নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মৌসুমী আক্তার

মৌসুমী আক্তার › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাভারত..................

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০২

মহাভারতের বিশাল গাঁথা সৌতি শৌনকাদী মুনিদের শুনিয়েই যাচ্ছিলেন।সৌতি বলেছিলেন সৃষ্টির কথা।মহাভারতে আছে, এই মহাবিশ্ব আগে অন্ধকার ছিল।ধীরে ধীরে একটি ছোট ডিম তৈরী হয়।একসময় এই ডিম ফেটে বেরিয়ে আসেন ব্রহ্মাদেব।ব্রহ্মার পর তৈরী হলো বিশ্ব জগৎ, অর্থাৎ ব্রহ্মা থেকেই বিশ্বজগতের শুরু।কিন্তু এই ডিমের সৃষ্টি কে করেছিল বলা ভার।হয়তো, ব্রহ্মার পূর্বে শিব,নারায়ন এবং শক্তিদেবীই ছিলেন কর্তাধর্তা। ব্রহ্মা অনেক পুত্রের জন্ম দেন।এদের মধ্যে সাতজনই বিশ্বে প্রানের সূত্রপাত করেছিলেন।এদের নাম ছিল, মরিচী, অত্রী,অঙ্গিরাঃ,পুলহ,পুলন্ত,বশিষ্ঠ ও ক্রতু।এরা সপ্তর্ষি নামে পরিচিত। ব্রহ্মার বক্ষ থেকে জন্ম নেয়, ধর্ম এবং ভৃগু।তার বাম পায়ের বুড়ো আঙুল থেকে জন্ম নেয় দক্ষ।দক্ষ তেরজন কন্যার জন্ম দেন।কিভাবে দেন বলা কষ্ট।এই কন্যাদের বিয়ে হয় ব্রহ্মাপুত্র মরিচীর পুত্র কশ্যপের সাথে।এই তের কন্যাই সৃষ্টি জগতের সব দেব,মানুষ, অসুর,পিশাচ,যক্ষ,দানবাদীর মাতা।কশ্যপের স্ত্রী অদিতী ছিলেন সকল দেবতাদের মাতা এবং দিতি ছিল অসুরদের মাতা।দিতি ,অদিতি দুজনই দক্ষের কন্যা।বহ্মাপুত্র পুলন্ত, পুলহ ছিলেন পশু জগতের জনক।


মহাভারতে এমন নানান বাখান বর্ণিত আছে।আছে দেবতাদের নানান গল্প। এর মধ্যেই একটি সমুদ্রমন্থনের গল্প। অদিতি পুত্র দেবতা এবং দিতি পুত্র অসুরদের মধ্যে ছিল রক্তারক্তি বিবাদ।স্বর্গে চলতো নানান যুদ্ধ।তবে অসুররা দেবদের চেয়ে দুষ্ট ছিল।একসময় দেবতারা অমৃতপানের প্রয়োজন বোধ করে।তারা ত্রিদেবের( শিব, নারায়ন ও ব্রহ্মা) সরনাপন্ন হন।শিব বলেন, যদি সমুদ্র ঘাটো তবে অমূল্য অমৃত পাওয়া যেতে পারে।মন্থন অনেকটা মাখন তৈরীর মতো।অর্থাৎ মাখনের মতো সমুদ্র ঘোটাই সমুদ্রমন্থন।তবে মন্থনের জন্য বড় কিছু চাই।যেমন কাঠি দিয়ে মাখন নাড়ানো হয় ঠিক তেমন।কিন্তু, সমুদ্র নাড়াবে কোন কাঠি দিয়ে।অবশেষে,মন্দর নামক বিশাল পর্বত বসানো হলো।এবার দড়ি চাই।নারায়নের আদেশে তার আসন সর্পরাজ দড়ির মতো কাজ করলেন।তার মাথা ধরে দেবতারা টানলেন আর লেজ ধরে অসুরেরা।আর কুর্মরাজ অর্থাৎ যে কচ্ছপের পিঠে মহাবিশ্ব।সে পর্বত উচু করে রাখলেন।একদিকে দেবতারা টানে,অন্যদিকে অসুরেরা।শেষ পর্যন্ত মন্থনে চন্দ্রদেব বের হলেন,তারপর তিন অপ্সরী, তারপর এক সুন্দর ঘোড়া, তারপর আরোকিছু অমূল্য জিনিস, তারপর দেবী শ্রী লক্ষী।আর তারপর এক অনর্থ ঘটলো বেরিয়ে এলো এক দূর্গন্ধী বিষ ছড়ালো।ব্রহ্মা বিষ বের হওয়া দেখে বিচলিত হলেন।তিনি মহাদেব কে বললেন, "হে দেব, দেবতাদের দেহে বিষক্রিয়া হলে বড় অনর্থ হবে।আপনি উপায় দিন।" তার কথা শুনে শিব সমুদ্রে নেমে নিজেই বিষপান করেন।তখন পার্বতী দেবী তার গলায় বিষ আটকে ধরেন।তখন থেকে মহাদেব " নীলকন্ঠি " নামে পরিচিত।যাই হোক, শেষ পর্যন্ত অমৃত বের হয়।বলে না, অমৃত পেতে বিষ খেতে হয়।অনেকটা তেমনই।শেষমেশ দেবতারা অমৃত পানে অমর হন।


