নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একবিংশের ইলহাম (সমাজ ধর্ম দর্শন বিষয়ক প্রবন্ধ)

আত্মশুদ্ধি প্রজ্ঞা লাভ মনুষ্যত্বে সিদ্ধি লাভ

ময়না বঙ্গাল

মতলববাজি খতম করি বিবেকদন্ড বহাল করি

ময়না বঙ্গাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ বিবেক ইশতেহার

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:১৯

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা সংস্কার
বাংলাদেশের জন্মের পর থেকেই অদ্যবধি স্হানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সব সরকারই বিভিন্ন কমিটি বা কমিশন গঠন করেছে । এসব কমিশন বহু ধরনের সুপারিশ পেশ করলেও পরিস্থিতির তেমন একটি উন্নতি হয়নি । বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সরকারগুলো কিছু কিছু সংস্কার করলেও প্রকৃত পক্ষে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ এবং কার্যক্রম ও আর্থিক দিক থেকে স্থানীয় সরকারসমুহ অতিরিক্ত এবং প্রয়োজনীয় ক্ষমতা লাভ করেনি । ফলে কেন্দ্রীয়ভাবে মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে থেকেই তাদের কাজ করতে হচ্ছে । অবশ্য স্থানীয় সরকার পুনর্গঠন এবং শক্তিশালীকরণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবলেশহীনতা আর নিরুত্তাপ ভুমিকা নতুন কিছু নয় । বাস্তব পর্যালোচনায় দেখা যায়, কোন রাজনৈতিক সরকারের আমলেই স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়নি । যতটুকু উল্লেখযোগ্য সংস্কার বা পরিবর্তন ঘটেছে, তার বেশিরভাগই হয়েছে সামরিক ও একনায়কতান্ত্রিক শাসনামলে । যদিও লোকাল গভর্ণমেন্ট স্ট্রাকচার রিভিউ কমিশন ১৯৯৩, লোকাল গভর্ণমেন্ট কমিশন ১৯৯৭ এবং কমিশন ফর ফিন্যান্সিয়াল সোর্স অব ফাইন্যান্সিং লোকার গভর্ণমেন্ট ইনস্টিটিউশন ১৯৯৯ নামে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ শাসনামলে যথাক্রমে দুটি সংস্কার কমিশন ও একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল । কিন্তু দু:খজনকভাবে তা বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার ভুমিকা, কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কার্যকর কোন পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়নি ।
বাংলাদেশের গণতন্ত্রের শিকড় শক্তিশালী করতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উন্নয়নে যে সকল কার্যকর ও অর্থপূর্ণ সংস্কার সাধন করা হবে, তার রুপরেখাটি নিম্নরুপ :
১:১ : সাংসদেরা স্থানীয় সরকার কার্যক্রমে জড়িত হওয়া ক্ষমতা বিভাজনের মৌলিক নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন । তাঁদের হস্তক্ষেপে স্থানীয় সরকারগুলো প্রকৃতপক্ষে অকেজো হয়ে পড়েছে এবং দুর্নীতির আখড়াতে পরিনত হয়েছে । স্থানীয় সরকারের কাজে সাংসদদের হস্তক্ষেপ আইনের মাধ্যমে রোধ করা হবে এবং থোক বরাদ্দ প্রথা বিলুপ্ত করা হবে । যাতে সাংসদরা নিজেদের সংসদীয় এবং বিশেষ করে আইন প্রনয়নের কাজে মনোনিবেশ করতে পারেন । ফলে যাঁরা সংসদীয় কাজ মানে আইন প্রনয়নে আগ্রহী তাঁরাই কেবল সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইবেন । তাতে সংসদে দুর্নীতিবাজদের সংখ্যা ও দৌরাত্ম কমে যাবে । এতে সংসদ নির্বাচনে কোটি কোটি টাকা খরচ করে দলের মনোনয়ন কেনা এবং দুর্নীতি করে নির্বাচনে জেতার প্রবনতাও কমে যাবে । সাংসদ হয়ে কোটি কোটি টাকা বানানোর পথ বন্ধ করে দেওয়া হবে । যাতে সংসদ নির্বাচনে দুর্নীতিবাজরা আসতে নিরুৎসাহী হয়ে পড়ে । স্থানীয় সরকারগুলো শক্তিশালী করার মাধ্যমে দুর্নীতি বহুলাংশে কমে যাবে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে আমুল পরিবর্তন আসবে । দেশ শাসনে জনগণের ভুমিকা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে ।

