নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

-বাঘে হরিণ নিয়ে খেললো কিছুক্ষণ!-

২২ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:১৫

প্রতিটি মানুষেরই পছন্দ-অপছন্দ রয়েছে। যেমন, কেউ খাবার প্রতি, কেউবা আবার খাওয়ানোর প্রতি। কেউ দেখার প্রতি কেউবা আবার দেখানোর। কেউ খেলার প্রতি কেউবা আবার খেলানোর। আমিও সেই বরাবরই খেলা অপ্রিয় মানুষ। তবে সব খেলা নয়। কিন্তু যখন দেখি সেই অপছন্দীয় খেলার মাঝেও কিছু নান্দনিক শৈল্পিকতা দৃশ্যমান থাকে, তাহলে তা দেখতেও ভুল করি না।

আমি মাঝে মাঝে টিভি চ্যানেল দেখি, যখন মনটা ভালো থাকে না। আর যখন টিভি দেখতে বসি ঠিক তখন আমার দুটি চ্যানেল খুবই প্রিয়। একটি ডিসকভারী আর একটি এ্যানিমেল প্লানেট। মনের সাথে যখন যুদ্ধ করে শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে ঠিক তখনি বন্যপ্রাণীদের শারীরিক শক্তির চেতনা দেখে নিজের ভেতরে সাহস সঞ্চার করার উপায় খুঁজি। সেখানেও রয়েছে প্রতিনিয়ত সম-অসম শক্তির লড়াই। যেমন, {সাপ বনাম গকুল সাপ/বেজি, (যদিও এই দুইয়ের মাঝে সব সময় সম-চিরপ্রতিদন্ধিতা হয়ে থাকে, যে খেলায় রয়েছে নান্দনিক শৈল্পিকতা। কখন যে কে হেরে যায় তা বলা যায় না।) জলহস্তি বনাম কুমির, কুমির বনাম এনাগন্ডা} ইত্যাদি খেলা হয়। ঠিক তেমনি রয়েছে {বাঘ বনাম হরিণ, হায়ানা বনাম সিংহ অথবা সিংহ বনাম মহিষ} ইত্যাদি। আর এসব সম-অসম খেলাগুলো বেশ আয়েশ করে দেখা হয়। কারণ এসব খেলায় নিশ্চিন্তে বলে দেয়া যায় কে জিতবে আর কে হারবে। আর যখন দেখা যায় বাঘ কিংবা সিংহ’রাই জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে উপনীত ঠিক তখনি আবার মনটা ভীষণ খারাপ লাগতে শুরু করে। বেচারা দুর্বল যত হরিণ আর মহিষগুলোর করুণ পরিণতির জন্য!

অনেকদিন যাবৎ টিভি চ্যানেল দেখা হচ্ছিল না আমার। কিন্তু কি ভেবে যে গত ১৮ ও ২১ তারিখ টিভি দেখতে বসছিলাম, আর টিভি চ্যানেল খুলতেই চোখে পড়লো আবার সেই সম-অসম শক্তির লড়াই। অর্থাৎ বাঘ বনাম হরিণের দৌঁড়াদৌঁড়ি! কিন্তু এ’কি!? যেখানে সব সময় বাঘ আর হরিণের দূরত্ব থাকে মাইলকে মাইল, সেখানে কিনা ১১টি হরিণকে; ১১টি বাঘের সামনে কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হয়েছিলো (৫০+৫০ ওভার) ১০০ মিটারের মধ্যে! তাও আবার এতোদিনের ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর বাঘগুলোর সামনে! এমনটি আমি কখনো চিন্তাও করিনি যে ১১টি ক্ষুধার্ত বাঘের সামনে ১১টি হরিণকে এভাবে ছেড়ে দেয়া অবস্থায় দেখতে পাবো! লড়াই দেখেই বুঝতে পারছিলাম এটা অন্যায় করা হয়েছে ১১টি হরিণের ওপর! তাও আবার পুরোনো ৯টি বাঘের সাথে নতুন ২টি শক্তিশালী বাঘকেও জুড়ে দেয়া হয়েছিলো! আমার কাছে ব্যাপারটি বেশি সুবিধাজনক মনে হয়নি! লড়াইয়ের শুরুতেই বুঝতে পেরেছিলাম এই অসম প্রতিদন্ধিতায় হরিণগুলো বেশিক্ষণ লড়তে (দৌঁড়াদৌঁড়ি করতে) পারবে না!!!

