নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

ফাহমিদা বারী

আমার ব্লগ মানে গল্প। গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানাই :)

ফাহমিদা বারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প- মাস্টারমাইন্ড (প্রথম পর্ব)

২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ২:৩৪

(চলন্তিকা থেকে প্রকাশিত আমার 'ভাঁটফুলের সৌরভ' গল্পগ্রন্থে প্রকাশিত এই গল্পটি তিন পর্বে প্রকাশ করছি। গল্পটি প্রায় ৫০০০ শব্দের।)


আমার নাম অনন্য রায়হান। নামটা কি একটু চেনা চেনা লাগছে? লাগলেও লাগতে পারে। তবে না লাগলেও কিছুমাত্র অবাক হব না! এভাবে হুট করে আপনাদের সামনে নিজের বৃত্তান্ত বলতে বসলাম দেখে হয়ত অনেকেই মনে মনে অবাক হচ্ছেন। যদি ধৈর্য রাখতে পারেন, তাহলে সাথে থাকার অনুরোধ জানাবো। আজ আমি অদ্ভুত একটা গল্প বলতে যাচ্ছি আপনাদের।
তার আগে নিজের পরিচয়টা আরেকটু সবিস্তারে দিয়ে নিই। গল্পের প্রয়োজনে আপাতত সেটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব রাখে। আমার নামের পাশে রায়হান দেখেও হয়ত অনেকে এখনো পরিচিতিটা বের করে আনতে পারেননি। এমন কত শত মানুষ নিজেদের নামের পাশে রায়হান পদবী নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে! কাজেই তাদের মাঝখান থেকে আমাকে আলাদা করে চিনে নেওয়াটা হয়তবা সকলের জন্য সম্ভব নাও হতে পারে। আমি স্বনামধন্য সাহিত্যিক ও প্রকৌশলী প্রয়াত ড মুর্তজা রায়হানের একমাত্র সন্তান। কী এবারে চিনতে পেরেছেন তো? নিশ্চয়ই পেরেছেন তাই না? আর না চিনে কি উপায় আছে?

মাঝে মাঝে আমি আমার মরা বাপকে নিয়ে চিন্তা করি। কী মানুষ ছিল লোকটা! যতই চিন্তা করি, ততই মাথা নষ্ট হয়ে যায় আমার। যেখানে হাত দিয়েছে, সেখান থেকেই সোনা তুলে এনেছে। দুর্দান্ত ছাত্র হিসেবে জীবনটা শুরু করেছিল একসময়। স্কুল কলেজের প্রতিটা ধাপ ফটাফট ফটাফট করে ব্যাপক সাফল্যের সাথে পার করে দিয়েছে। সেই যুগে ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরের হাত থেকে সোনার মেডেল নিয়েছিল আমার বাবা। আশেপাশের সবাই আমার বাবাকে এক নামে চিনতো। পাড়ায় আমার দাদা দাদীর মান মর্যাদা ছিল সীমাহীন। কারণ তাদের সন্তান সোনার মেডেল পাওয়া ছাত্র। লোকে তাকে বলত সোনার ছেলে। তখনকার দিনে তো আর পাড়া মহল্লায় চক্কর কাটলেই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের দেখা মিলতো না! ভালো জিনিসের কদর ছিল বেশি, মিলতও তা কালেভদ্রে।
দেশের তখনকার একমাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি ডিগ্রীলাভের পর ইউকে’র নামকরা একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ও পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন আমার বাবা। অপটিকাল ফাইবারের একটা শাখায় পিএইচডি করেছেন। সিলিকন চিপ নিয়ে তার গবেষণার কাজটা নাকি দুর্দান্ত হয়েছিল। লণ্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ তাকে ফেলোশিপের অফার দেয়। প্রফেসর ব্রাউনিং এর সাথে বাবার কাজের ফলাফল সেখানে বেশ হইচইও ফেলে দিয়েছিল। ব্রিটিশ নিউজপেপারে বাবা আর তার গবেষণাকে নিয়ে কাভার স্টোরি করা হয়েছিল। বাবা তার বেশ কয়েকটি বিখ্যাত গবেষণা কাজের জন্য প্যাটেন্ট পেয়েছিলেন। বাবার স্টাডিরুমে সেই প্যাটেন্ট সার্টিফিকেটগুলো এখনো সুন্দর করে বাঁধাই করা আছে।

