নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একবিংশের ইলহাম (সমাজ ধর্ম দর্শন বিষয়ক প্রবন্ধ)

আত্মশুদ্ধি প্রজ্ঞা লাভ মনুষ্যত্বে সিদ্ধি লাভ

ময়না বঙ্গাল

মতলববাজি খতম করি বিবেকদন্ড বহাল করি

ময়না বঙ্গাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিহাস দর্পন: বঙ্গফ্রেন্ড শেখ মুজিব: পাকিস্তান আন্দোলনের যুবরাজ

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০৯

অসমাপ্ত আত্মজীবনী:
শেখ মুজিবুর রহমান শীর্ষক বই হতে চয়ন-
১৯৪২ সালে মিস্টার জিন্নাহ আসবেন বাংলাদেশে, প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সম্মেলনে যোগদান করার জন্য । সম্মেলন হবে পাবনা জেলার সিরাজগন্জ মহকুমায় । আমরা ফরিদপুর থেকে বিরাট এক কর্মী বাহিনী রওনা করলাম ।ছাত্রলীগ কর্মীই বেশী ছিল ।আমি প্রায় সকল সময় শহীদ (সহরাওয়ার্দী) সাহেবের কাছে কাছে থাকতে চেষ্টা করতাম ।১৯৪৩ সালে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আরম্ভ হয়েছে ।লক্ষ্য লক্ষ্য লোক মারা যাচ্ছে ।এই সয়য় আমি প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সদস্য নির্বাচিত হই ।শহীদ সাহেবের নেতৃত্বে আমরা বাংলার মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকেরা মুসলিম লীগকে জনগণের লীগে পরিনত করতে চাই, জনগনের প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে চাই। মুসলিম লীগ তখন পর্যন্ত জনগণের প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয় নাই ।জমিদার, জোতদার ও খান বাহাদুর নবাবদের প্রতিষ্ঠান ছিল ।...আমাদের সহকর্র্মীদের নিয়ে বসলাম । আলোচনা হল, সকলে বলল, এই অন্চলে (গোপাল গঞ্জ মহকুমা)কোনদিন পাকিস্থানের দাবির জন্য কোনো বড় কনফারেন্স হয় নাই ।তাই কনফারেন্স হলে তিন জেলার মানুষের মধ্যে জাগরণের সৃষ্টি হবে ।আলোচনা করে ঠিক হল, সম্মেলনের ‘দক্ষিণ বাংলা পাকিস্থান কনফারেন্স” নাম দেয়া হবে এবং তিন জেলার লোকদের দাওয়াত করা হবে ।আমি কলকাতা রওনা হয়ে গেলাম, নেতৃবৃন্দকে নিমন্ত্রণ করার জন্য ।যখন সোহরাওয়ার্দী সাহেবকে দাওয়াত করতে গেলাম, দেখি খাজা শাহাবুদ্দীন সেখানে উপস্থিত আছেন । শহীদ সাহেব বললেন, আমি খুবই ব্যস্ত, তুমি বুঝতেই পারো, নিশ্চয় চেষ্টা করব যেতে ।সাহাবুদ্দিন সাহেবকে নিমন্ত্রণ কর উনিও যাবেন ।...আব্বা আমাকে এ সময় একটা কথা বলেছিলেন, বাবা রাজনীতি কর আপত্তি করব না, পাকিস্থানের জন্য সংগ্রাম করছ এ তো সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না । আর একটা কথা মনে রেখ, sincerity of purpose and honesty of pourpose থাকলে জীবনে পরাজিত হবা না ।, এ কথা কোনদিন আমি ভুলি নাই ।অনেক সময় আব্বা আমার সাথে রাজনৈতিক আলোচনা করতেন । আমাকে প্রশ্ন করতেন, কেন পাকিস্থান চাই ? আমি আব্বার কথার উত্তর দিতাম ।আমার আলোচনা শুনে খুশি হলেন ।শুধু বললেন, বাবা যাহাই কর, হক সাহেবের বিরুদ্ধে কিছুই বলিও না ।শেরে বাংলা মিছামিছিই শেরে বাংলা হননি ।...আমার কাছে ভারতবর্ষের একটা ম্যাপ থাকত । আর হাবিবুল্লা বাহার সাহেবের পাকিস্থান নামক বইটা এবং মুজিবুর রহমান খাঁ সাহেবও পাকিস্থান নামে একটা বিস্তৃত বই লিখেছিলেন সেটা; এই দুইটা বই আমার প্রায় মুখস্তের মত ছিল । আজাদ পত্রিকার কাটিংও আমার ব্যাগে থাকত ।সিপাহি বিদ্রোহ এবং ওহাবি আন্দোলনের ইতিহাসও আমার জানা ছিল । কেমন করে বৃটিরাজ মুসলমানদের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল, কি করে রাতারাতি মুসলমানদের সর্বশ্রান্ত করে হিন্দুদের সাহায্য করেছিল, মুসলমানরা ব্যবসা-বানিজ্য, জমিদারি, সিপাহির চাকরি থেকে কিভাবে বিতাড়িত হল-মুসলমানদের স্থান হিন্দুদের দ্বারা পূরণ করতে শুরু করেছিল ইংরেজরা কেন ? মুসলমানরা কিছুদিন পূর্বেও দেশ শাসন করেছে তাই ইংরেজকে গ্রহণ করতে পারে নাই । সুযোগ পেলেই বিদ্রোহ করত ।ওহাবি আন্দোলন কি করে শুরু করেছিল হাজার হাজার বাঙালি মুজাহিদরা ? বাংলাদেশ থেকে পায়ে হেঁটে সীমান্ত প্রদেশে যেয়ে জেহাদে শরীক হয়েছিল।তিতুমীরের জেহাদ, হাজী শরীয়তুল্লাহর ফারায়জি আন্দোলন সম্বন্ধে আলোচনা করেই আমি পাকিস্থান আন্দোলনের ইতিহাস বলতাম । ভীষণভাবে হিন্দু বেনিয়া ও জমিদারদের আক্রমণ করতাম ।এর কারণও যথেষ্ট ছিল।একসাথে লেখাপড়া করতাম, একসাথে বল খেলতাম, একসাথে বেড়াতাম, কিন্ত আমি যখন কোন হিন্দু বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যেতাম, আমাকে অনেক সময় তাদের ঘরের মধ্যে নিতে সাহস করত না আমার সহপাঠীরা ।হিন্দু মহাজন ও জমিদারদের অত্যাচারেও বাংলার মুসলমানরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল ।তাই মুসলমানরা ইংরেজদের সাথে অসহযোগ করেছিল । তাদের ভাষা শিখবে না, তাদের চাকরি নেবে না, এই সকল করেই মুসলমানরা পিছিয়ে পড়েছিল ।আর হিন্দুরা ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করে ইংরেজকে তোষামদ করে অনেকটা উন্নতির দিকে অগ্রসর হয়েছিল ।যখন আবার হিন্দুরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল তখন অনেকে ফঁসিকাষ্ঠে ঝুলে মরতে দ্বিধা করে নাই ।এই সময় যদি এই সকল নি:স্বর্থ স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ত্যাগী পুরুষরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সাথে সাথে হিন্দু ও মুসলমানদের মিলনের চেষ্টা করতেন এবং মুসলমানদের উপর যে অত্যাচার ও জুলুম হিন্দু জমিদার ও বেনিয়ারা করেছিল, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেন, তাহলে তিক্ততা এত বাড়ত না। হিন্দু নেতাদের মধ্যে দেশবন্ধু চিত্তরজ্ঞন দাশ এবং নেতাজী সুভাষ বসু এ ব্যাপারটা বুঝেছিলেন, তাই তারা অনেক সময় হুঁশিয়ার করেছিলেন । কবিগুরুও তার লেখার ভেতর দিয়ে হিন্দুদের সাবধান করেছেন ।এ কথাও সত্য, মুসলমান জমিদার ও তালুকদাররা হিন্দু প্রজাদের সঙ্গে একই রকম ব্যবহার করত হিন্দু হিসেবে নয়, প্রজা হিসেবে ।এই সময় যখনই কোন মুসলমান নেতা মুসলমানদের জন্য নায্য অধিকার দাবী করত তখনই দেখা যেত হিন্দুদের মধ্যে অনেক শিক্ষিত, এমনকি গুণী সম্প্রদায়ও চিৎকার করে বাধা দিতেন ।মুসলমান নেতারাও পাকিস্থান সমন্ধে আলোচনা ও বক্তৃতা শুরু করার পূর্বে হিন্দুদের বিরুদ্ধে গালি দিয়ে শুরু করতেন।"
জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেশজুড়ে চলছে ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রচার। মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সমাজকর্মীরা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে ফুল বিতরণ করেন। বাদ যাননি এই চা-বিক্রেতাও। ছবিটি আজ বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লি থেকে তোলা। ছবি: এএফপি

