নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অগোছালো জীবনে কিছু সুখ পেয়ে ভেবেছিলাম বুঝি সব পেয়ে গেছি!কিন্তু ভুলে গিয়েছিলাম যে জলের উপর রাতের চাঁদটা কেবল ক্ষণীকের!বহু বসন্ত এসে চলে গেছে জীবন থেকে, নিজেকে চেনার বা বোঝার সময় হয়নি!আজ কেউ একজন চোখে আঙ্গুল দিয়ে ভুল গুলো ধরিয়ে দিলো!আর না, শুধরে ফেলব

Fokroul Hasan

আমি একজন মানুষ,এই পরিচয়ে জন্ম নিয়েছি,তাছাড়া পরিচয় দেয়ার মত বিশেষ কোন গুনাবলি আমার মধ্যে নেই...!এখনো বলার মত কিছু অর্জন করতে পারিনি, আর করতে যে পারব, সে সম্ভাবনাও নেই_______

Fokroul Hasan › বিস্তারিত পোস্টঃ

জন্নাত সম্পর্কে কিছুটা ধারনা..

১০ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৮:২০

সবচেয়ে নিচুমানের জান্নাত আর প্রকৃত ঈমানের স্বাদ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেতে হলে সর্বশেষ বিজ্ঞানের নভোমণ্ডল ও মহাবিশ্ব সম্পর্কে ন্যূনতম একটি ধারণা একেবারে না থাকলেই নয়। প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক- ঈমানের সত্যিকার স্বাদ পাওয়ার জন্য এসব তথ্য জেনে কী হবে? মুজাদ্দেদ ইমান গাজ্জালি রহ: সেই মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ ইসলামি চিন্তাবিদ, যে যুগে দূরবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কার হয়নি...
'
বর্তমানে মহাকাশ বিজ্ঞানের যে বিকাশ হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে মধ্যযুগে এই বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা কোন পর্যায়ে ছিল, তা
সহজেই অনুমেয়। সেই যুগে তার একটি উপমা এখানে তুলে ধরলে আমরা একেবারে চমকে উঠব। তিনি তার সময়ের এবং পরে সব কালের ঈমানদারদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন একটি উপমার মাধ্যমে, আল্লাহ পাকের প্রতি ঈমান সুদৃঢ় করার অতি সহজ পথ। এটি হচ্ছে- মহাকাশ বা মহাবিশ্ব সম্পর্কে যে ব্যক্তির কোনো ধারণা নেই তার ঈমানের স্বাদ বা স্তর হচ্ছে একজন Impotent (নপুংসক)-এর মতো, যার কোনো অনুভূতিই নেই নর-নারীর দৈহিক সম্পর্কের মজা সম্পর্কে...
'
বাস্তব দুনিয়ায় সবচেয়ে মজাদার, অপার তৃপ্তির বা ফুর্তির কোনো কিছু থেকে থাকলে তা হচ্ছে একমাত্র এটি। তেমনি গাজ্জালি রহ:-এর মতে, প্রকৃত ঈমানের আসল স্বাদ তৃপ্তি পেতে প্রয়োজন বা সহজ পথ হচ্ছে নভোমণ্ডল। মহাবিশ্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়া।বিশাল খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে চার দিকে তাকালে মনে হবে, আরেকটু এগোলেই যেন দিগন্তে পৌঁছা যাবে অথবা ওটাকে স্পর্শ করা যাবে। আসলে কি কাজটি এত সহজ? সামনে যেতে থাকলে দিগন্তও দূরে, আরো দূরে সরতেই থাকবে...
'
