নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস

এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

তথ্য-উপাত্ত নয়, মানুষ ন্যায়বিচার চায়

১১ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৭:৪৮





তথ্য-উপাত্ত নয়, মানুষ ন্যায়বিচার চায়
ফকির ইলিয়াস
=========================================
গোপন তথ্য রাষ্ট্র সংরক্ষণ করে। মানুষ তা নিয়ে খুব একটা ভাবে না। ভাবার দরকারও নেই। মানুষ শান্তি চায়। আর সে জন্য রাষ্ট্রের সমর্থন দরকার। সেই কাজটি কি সরকার করতে পারছে? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একটি দরকারি কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যখন কথা বলি, মনে রেখে দেবেন; কোনো অমূলক কথা বলি না। একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, আমি হেড অফ দি গভর্নমেন্ট। আমার কাছে নিশ্চয়ই তথ্য আছে।’ এই তথ্যগুলো কি তা মানুষ জানতে চাইছে না। জানার দরকারই বা কি?

আমরা জানি, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। এর ভেতরে অনেক তথ্য ছিল। অনেক উপাত্ত ছিল। সাধারণ মানুষ তা জানতে চাননি। তারা একটি স্বাধীন দেশ চেয়েছিলেন। তারা যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। তারা বিজয়ী হয়েছিলেন। তারা কমান্ড পালন করেছেন। নীতি নির্ধারণ করেছিলেন নীতি নির্ধারকরা। চট্টগ্রামে এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটা গোটা বাংলাদেশের জন্য, বাঙালি জাতির জন্য একটি কলঙ্কজনক ঘটনা। নিজ সন্তানের সামনে মাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের মনে আছে, স্ত্রী বন্যা আহমেদের সামনে হত্যা করা হয়েছিল লেখক অভিজিৎ রায়কে। তার লাশ রাস্তায় পড়েছিল। মিতুর লাশও একই কায়দায় রাস্তায় ফেলে গেছে খুনিরা। অভিজিৎ হত্যা মামলার কিছুই করতে পারেনি বর্তমান সরকার। যদি পারতো তাহলে হয়তো মিতুকে এভাবে প্রাণ দিতে হতো না।

আমরা ভুলে গেছি সাগর-রুনীর কথা? আমরা ভুলে গেছি ফায়সাল আরেফীন দীপনের কথা? আরো কত নাম! সবগুলো এই তিন বছরে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড। কি সুরাহা করা গেল ওসব খুনের? কিছুই করা যায়নি। গোটা দেশজুড়ে আজ ক্ষোভের আগুন। সারা দেশে উগ্রপন্থীদের হামলায় একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় এক প্রতিবাদী সমাবেশ থেকে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না বলে অভিযোগ করেছে সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। ধর্মপ্রচারক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও মুক্তমনা ব্লুগারসহ বিভিন্নজনকে একের পর এক হত্যার কয়েকটি ঘটনাকে সরকারের মন্ত্রীরা ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে উদীচী নেতারা বলছেন, ‘হত্যাকাণ্ডগুলো কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন হতে পারে না, সবই পরিকল্পিত।’ একই কথা এখন বলছেন সরকারের মন্ত্রীদের কেউ কেউ। ‘টার্গেট কিলিং’ বলতে তারা কি বুঝাতে চাইছেন- এতে সরকারের কোনো দায় নেই? ফিরে আসি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথায়। তিনি বলছেন- ‘আমরা যখন একজন আসামি ধরি, তখন সমস্ত ক্লু ধরে, টেলিফোন নম্বর থেকে মিলিয়ে, সব কিছু মিলিয়ে একজনকে ধরি। তার পরিচয়ের সূত্রটা ধরে আমরা যোগসূত্রটা পেতে পারি।’ প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখেছেন, ‘যারা মনে করেন, শুধুমাত্র রাজনীতিক হিসেবে বলছি, রাজনৈতিক কারণে বলছি, বাইরে জঙ্গিরা পার পেয়ে যাচ্ছে… সেই পার পেয়ে যাওয়া জঙ্গিরা কারা? তাদের নাম-ঠিকানা, তাদের পরিচয়টা যদি জেনে থাকেন, তাহলে দয়া করে আমাদের জানান। তাহলে দেখবেন, জঙ্গি জঙ্গিই। সে যে দলেরই হোক, আমাদের কাছ থেকে রেহাই পাবে না।’ কথার বিপরীতে কথা সারাদিন চলতেই পারে। কিন্তু তাতে সমাধান নাই। সমাধান হচ্ছে কাজে। সমাধান হচ্ছে অ্যাকশনে। সরকার কেন বিহীত করতে পারছে না? মিতুকে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশের চিহ্নিত খুনিরা তাদের সীমারেখা লঙ্ঘন করেছে। পুলিশের স্ত্রী-পুত্র-কন্যাদের টার্গেট করাটা শুধু কাপুরুষোচিত নয়, গোটা রাষ্ট্রের ভিতে টান দেয়া। খুনিচক্র সেই কাজটি করেছে। রাষ্ট্রকে তা বিবেচনায় রেখেই এগোতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস বাবুল আক্তারদের দমানো যাবে না। তার পাশে এসে দাঁড়াবেন আরো হাজারো পুলিশ অফিসার। কারণ এই দেশটি তাদের। তারা শপথ করেই রাষ্ট্র ও জনগণের আমানত রক্ষার জন্য এই পেশা বেছে নিয়েছেন।

