![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশ্বাস
-------------------
এই শিরোনামে মুক্তমনা ব্লগার জনাব আসিফ মহিউদ্দিনের একটি লেখা চোখে পড়লো। তার অনেক মতকে্ই আমি শ্রদ্ধা করি এবং মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করি। কিছু কিছু বিষয়ে তাকে অনেক চিন্তাশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত মনে হয়। কিন্তু এই শিরোনামের লেখায় কিছুটা অপরিপক্কতা প্রকাশ পেয়েছে, যা তার মতো মানুষের নিকট থেকে মোটেও কাম্য নয়। তাই বিষয়টি নিয়ে তাকে দ্বিতীয়বার ভাববার ও নিজের মতকে সংশোধন করে নেওয়ার জন্যই আজকের এ লেখাটি লিখছি।
বিশ্বাস এমনই এক শব্দ যার উপর নির্ভর করা ছাড়া সুস্থ-সাভাবিক জীবন যাপন করাএক দিনও সম্ভব নয়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি মানুষেরই এই বিশ্বাসের উপর ভর করে জীবন পরিচালিত করতে হয়। ছোটবেলায় মা বলেছিলেন উনি তোমার বাবা, আমি বিশ্বাস করেছিলাম, উনি তোমার মামা, উনি দাদী, উনি খালা, আমি বিশ্বাস করেছিলাম। তারপর শিখিয়েছিলেন এটা তোমার মাথা, এটা তোমার হাত, ওটা আকাশ, ওটা চাঁদ, ওটা সূর্য, ওটা গাছ, ওটা মাছ, এটা "ক" বর্ণ, ওটা ব্ই ইত্যাদি, আর আমি সব বিশ্বাস করেছিলাম। দুষ্টুমি করলে অথবা কান্না করলে বড়রা বলতেন ঐযে বাঘ আসছে, ভুত আসছে, আমি বিশ্বাস করে দুষ্টুমি করা কিংবা কান্না করায় ইতি টানতাম। স্কুলে বই খুলে স্যার পড়াতেন, পৃথিবী গোল,সূর্যের চার দিকে নিজ নিজ কক্ষ পথে ঘূর্নায়মান নয়টি গ্রহ নিয়ে আমাদের সৌরজগত, আমরা নিশ্বাসের সাথে
অক্সিজেন গ্রহণ করি, চাঁদের নিজের কোন আলো নেই, চাঁদের আকর্ষনের কারনে জোয়ার ভাটা হয়, মহাকর্ষ, অভিকর্ষ কিভাবে কাজ করে, অনূ, পরমানুর গঠন প্রনালী, ইত্যাদি আর আমি সেগুলো বিশ্বাস করেছিলাম। কর্ম জীবনে এস অফিসে যাবার সময় বিশ্বাস করি যে এই গাড়ি
আমাকে আমার অফিস পর্যন্ত পৌছে দেবে তাই উক্ত গাড়িতে চড়ি, এই প্লেন আমাকে আমেরিকা পৌছেঁ দেবে এই বিশ্বাস করি বলে প্লেনে চড়ি, ব্যাংকে টাকা রাখলে আমার টাকা নিরাপদ থাকবে বিশ্বাস করি বলে সেখানে টাকা রাখি, মাস শেষে বেতন পারো বিশ্বাস করি বলে চাকরী করি, অমুক ব্যাক্তি টাকা ধার নিলে টাকা ফেরত দেবে বিশ্বাস করি বলে টাকা ধার দেই, আমার ঘর আলোকিত করে একদিন ফুটফুটে চাাঁদের টুকরো আসবে বিশ্বাস করি বলে স্ত্রী সহবাস করি। মোট কথা জীবনের প্রতিটি দিনই বিশ্বাসের উপর ভর করে আমাদের চলতে হচ্ছে। বিশ্বাস এমনই একটি বিষয় যে এটা নিয় একটু বিষদ অলোচনার জোর দাবি রাখে। আসুন এবার সে দিকে একটু নজর দেওয়া যাক।
বিশ্বাস কি?