১:২: স্থানীয় সরকারের স্তর বিন্যাস পুনর্গঠন করা হবে । বাংলাদেশের মত স্বল্প আয়তনের একটি দেশে স্থানীয় সরকারের এতগুলো স্তর থাকা আদৌ বাস্তব সম্মত ও সংগত নয় । স্থানীয় সরকারের অধিক সংখ্যক স্তর থাকলে তাতে কার্যক্রম ও ক্ষমতার পরিধি নিয়ে সংঘাতের সৃষ্টি হতে পারে বলে বিশেষঞ্ছরা মনে করেন ।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে দুটো গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ । এই দুটি মানুষের সবচেয়ে কাছের প্রতিষ্ঠান এবং জনসংখ্যা অনুপাতে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে অধিক কার্যকর । উপজেলঅ পরিষদের ওপরে তৃতীয় স্তর হিসেবে জেলা পরিষদের কতটুকু প্রয়োজনতিা কতটুকু তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার দাবি রাখে । তবে এক্ষেত্রে জেলা পর্যায়ে একটি আঞ্চলিক পরিকল্পনা প্রনয়ন কমিশন (Regional Planning Body) গঠন করা হবে ।
১:৩: জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে কার্যকর বরাদ্দ ব্যবস্থায় বিদ্যমান তিন ধরনের যথা –সংরক্ষিত, হস্তান্তরিত এবং আইন সিদ্ধ অন্যান্য কার্যক্রমের বাস্তবসম্মত ও বস্তুনিষ্ঠ মূর্যায়ন সাধন করা হবে । সাথে সাথে স্থানীয় হাট বাজার, খেয়াঘাট প্রভৃতি ইজারা দেয়ার ক্ষমতা স্থানীয় সরকারকে ফিরিয়ে দয়া হবে । তাছাড়া কাবিখা, কাবিটা, টিআর সহ সব ধরনের সরকারি বরাদ্দ সরাসরি স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে পাঠানো বিধান চালু করা হবে । তবে একই সঙ্গে স্বচ্ছতা এ জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অডিট ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে । অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদের অঢিট নিয়মিত হয় না । অঢিট দলের সঙ্গে লেনদের’এর সর্ম্পকের কারণে কোন অডিট আপত্তি সাধারনত উপস্থাপন করা হয় না । এক্ষেত্রে বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদকে বাধ্রতামূলক ও নিয়মিত সরকারি অডিট ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে । তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে অডিট সম্মন্ন করার বদলে পরিষদ এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধির সমন্বয়ে গণ –নিরীক্ষণ কমিটির সভর সম্মুখে অডিট সমবমন্ন করা বাধ্যতামূলক করা হবে ।
১:৪: রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ এবং বরাদ্দের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা হ্রাস করার লক্ষ্যে জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে অর্থ বন্টনের ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে । পাশাপাশি একটি সুস্পষ্ট বিকেন্দ্রীকরণ নীতিমালা ঘোষণা করা হবে যা স্থানীয় সরকারের কাঠামো এবং কর্ম বিভাজনের একটি স্বচ্ছ রুপরেখা হিসেবে কাজ করবে ।
১:৫: স্থানীয় সরকারগুলোর মধ্যে কেন্দ্রীয় সম্পদ বন্টন এবং যথাযথ বরাদ্দ প্রদান নিশ্চিত করতে পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার মূল্যায়ন ও নিরীক্ষা কল্পে একটি স্থানীয় সরকার অঅর্থ কমিশন গঠন করা হবে অথবা একটি স্থানীয় সরকার কমিশনই গঠন করা হবে । যারা স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত সব দায়িত্ব পালন করবে । মূলত: এই স্থায়ী কমিশন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বর্তমান নীতি নির্ধারনী, সম্পদ বন্টন ও নানাবিধ নিয়ন্ত্রণসহ সব দায়িত্ব পালন করবে, যাতে স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক চাপমুক্ত রাখা যায় এবং স্থানীয় সরকারগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সার্বভৌমত্ব অক্ষু্ন্ন থাকে ।
১:৫: (ক): পৃথিবীর প্রায় সব গণতান্ত্রিক দেশের বাজেটের কমবেশি শতকরা ৫০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ ও খরচ করে বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় সরকার । আমাদের স্থানীয় সরকারগুলো সাকুল্যে শতকরা ৫ভাগও পায় না । এই প্রচলন বন্ধ করে দেশের বাজেটের শতকরা ৩০ ভাগেরও অধিক অংশ নিয়ন্ত্রণ ও খরচের অধিকার স্থানীয় সরকারসমুহকে প্রদান করা হবে ।
