![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারী। বাঙালীর মাতৃভাষা দিবস।পৃথিবীতে এই একটিই ভাষা একটিই জাতি যে ভাষার জন্য আর কেউ প্রাণ দেয় নি। বাংলা ভাষার মাহাত্ম টা তো এখানেই। কিন্তু বাংলার তরুণ প্রজন্ম কি আদৌ সেটা বুঝে?
আমাদের দেশের মানুষ এখন সর্বক্ষেত্রেই ইংরেজী ভাষা ছাড়া চলেন না। সাধারণত এটা তরুণ প্রজন্মের মধ্যেই বেশী দেখা যায়।যেখানে ইংরেজীতে কথা বলাটা একটা বিশেষ যোগ্যতা আর ইংরেজী না জানলে তাকে "ক্ষ্যাঁত" বলাটা এখন একটা অতি স্বাভাবিক ব্যাপার সেখানে এই বাংলাভাষার জন্য প্রাণ দিয়ে শহীদরা কি প্রতিদান পেলেন? নাহ। আমরা আজও তাদের সম্মান করাটা শিখি নি।
আমাদের দেশের অনেক ইউনিভার্সিটিতেই লেকচার দেয়া হ্য় ইংরেজীতে।যেসব ছাত্র-ছাত্রীর মাতৃভাষা বাংলা তারা লেকচার ভাল বুঝবে ইংরেজীতে না বাংলায়? আর এতে করে শিক্ষার গুণগত মান কতটুকু বজায় থাকছে ?
আর স্কুল-কলেজগুলোতে যেভাবে ইংরেজী গ্রামার এর উপর গুরুত্ব দেয়া হয় তাতে মনে হয় এটাই বুঝি আমাদের সম্বল,এটা ছাড়া বুঝি আমাদের হবে না।এই একটা জিনিস নিয়ে কেন আমাদের দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের গলদঘর্ম হতে হয়? কত ছাত্র-ছাত্রী এর ভয়ে লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যায়। ইংরেজীতে পন্ডিত হওয়াটা তো আমাদের জন্য জরুরী না। ইংরেজী বুঝলেই তো হল,,এটাকে কাজে লাগাতে বুঝি এর গুষ্টি উদ্ধার করে ছাড়তে হয়? এর গ্রামার নিয়ে কেন এত মাতামাতি? কৈ আমরা যারা বাংলাভাষাভাষি তারা তো এখনো ভুল বাংলা বলি,,,তাই বলে তো আমাদের বাংলা পড়তে বা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না।
চীন,জাপানের মত উন্নত দেশগুলো যদি এখনো পর্যন্ত ইংরেজীকে থোড়াই কেয়ার করে এগিয়ে যেতে পারে তাহলে আমরা কেন পারি না?
এ দেশের কোন মানুষ একটু ইংরেজী শিখলেই যেভাবে ইংরেজীতে কথা বলতে থাকেন মনে হয় যেন উনি কোন কারণে বাংলাভাষার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন, এখন শপথ নিয়েছেন আর বাংলায় বলবেন না।আর যত্তসব ভুলভাল ইংরেজী নির্দ্বিধায় বলতে থাকেন তবুও লজ্জা পান না।পাবেনই বা কেন ইংরেজীতে কথা বলাটাও যে এখন একটা স্পেশাল যোগ্যতা। বিয়ে-সাধি করতে গেলেও নাকি এখন ভাল ইংরেজী জানা লাগে।কয়েকদিন পর তো এ কাজে ভাল IELTS score থাকা লাগবে।কয়েকটা ইংরেজী শব্দ না হয় কথার মাঝখানে বলা যায় ( এমনিতেও বাংলা ভাষা টা একটা মিশ্র ভাষা....যেমন: চেয়ার কে আমরা চেয়ার বলি,আরামকেদারা বলি না,এটা এখন বাংলা শব্দ হিসেবেই ধরি আমরা ),,, কিন্তু তাই বলে নগদে শুধু ইংরেজী বলতে থাকলে সেটা অবশ্যই আপত্তিজনক।আর বড়লোকের ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা যেভাবে ইংরেজী বলে তদের শেকড় যে কোত্থেকে এসেছে কে জানে?এদের পিতা-মাতা রাই বা কি ভূমিকা পালন করছেন এখানে?
যেদেশে উঠতে বসতে দু'চারটা হলেও ইংরেজী বলা লাগে সে দেশে মহান একুশে ফেব্রুয়ারীর কি গুরুত্ব আছে? কেন মানুষ এ দিন টা উদযাপন করে? ২১ শে ফেব্রুয়ারী তে মানুষ শহীদ মিনারে ফুল দেয় আর ২২ শে ফেব্রুয়ারী থেকে উঠতে বসতে আবার সেই ইংরেজী বলা শুরু হয়ে যায়। এতে লাভটা কি? এই ২১ শে ফেব্রুয়ারী উদযাপন করাও কি তরুণ-তরুণীদের একটা ফ্যাশন? এটাও কি কিছু লোকের ব্যবসায়িক উদ্দোশ্য সাধনের ইস্যু? মহান ভাষা সৈনিকেরা কেন এ ভাষার জন্য প্রাণ দিলেন?
হ্যা...ইংরেজী জানাটাও আবশ্যক তবে সেটা এভাবে বিলানোর জন্য না। ইংরেজী বুঝা ও কিছু বলতে জানা টা ( খুব যে ভাল জানতে হবে তা না ) ফলদায়ক তবে তাই বলে এটাকে স্পেশাল যোগ্যতা ভাবা ও যত্রতত্র এর ব্যবহার ঠিক না।
আমার এক বন্ধু ইংরেজী সাহিত্যের ছাত্র। আমি তাকে এজন্য খারাপ বলব না। কারণ ইংরেজী সাহিত্য পড়াটা খারাপ না।সাহিত্যের ছাত্র-ছাত্রীদের সব ভাষার সাহিত্যই পড়া উচিৎ তা না হলে তারা অনেক কিছুই শিখবে না।আমার এই বন্ধু আমাকে একটা ঘটনা বলেছিল।
একবার তার ভার্সিটির একটা ইংরেজী সাহিত্যের ক্লাসে নাকি তাদের রেজিস্টার স্যার এসেছিলেন।উনি এসে ছাত্র-ছাত্রীদের কে একটা ইংরেজী শব্দ জিগাস করেছিলেন।তো কেউ তার উত্তর দিতে না পারায় উনি বললেন যে, " তোমরা ইংরেজী সাহিত্যের ছাত্র-ছাত্রী হয়ে একটা ইংরেজী শব্দের বাংলা বলতে জান না !!! তোমরা কিসের ইংরেজীর ছাত্র ?"
এ কথার প্রতি উত্তরে এক ছাত্র দাড়িয়ে বলল---" SIR, WE ARE NOT THE SPECIALISTS OF ENGLISH LANGUAGE,,, WE ARE ONLY THE USERS OF ENGLISH."
©somewhere in net ltd.