এতকিছু সত্ত্বেও বাইরে বেশিদিন মন টিকলো না আমার বাবার। দেশমাতৃকার প্রতি দায়বদ্ধতা নাকি নিজের চড়ুই পাখির মতো ছটরফটর স্বভাবের জন্য কে জানে... বাবা আবার দেশে ফিরে এলেন। ততদিনে পঁয়ত্রিশের কোঠা পার করে ফেলেছেন। ফিরে এসে কিছুদিন শিক্ষকতা করলেন। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে পলিটিক্স আসন গেঁড়ে ফেলেছে। তাই শিক্ষকতা করে সেই মজাটা পেলেন না। অতএব সেটা তার বেশিদিন পোষালো না। ছেঁড়া জামার মতো সেটাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে একটা নামকরা কনসালটিং ফার্মে চাকরি নিলেন। ভাবলেন, ট্র্যাক পাল্টালে হয়ত মনটাও বসে যেতে পারে। তাহলে দেশে পাকাপোক্তভাবে গেঁড়ে বসা যাবে। কারণ মন ছটফট করলেও শরীর তো আর সবসময় বশে থাকতে চায় না। সে তখন স্থিতির সন্ধানে সাধনা শুরু করেছে।

কিন্তু কনসাল্টিং ফার্মেও একসময় মন টিকল না আমার বাবার। যদিও ফার্মের হর্তাকর্তারা বাবাকে রেখে দেওয়ার জন্য অনেক সাধ্য সাধনা করল। এত স্কলার একজন মানুষ তাদের ফার্মে থাকলে অন্যরকম একটা প্রেস্টিজের ব্যাপার। কিন্তু আমার বাবাকে তো আর তারা চেনে না! তাকে তখন অন্য ভূতে পেয়েছে। সাহিত্যের ভূত। সেই ভূত এতটাই শক্তিশালী যে, এত বছরের সাধ্য সাধনা, পরীক্ষার ভালো ফলাফল, সোনার মেডেল, গবেষণা, প্যাটেন্ট... সব একেবারে ধুলোয় গড়াগড়ি খেতে শুরু করলো। আমার বাবা এসবের বিন্দুমাত্র পরোয়া না করে সেই ভূতকেই তার ভবিষ্যত বানাতে একেবারে উঠেপড়ে লেগে গেল! চাকরি বাকরির ধারই আর ধারলো না। দেশের বাইরে কাজ করে মালপাত্তি ততদিনে কিছু কম কামায়নি বাবা। সেটাকেই বসে বসে খরচ করে আর দিস্তা দিস্তা কাগজ লেখালেখি দিয়ে ভরিয়ে তুলে আমার বাবার দিন কাটতে লাগলো। সবার ধারণা হলো, এটাও তার নতুন আরেকটা এক্সপেরিমেন্ট মাত্র। খুব বেশিদিন স্থায়ী হবে না।