১:৬:( ক): সংবিধান/অধ্যাদেশ/কাঠামোগত সংস্কার : বাংলাদেশেরে সংবিধানে প্রশাসনের সব স্তরে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি পুর্নবিবেচনা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে । তাছড়া সংবিধানের বাংলা ও ইংরেজি ভাষ্যে ৫৯(১) ধারায় স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত ভাষা বিভ্রাটের সংশোধন করা হবে ।
১:৬:(খ): ইউনিয়ন পরিষদ সংক্রান্ত ১৯৮৩ সালের অধ্যাদেশে জনপ্রতিনিধিদের পাবলিক সার্ভেন্ট বলে উল্লেখ করা হয়েছে । তার সংশোধনী করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পাবলিক রিপ্রেজেন্টেটিভ –এর মর্যাদা প্রদান করা হবে । তাছাড়া ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে যথাযথ উল্লেখের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সব স্তরের প্রতিনিধিদের পদ ও মর্যাদা সুনির্দিষ্ট করা হবে ।
১:৬:(গ): স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ ও আইনি কাঠামোকে সময়োপযোগী করা হবে । স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত প্রায় সব আইনই (বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ আইন) ১৯৫৯ সালের মৌলিক গণতান্ত্রিক আইনের আক্ষরিক অর্থে বাংলাদেশি সংস্করন । স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত আইনগুলোতে এখনো তাই পাকিস্তানি আমলের কড়া নিয়ন্ত্রণমূলক ধারাগুলো বিদ্যমান ।
স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ বা অ্যাক্টের বিভিন্ন ধারা-উপধারার নির্বাচিত অংশ পুন:মূল্যায়ন ও সংশোধন করে জরুরি ভিত্তিতে ইউনিয়দ পরিষদ/ পৌরষভা/ উপজেলা পরিষদকে দায়বদ্ধতা, দায়িত্ব, স্বচ্ছতা, কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্রের সঙ্গে আন্ত:সর্ম্পক, বিধিমালা তৈরি, ব্যবস্থাপনা এবং তত্ত্বাবধান ব্যবস্থায় সময়োপযোগী পরিবর্তন করা হবে । স্থানীয় সরকারের আইনগত কাঠামো এমনভাবে সাজানো হবে, যেন তা স্বচ্ছতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে ।
১:৬(ঘ) বর্তমানে বাংলাদেশে চারটি স্থানীয় সরকার আইন বিদ্যমান, যা ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা ও চেলা পরিষদের গঠন, কাজের পরিধি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করছে । তাছাড়া পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের জন্য আলাদা আইন রয়েছে । এ প্রেক্ষিতে একটি সমন্বিত স্থানীয় সরকার আইন প্রবর্তন করার উদ্যোগ নেয়া হবে, যা বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় সরকার আন্ত:সম্পর্ক এবং সব স্তরের স্থানীয় সরকারের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে সহায়তা করবে ।

১:৬:(ঙ): স্থানীয় সরকারের সব প্রতিনিধির বেতন ভাতা যুগোপযোগী করা হবে । যা জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁদের সম্মানকে অক্ষুন্ন রাখবে ।
১:৬:(চ): স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপর থেকে যে কোন মামলায় ‘শ্যোন অ্যারেষ্ট’ দেখিয়ে প্রচলিত সাময়িক বরখাস্তের বিধিটি বাতিল করা হবে । কোন মামলায় কারাবাস করলেই বরখাস্ত করা যাবে না ।কোন মামলার বিচারে সাজাপ্রাপ্ত হলেই বরখাস্ত হবে মর্মে বিধি প্রণয়ন করা হবে । এক্ষেত্রে সাংসদদের জন্য যে আইন তা বলবৎ করা হবে । নির্বাচিত সাংসদকে কেউ বরখাস্ত করতে পারে না । সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর কোন সাংসদ যদি পাগল, দেউলিয়া, রিণখেলাপি বা অন্য কোন অযোগ্যতার শিকার হোন, তাহলে তাঁর পদ শুন্য হতে পারে । কোন মামলার আসামী হয়ে কারাবাস করলেও কিছু যায় –আসে না । মামলার বিচারে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হলেও আজ কাল কছিুই যায় আসে না । আপিল বা রিভিউয়ের আবেদন দাখিলেই এই অবকাশ ।