-------
এ বিষয়ে আলোচনা করার আগে একটি উদাহরন দেয়া যাক। ধরুন আপনাদের বাড়িতে আপনার মামা বেড়াতে আসলেন। তিনি যখন আসলেন তখন আপনার বাবা বাসায় ছিলেন না। আপনি মামাকে আদর আপ্যায়ন করলেন। কুশলাদী জিজ্ঞেস করলেন, বিভিন্ন বিষয়ে আপনাদের কথা
হলো। যাবার সময় তিনি আপনাদেরকে তার মেয়ের বিয়ের দাওয়াত দিয়ে চলে গেলেন। আপনার বাবা আসলে তাকে আপনার মামা বাসায় আসার কথা জানালেন। এখন আপনার মামা বাসায় আসার বিষয়টি যেহেতু আপনার বাবা দেখেননি তাই তাকে আপনার কথায় হয় বিশ্বাস করতে হবে
যে, আপনার মামা বাসায় এসেছিলেন। নতুবা অবিশ্বাস করতে হবে যে, তিনি আসেনিনি। এ ক্ষেত্রে আপনার বাবার কিছু পূর্ব অভিজ্ঞতা, বাস্তব জ্ঞান ও কিছু পর্যবেক্ষনের উপর নির্ভর করতে হবে। আপনার বাবার পূর্ব অভিজ্ঞতা যদি প্রকট হয় যে আপনি সদা সত্য কথা বলেন তাহলে সহযেই তিনি বিশ্বাস করবেন যে, আপনার মামা বাসায় এসেছিলেন। আবার যদি পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে যে, আপনি কথায় কথায় মিথ্যা বলেন তাহলে তার বিশ্বাস করতে একটু কষ্ট হবে এবং তিনি আপনার পরিবারের অন্য সদস্যদের নিকট জিজ্ঞেস করে বিষয়টি নিশ্চিত হবেন। তার পরেই তিনি দাওয়াতের যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আপনার বাবার ক্ষেত্রে বিষয়টি প্রত্যেক্ষ জ্ঞান নয় বরং পরোক্ষ জ্ঞানের মাধ্যমে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হচেছ অথচ আপনার ক্ষেত্রে বিষয়টি পরোক্ষ জ্ঞান নয় বরং প্রত্যেক্ষ। যেহেতু আপনি নিজে স্ব-চক্ষে আপনার মামাকে দেখেছেন, কথা বলেছেন, সেহেতু আপনার নিকট বিষয়টি প্রত্যেক্ষ, এটা বিশ্বাস কিংবা অবিশ্বাসের প্রশ্নই ওঠেনা। কিন্তু আপনার বাবা যেহেতু আপনার মামাকে দেখেননি সেহেতু আপনার কথার উপর ভিত্তি করেই তাকে পরোক্ষভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, এখানে বিশ্বাস অথবা অবিশ্বাসের প্রশ্ন।সুতরাং দেখা যাচেছ বিষয় একই কিন্তু অবস্থাভেদে পর্যবেক্ষন ভিন্ন ভিন্ন। একজনের নিকট যেটা প্রত্যেক্ষ, অন্য জনের নিকট সেটা বিশ্বাস।
ইদানিং কালে অনেক পন্ডিত ব্যাক্তিই বলে থাকেন, প্রমান ছাড়া অথবা না দেখে কোন কিছু বিশ্বাস করি না। কিন্তু আসল কথা হলো যা প্রমানিত অথবা যা সরাসরি প্রত্যেক্ষ করা যায় তাকে আর বিশ্বাসের প্রয়োজন হয় না। পরোক্ষ জ্ঞান মাত্রই বিশ্বাস। সময়ের সাথে সাথে বিশ্বাস সত্যও হতে পারে অর্থাৎ প্রমানিত হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে অর্থাৎ অপ্রমানিতও হতে পারে। বিশ্বাস প্রমানিত বা অপ্রমানিত হলে তা আর বিশ্বাসের পর্যায়ে থাকে না। সব বিশ্বাসই পরোক্ষ জ্ঞান নয়। যে বিশ্বাসে কোন জ্ঞান নেই তাকে বিশ্বাস বলা যায় না, সেটা অন্ধ বিশ্বাস। এক বা একাধিক যুক্তির মাধ্যমে তৈরি হয় পরোক্ষ জ্ঞান, আর পরোক্ষ জ্ঞানের উপর ভিত্তি করেই জন্ম নেয় বিশ্বাস। যুক্তির পাল্লা যত ভারি হয় জ্ঞানও ততো ভারি হতে থাকে, সাথে সাথে উক্ত বিষয়ের উপর বিশ্বাসও দৃঢ় হয়। সময়ের ব্যবধানে বিশ্বাসের পক্ষের যুক্তি প্রত্যেক্ষ করা গেলে বা প্রমানিত হলে
উক্ত বিষয়ের বিশ্বাসের পরিসমাপ্তি ঘটে অর্থাৎ তার উপরে আর বিশ্বাস স্থাপনের প্রয়োজন থাকে না। আবার বিশ্বাসের বিপক্ষে যদি যুক্তির পাল্লা কখনো ভারি হয় তাহলে দৃঢ় বিশ্বাস হালকা হতে থাকে। যখন পূর্ব যুক্তি পরবর্তী যুক্তির নিকট ধোপে টেকেনা তখন পূর্ববর্তী বিশ্বাস বালির বাধের মতো ভেঙ্গে যায়, তৈরী হয় অবিশ্বাস। সময়ের ব্যবধানে অবিশ্বাসের পক্ষের যুক্তি প্রত্যেক্ষ করা গেলে বাপ্রমানিত হলে উক্ত বিষয়ের উপর অবিশ্বাসের পরিসমাপ্তি ঘ্টে অর্থাৎ তার উপর আর অবিশ্বাস স্থাপনের প্রয়োজন থাকে না। যেমন আপনার বাসায় চুরি হলো। আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা ও যুক্তি বলছে এ চুরির সাথে আপনার বাড়ীর কেউ এমনকি আপনার বাসার চাকরও জড়িত নয়। আপনার বাসায় লাগানো সিসি টিভি ফুটেজ থেকেও আপনি দেখলেন বাহিরের কেউ আপনার বাড়িতে প্রবেশ করেছিলো, অর্থাৎ আপনার বিশ্বাস সত্য প্রমানিত হলো। এর পরে আর ঐ বিষয়ের উপর আপনার বিশ্বাস রাখার প্রয়োজন পড়ে না অর্থাৎ বিষয়টি এখন প্রমানিত সত্য। কিন্তু আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা বা
যুক্তির বিপরীতে আপনার বাসার চাকরের কিছু কিছু আচরন যদি আপনার নিকট সন্দেহজনক মনে হয় তাহলে আপনার বিশ্বাস কিছুট হালকা হবে এবং যদি সিসি টিভি ফুটেজে দেখেন যে আপনার ঐ চাকরই বাসায় চুরি করেছে তখন আপনার পূর্ববর্তী বিশ্বাস ভেঙ্গে যাাবে। এটা প্রমানিত হবার পরে চাকরের উপর আর অবিশ্বাসও করার প্রয়োজন থাকবে না। কারন ঐ চাকরই যে চুরি করেছে তা আপনার নিকট প্রমানিত।অর্থাৎ বিশ্বাস অথবা অবিশ্বাস যেটাই হোক না কেন প্রমানিত হবার পরে সেটা বিশ্বাস-অবিশ্বাসের গন্ডির বাইরে চলে যায়। বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে বোধ হয়। এবার এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে আসুন আমরা দেখার চেষ্টা করি নাস্তিকতাও কি না।