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:১৩

হামিদ আহসান বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ......

২| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬

জেকলেট বলেছেন: শুধু বঙ্গবন্ধু না ঐ সময়কার প্রায় সকল মুসলিম নেতৃবিন্দই মুসলীম লীগ করতেন। এই ব্যাপারে আরো জানতে হলে আপনি আবুল মনসুর আহমদের লেখা "আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর" বইটি পড়ে দেখতে পারে। আর পাকিস্থান আন্দোলনের সাথে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ককে উনি নিজে কখন অস্বিকার করেন নি বা এর জন্য কখন উনাকে আফসোস করতে ও শুনা জায়না।
প্রশ্ন হচ্ছে এখন পাকিস্থান আন্দোলন নিয়ে বা পাকিস্থানের সৃষ্টি নিয়ে যে পেপার টিভিতে এত সমালোচনা সেখানে অনেক কড় পড়া আওয়ামিলীগ বুদ্ধিজীবিরা মুখ দিয়ে বেলুন ফোলান তার কি??? ঐটা হচ্ছে বাংলার রাজনীতির চিরকালের তৈল প্রথা। উনারা একটু বেশি মাপের কাপড় পরেন ই এই কারনে, যাতে সময় মত কাপড় চিপে তেল দিতে পারেন।
একটা কথা মনে রাখবেন পাকিস্থান আন্দোলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে মহৎ। পরবর্তিতে পাকিস্থানি নেতৃবিন্দের অদুরদর্শি কর্মের কারনে রাষ্ট্র লাইনচ্যুত হয়েছে। আপনি পাকিস্থান রাষ্ট্রের বিরোধিতা করতে পারেন কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়া পাকিস্থান আন্দোলন হইছে তার বিরধীতা বোকামি ছাড়া আর কিছু না।

৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:০০

ময়না বঙ্গাল বলেছেন: ভাই আমি কয়েক দিন ছিলাম না । ভাই আমাকে একটু সাথে রাখবেন । আপনার চেতনার স্বচ্ছতাকে স্যালুট । সামনে সময় দিবেন ইনশাল্লা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.