল্লেখ করে তিনি আরো লিখেছেন উপমহাদেশে ইংরেজিতে লেখা সাহিত্যের ধারায় ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি দেরিতে হলেও বাংলাদেশের যোগদান সম্ভব হয়েছে সমসময়ের কয়েকজন গদ্যশিল্পীর রচনার কল্যাণে। তাদের দু-তিনজন দেশেই থাকেন আর অন্যরা থাকেন বিদেশ-বিভুঁইয়ে। ছোটবেলায় বাংলা মাধ্যমে পড়ালেখা করেছেন কেউ কেউ। আবার কারো কারো পড়াশোনা ইংরেজি মাধ্যমেই দেশে ও বিদেশে। রাঙ্গামাটির তরুণ কবি সুদীপ্ত চাকমা মিকাদোর দুটি কবিতা ‘আইডেনটিটি’ ও ‘আনস্পোকেন ওয়ার্ডস’ শিরোনামে তর্জমা করেছেন। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষাকে তুলে ধরার অঙ্গীকার থেকে ‘ওয়ার্ল্ড লিটারেচার টুডে’র এ সংখ্যায় চাকমা কবিতা সংকলিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শুক। দক্ষিণ এশিয়ার কল্পিত এক জনপদ, যার নাম পান্ডুয়া, সেখানটায় রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে কর্মরত এক সাংবাদিককে মুখ্য চরিত্র করে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইন মাই হ্যান্ডস’ উপন্যাসটি লিখছেন কাজী আনিস আহমেদ। তার উপন্যাসটির সূচনাপর্বের অংশবিশেষও রয়েছে এ সংখ্যাটিতে। আর আছে হংকং নিবাসী মারিয়া চৌধুরীর স্মৃতিকথা ‘দ্য থ্রি স্টেজেস অব সেপারেশন’। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন সাহিত্য ও সংস্কৃতি শিল্পকে যারা কাছে থেকে দেখেছেন, এমন ইংরেজি ভাষায় পারদর্শীদের সাহিত্য রচনায় বাংলাদেশের মাটি ও মানুষ খুব সাবলীলভাবেই গ্রন্থিত হচ্ছে। ২০০৮ সালে তাহমিমা আনামের প্রথম উপন্যাস ‘এ গোল্ডেন এজ’ সেরা প্রথম বই হিসেবে কমনওয়েলথ রাইটার্স পুরস্কার পায়। এ ছাড়া উপন্যাসটি গার্ডিয়ান ফার্স্ট বুক অ্যাওয়ার্ড ও কস্টা ফার্স্ট নোবেল প্রাইজের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছিল। তার পরবর্তী উপন্যাস ‘দ্য গুড মুসলিম’ ২০১১ সালের ম্যান এশিয়ান লিটারারি প্রাইজের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিল। তার লেখা বিভিন্ন কলাম বিভিন্ন সময় গ্রান্টা, নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান ও ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এ ছাপা হয়েছে।

বাংলাদেশি লেখক কাজী আনিস আহমেদের রাজনৈতিক উপন্যাস ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইন মাই হ্যান্ডস’- উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে ভারতীয় প্রকাশনা সংস্থা র‌্যান্ডম হাউস ইন্ডিয়া। আরেকজন বাংলাদেশি লেখিকা মারিয়া চৌধুরীর স্মৃতিকথন ‘বিলাভড স্ট্রেনজার্স : অ্যা মেমোয়ার’- প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থা ব্লুমসবেরি। এরকম অনেক কাজই হচ্ছে, যা বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য প্রতীক হিসেবে কাজ করছে। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলা ভাষা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, উড়িষ্যা মিলে মোট ২৫ কোটিরও বেশি লোক বাংলা ভাষায় কথা বলে। এর বাইরে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের আরো এক কোটি লোক বাংলাদেশ আর ভারতের বাইরে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন জীবিকা, ব্যবসা বা লেখাপড়ার প্রয়োজনে; যাদের মাতৃভাষা বাংলা। দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীতে এমন অনেক প্রধান ভাষা আছে, যে ভাষাতে কথা বলা লোকের সংখ্যা এক কোটিরও কম। সেদিক থেকে প্রবাসে এক কোটি বা তারও বেশি বাঙালি প্রবাসীর বাংলা ভাষাচর্চার ব্যাপারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

আমরা ইতিহাস থেকে জানি, আঠারো, উনিশ আর বিশ শতকে ইংরেজ, জার্মান আর ফরাসি জাতি এশিয়া আর আফ্রিকার বহু দেশ দখল করে নিয়েছিল সামরিক শক্তির জোরে। এখন সেই দিন নেই। যা আছে তা হচ্ছেÑ ভাষিক কৌশল প্রয়োগ করে কূটনৈতিক শাসন। আর সে কারণেই মার্কিন সাম্রাজ্যের মতো আরো অনেক বৃহৎ শক্তি এখন মনে করছে, এই একবিংশ শতাব্দীতে সৈন্য-সামন্ত দিয়ে নয় বরং ভাষা আর সাংস্কৃতিক আধিপত্যের মধ্য দিয়ে সামরিক শক্তি প্রয়োগের চেয়েও অনেক সহজে একটি রাষ্ট্রের মননে দখল নেয়া সম্ভব। আর সে প্রয়োজনেই ইউরোপ-আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের উন্নত দেশগুলোর দৃষ্টিতে ঢাকাই হচ্ছে বাংলাভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির রাজধানী। আর তাই পশ্চিমবঙ্গ নয় বরং বাংলাদেশকে বিবেচনায় রেখে বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা, ডয়েসে ভেলে, রেডিও ইরানসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো তাদের নিজেদের দেশ থেকে বাংলাভাষায় সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া পোল্যান্ডের ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়, জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়, চেকোশ্লোভাকিয়ার চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ এবং আমেরিকা ও কানাডার দুই-তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগগুলো বাংলাদেশকে কেন্দ্রে রেখে বাংলা ভাষার চর্চা ও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের নিজেদের খরচেই।

এগুলো নিঃসন্দেহে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি সংগঠনগুলোর জন্য আশার সংবাদ। এই যে সাফল্যের ঝিলিক- এটিকে আরো এগিয়ে নিতে ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, দূরপ্রাচ্য, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সংগঠনগুলোর দায়িত্ব কী- সে বিষয়ে কিছু আলোকপাত করতে চাই। বলতে দ্বিধা নেই, এসব দেশ অভিবাসী বাঙালিকে বিত্ত-বৈভব-সুনাম-ঐশ্বর্য অনেক কিছুই দিয়েছে। সময় এসেছে কিছু ফেরত দেবার। আর তা সম্ভব বিদেশের এই দেশগুলোতে নিজ সাহিত্য-শিল্প-সংস্কৃতির প্রসার ঘটানোর মাধ্যমে। এ বিষয়ে কিছু প্রস্তাবনা আমি এই নিবন্ধে তুলে ধরতে চাই।

১. ইউরোপ-আমেরিকায় মূলধারার যে পাবলিক লাইব্রেরিগুলো রয়েছে, সেসব লাইব্রেরিতে প্রতি বছর কয়েকশ বই দান করতে পারে অভিবাসী সংগঠনগুলো। ক্রমশ এসব লাইব্রেরিতে গড়ে তোলা যেতে পারে ‘বাংলাদেশ বুক কর্নার’। এখানে থাকতে পারে বাংলাদেশ বিষয়ে বাংলা, ইংরেজি ভাষায় লিখিত গ্রন্থাবলী। থাকতে পারে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সামাজিক-অর্থনৈতিক বিষয়ের বিভিন্ন বই। থাকতে পারে বাংলাভাষার কয়েক হাজার বই। যা পড়ে অভিবাসী বাঙালিরাই শুধু নয়, ভিন্ন ভাষাভাষীরাও জানতে পারবে বাংলাদেশ, বাংলাভাষা, বাংলা সংস্কৃতিকে। করানো যেতে পারে অনুবাদের কাজটিও। বিদেশে যারা দক্ষ অনুবাদক আছেন, তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারে সংগঠনগুলো।

২. বিদেশে অনেক প্রতিভাবান শিল্পী রয়েছেন। অনেক নাট্যাভিনেতা রয়েছেন, চিত্রকর রয়েছেন। তাদের অংশগ্রহণে একক বা সম্মিলিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে সংগঠনগুলো। আয়োজন করা যেতে পারে কোনো চিত্রশিল্পীর সপ্তাহব্যাপী চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর। এজন্য আর্থিক সাপোর্ট দরকার। সংগঠনগুলো স্পন্সরের দায়িত্ব, আয়োজনের দায়িত্ব পালন করতে পারে।

৩. প্রবাসে অনেক প্রতিভাবান লেখক রয়েছেন, যারা সরাসরি ইংরেজি ভাষায় লিখেন। অনেক তরুণ লেখক-লেখিকা আছেন, যারা স্কুল-কলেজের বিভিন্ন আয়োজনে লেখালেখি করে সুনাম কুড়িয়েছেন। সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো তাদের গ্রন্থ প্রকাশে এগিয়ে আসতে পারে। তাদের বই বিপণন করতে পারে। কাজটি মোটেই কঠিন নয়।

৪. বাংলাভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বিষয়ে সেমিনার-সিম্পোজিয়াম আয়োজন করতে পারে প্রবাসের সংগঠনগুলো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক বিদেশি বুদ্ধিজীবী রয়েছেন যারা বাংলা সাহিত্য ও ভাষায় দক্ষতা দেখিয়েছে। ক্লিনটন বি. সিলি কিংবা উইলিয়াম র‌্যাদিচের মতো ব্যক্তিত্ব বিশ্বে আরো আছেন। বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাঙালিরা তাদের পাদপ্রদীপে নিয়ে আসতে পারেন। কাজগুলো খুব কঠিন নয়। প্রয়োজন সদিচ্ছার। বিদেশে সংগঠনগুলো তাদের সভাপতি-সম্পাদকের পদ নির্বাচনে লক্ষ ডলার ব্যয় করেন। যদি সেটা তারা পারেন তাহলে আমার এই প্রস্তাবনাগুলো সদয় বিবেচনা করতে পারবেন না কেন? আমার বিশ্বাস, প্রবাসী প্রজন্ম সঠিক দিকনির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বিদেশে সাহিত্য-শিল্প-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অনেকদূর এগিয়ে যাবে। এগিয়ে যাবে অর্থ-বিত্ত অর্জনের জন্য বাংলাভাষার গুরুত্বও।
-------------------------------------------------------------------------------------
দৈনিক আজকের পত্রিকা ॥ ঢাকা ॥ ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ শুক্রবার


মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩৩

বিজন রয় বলেছেন: ++++

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: ভাল লেখা ....।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩১

উল্টা দূরবীন বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.