নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

#Reader #Writer #Secular #Humanist #Democreatic #FilmWatcher #Socialist & Trying To be A Filmmaker.

জিপসি রুদ্র

লিখি, ছবি তুলি আর সিনেমা বানাই ।

জিপসি রুদ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাকশাল বনাম বাঙলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলসমূহ: একটি যুক্তিপূর্ণ তুলনামূলক বিশ্লেষণ।

০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:২৪

"গণতন্ত্র মানে নির্বাচন আর দলবদল নয়—গণতন্ত্র মানে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা।"
এই চেতনাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে গঠন করেন "বাকশাল" বা বাঙলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো কি সত্যিই জনগণের রাষ্ট্র গঠন করছে, নাকি ক্ষমতা ভাগাভাগির মধ্য দিয়ে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চালাচ্ছে?
এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতেই আজ দরকার বাকশালের তুলনামূলক বিশ্লেষণ, যেন বোঝা যায় বাকশাল না কায়েম না হওয়াতে বাঙলাদেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়াইছে।

১. বাঙলাদেশ আওয়ামী লীগ (বর্তমান)
ইতিবাচক:
বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরি দল হিসেবে কিছু রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়েছে
বড় বড় অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে (পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু টানেল কর্নফুলিতে)

নেতিবাচক:
দ্রুব সত্য হইতাছে পারিবারিক নেটওয়ার্ক নির্ভর দল হয়ে উঠেছে। তৃণমূল থেকে কৃষক-শ্রমিক বাদ, ঢুকে গেছে ব্যবসায়ী-প্রভাবশালী।
প্রশাসনের উপরে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ; গণতন্ত্রের ভিত নড়বড়ে করে দিয়েছে। সমাজতন্ত্র নয়, পুঁজিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে৷

বিশ্লেষণ:
আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর দলের নাম বয়ে বেড়ালেও তার রাষ্ট্রচিন্তা 'বাকশাল'কে ধারণ করেনি। বাকশালের কৃষক-শ্রমিক কেন্দ্রিক সমাজবাদ থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে, ফলত আজকের আওয়ামী লীগ অনেকাংশে আত্মবিরোধী দলে পরিণত হইছে ।

২. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
ইতিবাচক:
ক্ষমতায় থেকে কিছু অবকাঠামো উন্নয়ন করেছিল (৯১–৯৬, ২০০১–২০০৬) যা নেহায়ত এতোই কম যা আলোচনার যোগ্যতা রাখেনা।

নেতিবাচক:
মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের পুনর্বাসনকারী দল (জামায়াতের রাজনৈতিক অংশীদার)
ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতির রেকর্ড ভাঙে। তাদের শাসনামলে দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন।
রাষ্ট্রচিন্তা, সমাজতন্ত্র বা উৎপাদনমুখী দর্শনের কোনো স্পষ্ট নীতি নেই। সেনা-সমর্থিত রাজনীতির সুবিধাভোগী এই বিএনপি।

বিশ্লেষণ:
বিএনপি কখনোই জনগণের রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করেনি। এটা ছিল "স্বার্থরক্ষা ও ক্ষমতার বানিজ্য"–র রাজনীতি। বাকশালের মত উৎপাদন-ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের ন্যূনতম ধারণাও তাদের নেই।

৩. জামায়াতে ইসলামী
সম্পূর্ণ নেতিবাচক:
মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও পাকিস্তানি ভাবাদর্শের ধারক।
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে রাষ্ট্রকে মধ্যযুগে টেনে নিতে চায়। নারী, ধর্মনিরপেক্ষতা, সংস্কৃতিবিরোধী রাজনীতি করে

বিশ্লেষণ:
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি রাষ্ট্রের অগ্রগতির অন্তরায়।
বাকশাল ছিল ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের প্রতীক, যেখানে ধর্ম ব্যক্তিগত এবং রাষ্ট্র সবার।

৪. বামপন্থী দলসমূহ (বাসদ, সিপিবি, ইত্যাদি)
ইতিবাচক:
শ্রমিক ও গরিবপন্থী আদর্শ ধারণ করে। ধর্মনিরপেক্ষ, শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থার স্বপ্ন দেখে।

নেতিবাচক:
তাত্ত্বিক রাজনীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
বাস্তবিক রাজনীতিতে জনগণের সংযোগ নেই।
বিভক্ত, ক্ষুদ্র এবং প্রভাবহীন।

বিশ্লেষণ:
বাকশাল ছিল তাত্ত্বিক সমাজতন্ত্রের নয়; বাস্তব সমাজতন্ত্রের প্রকল্প, যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্রই হতো গণমানুষের অস্ত্র। বাম দলগুলো এই গণসংযোগ ও রাষ্ট্রদর্শনের বাস্তবভিত্তি দিতে পারেনি।

এখনই সময় ফিরিয়ে আনার "বাকশাল ভাবনা"
আজকের বাস্তবতায় বাঙলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে একটা বড় সন্ধিক্ষণে। রাজনৈতিক দলগুলো রূপ নিয়েছে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে। গণতন্ত্র হয়েছে কাগুজে শব্দ। কৃষক মরছে, শ্রমিক হারাচ্ছে অধিকার। উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু মানুষ হচ্ছে গৃহহীন ও মূল্যবিচ্যুত।
- এই প্রেক্ষাপটে শুধু বাকশালই আমাদের দিতে পারে: একটি শৃঙ্খলিত, পরিকল্পিত, আদর্শিক রাষ্ট্র যেখানে জনগণ হবে নীতি নির্ধারণের কেন্দ্রবিন্দু। ধর্ম নয়, মানুষের অধিকার হবে রাজনীতির ভিত্তি। দলীয় আনুগত্য নয়, রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকবে নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

আজ যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন, বাকশাল ব্যর্থ নয়: বরং বাঙলাদেশ হতো একটি সমাজতান্ত্রিক উন্নয়নমুখী রাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত। আজ যারা বাকশালকে গাল দেয়, তারা হয় ইতিহাস জানে না, না হয় তারাই ছিল চক্রান্তকারী চক্রের অংশ।

আমি বিশ্বাস করি, বাকশাল এক আদর্শ রাষ্ট্রব্যবস্থার নীলনকশা, যা এখনো সময়োচিত, প্রাসঙ্গিক এবং অতীব জরুরি।

জয় বাঙলা। জয় বাকশাল। জয় বঙ্গবন্ধু।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ১:১৭

এইচ এন নার্গিস বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন ।

২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ ভোর ৬:৫৩

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: খাই খাই লোক দিয়ে নাই নাই ছাড়া ভালো কিছু হয় না। জয় বাংলা এখন জয় বাংলা হয়ে গেল।

৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ ভোর ৬:৫৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: জয় বাংলা নামে একটা বাকধারা তৈরী হচ্ছে যার অর্থ এক্কেবারে শেষ হয়ে যাওয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.