নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলার অপরূপ

বাংলার অপরূপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একেই বলে বন্ধুৃ হা হা হা হা হা ................

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০২

ভারতের আপত্তির কারণে শুরু হচ্ছে না বিকল্প ‘গঙ্গা ব্যারেজ’ প্রকল্পের কাজ

13 Jan, 2014

সমীক্ষা শেষ। রিপোর্টও পেশ হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়ন করে অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয় গত জুনে। এরকম জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ সহায়তা দিতে আশ্বাসও দেয়া হয়েছে মালয়েশিয়া ও চীন সরকার। এতকিছুর পরও ভারতের আপত্তির কারণে শুরু করা যাচ্ছে না বিকল্প ‘গঙ্গা ব্যারেজ’ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। দিল্লির ভয়াবহ পানি আগ্রাসী নীতির নাগপাশ থেকে দেশ রক্ষায় ‘ফারাক্কা ব্যারেজ’-এর বিকল্প ‘গঙ্গা ব্যারেজ’ নির্মাণ প্রকল্প নেয়া হয়। এই ব্যারেজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩২ হাজার কোটি টাকা। রাজবাড়ী জেলার পাংশায় এই ব্যারেজ নির্মাণ করা হবে। ব্যারেজটি হবে নীলফামারীর ডালিয়ায় নির্মিত তিস্তা ব্যারেজের আদলে। ব্যারেজ থেকে উজানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাংখা পর্যন্ত ১৬৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকবে বিশাল রিজার্ভার। যার পানি ধারণক্ষমতা থাকবে ২৯শ’ মিলিয়ন মিটার কিউব। এই পরিমাণ পানি থেকে ব্যারেজের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে ২ হাজার মিলিয়ন কিউসেক মিটার পানি সরবরাহ করা হবে।

প্রকল্পের ডিপিপি থেকে জানা গেছে, ব্যারেজের দুই পাশের আটটি সংযোগ খালের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে এই পানি ছাড়া হবে। এর ফলে গঙ্গানির্ভর ১৬টি নদী শুষ্ক মৌসুমে ফিরে পাবে নাব্যতা। সেইসাথে গঙ্গা অববাহিকার ৫১ লাখ হেক্টর জমির মধ্যে ১৯ লাখ হেক্টর জমি সরাসরি সেচের আওতায় চলে আসবে। এই ব্যারেজ নির্মাণ হলে আয় হবে প্রতি বছর ৭ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা। দীর্ঘমেয়াদে এই আয় আরও বৃদ্ধি পাবে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই ব্যারেজ নির্মাণ সম্ভব বলে ডিপিপি’তে উল্লেখ করা হয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এই ডিপিপি অনুমোদন দেয়ার পর তা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় গত জুনে। ব্যারেজের দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছে ২১শ’ মিটার। এর গেট থাকবে ৯৬টি। ফিস পাশ থাকবে ২টি এবং নেভিগেশন লক থাকবে ১টি। এছাড়াও থাকবে একটি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এখান থেকে ১১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এই ব্যারেজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর মাধ্যমে ১২ মাসই পানির প্রবাহ কন্ট্রোল করা যাবে। যা দেশের আর্থসামাজিক ও অর্থনৈতিক খাতে বড় ধরনের বিপ্লব নিয়ে আসবে। দেশ রক্ষা পাবে মরুময়তা ও লবণাক্তের কবল থেকে। পরিবেশে ফিরে আসবে ভারসাম্য। ব্যারেজটি নির্মাণ হলে দেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ মানুষের স্বপ্ন পূরণ হবে। সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে এটি নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যায় কিনা-এটিও খুঁজে দেখা হবে।

