![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকল প্রকার চলচ্চিত্র দেখতে ও চলচ্চিত্র নিয়ে লেখতে ভালোবাসি। তাছাড়া কবিতা পড়তে ভালো লাগে, মাঝেমাঝে নিজেও দু-এক লাইন লেখার চেষ্টা করি। fb/bd.r.habib
ঢালিউড ও বলিউড সিনেমা দেখে বড় হওয়ার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই সিনেমায় প্রতিশোধের গতানুগতিক ধারণা লালন করে আসছি আমরা। যেখানে ২০ বছর আগে বাবা হত্যার খুনের বদলা নেয়াকেই উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিশোধের মাধ্যম ধরা হত। এবং অস্বীকার করার উপায় নেই, একটা সময় এমন গল্পের সিনেমা গুলোই আমাদের বেশ আনন্দ দিয়েছে।
এমন গতানুগতিক ধারণা থেকে বের হয়ে প্রতিশোধ বা ভেঞ্জেন্স কে নতুনভাবে আবিষ্কার করার শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হতে পারে ভেঞ্জেন্স ট্রিলজি। পার্ক চ্যাঁন উক আমাদের এমনই এক মুভি সিরিজের সাথে পরিচয় করিয়েছেন যে প্রথাগত ভেঞ্জেন্স সম্পর্কে সিনেমাপ্রেমীদের ধারণায় নতুন স্বাদ যুক্ত করেছে। এই ট্রিলজি এমন দক্ষতার সাথে তৈরি করা হয়েছে যে নির্মমতা, হিংস্রতা ও সাসপেন্স তৈরিতে হলিউডের বড় বড় থ্রিলার মুভি গুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করার মতন।
সাউথ-কোরিয়ান ভেঞ্জেন্স ট্রিলজির শকিং ও ক্রাইম-থ্রিলার ভিত্তিক তিনটি সিনেমা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনাঃ
●► Sympathy for Mr. Vengeance (2002)
ভেঞ্জেন্স ট্রিলজির প্রথম কিস্তি “সিম্পেথি ফর মিঃ ভেঞ্জেন্স”, সিনেমার প্লট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা যদি দেই তাহলে, বোবা ও বধির যুবক “Ryu” ফ্যাক্টরিতে কাজ করে ও একমাত্র বোনের সাথে বসবাস করে। বোন অসুস্থতার কারনে ধীরেধীরে মৃত্যুর দিকে ধাপিত হচ্ছে এবং এই অসুস্থতা থেকে বাঁচাতে কিডনি ট্রান্সপ্লেন্ট করানো লাগবে। Ryu কিডনির ব্যাবস্তা করতে গিয়ে ধোঁকার শিকার হয় ও সেখান থেকে বিভিন্ন ট্রাজেটিক ঘটনার শুরু।
সিনেমার গল্প এমনভাবেই সাজানো হয়েছে যে দর্শকদের এন্ট্রাগনিস্ট ও প্রটাগনিস্টের প্রতি সমানভাবে সহানুভূতি জাগবে। অথবা এই দুইয়ের মদ্ধে এক পক্ষ নির্বাচনে দ্বন্দ্ব লেগে যাবে। সিনেমার নাম করণের সার্থকতাও ঠিক এখানেই।
অভিনয় শিল্পীদের মদ্ধে বিশেষ তিন লীড এক্টরের পারফর্মেন্স বেশ ভাল লেগেছে। Ryu চরিত্রে Shin Ha-Kyun ও Ryu’এর গার্লফ্রেন্ডের চরিত্রে Bae Doo-Na_এই দুজনের কাজের সাথে পূর্ব পরিচিতি না থাকলেও মনোমুগ্ধকর পারফর্মেন্স ছিল। বিশেষ করে Ryu’এর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বোবা ও বধির হিসেবে বেশ কনভিন্সিং ছিল।
বিশেষভাবে ভাল লেগেছে “জয়েন্ট সিকিউরিটি এরিয়া” ও “মেমোরিজ অফ মার্ডার” খ্যাত Song Kang-Ho’এর পারফর্মেন্স। সিনেমায় বিশেষ কিছু সিকোয়েন্সে তার পারফর্মেন্স অনেক পীড়া দেবে দর্শকদের মনে। সবকিছু মিলিয়ে পারফেক্ট একটি থ্রিলার ভিত্তিক সিনেমা। যদিও সিনেমাটি বক্স অফিসে ফ্লপ ছিল কিন্তু সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়ে নিয়েছে ঠিকই।
●► Old boy (2003)
ট্রিলজির দ্বিতীয় কিস্তি ও এই সিরিজের মদ্ধে ব্যাক্তিগতভাবে সবচেয়ে প্রিয় সিনেমা “ওল্ডবয়”, যে সিনেমা প্রতিশোধ ও নির্মমতাকে দিয়েছে অন্য এক রুপ।
সিনেমার শুরুটা হয় বেশ নাটকিয়ভাবে, ডাই-সু নামক এক ব্যক্তিকে হঠাৎ দুর্বৃত্তরা ধরে নিয়ে যায় ও ১৫ বছর তাকে ছোট একটি রুমে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে আটকে রাখে। ডাই-সু জানে না কেনো তাকে ধরে আনা হল, তার অপরাধ কী অথবা দুর্বৃত্তদের মুল উদ্দেশ্য কী!
