নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস

এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

সরকারের মেয়াদ ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:২০




সরকারের মেয়াদ ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা
ফকির ইলিয়াস
-----------------------------------
না- মধ্যবর্তী কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। বর্তমান সরকার নির্দিষ্ট মেয়াদ পার করেই নির্বাচন দেবে। সেই হিসেবে ২০১৯ সালে নির্বাচন হবে। কথাটি নিউ ইয়র্কে আবারও জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এমন খবর যমুনার জলে ভেসে এসেছে নাকি যে মধ্যবর্তী নির্বাচন হচ্ছে! প্রধানমন্ত্রীর এবারের যুক্তরাষ্ট্র সফর কিছুটা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তিনি ব্যস্ত আছেন নানা কারণে। তিনি এ সফরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন হাই প্রোফাইলের সাথে মতবিনিময় করেছেন। এর সবগুলোই ইতিবাচক দিক। এবার যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আবারও বেশ কিছু দরকারি কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন- উন্নয়নের রাজনীতির ব্যাপারে কোনো আগ্রহ নেই বিএনপির। তারা অগণতান্ত্রিকভাবেই ক্ষমতায় এসেছিলো। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির দপ্তরে ভয়েস অফ আমেরিকাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
বিরোধী দলগুলোকে রাজনীতির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত স্থান করে দেওয়া হচ্ছে না এ অভিযোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন চ্যানেলগুলোতে অহরহ সরকারের সমালোচনা চলছে। মিটিং-মিছিল, সভা সমাবেশও হচ্ছে অতএব এ অভিযোগ ঠিক নয় যে বিরোধীদল কোনো রাজনৈতিক স্থান পাচ্ছে না। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশের অর্থ সামাজিক উন্নয়নে তার সরকারের সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন।
মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, দেশে দারিদ্র্যের সংখ্যা হ্রাস, অবশিষ্ট দরিদ্রের জন্য তার সরকারের সহায়তা প্রকল্প, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে ব্যয় বৃদ্ধিসহ মানবোন্নয়নের প্রায় সব সূচকেই বাংলাদেশের অর্জন প্রশংসামূলক বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এ অর্জনের ব্যাপারে তাকে বহু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন তবে সব চ্যালেঞ্জকেই মোকাবেলা করেছেন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে। এ সময় সন্ত্রাস ও উগ্রবাদী সহিংসতা দমনে তার সরকারের নেওয়া জিরো টলারেন্স নীতি বহাল থাকবে এবং এ ব্যাপারেও তিনি জনগণের সম্পৃক্ততায় আশাবাদী মনোভাব পোষণ করার কথা উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা বেশ কিছু সুস্পষ্ট কথা বলেছেন এবারের যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়।
ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘কথা তো কারো কাছ থেকে আমরা কেড়ে নিচ্ছি না। যার যার ইচ্ছামতো কথা বলেই যাচ্ছে। তারা মিটিং করছে, র‌্যালি করছে, সবই তারা করছে।’
ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিগত চার দলীয় জোট সরকারের সময় যারা এ যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছিলো, তাদেরও বিচার হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, এখনো যারা হতদরিদ্র বা দারিদ্র্যসীমার নিচে বা যারা একটু কষ্টে আছে, তাদের কষ্ট দূর করার জন্য আমরা কতগুলি পদক্ষেপ নিয়েছি। যেমন ইতোমধ্যে ১০ টাকায় একজন মানুষ যেন ৩০ কেজি করে চাল কিনতে পারে, তার ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। ৫০ লক্ষ মানুষ এ সুযোগটা পাবে।
ভয়েস অব আমেরিকা তার কাছে জানতে চেয়েছিলো, এই যে বিপুল সাফল্য, বিশেষ করে মানবোন্নয়নের ক্ষেত্রে আপনার সরকারের তুলনাহীন সাফল্য, এর পেছনে কী রহস্য কাজ করেছে? এতদিন হয়নি, এখন কেন হচ্ছে?
এর উত্তরে তিনি জবাব দেন- ‘কেন হচ্ছে! আমি একটি কথা আপনাদের মনে করাতে চাই, যে দল একটা দেশের জন্য, জাতির জন্য ত্যাগ স্বীকার করে, সংগ্রাম করে, আন্দোলন করে, বিপ্লব করে এবং যুদ্ধ করে বিজয় এনে দেয়, সেই দল যখন ক্ষমতায় থাকে, তখনই কিন্তু দেশের উন্নতি হয়। কাজেই আমরা যেটা করি, আমাদের একটা অন্তরের টান থেকে কাজ করি। এখানে আর কোনো ম্যাজিক না। ম্যাজিক একটাই, আমরা জনগণের কল্যাণে দেশের স্বাধীনতা এনেছি, জনগণের কল্যাণ করাটাই আমরা মনে করি আমাদের কর্তব্য।’