কেন এই ব্যারেজ

ভারত কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বৃদ্ধি এবং সিল্ট ফ্লাসিংয়ের উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি-ভাগীরথী নদীতে ৪০ হাজার কিউসেক পানি সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা আঁটে। এজন্যই গঙ্গা নদীর উজানে ফারাক্কা নামক স্থানে এই ব্যারেজ নির্মাণ করা হয়। আর ১৯৭৫ সালে তা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয় এবং চালুর পর থেকে প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে এই ব্যারেজের মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার করা হয়। ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন সরকারের সাথে ভারত গঙ্গার পানি ভাগাভাগি নিয়ে ত্রিশ বছর মেয়াদি একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তি অনুযায়ী, শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে-এই পরিমাণ পানি ভারত বাংলাদেশকে দেয় না এবং চুক্তির গ্যারান্টি ক্লোজ পর্যন্ত মেনে চলে না। ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গানির্ভর নদীগুলো পানি শুন্য হয়ে পড়ে। দেখা দেয় মরুময়তা। পরিবেশেও এর বিরূপ প্রভাব দেখা দেয়। এতে করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাসমূহে দরিদ্রতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। আর অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়ে। দেশকে এই করুণ পরিণতির কবল থেকে রক্ষার জন্যই পাংশায় এই ব্যারেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ লক্ষ্যে ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি অ্যান্ড ডিটেইল্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ফর গ্যাঞ্জেস ব্যারেজ প্রজেক্ট’-এর আওতায় সমীক্ষা চালানো হয়েছে। ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ডিজাইন কনসালট্যান্ট নামক একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান এই ব্যারেজ নির্মাণে চূড়ান্ত সমীক্ষা পরিচালনার কাজটি করে। এই প্রতিষ্ঠানটির সাথে পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও চীনের বিশেষজ্ঞরাও জড়িত। সমীক্ষা বাবদ ব্যয় হয় ৪০ কোটি টাকা। বর্তমানে ফারাক্কার প্রভাবে এদেশের ৫ কোটি মানুষ আর্সেনিক ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে। গঙ্গানির্ভর প্রায় ৪৬ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার গৃহস্থালির পানি সরবরাহ, কৃষি, মৎস্য, বনজসম্পদ, নৌ-চলাচল, শিল্প কারখানা এবং সুন্দরবনসহ দেশের এক-তৃতীয়াংশ বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার।

ব্যারেজের সুবিধা

এই ব্যারেজ নির্মাণ হলে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারীপুর জেলার ১৬টি নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে এবং লবণাক্ততা থেকে রক্ষা পাবে। এতে করে এখানকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্যবিমোচন সম্ভব হবে। এ লক্ষ্যেই গড়ে তোলা হচ্ছে স্বপ্নের গঙ্গা ব্যারেজ। ব্যারেজটি নির্মাণ হলে গঙ্গানির্ভর এলাকার মানুষের জীবিকার প্রসার, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন তথা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধন হবে। বাঁচবে সুন্দরবনের বনজসম্পদ। এই প্রকল্পের অধীনে ১১৩ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠবে। সেইসাথে উপকূলীয় অঞ্চলে পোল্ডারসমূহে ব্যাপক জলাবদ্ধতা সমস্যার নিরসন হবে। এই ব্যারেজের মাধ্যমে বছরজুড়েই পানি ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। দেশে এই প্রথম এরকম একটি ব্যারেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে যেসব ব্যারেজ রয়েছে তার মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে ৩ থেকে ৪ মাস পানি ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাও আবার বৃষ্টি না হলে সমস্যা দেখা দেয়। জানা যায়, মনু ব্যারেজ, তিস্তা ব্যারেজ, মহুরি ব্যারেজ, কেআইপি এবং জিকে প্রকল্পের মাধ্যমে যে সেচ ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে-তার সুবিধা কৃষকরা পেয়ে থাকেন ৩ থেকে ৪ মাস। আর পাংশায় বিকল্প গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ হলে বছরজুড়েই পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। মধ্য জুলাই থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৩ মাস অর্থাৎ বর্ষা মৌসুমে ব্যারেজের সবগুলো গেটই খুলে রাখা হবে স্বাভাবিক পানি প্রবাহের জন্য। মধ্য অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পানি রিজার্ভারে আটকানো হবে। এরপর শুষ্ক মৌসুমে এই পানি ছাড়া হবে।

