![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সারা জীবন শুধু পথের সন্ধানে ছুটে চলেছি আমি, সত্যের সন্ধান আর মেলেনা। পথ অনেক দূরের। মানুষের দেয়া কষ্টগুলো জমিয়ে এখন ভীষণ একলা চলি আমি। অন্যের কাছে আশা করি না। শুধু বিশ্বাস করি নিজের বাবা-মাকে। পৃথিবীর মানুষগুলো শুধু কষ্ট দেয় আমায়। তাই এখন আর অন্যের ওপর ভরসা না করে নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে চলা। আসলেই কি যোগ্য আমি। কোথাও কোন বন্ধু নেই। সহযোগীর চেয়ে শত্রু বেশী। যেখানে যাই শত্রু কুড়াই। কর্মক্ষেত্রে, নিজ জীবনে সব জায়গায়। মানুষের মুখ দেখে মানুষ সত্যি চেনা দায়। মানুষ ক্ষণে ক্ষণে গিরগিটির মতো রং বদলায়। আমি মানুষকে সত্যি বিশ্বাস করতে চাই। কিন্তু বিশ্বাস করা বড়ো দায় হয়ে দাড়ায়। পিছন থেকে ছুরি মারা সদা প্রস্তুত মানুষগুলো বড়ো ভাবায়। একটু আগের সবচেয়ে বড় বন্ধু ক্ষণিকের মাঝে অচেনা হয়ে যায়। সবাই যার যার মতো আখের গোছায়। আর আমি চেয়ে থাকি। নাকি ওরাই ঠিক। আর আমি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে জানি না। চোখের পলকে নিজের চেহারা পাল্টাতে পারি না। আমি আসলে বোকার দলে। সময় থেকে পিছিয়ে পড়েছি। আমার মধ্যে আজকাল অবিশ্বাস গুলো আনাগোনা করে। অথচ মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ।তারপরও মনে হয় আলোর সন্ধান আমি পাবোই।ফারজানা
তমার দেহের নীচের অংশ উল্টো করে লটকে দেয়া হয়েছে। তার শরীরটা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে সে, মেরুদন্ডের শেষপ্রান্তে এনেসথেশিয়া দিয়ে কোমর থেকে পায়ের পাতা অবশ করে দেয়া হয়েছে। ১২ সপ্তাহের যে বাচ্চাটা তমার শরীরে এসেছিল, তার আজ শেষ দিন, ওর মিসকারেজ হয়ে গেছে। তমা কাঁদছে, তমার প্রথম সন্তান, কত স্বপ্নই না দেখেছিল ও, ওর স্বামী এই অনাগত শিশুর ভ্রুণটিকে নিয়ে। এক মুহুর্তে সব মিথ্যে হয়ে গেল। কোন ব্যাথা টের পেল না তমা, শুধু বুঝতে পারছে, শরীরটা কেন যেন দুলে চলছে।
তমাকে হাসপাতালের নার্স নীলিমা শান্তনা জানাচ্ছে। বলছে আমাকে দেখেন,- আমার তিনবার মিসকারেজ হয়েছে, তারপর আমার বড় মেয়ে তন্দ্রার জন্ম, এমন হতেই পারে। ডাক্তার বললেন,- কেন এভাবে কাঁদছেন, আপনার তো মা হবার যোগ্যতা আছে, আপনি আবার মা হবেন। সারা পৃথিবীতে প্রতি তিনজন নারীর একজনের ক্ষেত্রে এ ঘটনা ঘটে, তাদের প্রথম একটি - দুটি সন্তান মিসকারেজ হয়, তারপর তারা আশা ছাড়ে না, এবং মা হয়। আপনার বাচ্চার সঙ্গে তো আপনার সেভাবে সক্ষতা হয়ে ওঠেনি, কত কত নারী আছে যাদের সাত মাসের বাচ্চা, যে তার মায়ের পেটে নড়তো তারও এবোরেশন হয়ে যায়।
তমার যখন অল্প অল্প রক্ত পড়তে আরম্ভ হলো, তখন ও দ্রুত তার স্বামীকে ফোন করলো- বললো, দ্রুত আসো হাসপাতাল যেতে হবে। আমাদের বাবুটাকে বাঁচাতে হবে। অরণ্যক দ্রুত চলে এলো। ডাক্তার ইউরিন টেষ্ট করে তমাকে বললো, হ্যা তুমি মা হচ্ছো, কিন্তু আলট্রাসোনোগ্রামের পর ভ্রুণটাকে আর খুঁজে পেল না। ইমার্জেন্সী ডাক্তার নিজে বুঝে গেলেও ডিপার্টমেন্ট হেডকে ডেকে পাঠালো, তারপর তমাকে জানালো, গর্ভের সন্তানটা সাত সপ্তাহের পর আর বড় হয়নি। তাই এখন রক্ত বইছে, ডিএনসি (এবোরেশন) না করে কোন উপায় নেই। সব স্বপ্ন, সব আশা বিসর্জন দিয়ে তমাকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকতে হলো।
হাসপাতাল থেকে পরেরদিন বাড়ি ফিরলে- অনেকে ফোন করলো। তমার ডাক্তারা অনেক শান্তনা দিল। তমা, ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে মা হচ্ছিলো। তমার মনে হচ্ছিলো, সব দোষ ওর। নিশ্চয়ই ওর সমস্যা, নতুবা এমন কেন হবে? ওর ডাক্তার ওকে ফোন করে বললো-' সমস্যাটা আপনার না। আবারো বলছি,- পৃথিবীতে প্রতি তিনজন মায়ের একজনের এমন ঘটনা ঘটতে পারে। কেউ বলতে পারবে না কেন এমন হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই এর। তবে আপনার সিনড্রম দেখে মনে হচ্ছে, ক্রোমোজন দূর্বল ছিল, তাই বাচ্চাটা আর বাড়েনি'।