মহাবিশ্ব সৃষ্টির পেছনে কারো না কারো হাত আছে, তিনি মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রক, তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী এ সকল বিষয়ে যারা বিশ্বাস করে তারা আস্তিক আর যারা এ সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে না তারা নান্তিক। অর্থাৎ আস্তিকরা বিশ্বাস করে সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ আছেন। আর নাস্তিকরা সেটা বিশ্বাস করে না। তারা অস্বীকার করে। তার মানে হলো নাস্তিকরা বিশ্বাস করে যে সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেই। এবার জনাব আসিফ মহিউদ্দিনের উত্থাপিত যুক্তি তুলে ধরছি। তিনি লিখেছেন,নাস্তিকতা হচ্ছে ঈশ্বরে অবিশ্বাস। অর্থাৎ ঈশ্বর প্রসঙ্গে শূন্য বিশ্বাস। ন্যুল বিশ্বাস। বিশ্বাসের অনুপস্থিতি। ঈশ্বরের অস্তিত্ব বিষয়ক প্রস্তাবকে বাতিল করা। অর্থাৎ এটা ঈশ্বর নেই, তাতে বিশ্বাস করা নয়। বরঞ্চ ঈশ্বর আছে,
সেই প্রস্তাবকে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে বাতিল করা এবং সেই বিশ্বাসের বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরা। ঈশ্বর নেই, সেটা বিশ্বাস করা আর ঈশ্বর আছে, সেটা প্রমাণের অভাবে বাতিল করা দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। নাস্তিকতা কোন বিশ্বাস বা ধর্ম নয়, বরঞ্চ নাস্তিকতা হচ্ছে অবিশ্বাস। সেই বিশ্বাসে আস্থাহীনতা।
তার মানে তিনি ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাস করেন। অর্থাৎ ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তা নেই মর্মে তিনি বিশ্বাস করেন। পূর্বের উদাহরন থেকেই ধরুন,
আপনার বাবা অবিশ্বাস করলেন যে, আপনার মামা বাসায়্ এসেছিলেন। তার মানে আপনার বাবার বিশ্বাস যে আপনার মামা বাসায় আসেননি। আপনি মনে করেন যে রহিম মিয়া একজন সৎ লোক। অর্থাৎ আপনি মনে করেন না যে, রহিম মিয়া অসৎ। প্রত্যেক বিশ্বাসই উল্টো দিক দিয়ে একটা অবিশ্বাস এবং প্রত্যেক অবিশ্বাসই উল্টো দিক দিয়ে একটি বিশ্বাস। অথচ জনাব আসিফ মহিউ্দ্দিন বলেছেন, নাস্তিকতা হচ্ছে ঈশ্বরে অবিশ্বাস। আবার বলছেন এটা ঈশ্বর নেই তাতে বিশ্বাস করা নয়। তার মানে কি তিনি বিশ্বাস করেন ঈশ্বর আছেন? এ প্রস্তাবনা পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে
গিয়ে তিনি একটি উদাহরন দিয়েছেন।
যেমন ধরুন, স্ট্যাম্প সংগ্রহ করা একজনার শখ। অন্য আরেকজনার নয়। যার নয়, তার ক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি না যে, স্ট্যাম্প কালেকশন না করা হচ্ছে তার শখ। যদিও এ উদাহরনটা এ আলোচনার সাথে কোন ভাবেই যায় না, তবু্ও অত্যান্ত সু-চতুরভাবে তিনি এ উদাহরনটা টেনেছেন। এখানে স্ট্যাম্প সংগ্রহ করা একজনার শখ। কিন্তু ঈশ্বরে বিশ্বাস করা কারো