নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক চারিত্রিক সনদপত্র প্রাপ্ত

হাবিব রহমানন

সকল প্রকার চলচ্চিত্র দেখতে ও চলচ্চিত্র নিয়ে লেখতে ভালোবাসি। তাছাড়া কবিতা পড়তে ভালো লাগে, মাঝেমাঝে নিজেও দু-এক লাইন লেখার চেষ্টা করি। fb/bd.r.habib

হাবিব রহমানন › বিস্তারিত পোস্টঃ

“বেলাশেষে (২০১৫)” অ্যা পিউর ফ্যামেলী ড্রামা মুভি ও সম্পর্কের নতুন সংজ্ঞা!!

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৫

বেলাশেষে (২০১৫)
জনরাঃ ফ্যামেলি ড্রামা
কাস্টিংঃ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, অপরাজিতা আঢ্য, মনামি ঘোষ, খরাজ মুখোপাধ্যায়, সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
স্ক্রিনপ্লেঃ নন্দিতা রায়
সঙ্গীতঃ অনুপম রয় ও অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়
পরিচালকঃ নন্দিতা রায়, শিবপ্রসাদ মুখার্জী
জীবনের পড়ন্ত বেলায় পরিবারের কর্তা বিশ্বনাথ মজুমদার (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) ঠিক করেন তার ৪৯ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানবেন। পূজার আনন্দঘন মুহুর্তে পরিবারের সবাইকে জড়ো করে জানান যে স্ত্রী আরতির (স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত) সাথে তার বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি টানতে চান এবং তিনি আইনি সব ব্যাবস্থা করে রেখেছেন। ঝড় ওঠে পরিবারের বাকি সদস্যের মধ্যে। অতঃপর আইনি নোটিশে জানায় ১৫ দিন একসঙ্গে থাকতে হবে বিশ্বনাথ মজুমদার ও আরতিকে। এই সময়ের মধ্যেই সিনেমার মুল গল্প।

বেলাশেষে, প্রকৃত অর্থে দাড়ায় দিনের শেষ সময়টুকুতে। আর এই সিনেমায় রুপক অর্থে বোঝানো হয়েছে জীবনের শেষ মূহূর্তের সময় গুলোকে। ৪৯ বছর দাম্পত্য জীবন পার করার পরও বিশ্বনাথ মজুমদারের ভিতরে হতাশা ,পাওয়া-না পাওয়া , একাকীত্ব কাজ করছিলো। সম্পর্কের কোন আবেদন খোঁজে পাচ্ছিলনা সে। কিন্তু ১৫ দিন সময় তারা নিজেদের কে নতুন ভাবে আবিষ্কার করেন। খোঁজে পায় সম্পর্কের নতুন সংজ্ঞা।
সিনেমায় আদালতে বিশ্বনাথ মজুমদার ও বিচারপতির মধ্যকার কথোপকথনের কিছু অংশ শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম নাঃ

-বিশ্বনাথ বাবু,আপনারা একসাথে সহবাস করেন? (শারীরিক সম্পর্ক নয়)
-হ্যা, এক ছাদের তলে কিন্তু এক ঘরে না।
-শেষ কবে একসাথে রেস্তোরায় খেতে গেছেন?
-মনে পরে না।
-শেষ কবে একসাথে প্রাতঃভ্রমনে বের হয়েছেন? কখনো সূর্যোদয় দেখেছেন একসাথে?
-আমি তো মর্নিং ওয়াক করি কিন্তু এক সাথে না।
-ইদানিং কোথাও বেড়াতে গেছেন?
-না।
-রোজ স্পর্শ করেন আপনার স্ত্রীকে? যৌন স্পর্শ নয়, সিম্পল টাচ? একটা হাতে আরেকটি হাত রাখা।
-না
-একসাথে ফুসকা খান?
-না, হয়ে ওঠে নি।