মহাভারতে উল্লেখ আছে, পৃথিবীতে বার কয়েক প্রলয় এসেছিল।পান্ডব পাঞ্চালী রখন বনবাসে গিয়েছিলেন।তখন, তাদের দেখা এক ঋষির সাথে হয়।ঋষির নাম মার্কন্ডেয়।মার্কন্ডেয় যুধিষ্ঠিরকে বলেছিলেন, তিনি নাকি প্রলয় দেখেছেন। প্রলয়ে সবকিছু ধ্বংস হলেও তিনি হন নি।তিনি এ ও বললেন, তিনি এরপরের প্রলয়েও বেঁচে থাকবেন।প্রলয়ে সবকিছু ধ্বংস হয়।সাগর উতলে ওঠে, পর্বত ভেঙে যায়, আঁকাশ মাটিতে মিশে সব শেষ হয়।

প্রাচীনকালে এক ঋষি ছিলেন।তিনি বড় সুদর্শন ছিলেন।তার নাম বৈবস্বত মনু।তিনি এককালে সমুদ্রে গেলেন সন্ধে স্নানে।তখন এক ছোট মাছ তার কাছে আকুতি করে বলে,"রক্ষে ধর্মাত্মা, আমি এই সমুদ্রে বড় মাছের উদাপুর্তির সম্ভবনায় আছি।আপনি আমাকে বাঁচান।" অনুরোধ শুনে মনুর বড় মায়া হয়।সে তার হাতে ঘটে তাকে স্থান দেয়।এক সময় মাছের জায়গা আর ওই ছোট ঘটে হয়না,নড়তে চড়তে পারে না।তখন ঋষি তাকে সরোবরে ছেড়ে দেয়।একসময় দেখা যায় সরোবরেও স্থান হয় না তার।সে তাকে নদীতে ছেড়ে দেয়।কিন্ত, একটা সময় পর মাছ ঋষিকে বলে, " প্রানরক্ষক, এ নদীতেও আমি কুলিয়ে উঠছি না।আপনি বরং আমাকে সমুদ্রে ছেড়ে দিন।" তখন ঋষি মনু তাকে মাথায় তুলে সমুদ্রে নিয়ে যান।সমুদ্রে ছাড়ার পর মাছটি বলে, "ঋষি, আপনি বিশাল নৌকা নির্মান করুন। কারন মহাপ্রলয় আসছে,সব শেষ হয়ে যাবে।প্রলয়ের সময় আমি আপনার কাছে উপস্থিত হবো।" অবশেষে মহাপ্রলয় এলো।মাছটির মাথায় শিং এর আবির্ভাব হলো।সে ঋষির নৌকা শিং এর সাথে বেধে নিয়ে নৌকা রক্ষা করেছিল।সেই নৌকায় দশ মুনী আর সব কিছুর বীজ ছিল।বলা হয়, পরে যখন পৃথিবী আবার ঠিক হয়েছিল,তখন এই দশ মুনী একজন সর্পকন্যাকে বিয়ে করেছিলেন।অর্থাৎ, দৌপদী ই প্রথম একাধিক স্বামী বরন করে নি।যাই হোক, সেই মাছটি ছিল নারায়নের মৎসাবতার।নারায়ন যুগে যুগে নানান রুপ নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে মানব পরিত্রানে। যেমন,রাম, কৃষ্ঞ।এই মহাভারত এর বিশেষ চরিত্র কৃষ্ঞ।সে ধর্মের পরিভাষা বদলেছিল এবং কলিযুগের সূত্রপাত করেছিল।মানা হয় কলিযুগেও নারায়ন অবতার হয়ে আসবেন।.................(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.