এভাবে চলতে থাকলে একপর্যায়ে দেখা যাবে পৃথিবীটাকে এক পাক ঘুরে এসে সেই যাত্রা শুরুর প্রথম জায়গায়ই ফিরে আসতে। কারণ পৃথিবী গোলাকার। এর চার ভাগের তিন ভাগই পানিবেষ্টিত। স্থলভাগের মাত্র ১ শতাংশের মধ্যে জগতের অর্ধেক মানুষ (সাড়ে তিন শ’ কোটি) বাস করে (নাসার সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট অনুসন্ধান তথ্য)। পৃথিবীর স্থলভাগে সাত শ’ কোটি মানুষ ছাড়াও রয়েছে কোটি কোটি জীবজন্তু, পশুপাখি, ক্ষেত-খামার, রাস্তাঘাট, পাহাড়-পর্বত, বিশাল মরূদ্যান ও বনজঙ্গল, গাছপালা, বৃক্ষরাজি এবং আরো কত কী। আর এত সব কিছু নিয়েই আমাদের আবাসভূমি পৃথিবী, যার বিশালত্ব কল্পনা করাও অনেক দুরূহ নয় কি...
'
এত বিশাল দৈত্যকার পৃথিবীর তুলনায় নিম্নতম জান্নাতটির আকার কেমন হতে পারে আর কে পাবেন এটি? নিম্নতম জান্নাতটি যে পৃথিবীর দশ গুণ হবে এটি তিরমিজিসহ অন্যান্য হাদিস গ্রন্থে রয়েছে। সবচেয়ে নিচু স্তরের জান্নাত যদি এ রকম হয়, তাহলে উঁচু-নিচু সব স্তরের সব জান্নাতির জায়গার পরিমাণ কত বিশাল হবে সেটা কল্পনা ও চিন্তা করা সম্ভব কি?
মহাকাশ ও মহাবিশ্ব সম্পর্কিত বিজ্ঞানের সর্বশেষ খবরাখবর
আমাদের বাসভূমির তারকা সূর্যের ব্যাস আট লাখ ৭০ হাজার মাইল। এর অর্থ হলো ১০৯টি পৃথিবী সূর্যের পৃষ্ঠে সাজিয়ে রাখা যায়। এটি এত বড় যে, ১৩ লাখ পৃথিবী এর মধ্যে ভরে রাখা যায়। আমাদের সৌরগ্রহগুলো সূর্যের চতুর্দিকে চাকতির মতো জায়গা জুড়ে আছে। যার দূরত্ব সূর্য থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন কিলোমিটার। একটি তারকার বর্ণনা যদি এমন হয় তাহলে মহাবিশ্বে তারকার সংখ্যা কত? বাস্তবে বিশাল সংখ্যার তারকা নিয়ে একটি ছায়াপথ। আবার একটি ছায়াপথেই থাকতে পারে বিলিয়নস, ট্রিলিয়নস তারকা।
মহাবিশ্বে ছায়াপথ কয়টি?
দেখা যায়, এদের সংখ্যা হবে ১০০ থেকে ১২৫ বিলিয়ন। সবচেয়ে বড় তারকাগুলো সূর্যের চেয়ে পাঁচ শ’ গুণ শুধু বড় নয়, সেই সাথে এক লাখ গুণ বেশি উজ্জ্বল। ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত যে কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাকহোল তার ভর ৩০ লাখ সূর্যের সমান হয়ে থাকে। আপনি যদি প্রতি সেকেন্ডে একটি করে তারকা গণনা করেন সে ক্ষেত্রে এই হারে সব তারকা গুনতে পাঁচ হাজার বছর লাগবে। ছায়াপথগুলো মহাকাশে এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে না থেকে সঙ্ঘবদ্ধভাবে একে অপর থেকে বহু দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করে। সব ছায়াপথ এক করলে তারা মহাশূন্যের দশ লাখ ভাগের এক ভাগ স্থান দখল করবে, যার অর্থ দাঁড়ায় বাস্তবে মহাশূন্য এত বিশাল যে, বিজ্ঞানের সুপার কল্পকাহিনী পর্যন্ত এর কাছে হার মানবে।
ছায়াপথ কত বড়?
এত বড় যে, বড় ধরনের ছায়াপথের আড়াআড়ি দূরত্ব ১০ লাখ আলোকবর্ষেরও বেশি হবে [এক বছরে প্রতি সেকেন্ডে এক লাখ ৮৬ হাজার মাইল বেগে যে দূরত্ব অতিক্রম করা যায়, সেটি হলো এক আলোকবর্ষ (৯.৪ ´ ১০১০ কিলোমিটার)]