শখ, নেশা, পেশা কিছুই নয়। একানে প্রশ্ন হচ্ছে একজন ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, অন্য জন করে কি করেনা তার উপর। উদাহরন যদি দিতেই হয় তাহলে সেটা হবে, একজন স্ট্যাম্প সংগ্রহ করে অন্য জন সেটা করে কি করে না। এক জন সাংবাদিকতা করে, অন্য জন করে কি করে না। একজন রহিম মিয়াকে পছন্দ করে, অণ্য জন অপছন্দ কর। অর্থাৎ যিনি রহিম মিয়াকে অপছন্দ করেন মুলত তিনি রহিম মিয়াকে পছন্দ করেন না। এ ক্ষেত্রে এমন প্রশ্ন করা যাবে না যে, রহিম মিয়াকে অপছন্দ করা হচ্ছে তার শখ। একানে প্রশ্ন শুধুই পছন্দ অপছন্দের মধ্যেই সিমাবদ্ধ। তিনি এ আলোচনায় আরো একটি্ বিষয়ের অবতারনা করেছেন যে, ঈশ্বর নেই এটা প্রমানরে দ্বায়িত্ব নাস্তিকদের নয়। কিন্তু ঈশ্বর আছেন এটা আস্তিকদেরকেই প্রমান করতে হবে। ধরুন আিমি আমার মুষ্টিবব্ধ হাত দেখিয়ে বললাম আমার হাতে এক ছাড়া চাবি অাছে। এখন চাবির ছড়া সত্যিই আমার হাতে আছে কি নেই তা প্রমান করার দ্বায়িত্ব আমারই এবং তা হাত খুলে প্রমান করে দেওয়া আমারই দ্বায়িত্ব। তদ্রুপ আপনি আপনার মুষ্টিবদ্ধ হাত দেখিয়ে যদি বলেন আপনার হাতরে মধ্যে কিছু নেই, তাহলে হাত খুলে আপনাকেই প্রমান করতে হবে সত্যিকারে আপনার হাতে কিছু নেই। হাত খুললে হয়তো দেখা যাবে আপনার হাত থেকেই চাবির ছড়াটি বেরিয়ে আসছে। ঈশ্বর যে নেই তা প্রমানের দ্বায়িত্ব মূলত যারা নেই মর্মে বিশ্বাস করেন তাদেরই। এ বিষয়ে অমার ধারনা জনাব আসিফ মহিউদ্দনের মনে হয়তে কোন সংকির্ণতা বাসা বেধেছে। কোন চ্যালেঞ্জ নিতে তিনি ভয় পাচ্ছেন। তা না হলে ঈশ্বর নেই, তিনি যদি এটা বিশ্বাসই করে থাকেন তাহরে সেটা প্রমান করার চ্যালেঞ্জ নিতে এতো ভয় পান কেন? আমার ধারনা প্রকৃত পেক্ষে যারা সত্যিকারের নাস্তিক তারা এ চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করে যাচেছন। সে মতে জনাব মহিউদ্দন আশা করি স্বীকার করে নেবেন যে তিনি বিশ্বাস করেন যে ঈশ্বর নেই এবং তা প্রমান
করা চ্যালেঞ্জ গ্রহন করবেন। সাথে সাথে তার লেখাটি সংশোধন করে "নাস্তিকতাও একটি বিশ্বাস" শিরোনামে লিখবেন। আর যদি তিনি তা না করেন তাহলে আমি ধরে নেব জনাব আসিফ মহিউদ্দিন প্রথমত সত্যিকারের নাস্তিক নয়, দ্বিতীয়ত কিছু না বুঝেই তিনি নাস্তিকতায় নাম লিখিয়েছন, এ দুটোর কোনটিই যদি না হয় তাহলে তিনি কোন দুরভিসন্ধী নিয়ে কাজ করছেন যেটা আমাদের জানা নেই।
বিঃদ্রঃ বানান সমস্যর জন্য দুঃখিত।
২| ৩১ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৩
Safin বলেছেন: আসিফ মহিউদ্দিন বলতে চাইছেন, তিনি ঈশ্বর বিশ্বাস নিয়ে দ্বিধান্বিত!
