নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফালতু কথা

অালমগীর ৮৫

অতি সাধারণ এক মানুষ অামি । সাদা চোখে সব দেখতে ভালোবাসি।

অালমগীর ৮৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রিন্দুর চিঠি

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৮

রিন্দুর চিঠি

"সেবার যখন এলে,
ভেবেছিনু আমার জন্যই বুঝি।
কতকাল পরে তোমায় দেখা হলো!
মনেপড়ে তোমার?
যখন শহরে কলেজ পড়তে,
বাড়ি ফেরার পথে মায়ের কাছে এসে বলতে,
চাচি একটু মিঠাই দাও,
অনেক পথ হেঁটে এসেছি।
আমি ভাবতাম ওসব তোমার বাহানা।
তখনকি আর আমি মিঠাই বানাতে পারতাম?
তবে সেবার বানিয়ে রেখেছিলাম
কতো রঙের মিঠাই,
তুমি আসবে শুনে।
তুমি যাবার খুবতো বেশিদিন পরে না,
ইউরোপ থেকে বেড়াতে এলে।
ঐ একবারই বুঝি এসেছিলে,
একেবারে সাদা মেমকে বউ করে।
খোলা ভ্যানের মাঝে বসিয়ে
গ্রামের রাস্তায় হৈ-হৈ করতে করতে।
পাশের বাড়ির ডেমুর মুখে শুনলাম
উনি নাকি ভ্যানে পা ঝুলিয়ে বসতে পারেন না।
বুঝলেতো? ওসব ঢং!
ঐ করেই তোমার মাথায় চড়েছে।
তোমাদের ভ্যান যখন
আমাদের ঘরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল,
এববার জানালা দিয়ে তাকিয়েছিলাম।
তারপরেই নিজের চোখ দুটিকে উপড়ে ফেলতে ইচেছ করলো।

গ্রামের সবাই বলে
আমার নাকি রঙ পাকা,
আশে-পাশে আমার রঙের তৃতীয়টা নাই।
শুধু পেচির দাদি আছে নাকি দুই রঙে।
আসলে আমিতো ডোবার পানি খাই,
আর তোমার উনিতো চেরি, বেরি, স্টোবেরির জুস।
কিছুদিন পর দেখো,
গাজিপুরে ওরকম সাদা মানুষ পাওয়া যাবে।
শুনেছি ওখানে নাকি চেরি, বেরি স্টোবেরির আবাদ হচ্ছে।
চপল কাকুর টিভিতে সোদিন দেখলাম,
মোটা কাঁচা-পাকা রঙের লোকটা সেটাই বলছিলো।

তোমার জন্য বানানো মিঠাইগুলো,
আমি কাউকে খেতে দেইনি, হাড়িতে পঁচেছে।
এখনো প্রায়ই মিঠাই করে রেখে দেই,
তুমি আসবে ভেবে।
দশ ক্লাসে বাবা মারা যাবার পর
স্কুলের ইতি টেনেছিলাম।
তোমার জন্য অনেক মায়া হতো।
পরীক্ষায় কম নাম্বার পেয়ে,
তোমার যখন মন খারাপ হতো।
কী করবো বলো?
বাবাকেতো খুশি করতে হতো।
মাও এখন আমায় ছেড়ে চলে গেছে,
একা থাকি, তোমায় আজকাল
অনেক বেশি মনে পড়ে।
মা চেষ্টা করেছিলেন
যেন সংসার করি।
কিন্তু যে সংসারে তুমি থাকবেনা,
সেটা কী করে আমার জন্য সংসার হবে বল?
হার্টের ডাক্তার বলেছেন, বড় ব্যারাম বাঁধিয়ে ফেলেছি,
সবকিছুতে অনিয়ম করে।
তুমি ছাড়া পৃতিবীতে নিয়মের শরবত আর গিলতে ইচ্ছে করে না।
ডেমুর কাছে চিঠিটা দিয়ে রাখলাম।
যদি কখনো বেড়াতে আসো,
একটু না হয় জানলে কতটা ভালোবাসতাম।"
এটা রিন্দুর লেখা শেষ চিঠি।

আর তার পরের গল্প, নাজিমের লেখা।
ডেমুর কল্যাণে একুশ বছর পরে ফিরে এলাম রিন্দুর কাছে।
চেরি, বেরি, স্টোবেরি খাওয়া সাদা মেম
ছয় বাচ্চা আমার কাঁধে রেখে চম্পট দিয়েছেন।
রিন্দু আর আমি ভালোই আছি রিন্দুর সংসারে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.