আমার চিন্তায় ঐ বাঘগুলোর কি এসে যায় তাতে?! চিন্তার এক মূহুর্তেই চোখের পলক মেরে চোখের পাতা খুলতেই চোখ কপালে উঠার যোগান হলো। মূহুর্তেই একটি তরতাজা হরিণকে নতুন বাঘটি সাবাড় করে ফেললো!! যদিও পুরোনো বাঘগুলোও খুব ক্ষুধার্ত ছিলো, তারপরেও অনেক সময় ধরে পুরোনো বাঘগুলো কিছুটা নমনীয়তা দেখিয়েছে হরিণগুলোকে শিকার করতে! তাতে কি!? নতুন বাঘগুলো তো আর এমন পরিবেশে কখনো হরিণ শিকার করেনি তাই তাদের শিকার ধরতে দেরি করা একদম সহ্য হচ্ছিল না! তাই তাদের মাঝে শিকারে নমনীয়তাও ছিলো একেবারে শুন্যের কোটায়। এমন অবস্থা দেখে দুর্বল হরিণগুলো বাঁচার আকুতি নিয়ে দিক-বিদিক ছোটাছোটি করতে লাগলো। আতঙ্কে হরিণগুলো যেনো আধামরা হয়ে গেলো, ভালোভাবেও দৌঁড়াতে পারছিলো না! মাত্র ৪৫ মিটারের মধ্যে সবাইকে সাবাড় করে দিলো বাঘগুলো! তারমধ্যে নতুন একটি বাঘই খেয়েছে ৬টি হরিণ! আর অন্য দুটি বাঘ খেয়েছে বাকি ৪টি হরিণ! একটি হরিণ কোনো রকমে গাছের (ষ্ট্যাম্পের) আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকতে সক্ষম হয়! হা হা হা।

কিন্তু এখানে তো মাত্র তিনটি বাঘের ক্ষুদা নিবারণ হলো। বাকি ৮টি বাঘেরও তো কিছু চাই। ক্ষুধার্ত বাকি বাঘগুলো ঐসকল হরিণদের হাড়-গোড় খাওয়ার জন্য অপেক্ষা শুরু করলো। এবার মনে হলো, বাঘগুলো হরিণগুলোর অবশিষ্টও চিহৃ রাখতে রাজি নয়। নমনীয়তা দেখিয়ে বরং ক্ষুধাকেই আলিঙ্গন করা হলো। ভীষণ চিন্তার বিষয়। এবার লড়াইয়ের মাঠে নেমে দেখতে পেলো হরিণগুলো কঙ্কাল বেশ নড়াচড়া করছে। বাঘগুলো ঠিক পেয়ে গেলো এখন ক্ষুধার যোগান দেয়া যাবে। শুরু হলো লড়াই বাঘ বনাম হরিণের কঙ্কাল! হরিণের কঙ্কালগুলো লড়াইয়ের মাঠে নেমে ৩৮ মিটার পথও ওভার করতে পারেনি, এর ভিতরেই তাদের হাড়-গোড় সাবাড় করে দিলো বাংলার রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এই অবস্থা দেখে মনটাকে কিছুতেই বুঝাতে পারলাম না যে এই অন্যায়টা করা একদম ঠিক হয়নি বাঘগুলোর! পুরো ১০০ মিটারে দৌঁড়ে-দৌঁড়ে ছেড়ে-ছেড়ে সাবাড় করতে পারতো!

বিষন্ন মন যেনো কিছুতেই ঘুমাতে চাইছেনা। তারপরেও ঘুমাইতে হবে। আবার উঠতে হবে। তাই টিভি চ্যানেল বন্ধ করে ঘুমাইতে গেলাম। মন খারাপ অবস্থায় যখন ঘুমাইতে গেলাম তখন ভাবলাম ঐ হরিণগুলো তো আবার পূর্ণজম্ম নিবে, তখন কি বাঘগুলোর ওপর প্রতিশোধ নিতে পারবে তো?!!!

বিশেষ মন্তব্য : মন খারাপ হলে তা বিভিন্ন কাজের উপর প্রভাব ফেলে। আমারও তাই হয়েছে। ভোর রাতে আজানের পূর্বে মাত্র ৯ মিনিট সময় পেয়েছি রোজার খাওয়া সম্পন্ন করার। সময় সল্পতার কারণে পেট ভরে খাওয়ার সময় আর পেলাম কই! এখন ক্ষুধার যন্ত্রণায় পেটটা খা-খা করছে! মনে হচ্ছে আমারও আস্ত একটা হরিণ দরকার!!! হা হা হা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭

রুপম হাছান বলেছেন: লিখাটি কাউকে আঘাত কিংবা খুশি করার জন্য লিখা হয়নি। লিখাটির চরিত্র যদি কারো চরিত্রের সাথে মিলে যায় সেটা কাকতালীয়। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং সুস্থ বিনোদন উপভোগ করুন। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.