তমাকে যারা ভালবাসে সেইসব মানুষেরা ফোন করে খুব শান্তনা জানালো, ঠিক যেভাবে মা তার সন্তানকে শান্তনা দেয় সেভাবে। আর কেউ শান্তনা দিতে গিয়ে প্রশ্ন করলো,-' কি করছিলে? অনেক দৌড়াদৌড়ি করছিলে বুঝি? কেউবা বললো,- তোমার তো মা হওয়ার কথা না, এতদিন যে পেটে বাচ্চা ছিল- এটাই তো বেশি। কেউ বললো- ' কি সিড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পড়ে গেছ নাকি বাথরুমে পিছলে পড়ে গেছ- নিশ্চয়ই তুমি কিছু করেছো যাতে করে সন্তানটা মরে গেল'। আর কেউ কেউ বললো,- 'মিসকারেজ মানে প্রকৃতি তোমাকে একটি এবনর্মাল বাচ্চা হওয়া থেকে রক্ষা করলো'। এক আত্মীয় তমাকে বললো,-'বেশি বেশি ডাক্তারের কাছে গেছ তাই বাচ্চাটা মিসকারেজ হয়েছে, এরপর ঘরে বসে থাকবা, চাকরী করার দরকার নাই - এইবার যে ভুল করেছো তা থেকে শেখ, যাতে ভবিষ্যতে বাচ্চা না মরে যায়'।
একটা মেয়ে যখন মা হয়, তখন তার সমস্তটা দিয়ে দেয় সে বাচ্চাটাকে সুস্থভাবে জন্ম দিতে। সব শখ- আহ্লাদ দূর করে দেয়। কত প্রিয় খাবার বাদ দেয় সন্তানের মঙ্গল কামনা করে, কত অপ্রিয় কিছু খেতে হয় তাকে। খেতে পারে না, বমি হয়ে যায়, আবার খায় যাতে গর্ভের বাচ্চাটা বড় হয়। সমস্ত পৃথিবীর বিরুদ্ধে একাই দাঁড়িয়ে যায়, সন্তানকে বাঁচাতে। তবুও মিসকারেজ হলে - সব দোষ এখনও মায়েদের হয়।
এ সময় স্ত্রীর পাশে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হয় তার স্বামীকে, যেভাবে অরণ্যক তমার পাশে দাঁড়িয়েছে। নতুবা- তমা হয়তো নিজেকে শেষ করে দিতো।
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৫৩
ফারজানা৯৯ বলেছেন: গল্পটা লিখতে লিখতে আমারও মন খারাপ হয়েছে
২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৭
নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: ভালো লাগলো
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৫২
ফারজানা৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮
মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার লেখনী ।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৪১
ফারজানা৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:২৪
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: ভালো লাগলো।
ভাই ব্লগের মহারথ মহারাজ দের পোস্টে একটু মন্তব্য দিয়েন। না হলে পোস্ট নির্বাচিত হয়না এখানে।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৪১
ফারজানা৯৯ বলেছেন: আচ্ছা দেব। ধন্যবাদ ভালা লাগার জন্য
৫| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬
আনিসা নাসরীন বলেছেন: এটাই সত্যি।
খুব ভাল লেখেছেন।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৪২
ফারজানা৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ
৬| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৮
খোলা মনের কথা বলেছেন: অনেক ভাল লেখা।
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: ভালো লাগলো।
ভাই ব্লগের মহারথ মহারাজ দের পোস্টে একটু মন্তব্য দিয়েন। না হলে পোস্ট নির্বাচিত হয়না এখানে।
ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৪৩
ফারজানা৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৩
অরুনি মায়া অনু বলেছেন: চরম একটি বাস্তব সত্য। সন্তান জন্মদানের সমস্ত দায়ভার যেন শুধুই একজন মায়ের। অদ্ভুত মানুষিকতা। ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৪৩
ফারজানা৯৯ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৫
বিবর্ণ স্বপ্ন বলেছেন: