নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফালতু কথা

অালমগীর ৮৫

অতি সাধারণ এক মানুষ অামি । সাদা চোখে সব দেখতে ভালোবাসি।

অালমগীর ৮৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি অসভ্য বর্বর হতে চাই।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪০

ছোট বেলায় প্রাইমারী স্কুলের বই এ পড়তাম আদিম যুগের মানুষের কত অজানা কাহিনী । তাদের জীবন যাত্রা, সমাজিক অবসথা, পারিপার্শিক অবস্থা,পোশাক আশাক, খাদ্যভ্যাস, বিশ্বাস, আরো কত কি। বইএর মধ্যে কিছু ছবিও দেওয়া ছিল আদিম মানুষের । উলঙ্গ মানুষ,লম্বা লম্বা চুল, হাতে পাথর অথবা লোহার তৈরী বল্লম। এসকল ছবি দেখতে দেখতে এবং তাদের জীবন যাত্রা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-আশাক, ইত্যাদি বিষয় পড়তে পড়তে আমার মনের মধ্যে আদিম মানুষেরা এমন ভাবে গেথে গিয়েছিল যে চোখ বন্ধ করলেই ঘুমের ঘরে চলে যেতাম সেই আদিম যুগে। দম বন্ধ হয়ে যেত কাচা মাংশের গন্ধে। ভয়ে কুকড়ে যেতাম সন্ধার পরেই বৈদ্যুতিক বাতি কিংবা আলোহীন নিকশ কালো অন্ধকার আ্চছন্ন সেই ভতুড়ে পরিবেশে। দৌড়ে পালাতে চাইতাম সেই অন্ধকার যুগ থেকে। কিন্ত পা আর চলতো না। ওরা বল্লম হাতে ছু্টে্ আসতো আমাকে মারার জন্য, আমার রক্ত পান করার জন্য, আমাকে নিয়ে উম্মত্ত হোলি খেলার জন্য হায়নার মতো। প্রচন্ড চিৎকার করতাম। পিপাসায় বুক ফেটে্ যেত আমার। আমার চিৎকারের শব্দে মা টেনে তুলতেন আমাকে। ঘাম ছুটতো আমার । ভয়ে কুকড়ে থাকতাম। সারা রাত যোর করে তাকিয়ে থাকতাম। চোখে পানি দিতাম । চোখ বন্ধ করতাম না । চোখ বন্ধ করলেই অন্ধকার আমাকে ঘিরে ধরতো। বই পত্র সিকেয় তুলে আলোর ঝলকানী দেখতাম। বৈদ্যুতিক বাতি দেখতাম, হ্যাচাকের আলো দেখতাম, টর্চ লাইটের আলো দেখতাম, হেরিকন জ্বালিয়ে সারা রাত বসে থাকতাম। মোট কথা আলোর সাথেই সব সময় আমার পথ চলা। আলো আর আমির মধ্যে ভিশন এক বন্ধুত্ব। সকালে যখন স্কুলে যেতাম । স্যার বই খুলে পড়াতেন সে সময়কার যুগকে বলা হতো অন্ধকারাছ্চন্ন যুগ। আস্তে আস্তে মানুষ আগুন জ্বালাতে শিখেছে। বৈদ্যুতিক বাতি জালাতে শিখেছে। অন্ধকার দূর করে আলোর পথে ছুটেছে। সে যুগকে বলা হতো অসভ্য বর্বরতার যুগ। ধিরে ধিরে মানুষ সভ্যতার পথে পা বাড়িয়েছে্ । হয়েছে সভ্য। স্যারের এ কথা গুলো শুনে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতাম । পরিতৃপ্তির হাই তুলতাম। নিজেকে সৌভাগ্যবান ভাবতাম এ জন্য যে, আমি সভ্য যুগের মানুষ। আলোর যুগের মানুষ।



কিন্তু ইদানিং এক সমস্যায় পড়েছি অমি। চোখ খোলা রেখেও সেই বর্বরদের হাত থেকে রেহাই পাচিছ না। বরং আরো বিভৎস ভাবে বিভৎস চেহারায় আমার সামনে আদিম মানুষেরা ঘোরাফেরা করে। চোখ খুললেই সেই উলঙ্গ মানুষ গুলোকে দেখি। ডানে তাকালে দেখি বল্লম হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষিত ছাত্র নামধারীরা ক্যাম্পাসে রক্তের খেলা খেলছে। নিজের সহপাঠি বন্ধুদের খুন করছে। হাত কাটছে। পা কাটছে। গলা কাটছে। রেপ করছে। রেপের সেঞ্চুরী উদযাপন করছে। বামে তাকালে দেখি উলঙ্গপনা, বেহায়াপনা, অশ্লিলতার প্রতিযোগীতা চলছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুন তরুনীরা পর্ণগ্রাফী নির্মানে কাজে ব্যাস্ত সময় পার করছে। সামনে তাকালে দেখি ২ বছরের শিশু ধর্ষিতা হচ্ছে। পৃথীবির সব থেকে নিরাপদ স্থান হচেছ মায়ের কোল, পরকিয়ার করনে সেই মায়ের হাতে শিশু নিহত হচেছ। চুরী, ডাকাতীর, রাহাজানী, দূর্নীতির মহোৎসবে মেতেছে দেশের কর্নধারেরা। এত খুন, এত রক্ত, এত ধর্ষণ, চাদাবাজী, দুর্নীতি কি ভাবে দেখবো আমি? এখন আর চোখ খুলতে ইচ্ছে করে না। আলোতে যেতে ইচ্ছে করে না। আগে যে আলোর সাথে আমার বন্ধুত্ব ছিলো আজ সেই আলো থেকে পালিয়ে বড়াই আমি। অন্ধকারে.... নিকশ কালো অন্ধকারের পথে দৌড়াই। এ আলোর থেকে অন্ধকারইতো শ্রেয় ছিল। সেখানে আর যাই হোক ২ বছরের শিশু ধর্ষিতা হতো না। আর যা ই হোক মায়ের হাতে সন্তান্ খুন হতো না। আর যাই হোক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষিত তরুনদের দ্বারা মান্তানী, চাদাবাজী, খুনো-খুনী, পর্নগ্রাফী বানানো হতো না। নিজেকে সবচেয়ে দূর্ভাগা মনে হয়। কেন এ একবিংশ শাতাব্ধিতে আমার জন্ম হলো? কেন এ সভ্য সমাজে আমার জন্ম হলো? এ সভ্যতার নিকুচী করে আমি অসভ্য বর্বর হতে চাই।



আজ এতদিন পরে কেন যেন মনের কোন সেই প্রশ্নটা বিভিন্নভাবে বার বার দানা বেধে উঠছে। আসলেই কি আমরা সভ্য হতে পেরেছি? আসলেই কি আমরা অন্ধকার হতে আলোর যুগে এসেছি? আসলেইকি আমরা একবিংশ শতাব্ধিতে বসাবাস করছি? স্যার আপনার শিক্ষাটা ভুল ছিলো।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.