![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নীতির রাজাই যদি রাজনীতি হইয়া থাকে তাহা হইলে আমাদের দেশে রাজনীতির নামে এইগুলি কি চলিতেছে? অল্প ব্যবধান বুঝাইতে ১৯ কে ২০ বলা যাইতে পারে আবার কাককে কোকিলও বলা যাইতে পারে। কিন্তু বিষয়বস্তু কিংবা গুনাবলি কোন কিছুতে মিল না থাকা সত্ত্বেও আমাদের রাজনীতিবিদেরা দেখিতেছি কাককে তাজমহল বলিয়া চালাইয়া দিতেছেন। ছোট বেলায় স্কুল শিক্ষকের মুখে একটি গল্প শুনিয়াছলাম। এক নাপিতের ছিল ১৬ চুঙা বুদ্ধি। তাহার বুদ্ধির সাথে কেহ পারিয়া উঠিত না। একবার এক পান ওয়ালােকে দেখিয়া নাপিত জিজ্ঞাসা করিলো তোমার মাথায় কি? পান ওয়ালা উত্তর করিলো পান। অমনি নাপিত বলিলো মলি তোমার কান। বাড়িতে আসিয়া পান ওয়ালার আর ঘুম হইলো না।কথার মারপ্যাচে সে নাপিতের কাছে হারিয়া যাইবে? কোন ভাবেই এটাক মানিয়া লওয়া যায় না। তাই সে বুদ্ধি করিয়া নাপিতের বাড়ির সামনে বসিয়া রহিলো এই আশায় যে নাপিতকেও কোন না কোন কথার দ্বারা সে ঘায়েল করিবে। কিছু সময় পরে নাপিত বাড়ী হইতে বাহির হইলে পান ওয়ালা নাপিতকে দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলো তোমার মাথায় কি? নাপিত উত্তর করিলো বাক্স। সাথে সাথে পানওয়ালা বলিলো তোমার কানে বাধি ঢেকি। এই কথা শুনিয়া নাপিত বলিলো, কি বলিতেছো মিল হইলো না । পান ওয়ালা তখন বলিলো, মিল না হইলে কি হইবে ওজন তো হইয়াছে। ঠিক তদ্রুপ আমাদের দেশের কিছু রাজনীতিবিদ প্রাসঙ্গিক হউক কিংবা অপ্রাসঙ্গিক হউক কথায় কথায় জঙ্গিবাদকে টানিয়া আনিতেছেন। সেদিন শুনিলাম কুটর শিল্প ও আমাদের ভবিষ্যত শীর্ষক আলোচনায় জঙ্গিবাদের আলোচনা চলিতেছ। অন্য এক অনুষ্ঠানে এক রাজনীতিবিদকে প্রশ্ন করা হইলো আপনার ছোটবেলায় ঈদ কেমন কাটিতো? উত্তরে অন্তত দশ মিনিট তিনি জঙ্গিবাদের আলোচনা করিলেন। আনেক আশা নিয়া তাহার জীবনের ঈদের স্মৃতিকথা শুনিতে গিয়া অবশেষে নিজের জীবন হইতে দশটি মিনিট খোয়াইতে হইলো। প্রসঙ্গের সাথে কোন তাল মিল না থাকিলেও ওজনহীন ঐ সকল রাজনীতিবিদের কথার ওজনে সারা বিশ্বে যে আমাদের ভাবমূর্তী ন্যুইয়া পড়িতেছে তহাও তিনারা আন্দাজ করিতে পারেন না। আর যদি ধরিয়াও নেই যে, দেশে জঙ্গিবাদের ইত্থান হইয়াছে তাহা হইলে সেই জঙ্গি কাহারা তাহা খতিয়া দেখিবার সময় হইয়াছে। বাস্তবতার সাথে মিল করিলে, পত্র পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মারফতে প্রতিনিয়তই দেখিতেছি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র রাজনীতির নামে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের অস্ত্র হাতে ভয়বহ বিভৎসতা। যাহারা প্রকাশ্য দিবালোকে চাপাতি দিয়া কোপাইয়া বিশ্বজিৎকে হত্যা করিলো। চট্রগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাহারা অস্ত্রের মহড়া দেখােইলো। অতি সম্প্রতি যাহারা অস্ত্র হাতে বকশি বাজারে