![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মতলববাজি খতম করি বিবেকদন্ড বহাল করি
প্রশাসনিক সংস্কার
প্রশাসনকে দলীয়করণের বিষয়টি প্রায় সব সময়ই সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। বলা হয়, নির্দদলীয় প্রশাসন ছাড়া নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় । বিষয়টি আংশিকভাবে সত্য । সবচেয় বড় কথা হলো –নির্দলীয় প্রশাসন প্রয়োজন সুশাসনের জন্য । সুশাসনের জন্য নির্বাচনই যে যথেষ্ট নয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না । সার্বিক দৃষ্টিকোন থেকে বলা যায়-নির্দলীয় প্রশাসনই গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে সক্ষম । প্রশাসনকে দলীয়করণের জন্য ক্ষমতাসীন সব সরকারই দফায় দফায় সচিবালয় বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ে নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিসহ বাধ্যতামূলক অবসর অথবা পদোন্নতি থেকে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করেছে । কিভাবে এবং কী প্রক্রিয়ায় প্রশাসন যন্ত্রের নির্দলীয় ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখা হবে তার একটি বাস্তবসম্মত রুপরেখা নিম্নে প্রদান করা হলো ।
৩.৩ : সরকারি কর্ম কমিশনের সংস্কার : সংবিধানে সংসদ আইন দ্বারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা (অনুচ্ছেদ -১৩৩ ) থাকলেও স্বাধীনতার ৪৩ বছরে সে আইন প্রনীত হয়নি । গত চার দশকে ক্ষমতাসীন কোন রাজনৈতিক দল আইনটি প্রনয়ণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি । কারণ আইনটি প্রনীত হলে তারা ক্ষমতায় আসীন হলে ইচ্ছে মত জনপ্রশাসনে নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন ইত্যাদি কার্যক্রম চালাতে পারবে না । তাদের উদ্দেশ্য হলো, দলীয়করণের মাধ্যমে প্রশাসনে গোষ্ঠীতন্ত্র কায়েম করা এবং প্রশাসনকে ব্যবহার করে ক্ষমতার ভীত শক্তিশালী করা । এটিই প্রশাসনে অদক্ষতা, দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলা ইত্যাদির মূল কারণ । কিন্তু চরম সত্য এই যে, কোন ক্মমতাসীনই নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে দ্বিতীয় টার্মে ক্ষমতায় আসতে পারেনি । বর্তমানে পিএসসি’র চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ নিযোগ পান রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে । রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে এ নিযোগ দেন । উপরন্ত রাষ্ট্রপতি দলীয় ব্যক্তি হলে তাঁর নিযোগকৃত ব্যক্তিদের নিরপেক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা কম ।
তাই একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নিযোগ প্রক্রিয়ার জন্য সার্চ কমিটি গঠনের বিধান করা হবে । যাদের ভাবমূর্তি ভালো ছিল এমন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, অবসরপ্রাপ্ত জেষ্ঠ আমলা, টেকনোক্রাট, শিক্ষাবিদ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের থেকে সার্চ কমিটি গঠনের জন্য অর্ন্তভুক্ত করার বিধান রেখে আইন প্রনয়ণ করা হবে । সার্চ কমিটি কর্তৃক প্রস্তাবিত ৫ জন থেকে মহানুভবতার খাতিরে এবং বিতর্ক এড়ানোর জন্য প্রকাশ্যে দৈব চয়নের ভিত্তিতে প্রথম তিন জনকে নিযোগ দিবেন ।
৩.৪ : প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করার লক্ষে একটি সময় যুগোপযোগী সরকারি চাকরি সংক্রান্ত আইন যত্নসহকারে প্রনয়ণ করা হবে । যা চাকরীজীবিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে । অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে এ আইনের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হবে একটি নির্দলীয় প্রশাসন যন্ত্রকে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করা ।
৩.৫ : বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত “ ২৫ বছর চাকরির মেয়াদান্তে সরকার কোন কারণ না দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে অবসর গ্রহণে বাধ্য করতে পারে” মর্মে আইনটি বাতিল করে যোগ করা হবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারী স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করতে পারবেন ।
প্রশাসনকে গতিশীল ও জনকল্যাণমূখী করার লক্ষ্যে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ সমুহ গ্রহণ করা হবে :
৩.৬ : স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭১ সাল থেকে সামরিক শাসন সহ ’১৭ সাল পর্যন্ত সব কয়টি সরকারের সময়ে গঠিত হয়েছে মোট ১৩টি কমিশন । এর মধ্যে ১৯৭৬ এবং ১৯৯৭ সালে গঠিত হওয়া যথাক্রমে রশীদ কমিশন এবং এটিএম শামসুল হকের কমিশন অনেক যুগান্তরকারী পদক্ষেপের সুপারিশ করেন । নিম্নে উল্লেখিত তাঁদের উল্লেখযোগ্য সুপারিশ সমুহ বাস্তবায়ন করা হবে ।