প্রকল্প থেকে আয়

এই প্রকল্প থেকে বছরে ৭ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা আয় আসবে। দীর্ঘমেয়াদে এই আয় আরও বৃদ্ধি পাবে। আর এই প্রকল্পে করা বিনিয়োগ উঠে আসতে সময় লাগবে মাত্র ৫ বছর। প্রকল্পটির গ্রস এড়িয়া ৫১ লাখ হেক্টর। যা দেশের মোট এলাকার ৩৭ শতাংশ। এর মধ্যে ২৯ লাখ হেক্টর জমি কৃষি কাজে এবং ১৯ লাখ হেক্টর জমি বোরো চাষের আওতায় আনা হবে। যার ফলে বছরে ২৫ লাখ মেট্রিক টন বাড়তি ধান এবং ১০ লাখ টন অন্যান্য ফসল উৎপাদন হবে। মৎস্য উৎপাদন হবে ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন। এই প্রকল্পটি না হওয়ার কারণে প্রতি বছর ১১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত’ হয় বিভিন্ন কারণে। এছাড়াও প্রতি ৫ বছর অন্তর যে খরা দেখা দেয় এতে করে গঙ্গানির্ভর এলাকার মানুষের মাঝে অর্থনৈতিক দুরাবস্থা নেমে আসে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে যেখানে চাষাবাদের এলাকা বৃদ্ধি পাবে, সেখানে বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমে পানি না পাওয়ায় চাষাবাদের এলাকার পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে মোট জমির ১৬ শতাংশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে গড়াই, হিসনা, চন্দনা ও জিকে পাম্পের জন্য ৭শ’ কিউসেক মিটার, গড়াই হাইড্রোপাওয়ারের জন্য ৩শ’ কিউসেক মিটার এবং গঙ্গা ব্যারেজের জন্য ১ হাজার কিউসেক মিটার মোট ২ হাজার কিউমেক মিটার পানি গঙ্গা নির্ভর এলাকাসমূহে পৌঁছে দেয়া হবে। এই পানি পৌঁছানো হবে ব্যারেজের দুই পাশের আটটি সংযোগ খালের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে।

চীন ও মালয়েশিয়ার সহায়তা

বিকল্প গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্পে চীন ও মালয়েশিয়া সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে সরকারকে। এই বাঁধ নির্মাণ করা নিয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল চীন সফর করে এসেছেন। চীনের ‘থ্রি গর্জিয়াস’ ড্যাম নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিকল্প গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের প্রস্তাবও দেয়। একইভাবে প্রস্তাব দিয়েছে মালয়েশিয়ান একটি প্রতিষ্ঠানও। কিন্তু সরকার এই ব্যারেজ নির্মাণে ভারতের গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়ায় এখন পর্যন্ত এর কাজ শুরু করা যায়নি-এমন অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তার।

ভারতের আপত্তি

এই ব্যারেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলে ইতোপূর্বেও ভারত একাধিকবার আপত্তি দিয়েছে। ভারতের আপত্তির এরকম একটি ব্যারেজ নির্মাণের কাজ বেশিদূর এগুতে পারেনি। একই কারণে কোনো দাতা দেশ ও সংস্থাও এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখায়নি। এরপরও পানি উন্নয়ন বোর্ড এই প্রকল্পের হাল ছাড়েনি। তবে বর্তমান সরকার এই প্রকল্পের সমীক্ষা শেষ করে ডিপিপি চূড়ান্ত করে গত জুনে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। গত নভেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ভারত সম্মত না হওয়ায় সরকার এই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারছে না।

‘ফিজিবিলিটি স্টাডি অ্যান্ড ডিটেইল্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ফর গ্যাঞ্জেস ব্যারেজ প্রজেক্ট’ নামক এই প্রকল্পটি চারদলীয় জোট শাসনামলে ২০০৫-এর ১৮ এপ্রিল অনুমোদন হয়। প্রকল্পটির মূল মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৭-০৮ সাল পর্যন্ত। পরবর্তীতে এর মেয়াদ বাড়িয়ে তা ২০১০ এর জুন পর্যন্ত নেয়া হয়। এরপর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য একই বছর আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দু’বছরের শাসনামলে এই প্রকল্প সমীক্ষার কাজ অজ্ঞাত কারণে মন্থর হয়ে পড়ে।

মহাপরিচালকের বক্তব্য

গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের ব্যাপারে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত কনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আজিজুল হক বলেন, প্রকল্পের ডিপিপি তৈরি হয়েছে। আশা করি সহসাই প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদন পাবে। তিনি বলেন, ব্যারেজটি নির্মাণ হলে গঙ্গানির্ভর এলাকার মানুষের জীবিকার প্রসার, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন তথা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধন হবে। বাঁচবে সুন্দরবনের বনজসম্পদ। এই প্রকল্পের অধীনে ১১৩ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠবে। সেইসাথে উপকূলীয় অঞ্চলে পোল্ডারসমূহে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সমস্যার নিরসন হবে।