১৫ বছর পর তাকে মুক্তি দেয়া হয় কোন এক্সপ্লেনেশন ছাড়াই। ডাই-সু এই বিরূপ রহস্য জানার জন্য একের পর এক চেষ্টা চালিয়ে যায়।
সিনেমার গল্প সম্পূর্ণ আনপ্রেডিক্টেবল। মুল গল্প যদি আপনি প্রেডিক্ট/অনুমান করতে পারেন তাহলে আপনি অতিমানবীয় গুণের অধিকারী।
ব্যাক্তিগতভাবে ২০১৪ সালে প্রথম এই সিনেমাটা দেখার পরে বেশ ডিস্টার্ব ফিল করেছিলাম , রিভেঞ্জ জনরার সিনেমার অলটাইম ফেভারিট লিস্টে এই সিনেমা বেশ উপরেই থাকবে নিঃসন্দেহে। মানের দিক থেকে থ্রিলার মাস্টারপিস No Mercy কিংবা Incendies থেকেও কম নয়।
সিনেমার লীড এক্টর হিসেবে আছেন সাউথ কোরিয়ান লেজেন্ডারি অভিনেতা চৈ মিন শিক, ব্যাক্তিগতভাবে সাউথ কোরিয়ান প্রিয় অভিনেতা। সিনেমায় চৈ মিন শিকের চমকপ্রদ পারফর্মেন্স অনেকদিন সিনেমাপ্রেমীদের মনে গেঁথে থাকবে, বিশেষ করে সিনেমার শেষের দিকের পারফর্মেন্স ভুলার নয়।
●►Lady Vengeance/Sympathy for Lady Vengeance (2005)
এই সিনেমাটি ট্রিলজির সর্বশেষ কিস্তি হিসেবে দারুণ ফিনিশিং ও সুবিচার করা হয়েছে বলা যায়। আগের দুটো সিনেমার মতই যথারীতি ভায়োলেন্স ও সাসপেন্স বিদ্যমান ছিল।
Lee Geum-ja নামক এক নারী মিথ্যা অপহরণ ও খুনের দায়ে ১৩ বছর জেলে কাটায়, ১৩ বছর পর মুক্তি পাওয়ার পর সে আসল খুনীকে খোঁজে বের করার কাজে নেমে পরে ও প্রতিশোধ নেয়ার কঠিন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে একের পর এক প্ল্যান করতে থাকে।
সম্পূর্ণ সিনেমায় প্রিয় সিকোয়েন্স হচ্ছে সিনেমার ক্লাইম্যাক্স। রিভেঞ্জের ধরণ দেখে নিজের মধ্যেও গুজবাম্প কাজ করছিল।
লীড এক্ট্রেস Lee Young-Ae এর রুপে মুগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি, তার চতুর ও হৃদয়স্পর্শী পারফর্মেন্স বেশ অবাক করেছে। JSA এর মেজর সোফি চরিত্রে ইনভেস্টিগেশন করতে থাকা সেই চরিত্রটি থেকে অনেকাংশে ভিন্ন ও বৈচিত্র্যময় বলা যায়। সিনেমার নেগেটিভ ক্যারেক্টারে ছিলেন ট্রিলজির দ্বিতীয় সিনেমায় অভিনয় করা চৈ মিন শিক, ইতিমধ্যে তাকে নিয়ে আলোচনা করেছি, তার নামের উপরই আস্তা রাখা যায়। ক্যারেক্টার এতই কনভিন্সিং ছিল যে প্রচণ্ড ঘৃনা কাজ করবে তার প্রতি, আর এখানেই একজন অভিনয় শিল্পীর সার্থকতা।
সর্বোপরি, একটি পারফেক্ট ট্রিলজির পার্ফেক্ট এন্ডিং!
===পরিচালকমশাইঃ
পার্ক চ্যাঁন উক কে সাউথ-কোরিয়ান ইন্ড্রাস্টির গ্রাউন্ড ব্রেকিং পরিচালক বলা হয়, সে কোরিয়ান সিনেমাকে বিশ্বে দরবারে অন্য এক মর্যাদা এনে দিয়েছে। হলিউডের নামীদামী ক্রিটিকসরা তার সিনেমার প্রশংসা করেছেন নিজেদের লেখায়।
সেটা Joint Security Area থেকে শুরু করে হালের The Handmaiden পর্যন্ত বহাল রেখেছেন। নিজের সিনেমায় শকিং এন্ডিং ও ভায়োলেন্স এর উপস্থাপন এত উপভোগ্য করে তুলেছেন যে অন্যান্য ভাল থ্রিলার মুভি গুলো খানিকটা পানশে লাগবে।
পার্ক চ্যাঁন উক Vengeance Trilogy তে পরিচালনার পাশাপাশি কো-স্ক্রিনরাইটার হিসেবেও ছিলেন, সুতরাং এই ট্রিলজি নির্মাণের পেছনে সর্বোচ্চ প্রশংসার দাবীদার সে নিজেই।
সুতরাং পার্ক চ্যান উকের কাজের সাথে পরিচিতি পেতে ও একজন ভাল সিনেমার দর্শক হিসেবে প্রত্যেকেরই এই ট্রিলজি দেখা উচিত।
০৯ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:০১
হাবিব রহমানন বলেছেন: হ্যা, নো মার্সি ও ইনসেন্ডিস এর কথা পোস্টেও বলেছিলাম! ওল্ডবয়, নো মার্সি ও ইনসেন্ডিস আমার দেখা সেরা ক্লাইম্যাক্সের তিনটি মুভি
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: "এই ট্রিলজি এমন দক্ষতার সাথে তৈরি করা হয়েছে যে নির্মমতা, হিংস্রতা ও সাসপেন্স তৈরিতে হলিউডের বড় বড় থ্রিলার মুভি গুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করার মতন। "
হলিউডের চেয়ে অনেক ভালো। ওল্ডবয়ের তো কোনো তুলনাই হয় না।
প্রথমটা দেখা হয় নাই।
এইটা দেখেছেন?