এই কথোপকথনটি গভীরভাবে অনুধাবন করলেই সিনেমাটির কনসেপ্ট সম্পর্কে ধারনা করা যায়।
সিনেমাটির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে বিভিন্ন সাংসারিক টানাপোড়েন, একে অপর কে নতুন করে আবিস্কার করা, মমতা, বিশ্বাস, অভিমান, ভালবাসা, নির্ভরশীলতা ইত্যাদি বিষয় গুলো।
আমার দৃষ্টিতে প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর একসাথে এই মুভিটি দেখা উচিত, নিশ্চিত বলতে পারি এই সিনেমাটি দেখার পরে তাদের সম্পর্ক আরো মধুর ও নতুন ভাবনা জাগাবে নিজেদের সম্পর্কে। ফ্রেন্ডলিস্টের একজনের স্ট্যাটাসও দেখেছিলাম এই সিনেমার প্রভাব নিয়ে নিজের ব্যাক্তিগত জীবনের মধুর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলেন। এমন অনেকেই সিনেমাটি সম্পর্কে তাদের নিজেদের মতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। সিনেমার এরুপ জনপ্রিয়তার কারনে ইতিমধ্যেই সিনেমাটির রিমেক করার প্রস্তাব পেয়েছেন মালায়ালাম আর মরাঠি ভাষায়।

কাস্টিং সম্পর্কে এই সিনেমার পরিচালক ও স্ক্রিপ্ট রাইটার নন্দিতা রায় বলেন “আমরা একটা নাটক দেখেছিলাম ‘বেলাশেষে কোলাহল’ নামে। সেই নাটকের কনসেপ্টটা খুব ভাল লেগেছিল আমার। থিমটা তুলে নিয়ে একদম অন্য গল্প তৈরি করলাম।
আর আমরা সৌমিত্রদা, স্বাতীলেখাদির কথা মাথায় রেখেই স্ক্রিপ্টটা লিখেছিলাম। ‘বেলাশেষে কোলাহল’ নাটকে আরতির চরিত্রটা করতেন স্বাতীদি নিজেই। স্বাভাবিক ভাবেই ওঁকে ছবিটাতে নেওয়া হয়েছে।” সুতরাং বোঝায় যাচ্ছে শিল্পী নির্বাচনের ক্ষেত্রে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন পরিচালকেরা।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে কি বলবো, তার মত “পদ্মভূষণ” সম্মাননা ও দুইবার “ন্যাশনাল এওয়ার্ড” পাওয়া শক্তিমান অভিনেতা থেকে এক্সপেকটেশন যেমনটা ছিল, সম্পূর্ণ পূরণ হয়েছে। আর স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত একজন সহজ সরল বাঙ্গালী নারীর চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন। তাছাড়া সিনেমার অন্যান্য ছোটবড় চরিত্র গুলোতে সবাই ভাল অভিনয় করেছেন। ফ্যামেলি ড্রামা মুভির চরিত্র গুলোতে যে ধরনের উপকরন থাকার দরকার সেগুলো আছে এই সিনেমাতে, নাটকীয়তা, কমিক দৃশ্য, ইমোশনাল দৃশ্য ইত্যাদি।

পরিচালনাও ছিল অন্যান্য দিক গুলোর মত প্রশংসনীয়। আর আবহ সঙ্গীত নিয়ে আলাদাভাবে কিছু না বললেই নয়। প্রতিটি সিকুয়েন্সের সাথে মানানসয় ও শ্রুতিমধুর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছিল।

মোটকথা “বেলাশেষে” সিনেমাটি সন্তুষ্টির দিক থেকে হতাশ করবে না বরং দেখা শেষে নিজেই সিনেমাটির প্রশংসায় নেমে যাবেন।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৫

সুমন কর বলেছেন: ইদানিং সময়ে দেখা চমৎকার একটি বাংলা মুভি।

রিভিউ ভালো হয়েছে।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩১

হাবিব রহমানন বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন কর ভাই :)

২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৫

শিহান দেওয়ান বলেছেন: অসাধারন মুভি

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২১

হাবিব রহমানন বলেছেন: নিঃসন্দেহে :)

৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০৩

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: চমৎকার রিভিউ পড়ে দেখা ইচ্ছা জাগছে ।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২২

হাবিব রহমানন বলেছেন: ধন্যবাদ :) আর হ্যাঁ, দেখে ফেলুন , ভাল লাগবে আশা করি

৪| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৩

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: কোন কার্যকরী লিঙ্ক পাচ্ছিনা ভাই ।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৭

হাবিব রহমানন বলেছেন: এই পোস্টের শেষের দিকে দেখুন
অথবা ইউটিউবে দেখতে চাইলেঃ

৫| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০১

হাসান মাহবুব বলেছেন: আরেকটু বড় হয়া লই তারপর দেখুম :`>

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৯

হাবিব রহমানন বলেছেন: :-P

৬| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২০

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: শেয়ার করায় অনেক ধন্যবাদ। দেখতে হবে।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩১

হাবিব রহমানন বলেছেন: দেখে ফেলুন, ভাল লাগার মতই সিনেমাটি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.