অতীত কথা

জানা যায়, ১৯৯৯ সালে ওয়ারপো এবং যৌথ নদী কমিশন ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে একাধিকবার তাগিদ দিয়েছিল। ১৯৬১ সাল থেকে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ চলছে। প্রকল্পটি যাতে না হয় এ লক্ষ্যে শহীদ জিয়ার শাসনামলে ভারত জাতীয় স্বার্থবিরোধী প্রস্তাবও রেখেছিল। ওই প্রস্তাবনায় ভারত ব্রহ্মপুত্রের উজানে যোগিগোপা ব্যারেজ করে ২০০ মাইল লম্বা খালের মাধ্যমে ১ লাখ কিউসেক পানি নিয়ে ফারাক্কার উজানে গঙ্গায় ফেলার কথা বলেছিল। আধামাইল চওড়া এই সংযোগ খালটি গভীরতা ধরা হয়েছিল ৩০ ফুট। শুকনা মৌসুমে যেখানে ব্রহ্মপুত্রে ১ লাখ ৩০ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহ থাকে সেখান থেকে ১ লাখ কিউসেক পানি নেয়া হলে এই নদীর অবস্থা গঙ্গার চেয়েও ভয়াবহ হবে এটা আঁচ করতে পেরেই ওই সময় ভারতীয় পস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ‘গড়াই নদী পুনঃখনন’ প্রকল্পটি ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে গৃহীত হয়। এই প্রকল্পটি বিগত সরকার ৩২৩ কোটি টাকা ব্যয় করেও শেষ করতে পারেনি। নেদারল্যান্ড ও বিশ্বব্যাংক বিগত সরকারকে দিয়ে গঙ্গা ব্যারেজের বিকল্প হিসেবে গড়াই নদী পুনঃখনন প্রকল্প গ্রহণ করিয়েছিল।

ফারাক্কার ভয়াবহতা কাটিয়ে তুলতে ১৯৮০ সালে জিয়া তালবাড়ীয়ায় এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি সমীক্ষার পর পাংশায় গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের সুপারিশ করা হয়। ওই সুপারিশমালায় বলা হয়, গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গড়াইসহ ১৬টি নদী নাব্যতা ফিরে পাবে। সেইসাথে দূর হবে এই অঞ্চলের লবণাক্ততার আগ্রাসন এবং ফিরে আসবে ফারাক্কার প্রভাবে বিনষ্ট হয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক ভারসাম্য। গঙ্গা ব্যারেজের প্রথম সমীক্ষা চালানো হয় ১৯৬১ সালের অক্টোবরে।

তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তান ওয়াপদা ‘মেজর প্রজেক্ট অন দ্য গ্যাঞ্জেস’ শীর্ষক এই সমীক্ষা চালায়। ওই সমীক্ষা রিপোর্টের ভিত্তিতে ৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করে ১৯৭০ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান গঙ্গা ব্যারেজের প্রাথমিক কাজের জন্য ৫ কোটি টাকা (রুপি) বরাদ্দ করেছিলেন। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের আড়াই মাইল ভাটিতে এই ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। অজ্ঞাত কারণে ১৯৭৪ সালে গঙ্গা ব্যারেজ সার্কেল গুটিয়ে ফেলা হয়েছিল।

উৎসঃ ইনকিলাব

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১৪

সিদ্ধার্থ. বলেছেন: লিংক দিন তো ,কোন পত্রিকায় ছেপেছে দেখি ।এটি আমার মিথ্যাচার বলেই মনে হচ্ছে ।

২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৩০

চারশবিশ বলেছেন: @লিন্ক এখানে
আপনার কাছে কোনটা মিথ্যাচার বলেই মনে হচ্ছে?
ভারতের ভাদাগিরি না
শুরু হচ্ছে না বিকল্প ‘গঙ্গা ব্যারেজ’ প্রকল্পের কাজ

৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৯

সিদ্ধার্থ. বলেছেন: লিঙ্কে দেখলাম লেখা আছে "এই ব্যারেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলে ইতোপূর্বেও ভারত একাধিকবার আপত্তি দিয়েছে।"

এইটা মিথ্যাচার ।বাংলাদেশ আর পাকিস্তান কোনো বাধ দিলে ভারতের ক্ষতি হবার নয় ,আবার নেপাল ,ভুটান,আবার চীন বাদ দিলে ভারতের ক্ষতি ।স্বাভাবিক হিসাব ,কমনসেন্স থাকলেই বোঝা যায় ।

"পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ভারত সম্মত না হওয়ায় সরকার এই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারছে না।"

সুত্রটা কি তা স্পষ্ট ভাবে বলা নেই ।পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কে বলেছে তার কোনো উল্লেখ নেই ।এটা হলুদ সাংবাদিকতা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.