সবচেয়ে ছোট ছায়াপথের নাম ডর্ফ, যার প্রশস্ত কয়েক হাজার আলোকবর্ষের দূরত্বের। অ্যান্ড্রোমেডার ছায়াপথটির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের দূরত্ব হবে দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার আলোকবর্ষ। মজার বিষয় হচ্ছে, এই মুহূর্তে মহাবিশ্বের দিকে তাকালে দূর অতীতের মহাবিশ্বকে আমরা কিন্তু দেখতে পাবো, কেননা এই সময়ে দূর তারকা ছায়াপথ থেকে আলো এসে কেবল আমাদের কাছে পৌঁছেছে। যে কোয়সারগুলো এখন আমরা দেখছি, সেই আলো আমাদের কাছে পৌঁছতে শত শত কোটি বছর লেগে গেছে। আমাদের নিকটতম তারকা Proxima Centauri থেকে আলো আসতে লাগবে ৪.৩ বর্ষ।
সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্ব
মহাবিশ্ব প্রসারমান, এই আবিষ্কারটি বিংশ শতাব্দীর বৃহত্তম বৌদ্ধিক বিপ্লবগুলোর অন্যতম। রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে আমরা কি কখনো ভাবার সুযোগ পাই ছায়াপথগুলো আমাদের থেকে আলোর গতিতে দূরাপসরণ করছে? এই অভিক্রিয়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ঘটনার উপমার মাধ্যমে সহজেই উপলব্ধি করা যাবে। রাস্তায় চলন্ত একটি গাড়ি যখন কাছে এগিয়ে আসে তখন এর ইঞ্জিনের শব্দের তীক্ষ্মতা তীব্রতর হয় এবং গাড়িটি যখন কাছে এসে দূরে অপসারণ করে, তখন শব্দের তীক্ষ্মতা নিম্নতর হয়ে থাকে। আলোকের তরঙ্গের আচরণও একই রকম। আলোকের স্পন্দাঙ্ক খুব বেশি- সেকেন্ডে চার থেকে সাত লাখ মিলিয়ন। এর রয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্পন্দাঙ্ক। আমাদের দৃষ্টিতে যা বিভিন্ন বর্ণ হিসেবে প্রতিভাত হয় সেগুলো হলো- আলোকের বিভিন্ন স্পন্দাঙ্ক। সর্বনিম্ন স্পন্দাঙ্ক দেখা যায় বর্ণালির লালের দিকে। তারকা যদি আমাদের দিকে আসে তাহলে প্রতি সেকেন্ডে আমরা যে স্পন্দাঙ্ক পাবো তা বেড়ে যাবে, যেমনটি শব্দ শ্রোতার দিকে এগিয়ে আসার সময় ঘটে থাকে। অনুরূপভাবে তারকা যদি আমাদের কাছ থেকে দূরে অপসারমান হয়, সে ক্ষেত্রে আমাদের কাছে যে তরঙ্গগুলো পৌঁছাচ্ছে তার স্পন্দাঙ্ক হবে ক্ষুদ্রতর। তারকার আলোর স্পন্দাঙ্ক মেপে এর লাল বিচ্যুতি হলে স্পষ্টত বোঝা যাবে তারকাগুলো আমাদের কাছ থেকে দূরাপসরণ করছে।
সূরা আয্যারিয়ার ৪৭ আয়াতে নভোমণ্ডল প্রসারিত হচ্ছে উল্লিখিত হয়েছে। ‘নভোমণ্ডল নির্মাণ করেছি আমার ক্ষমতাবলে এবং আমি অবশ্যই মহাসম্প্রসারণকারী।’ এডউইন হাবল ১৯৯৯ সালে প্রকাশ করেন যে, মহাবিশ্ব স্থিতাবস্থায় নেই। যে ছায়াপথটি যত দূরে অবস্থিত তার দূরাপসারণের গতিও তত বেশি। প্রতিনিয়ত মহাবিশ্ব কত বিস্তৃতি লাভ করছে! আবার যেহেতু সব ছায়াপথের ঝঢ়ধপব-এর দশ লাখ ভাগের মাত্র এক ভাগ জায়গা দখল করে আছে, সে ক্ষেত্রে ১০ পৃথিবীর সমান নিম্নস্তরের জান্নাত হওয়াটা একেবারে সাধারণ ঘটনা। ‘নিশ্চয়ই এর পেছনে রয়েছে এক অকল্পনীয় মহাজ্ঞানী সত্তার এক রহস্যময় অভিপ্রেত।

লেখক : সাবেক পদার্থবিজ্ঞান শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.