১:৬:(ছ): স্থানীয় সরকার আইনে এনজিওসহ স্থানীয় সরকারের ভৌগলিক এখতিয়ারের মধ্যে পরিচালিত যে কোন উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করার কর্তৃত্ব প্রদান করা হবে ।
১:৬:(জ): স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার পদ্ধতি, আইন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এমনভাবে পুনর্গঠিত করা হবে যাতে স্থানীয় উন্নয়নে ব্যক্তি খাতের সম্পৃক্ততা উৎসাহিত করে । পাশাপাশি তহবিল আহরন উপযোগী প্রকল্প প্রণয়ন এবং আলোচনার (দরকষাকষি) মাধ্যমে বাইরের উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহের জন্য স্থানীয় সরকারের আইনগত ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে ।
১:৭: ইউনিয়ন পরিষদের বিচার কার্যের বিধানাবলী পর্যালোচনা করে বিষয়টি সহজসাধ্য ও গ্রহণযোগ্য করা হবে । গ্রামীণ সালিশে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যকর ভুমিকা গ্রহণ কল্পে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য এবং গ্রামীণ মাতব্বরদের সমন্বয়ে প্রতিটি গ্রামে যৌথ সালিশ কমিটি হঠন করা হবে । ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সম্পন্ন বিভিন্ন সালিশ রেকর্ড সংরক্ষণ এবং নিয়মিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সালিশ বিষয়ে রিপোর্ট দাখিলের পদ্ধতি চালু করা হবে ।
১:৮: স্থানীয় সকার ইন্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট (এলজিইডি) বাংলঅদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে অসাধারন অবদান রেখেছে । এ ডিপার্টমেন্টের কর্মকান্ডের ফলে দেড় দশকে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যপক প্রাণ সঞ্চার হয়েছে । কিন্তু তারপরও লক্ষনীয় যে, এই দপ্তরের ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়য়ন দায়িত্ব পালনে এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারগুলো ক্রমান্বয়ে দূর্বল ও নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে । স্থানীয় সরকার ইন্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট ও স্থানীয় সরকারগুলোর আন্ত:সম্পর্কের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষণ করে
যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা হবে ।
১:৯: প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করা হবে । স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা আর সুষ্ঠ অর্থ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি হিসাব রক্ষক পদ সৃষ্টি করা হবে । এবং অবকাঠামো সংক্রান্ত প্রকল্প প্রণয়ন ও কারিগরি বিষয় তদারকি করার জন্য একজন ড্রাফটম্যানের পদ সৃষ্টি করা হবে ।
১:১০: স্থানীয় সরকারগুলোর চাহিদার নিরিখে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এনআইএলজি, বার্ড এবং আরডিএ’র মতো জাতীয় প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠন ও দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হবে । স্থানীয় সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধির কার্যক্রমে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা এনজিওগুলোর উদ্যোগকেও উৎসাহিত করা হবে ।
১:১১: স্থানীয় সরকার সংগঠন বা ফোরাম শক্তিশালীকরণ – স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের একক মুখপাত্র হিসেবে কেন্দ্রিয় সরকারের সঙ্গে স্থানীয় উন্নয়ন এবং সংশ্লিষ্ট তথ্য বিনিময়, দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা (দর কষাকষি) করতে একটি শক্তিশালী জাতীয় স্থানীয় সরকার এ্যাসোসিয়েশন বা ফোরাম গঠনে সহযোগিতা করা হবে । দীর্ঘ মেয়াদে এই এ্যাসোসিয়েশন বা ফোরাম স্থানীয় সরকারগুলোর দক্ষথা বৃদ্ধির কাজে সহায়তা প্রদান করবে ।