পৈশাচীক হামলা চালাইলো। সেই সকল সোনার ছেলেদের আচলে আড়াল করিয়া বরং তাহাদের দ্বারা যাহারা নির্যাতিত হইলো তাহাদেরকে জঙ্গি বলিয়া চালাইয়া দেওয়া হইতেছে। যে হাচানুল হক ইনুরা স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আওয়ামিলীগ এর শতশত নেতা কর্মীকে হত্যার মধ্যদিয়া দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটাইয়াছিল তাহারাই আবার আওয়ামিলীগ এর সাথে মিলিয়া মুখে জঙ্গিবাদের ফেনা তুলিতেছে। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করিয়া নিজেকে একটু রিফ্রেশ করিবার মানষে যখন টেলিভিশনের সামনে বসি তখন ঐ সকল রাজনীতিবিদদের বোয়ালমাছের মত মুখ দেখিয়া আমি ধান্দায় পড়িয়া যাই। যাহারা অস্ত্র হাতে সাধারণ মানুষের উপর নৃশংসভাবে হামলা চালায় তাহারাই জঙ্গি নাকি যাহারা হামলার স্বীকার হন তাহারা জঙ্গি! নিজেকে তখন বোধ বুদ্ধিহীন বোকা মনে হয়। ফলশ্রুতিতে টেভিশন নামক যন্ত্রের সামনে বসিয়া অমানুষিক যন্ত্রনা ভোগ করিবার ও অহেতুক ফালতু আলোচনা শুনিয়া সময় নষ্ট করিবার বাসনা দুর হইয়াছে্ কিন্তু আমার সেই মানুষিক তৃপ্তিতে বাধ সাধিয়াছে বড় ভাইয়ের ৬ বছরের ছেলে অনিক। এখন সে স্কুলে যায়। বানান করিয়া পড়িতেও পারে। প্রতিদিনই তার নিত্যনতুন সমস্যা তৈরী হয়। হাজারো প্রশ্নের গিট বাধে আর আমাকে তা একটা একটা করিয়া খুলিয়া দিতে হয়। এইটা কেন, ওইটা কেন, এইটার মানে কি, ওইটার মানে কি, এইটা এমন হইলো কেন, এইটা করিলে কি হয় ইত্যাদি। সেদিন আসিয়া আমাকে জিজ্ঞাসা করিলো, চাচ্চু অবরুদ্ধ কথার মানে কি? উত্তরে বলিলাম, কাহারো ইচ্ছাধীন যথেচ্ছ চলাচলে বাধাসৃষ্টি করা বা আটকাইয়া রাখাটাই অবরুদ্ধ। অনিক বলিলো তুমি ভুল বলিয়াছো। আমি তৎক্ষনাত তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম তাহা হইলে কি হইবে? ও বলিলো আমি সেটা জানিনা। তবে এইটা জানি তুমি যেটা বলিয়াছো সেটা অবরুদধ নয় সেটা নিরাপত্তা। আমি কৌতুহলে আবারো জিজ্ঞাসা করিলাম, তুমি ইহা কিভাবে জানিলে? উত্তরে সে বলিলো, প্রধানমন্ত্রী টিভিতে বলিয়াছেন। আমি ভয়ে আতকে উঠিলাম! আমি টিভি দেখা বন্ধ করিয়া আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলিলেও আমার দেশের কচিকাচারা এই গুলি কি শিখিতেছে! বাংলা শব্দের অর্থইতে পুরা উল্টাইয়া যাইতেছে। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ইতমধ্যেই নব্য রাজাকার হইয়াছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বিভিন্ন সেক্টর কমান্ডারগন পাকিস্তানের এজেন্ট হইয়াছেন। না জানি কখোন শব্দের অর্থ উল্টাইয়া স্বাধীন দেশকে ওরা পরাধীন বলা শুরু করিয়া দেয়। আমি আবারো ওকে বুঝাইতে চেস্টা করিলাম, তুমি শব্দের ভুল ব্যাখ্য শিখিয়াছো। ও আমার কোন কথাই শুিনিলো না শুধু মুখের উপর বলিয়া গেল তুমি কি প্রধানমন্ত্রীর থেকে বেশি জানো?
©somewhere in net ltd.