![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"হাসি" হচ্ছে সম্পদ, হাসি হচ্ছে বিপদ। হাসি লাস্যময়ী, হাসি রহস্যময়ী, হাসি ঐতিহ্যময়ী। সকালের হাসি মিষ্টি, বিকেলের হাসি ভুবনজয়ী, আবার রাতের হাসি ভয়ংকর। হাসিতে মহাপুরুষরাও কতল হয়েছে, হাসিতে নগন্যরাও মহাপুরুষ হয়েছে। হাসিতে মানুষ পাগল হয়, আবার পাগল মানুষ হয়। হাসতে হাসতে কাঁদা, কাঁদতে কাঁদতে হাসা। হাসি তো হাসি ই। এক সময় গ্রীসের কিছু হ্যামলেট এ পাবলিকলি মেয়েদের হাসি নিষিদ্ধ ছিলো, আবার কিং হারকিউলিসের সামনে হাসি নিয়ে কথা বলা ছিলো রাজার অধ্যাদেশ। ট্রয় নগরী ধ্বংসের অন্যতম রুপকার ছিল হেলেনের হাসি, আবার কিং এপোলোর সেনাপতি মৃত্যুদণ্ড থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন ফাঁসির মঞ্চে হাসার জন্য। হাসির ইতিহাস কোন ইতিহাসবিদের রচনা নয়, বরং সাধারণ মানুষের আজন্ম বৈশিষ্ট্য।
যারা খিল খিলিয়ে হাসে, তারা থাকে আয়নার মত পরিষ্কার। তাদের মনে কোন হিডেন ফোল্ডার থাকে না। হাসির সাথে আনমনে বের হয়ে আসে মনের সব সত্য মিথ্যা। তারা কখনোই নিজেকে আড়াল করতে পারে না। এরা হেসে বাচে, অন্যকে বাচায়।
যারা মিটমিটিয়ে হাসে, তারা হচ্ছে লজ্জার সমর্থক শব্দ। লজ্জা এদের সহজাত শত্রু। মাঝে মাঝে সাইলেন্ট কিলার। এরা একপাশে মানবধর্মী, আরেকপাশে গ্রেট হারামী। এরা একহাতে কষ্ট চুষে নিয়ে অন্য হাত দিয়ে মুক্ত হস্তে দান করে। মাগুর মাছের মত হয় এদের চরিত্র।
যারা ভাইব্রেশন স্টাইলে হাসে, অর্থাৎ শরীর দোলে কিন্তু আওয়াজ খোলে না, তারা কঠিন বাস্তবতা কে চরমভাবে দমন করে সবকিছু মেনে নিতে পারে। এরা একপ্রকার বিড়ালের হাড্ডি। শত ঝড় বন্যায় এরা গাছের মত দাঁড়িয়ে থেকে গ্রাম বাচায়, পরিবার বাচায়। একসময় শক্তিহীন ভাবে নুয়ে পড়ে। তারপরও ফুলফল দিয়ে যায়। ভাঙ্গেও না মচকায়ও না। ভাগ্য এদের শত্রু, ভাগ্যই এদের নিয়ন্ত্রক।
যারা হাসে কম তাদের আত্মতৃপ্তি বেশী। এরাও একপ্রকার সাইলেন্ট কিলার। মানুষের সুখদুঃখে এদের টনক নড়ে না।
পৃথিবী গোল্লায় যাক, এদের দুনিয়ায় অন্যকোন ইস্যুর ভাত নেই। আত্মকেন্দ্রিকতার চরম নিদর্শন হচ্ছে এই শ্রেনীর উজবুক প্রানীরা। এদের টেনশন কম। কোনরকম বেচে থাকলেই এরা খুশি থাকে। হাসি এদের কাছে কামুকতার মত। আসলে চলে, না আসলে মনে থাকে না।
যাদের হাসি কারনবশত বন্ধ হয়ে যায় তারা হয়ে সবচেয়ে মুল্যবান ধাতুর ছায়ার মত। এদের মুল্যায়ন হয় আলোতে। আলো নিভলে এরাও অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে। কল্পনা জগতের অতীতরাই কেবল এদের অরিজিনাল হাসি দেখতে পারে। মনুষ্য চোখের শক্তি নেই সেই হাসির পাঠোদ্ধার করা। এরা কালেভদ্রে হেসে নিজের অবস্থার জানান দিয়ে দেয় মাত্র। নয়ত হাসিতে তাদের বিশেষ কোন ইন্টারেস্ট নেই। দৈব কারনে এদের ইন্টারেস্ট নষ্ট হয়ে যায়। কাউকে বলবে না। কারন তারা হাসতে ভয় পায়।
যারা বেশী হাসে, তারা দ্বৈত চরিত্রে চরিত্রবান। এরা হয় চরম বোকা অথবা চরম চালাক। এদের হাসির মুল্য কম। মানুষ হিসেবেও এরা কম মুল্য পায়। এরা বিনা কারনে হাসে, আবার কখনো কারন তৈরী করার জন্য হাসে। মানুষের কাছে এদের দাম কম থাকে, আবার এরাও মানুষকে কম দাম দেয়। নিজেকে পুষিয়ে নিতে এরা চরম পারদর্শী। এরা পরিস্থিতিতে পড়ে হাসে, আবার পরিস্থিতি তৈরি করে হাসে। হাসতে এদের হবেই। হাসিই এদের মৌলিক অধিকার।
মাদার তেরেসা বলেছিলেন "peace begins with smile"... এই কথায় সবাই লজিক খুজে পাবে না। তবে এটা ঠিক, পৃথিবীতে হাসিই হচ্ছে একমাত্র বাকা জিনিস যা সবকিছুকে সোজা রাখে। তাই হাসুন। সকাল বেলা পার্কে জোড় করে হাসা নয়, বরং মন থেকে হাসা। চীনে হাসির স্কুল আছে। ডিস্টেন্স লার্নিং এই স্কুল থেকেই শুরু হোক।
©somewhere in net ltd.