সরকার স্থানীয় ব্যবস্হা সংস্কার
বাংলাদেশের জন্মের পর থেকেই অদ্যবধি স্হানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সব সরকারই বিভিন্ন কমিটি বা কমিশন গঠন করেছে । এসব কমিশন বহু ধরনের সুপারিশ পেশ করলেও পরিস্থিতির তেমন একটি উন্নতি হয়নি । বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সরকারগুলো কিছু কিছু সংস্কার করলেও প্রকৃত পক্ষে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ এবং কার্যক্রম ও আর্থিক দিক থেকে স্থানীয় সরকারসমুহ অতিরিক্ত এবং প্রয়োজনীয় ক্ষমতা লাভ করেনি । ফলে কেন্দ্রীয়ভাবে মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে থেকেই তাদের কাজ করতে হচ্ছে । অবশ্য স্থানীয় সরকার পুনর্গঠন এবং শক্তিশালীকরণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবলেশহীনতা আর নিরুত্তাপ ভুমিকা নতুন কিছু নয় । বাস্তব পর্যালোচনায় দেখা যায়, কোন রাজনৈতিক সরকারের আমলেই স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়নি । যতটুকু উল্লেখযোগ্য সংস্কার বা পরিবর্তন ঘটেছে, তার বেশিরভাগই হয়েছে সামরিক ও একনায়কতান্ত্রিক শাসনামলে । যদিও লোকাল গভর্ণমেন্ট স্ট্রাকচার রিভিউ কমিশন ১৯৯৩, লোকাল গভর্ণমেন্ট কমিশন ১৯৯৭ এবং কমিশন ফর ফিন্যান্সিয়াল সোর্স অব ফাইন্যান্সিং লোকার গভর্ণমেন্ট ইনস্টিটিউশন ১৯৯৯ নামে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ শাসনামলে যথাক্রমে দুটি সংস্কার কমিশন ও একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল । কিন্তু দু:খজনকভাবে তা বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার ভুমিকা, কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কার্যকর কোন পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়নি ।
বাংলাদেশের গণতন্ত্রের শিকড় শক্তিশালী করতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উন্নয়নে যে সকল কার্যকর ও অর্থপূর্ণ সংস্কার সাধন করা হবে, তার রুপরেখাটি নিম্নরুপ :
১:১ : সাংসদেরা স্থানীয় সরকার কার্যক্রমে জড়িত হওয়া ক্ষমতা বিভাজনের মৌলিক নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন । তাঁদের হস্তক্ষেপে স্থানীয় সরকারগুলো প্রকৃতপক্ষে অকেজো হয়ে পড়েছে এবং দুর্নীতির আখড়াতে পরিনত হয়েছে । স্থানীয় সরকারের কাজে সাংসদদের হস্তক্ষেপ আইনের মাধ্যমে রোধ করা হবে এবং থোক বরাদ্দ প্রথা বিলুপ্ত করা হবে । যাতে সাংসদরা নিজেদের সংসদীয় এবং বিশেষ করে আইন প্রনয়নের কাজে মনোনিবেশ করতে পারেন । ফলে যাঁরা সংসদীয় কাজ মানে আইন প্রনয়নে আগ্রহী তাঁরাই কেবল সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইবেন । তাতে সংসদে দুর্নীতিবাজদের সংখ্যা ও দৌরাত্ম কমে যাবে । এতে সংসদ নির্বাচনে কোটি কোটি টাকা খরচ করে দলের মনোনয়ন কেনা এবং দুর্নীতি করে নির্বাচনে জেতার প্রবনতাও কমে যাবে । সাংসদ হয়ে কোটি কোটি টাকা বানানোর পথ বন্ধ করে দেওয়া হবে । যাতে সংসদ নির্বাচনে দুর্নীতিবাজরা আসতে নিরুৎসাহী হয়ে পড়ে । স্থানীয় সরকারগুলো শক্তিশালী করার মাধ্যমে দুর্নীতি বহুলাংশে কমে যাবে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে আমুল পরিবর্তন আসবে । দেশ শাসনে জনগণের ভুমিকা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে ।