বাংলাদেশের মানুষকে এই দানবশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের এক লাখ মুফতির সই করা ফতোয়া পাঠানো হচ্ছে জাতিসংঘে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম রাষ্ট্র এবং মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সংস্থা ওআইসিতেও ফতোয়ার কপি ২০ খণ্ডে প্রকাশ করে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী ১৮ জুন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর জাতিসংঘ ছাড়াও দেশে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে তা পাঠানো হবে। বিভিন্ন মিডিয়াকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল উলামার চেয়ারম্যান ও শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ। ফতোয়া কমিটির প্রধান ও শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ বলেছেন, জামায়াত-শিবিরসহ কিছু গোষ্ঠী ফতোয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। কেউ কেউ জঙ্গি হামলার ভয়ে ফতোয়ায় সই করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ফতোয়ায় সই নিতেও সময় লেগেছে। তিনি জানিয়েছেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডকে ইসলাম সমর্থন করে না, এটা সবার কাছে পরিষ্কার হওয়া জরুরি। কোনো গোষ্ঠীর উসকানিতে দেশের তরুণরা যেন বিপথগামী না হয়, সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া দেশের সব আলেম-উলামা সম্মিলিতভাবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিলে ধর্মের সঙ্গে জঙ্গিবাদের যে সম্পর্ক নেই তা বিশ্বের কাছে স্পষ্ট হবে। এতে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। এরকম প্রতিটি কাজে সরকারের সাহায্য দরকার। কারণ ১৬ কোটি মানুষের দেশে জঙ্গিবাদবিরোধী গণসচেতনতা তৈরি করা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দায়িত্ব।

এই দেশে কারা ‘যে কোনো মূল্যে’ ক্ষমতা দখল করতে চায়- তা এখন আর মোটেই লুকানো কিছু নয়। মেন্দি সাফাদি ইস্যু স্পষ্ট করে দিয়েছে- প্রয়োজনে ইসরায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হলেও ক্ষমতায় যেতে চাইছে একটি পক্ষ। এরা কারা তা কারো অজানা নয়। মেন্দি সাফাদি ও সজীব ওয়াজেদ জয় বৈঠকের খবরটি বিষয়ে ক্ষমা চেয়েছে বিবিসি। জয়কে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুসরণ না করার বিষয়টি স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছে বিবিসি। ‘জনাব ওয়াজেদের বক্তব্য পাওয়ার আগেই ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করার জন্য আমরা দুঃখিত, কেননা এ ধরনের ক্ষেত্রে সাধারণত বিবিসির ওই নিয়মই অনুসরণ করার কথা।’ বলে এ ঘটনার আলোকে সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুসরণের বিষয়টি জোরদার করা হবে- জানিয়েছেন বিবিসি গ্লোবাল নিউজের করপোরেট কমিউনিকেশন্স ম্যানেজার পল রাসমুসেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এসব কিসের লক্ষণ? বাংলাদেশে এসব পেইড এজেন্টদের কারা ভাড়া করে নিচ্ছে? যারা এভাবে এজেন্ট খুঁজছে তারাই এসব হত্যাকাণ্ডের পালের গোদা নয় কি? বিষয়টি সরকারের সংস্থাগুলোকে খুঁজে দেখতে হবে।

বাংলাদেশকে বিদেশের সঙ্গে তুলনা করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়। ইউরোপ আমেরিকায় সন্ত্রাস-খুন হলেই খুব কম সময়ের মাঝে খুনি ধরা পড়ছে। তা আমরা সবসময় দেখি। বাংলাদেশে কেন খুন তামাদি হয়ে যাচ্ছে? কতদিন লাগবে একটি রহস্য খুঁজে পেতে?

মিতু হত্যা নতুন করে ভাবার দরজা খুলে দিয়েছে। পুলিশের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা দেয়া সরকারের বড় দায়িত্ব। আমার এখনো প্রশ্ন জাগে বাংলাদেশের সব পুলিশ সদস্য আধুনিক অস্ত্র বহনের সুযোগ পান কি? মনে রাখতে হবে, টেরোরিস্টরা কৌশল পাল্টাচ্ছে। তাই সরকার ও তার বাহিনীকেও কৌশল পাল্টাতে হবে। এছাড়া মোকাবেলা করা কঠিন হতে পারে। আর যেহেতু একটি পক্ষ সরকারকে হেনস্তা করার জন্য মাঠেই আছে তখন তা ভুলে গেলে চলে কি করে? খবর বেরিয়েছে লন্ডনে তারেক রহমান বলেছেন, তিনি ও তার দল ক্ষমতায় গেলে আইন করে ‘আওয়ামী লীগ’ নিষিদ্ধ করবেন। ‘আওয়ামী’ শব্দটি উর্দু বিধায় তিনি এমনটি করবেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে, তারেক রহমান তার খেলা খেলেই যাচ্ছেন। এর উত্তর কীভাবে দিতে হবে- তা আওয়ামী লীগকেই ভাবতে হবে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।
------------------------------------------------------------------------------------
দৈনিক ভোরের কাগজ ॥ ঢাকা ॥ শনিবার, ১১ জুন ২০১৬

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৮:২৬

আমি রাজপথের সৈনিক বলেছেন: ন্যায় বিচার তো আমরাও চাই। কিন্তু যে-সব শয়তান গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে তারা কারা? উত্তর: এরা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের স্বজন।

২| ১১ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৩০

আমি নবপ্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা বলেছেন: উত্তর: এরা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের স্বজন।
সহমতপ্রকাশ করছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.