কিন্তু দিনে দিনে সাহিত্যের প্রতি বাবার প্যাশন নতুন নতুন মাত্রা পেতে শুরু করল। বাবার আশেপাশের মানুষজন, অর্থাৎ তার বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন প্রত্যেকেই খুব অবাক হলো। অবাক হওয়ার মতোই বিষয় বটে! এমন একজন মানুষ তো শুধু লেখাপড়া নিয়ে থাকলেই হেসেখেলে জীবনটাকে পার করে দিতে পারে। তার আর এই বয়সে এসে অন্যকিছু করার দরকারটা কী? তাছাড়া যে মানুষটা লেখাপড়ার জন্য সেই ছোটবেলা থেকে এত কষ্ট করল, সে কী না সেটা থেকেই পুরোপুরি হাত গুটিয়ে বসে থাকল! এত কষ্ট করার তাহলে কী প্রয়োজন ছিল? প্রায় মধ্যবয়সে এসে এই সাহিত্যের ভূত মাথায় চাগাড় দিয়ে ওঠার কোনো মানে হয়?
বাবার অবস্থা তখন সত্যিই পাগলপারা। কাজকর্মে আর আগের মতো মন নেই। স্টাডিরুমের যত্রতত্র লেখালেখির ছেঁড়া কাগজ, সিগারেটের পোড়া টুকরো আর বিখ্যাত সাহিত্যিকদের কালজয়ী সব লেখা গড়াগড়ি খেতে লাগল। বাবার ততদিনে নেশা চেপে গেছে। সাহিত্যকে আত্মস্থ করা কী এমন দুরুহ কাজ!

কিছু কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী এটাকে ক্ষনিকের নেশা মনে করে ভালো পরামর্শ দিতে এলেন। কেউ কেউ আগাম সতর্কবানী উচ্চারণ করে বললেন, ‘সব লাইনেই অনেক কষ্ট করতে হয়। কেউ কাউকে সহজে পাত্তা দিতে চায় না। কারো জন্য এক ইঞ্চি জায়গাও কেউ ছাড়তে রাজি হয় না। এত কষ্টে এতদিন ধরে তৈরি করে রাখা ফিল্ড ছেড়ে দিয়ে এখন আবার নতুন জায়গায় গিয়ে কি সুবিধা করতে পারবে? কাজটা কিন্তু মোটেও সহজ হবে না! শেষে আগের জায়গার অবস্থানও হারিয়ে ফেলবে! সময় কিন্তু কারো জন্য বসে থাকে না!’

এসব সতর্কবাণীতে ফলাফল হলো উলটো। আমার বাবার রীতিমত জেদ চেপে গেল। তিনি সিদ্ধান্ত যখন নিয়ে ফেলেছেন যে সাহিত্যিক হবেন, কেউ তাকে সেই লক্ষ্য থেকে একচুলও নাড়াতে পারলো না। সাহিত্যিক শেষমেষ হয়েও ছাড়লেন আমার বাবা। শুধু যে হলেনই তাই নয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় সাহিত্যিকদের নাম করতে বললে তার নামটা প্রথম দিকেই উচ্চারিত হয়। কথাসাহিত্যের শিখরে অবস্থান করে আমার বাবা সবাইকে স্বীকার করতে বাধ্য করালেন যে, কোনোকিছু শুরু করারই কোনো ‘সঠিক’ সময় বলে কিছু নেই। যে কোনো কাজই মানুষ চাইলে যেকোনো সময়ে শুরু করতে পারে। শুধু নিজের দিক থেকে ষোলআনা চেষ্টাটা থাকা চাই!
নিজের বাবার পরিচয় দিতে গিয়ে কত কথা খরচ করতে হচ্ছে আমাকে! দুটো পাতা তো শুধু তার গুণকীর্তন করেই শেষ করে দিলাম। অথচ সেই বাবার একমাত্র সন্তান এই ‘আমাকে’ পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মতো প্রায় তেমন কিছুই নেই আমার। এই মাত্র কয়েক বছর আগে তো একেবারে কিছুই ছিল না।