১:২: স্থানীয় সরকারের স্তর বিন্যাস পুনর্গঠন করা হবে । বাংলাদেশের মত স্বল্প আয়তনের একটি দেশে স্থানীয় সরকারের এতগুলো স্তর থাকা আদৌ বাস্তব সম্মত ও সংগত নয় । স্থানীয় সরকারের অধিক সংখ্যক স্তর থাকলে তাতে কার্যক্রম ও ক্ষমতার পরিধি নিয়ে সংঘাতের সৃষ্টি হতে পারে বলে বিশেষঞ্ছরা মনে করেন ।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে দুটো গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ । এই দুটি মানুষের সবচেয়ে কাছের প্রতিষ্ঠান এবং জনসংখ্যা অনুপাতে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে অধিক কার্যকর । উপজেলঅ পরিষদের ওপরে তৃতীয় স্তর হিসেবে জেলা পরিষদের কতটুকু প্রয়োজনতিা কতটুকু তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার দাবি রাখে । তবে এক্ষেত্রে জেলা পর্যায়ে একটি আঞ্চলিক পরিকল্পনা প্রনয়ন কমিশন (Regional Planning Body) গঠন করা হবে ।
১:৩: জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে কার্যকর বরাদ্দ ব্যবস্থায় বিদ্যমান তিন ধরনের যথা –সংরক্ষিত, হস্তান্তরিত এবং আইন সিদ্ধ অন্যান্য কার্যক্রমের বাস্তবসম্মত ও বস্তুনিষ্ঠ মূর্যায়ন সাধন করা হবে । সাথে সাথে স্থানীয় হাট বাজার, খেয়াঘাট প্রভৃতি ইজারা দেয়ার ক্ষমতা স্থানীয় সরকারকে ফিরিয়ে দয়া হবে । তাছাড়া কাবিখা, কাবিটা, টিআর সহ সব ধরনের সরকারি বরাদ্দ সরাসরি স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে পাঠানো বিধান চালু করা হবে । তবে একই সঙ্গে স্বচ্ছতা এ জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অডিট ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে । অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদের অঢিট নিয়মিত হয় না । অঢিট দলের সঙ্গে লেনদের’এর সর্ম্পকের কারণে কোন অডিট আপত্তি সাধারনত উপস্থাপন করা হয় না । এক্ষেত্রে বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদকে বাধ্রতামূলক ও নিয়মিত সরকারি অডিট ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে । তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে অডিট সম্মন্ন করার বদলে পরিষদ এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধির সমন্বয়ে গণ –নিরীক্ষণ কমিটির সভর সম্মুখে অডিট সমবমন্ন করা বাধ্যতামূলক করা হবে ।
১:৪: রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ এবং বরাদ্দের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা হ্রাস করার লক্ষ্যে জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে অর্থ বন্টনের ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে । পাশাপাশি একটি সুস্পষ্ট বিকেন্দ্রীকরণ নীতিমালা ঘোষণা করা হবে যা স্থানীয় সরকারের কাঠামো এবং কর্ম বিভাজনের একটি স্বচ্ছ রুপরেখা হিসেবে কাজ করবে ।
১:৫: স্থানীয় সরকারগুলোর মধ্যে কেন্দ্রীয় সম্পদ বন্টন এবং যথাযথ বরাদ্দ প্রদান নিশ্চিত করতে পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার মূল্যায়ন ও নিরীক্ষা কল্পে একটি স্থানীয় সরকার অঅর্থ কমিশন গঠন করা হবে অথবা একটি স্থানীয় সরকার কমিশনই গঠন করা হবে । যারা স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত সব দায়িত্ব পালন করবে । মূলত: এই স্থায়ী কমিশন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বর্তমান নীতি নির্ধারনী, সম্পদ বন্টন ও নানাবিধ নিয়ন্ত্রণসহ সব দায়িত্ব পালন করবে, যাতে স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক চাপমুক্ত রাখা যায় এবং স্থানীয় সরকারগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সার্বভৌমত্ব অক্ষু্ন্ন থাকে ।
১:৫: (ক): পৃথিবীর প্রায় সব গণতান্ত্রিক দেশের বাজেটের কমবেশি শতকরা ৫০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ ও খরচ করে বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় সরকার । আমাদের স্থানীয় সরকারগুলো সাকুল্যে শতকরা ৫ভাগও পায় না । এই প্রচলন বন্ধ করে দেশের বাজেটের শতকরা ৩০ ভাগেরও অধিক অংশ নিয়ন্ত্রণ ও খরচের অধিকার স্থানীয় সরকারসমুহকে প্রদান করা হবে ।