অর্থাৎ তিনি নাস্তিক নন, আসলে তিনি ইশ্বর আছে কী নেই তা নিজেই জানেন না! তবে এটা নাস্তিকতা নয়।
তিনি মুলত নাস্তিকতার সংজ্ঞা জানেন না।
৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২১
অালমগীর ৮৫ বলেছেন: সোজেন বাদিয়া# ভাই আপনাকে ধন্যবাদ যে, আপনি লেখাটি মন দিয়ে পড়েছেন। তবে একটা বিষয় হয়তো আপনার খেয়ালে পড়েনি যে, আমি বলছি "যা প্রমানিত অথবা যা সরাসরি প্রত্যেক্ষ করা যায় তাকে আর বিশ্বাসের প্রয়োজন হয় না। পরোক্ষ জ্ঞান মাত্রই বিশ্বাস। সময়ের সাথে সাথে বিশ্বাস সত্যও হতে পারে অর্থাৎ প্রমানিত হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে অর্থাৎ অপ্রমানিতও হতে পারে। বিশ্বাস প্রমানিত বা অপ্রমানিত হলে তা আর বিশ্বাসের পর্যায়ে থাকে না। সব বিশ্বাসই পরোক্ষ জ্ঞান নয়। যে বিশ্বাসে কোন জ্ঞান নেই তাকে বিশ্বাস বলা যায় না, সেটা অন্ধ বিশ্বাস।"
সুতরাং আপনার কথা আমার কথা একই। যে বিষয়ে কোন জ্ঞান অর্থাৎ যুক্তি খাটেনা সেটাই অন্ধ বিশ্বাস।
৪| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৩
অালমগীর ৮৫ বলেছেন: সাফিন# ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৪
সোজোন বাদিয়া বলেছেন: সুদীর্ঘ লেখাটির জন্য যে কষ্ট করেছেন সেটিকে শ্রদ্ধা জানাই। আমার মনে হয়েছে আমাদের জাগতিক বিশ্বাস-অবিশ্বাসগুলোর পেছনে যে তথ্য-যুক্তি-অভিজ্ঞতা কাজ করে সেটি আপনি মানেন না। বিশ্বাস মানেই যুক্তিহীন এবং অন্ধবিশ্বাস এমন ধারণা করেছেন। ব্যাপারটা তা নয়। আমরা অন্ধবিশ্বাস এবং যুক্তিভিত্তিক বিশ্বাসের মধ্যে পার্থক্য করা যায়:
১. অন্ধবিশ্বাস কোনো তথ্য-যুক্তি মানে না। বরং দেখালে বলে ওই তথ্য-যুক্তির মধ্যে নিশ্চয়ই কোনো ফাঁক আছে, যা আমি দেখাতে পারছিনা, নিশ্চয়ই অন্য কেউ দেখাবত পারবে।
২. অন্ধবিশ্বাসী তার এমন বিশ্বাসকে সাধারণত যাচাই করতে যায় না, কারণ সে এ বিষয়ে তার ইন্দ্রিয় এবং বিচার-বোধকে আস্থার যোগ্য মনে করে না।
আপনি যে উদাহরণগুলি দিয়েছেন সেগুলি অসম্পূর্ণ তথ্য-যুক্তির উপর ভিত্তি করে বিশ্বাস। যেমন বাবা তার ছেলের কথায় যে বিশ্বাস করছে, তার কারণ তাঁর অভিজ্ঞতা আছে যে ছেলে এমন ক্ষেত্রে মিথ্যা বলে না। আবার তিনি এও ভেবে থাকবেন যে এমন এটি কোনো বিষয় নয় যেখানে মিথ্যা বলে ছেলের কোনো ফায়দা হাসিল হবে - অর্থাৎ যুক্তিভিত্তিক চিন্তা। বাস্তব জীবনে চলতে হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আংশিক যাচাই করে বাকিটা ঝুঁকি নিতে হয়। এগুলোকে অন্ধবিশ্বাস বলা যাবে না। উপরে বর্ণিত দুটি শর্তেই এটি পরখ করা যাবে।
ঈশ্বর আছেই বলুন নেই বলুন, আপনি যদি আপনার দাবির সপক্ষে কোনো যুক্তি-প্রমাণ দিতে না পারেন তাহলে স্বীকার করবেন যে আপনি অজ্ঞ, কিংবা অন্ধবিশ্বাসী আস্তিক কিংবা অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিক - সহজ কথা। এটি নিয়ে এতো বাক্যজাল তৈরীর তো কোনো যুক্তি নেই।