প্রধানমন্ত্রী তার সম্মানে দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনায় বলেছেন- দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই আজ সরকারের প্রশাসনে এবং সামরিক ক্ষেত্রে বাঙালিরা উচ্চপদে আসীন হতে পেরেছেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে চিত্র তুলে ধরে বলেন, গত সাড়ে সাত বছরে আমাদের সরকার দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, গ্রামীণ উন্নয়ন, পররাষ্ট্র নীতি ও কৌশলসহ প্রতিটি সেক্টরে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যাপক উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ০৫ শতাংশে উন্নীত এবং দারিদ্র্যের হার ২২ দশমিক ৪ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬৬ মার্কিন ডলার। রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ৫ কোটি মানুষ নিম্ন আয়ের স্তর থেকে মধ্যম আয়ের স্তরে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রশাসন এবং শিক্ষা-দীক্ষার সকল ক্ষেত্রে বাঙালিদের বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘এ বৈষম্য দূর করে অধিকার আদায়ে জাতির পিতা ২৩টি বছর সংগ্রাম করেন, আন্দোলন করেন।’
বঙ্গবন্ধুকে ৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার পর খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় বসলেও দিনকতক বাদেই তাকে ক্ষমতা থেকে হঠিয়ে আসল ষড়যন্ত্রকারী জিয়া ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান সেনা আইন ভঙ্গ করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে ক্ষমতায় আসে। বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে এই খুনিদেরকে পুরস্কৃত করে। যে জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ ছিল, মার্শাল ল’ অর্ডিনেন্স দিয়ে সংবিধান সংশোধন করে এই জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা যুদ্ধাপরাধী, তাদের ভোটের অধিকার ছিলো না। মার্শাল ল’ অর্ডিনেন্সের মাধ্যমে সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদের কিছু অংশ সংশোধন করে জিয়া তাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে রাজনীতি ও দল করার সুযোগ দিয়েছে।
শেখ হাসিনা যে কথাগুলো বলছেন- তা নতুন প্রজন্মের জানা ও বোঝা দরকার। কারণ একটি জাতি তার অতীত ইতিহাস না জানলে, সামনে এগোতে পারে না। একটি রাষ্ট্রে উন্নয়নের কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য একটি সৃজনশীল সরকারের দীর্ঘ মেয়াদ দরকার। জামায়াত-বিএনপির সরকার, বাংলাদেশে একটি চরম ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। তাদের ‘হাওয়া ভবন’ নিয়ন্ত্রণ করতো সবকিছু। এ গুলো দেশবাসীর অজানা নয়। আর অজানা নয় বলেই মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের একটি সরকারের প্রতীক্ষায় ছিলো।
বিশ্বরাজনীতির ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ইলেকশনে অংশ নেওয়া-না নেওয়াও একটি দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। বিএনপি কি তাদের সেই অধিকার খাটাচ্ছে? তারা তো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তাদের জনপ্রিয়তা নিজেদের অজানা নয়। কিন্তু কথা হচ্ছে, বিএনপি ২০১৪ সালে প্রায় তিনমাস এ দেশে জ্বালাও পোড়াও করেছিলো কেন?
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে না এসে বিএনপির একটি মহাভুল করেছিলো। এ ভুলের মাশুল দিতেই দলটি নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই চালাচ্ছে। তাদের মূল ব্যর্থতার জন্য মৌলবাদী-জঙ্গিদের সমর্থনই অন্যতম কারণ।
একটা কথা মনে রাখা দরকার, বিদেশের কোনো শক্তি বাংলাদেশের সরকার বদলে দেবে না। দেওয়ার সময়ও এখন নয়। বিশ্ব এখন গ্লোবাল পলিটিক্যাল ডেভেলপমেন্টকে বিবেচনা করছে খুব সূক্ষ্মভাবে। তাই ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এখন প্রায় অচল।
সেই বিবেচনায়, সরকারকে তাদের মেয়াদ পূর্ণ করার সুযোগ দিতে হবে। গণতন্ত্র কিংবা ভোটাধিকারের নামে কোনো জঙ্গিবাদী-মৌলবাদী দলকে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়া যায় না। দেওয়া উচিতও নয়।
শেখ হাসিনার সরকার, বিদেশে বাংলাদেশকে উচ্চাসন দিয়েছে। এ ধারা সমুন্নত রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে- গণতন্ত্র মানেই কোনো কালো শক্তির হাতে দেশকে তুলে দেওয়া নয়।
-------------------------------------------------------------------------
দৈনিক খোলাকাগজ ॥ ঢাকা ॥ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ শুক্রবার

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.