১:৬:( ক): সংবিধান/অধ্যাদেশ/কাঠামোগত সংস্কার : বাংলাদেশেরে সংবিধানে প্রশাসনের সব স্তরে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি পুর্নবিবেচনা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে । তাছড়া সংবিধানের বাংলা ও ইংরেজি ভাষ্যে ৫৯(১) ধারায় স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত ভাষা বিভ্রাটের সংশোধন করা হবে ।
১:৬:(খ): ইউনিয়ন পরিষদ সংক্রান্ত ১৯৮৩ সালের অধ্যাদেশে জনপ্রতিনিধিদের পাবলিক সার্ভেন্ট বলে উল্লেখ করা হয়েছে । তার সংশোধনী করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পাবলিক রিপ্রেজেন্টেটিভ –এর মর্যাদা প্রদান করা হবে । তাছাড়া ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে যথাযথ উল্লেখের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সব স্তরের প্রতিনিধিদের পদ ও মর্যাদা সুনির্দিষ্ট করা হবে ।
১:৬:(গ): স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ ও আইনি কাঠামোকে সময়োপযোগী করা হবে । স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত প্রায় সব আইনই (বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ আইন) ১৯৫৯ সালের মৌলিক গণতান্ত্রিক আইনের আক্ষরিক অর্থে বাংলাদেশি সংস্করন । স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত আইনগুলোতে এখনো তাই পাকিস্তানি আমলের কড়া নিয়ন্ত্রণমূলক ধারাগুলো বিদ্যমান ।
স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ বা অ্যাক্টের বিভিন্ন ধারা-উপধারার নির্বাচিত অংশ পুন:মূল্যায়ন ও সংশোধন করে জরুরি ভিত্তিতে ইউনিয়দ পরিষদ/ পৌরষভা/ উপজেলা পরিষদকে দায়বদ্ধতা, দায়িত্ব, স্বচ্ছতা, কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্রের সঙ্গে আন্ত:সর্ম্পক, বিধিমালা তৈরি, ব্যবস্থাপনা এবং তত্ত্বাবধান ব্যবস্থায় সময়োপযোগী পরিবর্তন করা হবে । স্থানীয় সরকারের আইনগত কাঠামো এমনভাবে সাজানো হবে, যেন তা স্বচ্ছতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে ।
১:৬(ঘ) বর্তমানে বাংলাদেশে চারটি স্থানীয় সরকার আইন বিদ্যমান, যা ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা ও চেলা পরিষদের গঠন, কাজের পরিধি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করছে । তাছাড়া পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের জন্য আলাদা আইন রয়েছে । এ প্রেক্ষিতে একটি সমন্বিত স্থানীয় সরকার আইন প্রবর্তন করার উদ্যোগ নেয়া হবে, যা বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় সরকার আন্ত:সম্পর্ক এবং সব স্তরের স্থানীয় সরকারের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে সহায়তা করবে ।

১:৬:(ঙ): স্থানীয় সরকারের সব প্রতিনিধির বেতন ভাতা যুগোপযোগী করা হবে । যা জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁদের সম্মানকে অক্ষুন্ন রাখবে ।
১:৬:(চ): স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপর থেকে যে কোন মামলায় ‘শ্যোন অ্যারেষ্ট’ দেখিয়ে প্রচলিত সাময়িক বরখাস্তের বিধিটি বাতিল করা হবে । কোন মামলায় কারাবাস করলেই বরখাস্ত করা যাবে না ।কোন মামলার বিচারে সাজাপ্রাপ্ত হলেই বরখাস্ত হবে মর্মে বিধি প্রণয়ন করা হবে । এক্ষেত্রে সাংসদদের জন্য যে আইন তা বলবৎ করা হবে । নির্বাচিত সাংসদকে কেউ বরখাস্ত করতে পারে না । সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর কোন সাংসদ যদি পাগল, দেউলিয়া, রিণখেলাপি বা অন্য কোন অযোগ্যতার শিকার হোন, তাহলে তাঁর পদ শুন্য হতে পারে । কোন মামলার আসামী হয়ে কারাবাস করলেও কিছু যায় –আসে না । মামলার বিচারে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হলেও আজ কাল কছিুই যায় আসে না । আপিল বা রিভিউয়ের আবেদন দাখিলেই এই অবকাশ ।
১:৬:(ছ): স্থানীয় সরকার আইনে এনজিওসহ স্থানীয় সরকারের ভৌগলিক এখতিয়ারের মধ্যে পরিচালিত যে কোন উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করার কর্তৃত্ব প্রদান করা হবে ।