আমার বাবা জীবনে সব ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন, এই কথাটা সম্ভবত ঠিক বললাম না। তাকেও জীবনে ব্যর্থতার স্বাদ আস্বাদন করতে হয়েছে। এমন কিছু ব্যর্থতা যা তিনি চাইলেও কিছুতেই সাফল্যে বদলে দিতে পারতেন না।
আমিই হলাম বাবার সেই ব্যর্থ প্রজেক্ট।
অল্প বয়সে লেখাপড়া গবেষণা...এসব নিয়ে ব্যস্ত থেকে আমার বাবা আসল কাজ অর্থাৎ বিয়ে করতেই দেরি করে ফেলেছিলেন। ততদিনে অনেক সুন্দরী গুণবতীরা যার যার সোলমেট খুঁজে পেতে নিয়েছে। যাদের কোনো একজনের সাথে বিয়ে হলে দুজনের মধ্যকার বয়সের ব্যবধানটা সুন্দর হতো, এমন কেউওই আর ততদিনে বাবার জন্য বসে নেই। আটত্রিশ বছর বয়সে নিজের চেয়ে তের বছরের ছোট একজনকে আমার বাবার বিয়ে করতে হলো। বাবার স্ত্রী অর্থাৎ আমার মা নিজেও একজন উচ্চশিক্ষিত মহিলা। কিন্তু তার সমস্যাটা ছিল ভিন্ন জায়গায়। সবসময়ই নিজেকে নিয়ে খুঁতখুঁতানিতে ভুগতো আমার মা। প্রতি মুহূর্তে নিজের ভিত্তির ধার পরীক্ষা করে নেওয়াটা তার ব্যামোতে পরিণত হয়েছিল। তার ওপরে স্কলার একজনকে বিয়ে করে তিনি একটা আলাদা চাপ বোধ করতেন সবসময়। নিজের কিছু একটা করে দেখানোর ইচ্ছে তার মধ্যে যখন তখন চাগাড় দিত। মনে ভয় ছিল, নানাদিকে সফল স্বামীর সফলতার নিচে পিষ্ট হয়ে তার বুঝি এই জীবনে আর কিছুই করা হয়ে উঠবে না!

নিজের ভয়টাকে জয় করার জন্যই আমার মা পরিবার বাড়ানোর ভাবনায় না গিয়ে নিজের চাকরি ক্যারিয়ার এসব নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়লো। বেশ অনেকটা সময় পার করে ফেলার পরে মধ্য ত্রিশে এসে তার মনে হলো, ‘আরে! আমি তো বাচ্চা নিতেই ভুলে গেছি!’
কিছুদিন ডাক্তারের কাছে চক্কর কেটে কেটে, ইনফার্টিলিটির জন্য এটা সেটা দাওয়াই সেবন করার পরে, অবশেষে আমি এলাম এই পৃথিবীতে। রুগ্ন অপুষ্ট একটা শিশু। ছোটবেলা থেকেই নানারকম অসুখবিসুখে ভুগে ভুগে হাড় লিকলিকে গড়ন। অন্য শিশুদের মতো খেলাধুলা করতে পারতাম না। কেউ একটা চড় কষালে দুদিন মাথা তুলতে পারতাম না। জোরে বকা দিলে প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলতাম। শারীরিক গড়নের কারণেই হয়তবা সবসময় কেমন যেন ভয়ে ভয়ে থাকতাম। সবকিছুতে পিছিয়ে পড়তাম। পড়াশুনায় ভালো করতে পারতাম না। লেখাপড়া কেন যেন মাথায় ঢুকতে চাইতো না। বেশিক্ষণ পড়তেও ভালো লাগতো না আমার। বরং এটা সেটা করে সময়টাকে নষ্ট করতে ভালো লাগতো। আমার বয়সী অন্যান্য ছেলেরা যখন পড়ার পাশাপাশি নানারকম ক্রিয়েটিভ কাজকর্ম করতো, আমি তখন ওসবের নামও জানতাম না। বাবা মাঝে মাঝে পাজল কিনে এনে দিত। আমি সেইসব পাজল নেড়েচেড়ে রেখে দিতাম। কীভাবে মেলাতে হয়, বুঝতে পারতাম না। সেগুলো ঘরের এক কোনায় ধুলো ধুসরিত হয়ে দিনের পর দিন পড়ে থাকতো। আস্তে আস্তে সেগুলোর অস্তিত্বও ভুলে যেতাম আমি।