৩.৭ : সিনিয়র সার্ভিস পুল (এস এস পি) নামে একটি পৃথক ক্যাডার সৃষ্টি করা হবে । যেখানে উপসচিব পর্যায়ে সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক পরিচালিত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা হবে । এবং তা সব ক্যাডারের জন্য উন্মুক্ত থাকবে । এতে করে একদিকে দক্ষ কর্মকর্তাগণ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যেতে পারবেন । অন্যদিকে কর্মকর্তাদের মাঝে প্রতিযোগীতার মনোভাব তৈরী হবে এবং দক্ষতা বাড়ানোর দিকে তাঁরা মনোযোগী হবেন ।
ইতিপূর্বে সিনিয়র সার্ভিস পুলকে (এস এস পি ) একটা পৃথক ক্যাডার হিসেবে গঠনের ব্যপারে তৎকালীন সামরিক সরকার প্রয়োজনীয় বিধি প্রনয়ণ করে এবং ১৯৭৯ সালে সেই বিধি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করে। তবে এসএসপি’তে রিক্রুমেন্টের জন্য লিখিত পরীক্ষার পাঠ্যসূচি নিয়ে সরকারি কর্মকমিশনের সঙ্গে একমত হতে সরকারের দীর্ঘ ১০ বছর সময় লেগে যায় । অনেকে মনে করেন এ কালক্ষেপণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ছিল । ১৯৮১ সালের ১২ জুলাই এসএসপি বিলুপ্ত হয়ে যায় ।
সিনিয়র সার্ভিস পুল এবং পার্শ্বঅনুপ্রবেশ (Lateratentry) সম্পর্কে আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন : এ দুটোই থাকা উচিত । তা না হলে প্রশাসনে নতুন রক্ত সঞ্চালন এবং অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ পাওয়া যাবে না । তবে অবশ্যই সিনিয়র সার্ভিস পুলের আকার নির্দিষ্ট ও ছোট হতে হবে এবং এ দুটো ক্ষেত্রেই মুক্ত প্রতিযোগীতা, দক্ষতা ও মেধার ভিত্তিতে অর্ন্তভূক্ত করতে হবে ।
৩.৮ : স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক, পেশাদারি ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমমনা মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে ক্লাসটার্স সিস্টেমের প্রচলন করে কর্মকর্তাদের ওই মন্ত্রনালয়ের মধ্যে বদলি সীমিত করা হবে ।
৩.৯ : গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও পরিবেশ উপযোগী একটি কার্যপ্রণালী বিধি (রুলস অব বিজনেস) প্রনয়ণ করা হবে । অনেক নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু এখনো গণতান্ত্রিক শাসন উপযোগী কার্যপ্রণালী বিধি প্রনয়ণ করা হয়নি । গণতান্ত্রিক সরকার চলছে সামরিক শাসন আমলে প্র্স্তুত কার্যপ্রণালী বিধি নিয়ে । ১৯৯১ সালে তৎকালীন কৃষি ও সেচমন্ত্রী মজিদ –ঊল হককে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত প্রশ্নে ঐক্যমত না হওয়ায় কার্যপ্রণালী বিধি প্রনয়ণ করা সম্ভব হয়নি । বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের কর্মকান্ডে মন্ত্রীর ভূমিকা হচ্ছে তদারকিমূলক । নির্বাহী ক্ষমতা তাঁর নেই ।
৩.১০ : লাল ফিতার দৌরাত্বের লাগাম টানার লক্ষ্যে ফাইলের কষ্টকর এবং যন্ত্রণাদায়ক যাত্রার বদলে সহজ সাবলীল ও সংক্ষিপ্ত যাত্রা নিশ্চিত করা হবে । এজন্য নিয়ম বা রেজুলেশনসমুহ ফ্লেক্সিবল করার উদ্যোগ নেয়া হবে ।
৩.১১ : বর্তমানে ৪৭টি সচিব পদের অনুমোদন থাকলেও সচিব করা হয়েছে ৬৪ জন । অতিরিক্ত সচিবের অনুমোদন ১৯ জন থাকলেও করা হয়েছে ৫৯ জন। এইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অতিরিক্ত পদোন্নতি দিয়ে জনগণের অর্থের অপচয় বন্ধ করা হবে ।
১২ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩
ময়না বঙ্গাল বলেছেন: শুভ কামনা রইল ভাই
২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সুন্দর কথা শুনতে ভাল পড়তে ভাল
কার্যকর করবে যারা তাদের কাছেতো কুইনিন! সো.. বলাই সার
যদিনা সর্বোত বিপ্লবের মাধ্যমে ভালমানুষের সরকার গঠিত হয়।
তবু প্রচেষ্টা অবিরাম। চলতে থাকুক।
+++
১২ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৫
ময়না বঙ্গাল বলেছেন: আমাদের ব্লগারদের একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা শুরু করা আশু জরুরি । সামনে মত চিন্তা বিনিময়ে টাইম চাই ভাই ।
৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
হালাল ইলেকশান কমিশন গঠন করার কোন ফর্মুলা টর্মুলা আছে নাকি কোথায়ও?
১২ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০২
ময়না বঙ্গাল বলেছেন: সালাম নিবেন ভাই । ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন সংস্কার নিয়ে দুই কিস্তিতে একটি লেখা পোস্ট করেছিলাম । আপনার সময় হলে একটু চোখ বুলাবেন ইনশাল্লা ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ভাল বলেছেন।
সুন্দর উপস্থাপন।