১:৬:(জ): স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার পদ্ধতি, আইন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এমনভাবে পুনর্গঠিত করা হবে যাতে স্থানীয় উন্নয়নে ব্যক্তি খাতের সম্পৃক্ততা উৎসাহিত করে । পাশাপাশি তহবিল আহরন উপযোগী প্রকল্প প্রণয়ন এবং আলোচনার (দরকষাকষি) মাধ্যমে বাইরের উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহের জন্য স্থানীয় সরকারের আইনগত ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে ।
১:৭: ইউনিয়ন পরিষদের বিচার কার্যের বিধানাবলী পর্যালোচনা করে বিষয়টি সহজসাধ্য ও গ্রহণযোগ্য করা হবে । গ্রামীণ সালিশে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যকর ভুমিকা গ্রহণ কল্পে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য এবং গ্রামীণ মাতব্বরদের সমন্বয়ে প্রতিটি গ্রামে যৌথ সালিশ কমিটি হঠন করা হবে । ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সম্পন্ন বিভিন্ন সালিশ রেকর্ড সংরক্ষণ এবং নিয়মিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সালিশ বিষয়ে রিপোর্ট দাখিলের পদ্ধতি চালু করা হবে ।
১:৮: স্থানীয় সকার ইন্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট (এলজিইডি) বাংলঅদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে অসাধারন অবদান রেখেছে । এ ডিপার্টমেন্টের কর্মকান্ডের ফলে দেড় দশকে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যপক প্রাণ সঞ্চার হয়েছে । কিন্তু তারপরও লক্ষনীয় যে, এই দপ্তরের ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়য়ন দায়িত্ব পালনে এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারগুলো ক্রমান্বয়ে দূর্বল ও নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে । স্থানীয় সরকার ইন্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট ও স্থানীয় সরকারগুলোর আন্ত:সম্পর্কের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষণ করে
যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা হবে ।
১:৯: প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করা হবে । স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা আর সুষ্ঠ অর্থ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি হিসাব রক্ষক পদ সৃষ্টি করা হবে । এবং অবকাঠামো সংক্রান্ত প্রকল্প প্রণয়ন ও কারিগরি বিষয় তদারকি করার জন্য একজন ড্রাফটম্যানের পদ সৃষ্টি করা হবে ।
১:১০: স্থানীয় সরকারগুলোর চাহিদার নিরিখে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এনআইএলজি, বার্ড এবং আরডিএ’র মতো জাতীয় প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠন ও দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হবে । স্থানীয় সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধির কার্যক্রমে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা এনজিওগুলোর উদ্যোগকেও উৎসাহিত করা হবে ।
১:১১: স্থানীয় সরকার সংগঠন বা ফোরাম শক্তিশালীকরণ – স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের একক মুখপাত্র হিসেবে কেন্দ্রিয় সরকারের সঙ্গে স্থানীয় উন্নয়ন এবং সংশ্লিষ্ট তথ্য বিনিময়, দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা (দর কষাকষি) করতে একটি শক্তিশালী জাতীয় স্থানীয় সরকার এ্যাসোসিয়েশন বা ফোরাম গঠনে সহযোগিতা করা হবে । দীর্ঘ মেয়াদে এই এ্যাসোসিয়েশন বা ফোরাম স্থানীয় সরকারগুলোর দক্ষথা বৃদ্ধির কাজে সহায়তা প্রদান করবে ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


বিবেক নামে আমার এক ক্লাশমেট ছিলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.