মনে পড়ে, মা একবার তার এক বন্ধুর ছেলেকে বাজাতে দেখে আমার জন্য একটা পিয়ানো কিনে আনলো। বাসায় টিচার রেখে দেওয়া হলো যাতে প্রতিদিন তার কাছে শিখি। সেই টিচার আপ্রাণ চেষ্টা করলেন। পিয়ানোর প ও আমাকে দিয়ে শেখাতে পারলেন না। অগত্যা এক সময়ে হাল ছেড়ে দিলেন আমার টিচার। মা রেগেমেগে বললেন,
‘কিছুই পারিস না! মাথায় কিছুই ঢোকে না তোর! বসে বসে খালি খাওয়া দাওয়া আর ঘুম। কাজের মধ্যে এই দুটোই কাজ! মঞ্জুর ছেলেটা কী চমৎকার বাজায়! বাসায় টিচার ফিচার কিচ্ছু রাখেনি। একা একা ইউটিউব দেখে শিখে ফেলেছে। আর তোকে টিচার দিয়েও গেলাতে পারলাম না! এমনই গাধার গাধা! তুই কীভাবে আমার পেট থেকে হলি বল তো?’

মা কথায় কথায় আমাকে গাধা বলে গালি দিত আর কিছু একটা হলেই এর ওর সাথে তুলনা জুড়ে দিত। মায়ের এই কাজটাতে বাবা বরাবরই মহা বিরক্ত ছিল। মাকে অনেকবার বুঝিয়েও বলেছে, ‘ছেলেটাকে যখন তখন যার তার সাথে তুলনা করো না! ভালোভাবে বুঝিয়ে দাও। চেষ্টা করতে থাকুক। লেগে থাকলে কী ই না হয়! তুমি জানো, মানুষের মস্তিষ্কের কী অসীম ক্ষমতা? ক্রমাগত চর্চায় মস্তিষ্কের কোষগুলোর গঠন পর্যন্ত বদলে যেতে পারে! লেগে থাকলে অনেক স্থবির মস্তুষ্কও অসাধারণ কিছু সৃষ্টি করতে পারে। আর অনন্যর মস্তিষ্ক তো আর স্থবির নয়। ও একটু স্লো। ওকে ওর মতো করে ডিল করতে হবে। সবাই কি সবকিছু একই গতিতে করতে পারে?’
বাবার এই নরম বাক্যবর্ষণে বিশেষ লাভ হতো না। মা অগ্নিশর্মা হয়ে বলতো, ‘তোমার এই জ্ঞান অন্য কোথাও গিয়ে ফলাও। নিজে তো সাহিত্য রচনা করে দিন দুনিয়ার সবকিছু উদ্ধার করে ফেলছো! বড় বড় গল্প উপন্যাস কথায় কথায় নামিয়ে ফেলছো! কতজনকে ডাক্তার বানাচ্ছ, কতজনকে ইঞ্জিনিয়ার! আহা কত জোর তোমার কলমে! এদিকে মুখের জোরেও পিছিয়ে নেই! ছেলের মগজের দৌঁড় তো দেখতেই পাচ্ছি! আকাশকুসুম স্বপ্ন রচনা করলেই হবে? ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বাদ দিলাম, পারবে নিজের ছেলেকে সাহিত্যিক বানাতে? এক পাতা লিখতে যার ঘাম ছুটে যায়, তাকে দিয়ে সাহিত্য তৈরি করাতে পারবে? তাহলে বুঝতাম তুমি কত বড় এলেমদার! তখন শুনবো তোমার এসব জ্ঞানের কথা! হুহ! জানো আমার বন্ধু বান্ধবেরা কত হাসাহাসি করে ওকে নিয়ে? আমি সব বুঝতে পারি! কারো কাছে মুখ দেখাতে পারি না আমি!’ (ক্রমশ)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:৩১

রবিন.হুড বলেছেন: চমৎকার হয়েছে।

২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০২

ফাহমিদা বারী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। গল্প দিতে শুরু করে ভুল করলাম নাকি? পাঠক এত কম কেন বুঝতে পারছি না!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.