নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক চারিত্রিক সনদপত্র প্রাপ্ত

হাবিব রহমানন

সকল প্রকার চলচ্চিত্র দেখতে ও চলচ্চিত্র নিয়ে লেখতে ভালোবাসি। তাছাড়া কবিতা পড়তে ভালো লাগে, মাঝেমাঝে নিজেও দু-এক লাইন লেখার চেষ্টা করি। fb/bd.r.habib

হাবিব রহমানন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কতটা সুন্দর বা অসুন্দর ছিল অনিমেষ আইচের “ভয়ংকর সুন্দর”?

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:১৬


সিনেমা ভাল লাগা বা মন্দ লাগার ব্যাপারটি আপেক্ষিক হলেও স্বাভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে কমার্শিয়াল ও আর্ট, এই দুটো ফর্মে সিনেমাকে বিভক্ত করা যায়। কমার্শিয়াল সিনেমাতে বিনোদনকে প্রাধান্য দিয়ে সিনেমার গল্প সাজানো হয়, আর আর্ট সিনেমায় ইন্টেলেকচুয়াল প্লট তথা গল্পের গভীরতাকে প্রাধান্য দিয়ে শৈল্পিকভাবে সিনেমার গল্প উপস্থাপন করা হয়। ভয়ংকর সুন্দর সিনেমাতে ঠিক এই জায়গাতেই পরিচালক ব্যর্থ হয়েছেন, না তিনি কমার্শিয়াল সিনেমা বানাতে পেরেছেন, না আর্ট। প্রথমার্ধ দারুণভাবে নির্মাণ করে সম্ভাবনা দেখিয়েও দ্বিতীয়ার্ধে এসে তরী ডুবিয়েছেন।

এই সিনেমায় “আমি অমুক শ্রেণীর জন্য সিনেমা বানাই না” বা “রুচিশীল দর্শকদের জন্য আমার সিনেমা” বলে পার পাওয়া যাবেনা। তথাকথিত দু ধরনের অডিয়েন্সদের হতাশ করেছেন ভয়ংকর সুন্দর। অন্ততপক্ষে, সিনেমাহল থেকে বের হওয়া সাধারন দর্শকদের অভিব্যাক্তি তাই বলে। কেও নিজেদের মূল্যবান অর্থ ও সময় খরচ করে অসন্তুষ্টি পেতে সিনেমাহলে যায়না।

ভয়ংকর সুন্দর (২০১৭)
কাস্টিংঃ পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়,আশনা হাবিব ভাবনা, ফারুক আহমেদ, অ্যালেন শুভ্র প্রমুখ।
সংগীতঃ ইমন সাহা।
গল্পঃ মতি নন্দী (জলের ঘুর্ণী ও বকবক শব্দ)
পরিচালক, প্রযোজক, সংলাপ ও চিত্রনাট্যকারঃ অনিমেষ আইচ


এইতো গেলো আমার সংক্ষিপ্ত মতামত। আসুন সম্পূর্ণ সিনেমাটির পজিটিভ ও নেগেটিভ দিক গুলো স্পয়লারবিহীন বিশ্লেষণ করা যাকঃ

প্রথমেই হতাশার কথা গুলো জানান দেয়া প্রয়োজন। পরিচালকের সিনেমার গল্প বলার সময়ে প্রথমেই পরিষ্কার ধারণা থাকা প্রয়োজন যে তিনি আসলে দর্শকদের কি বুঝাতে চাচ্ছেন। সিনেমাটি দেখার সময়ে এই বিষয়টি মাথায় কাজ করছিলো যে তিনি আসলে পর্দার এই দৃশ্য গুলো দ্বারা আমাদের কি বুঝাতে চাচ্ছেন, কি জানান দিতে চাচ্ছেন? অথবা একটি বার্তা পৌঁছানোর পেছনে এক ঘণ্টার লম্বা স্টোরিলাইন নামের বিরক্তি উপহার দিচ্ছেন কেনো। বিনোদন দেয়া ছিল মূল লক্ষ্য? তাহলে বিনোদন কোথায়? কোন গভীর বা শিক্ষণীয় মেসেজ দিতে চাচ্ছেন? তাহলে আমার কাছে এই বার্তা পৌঁছচ্ছেনা কেন?

শুধুমাত্র এবং শুধুমাত্র, এই একটি সেক্টরের(গল্প) কারনে সিনেমাটি সমালোচক ও দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। জালালের গল্প, আইস্ক্রিম, আয়নাবাজি কিংবা অজ্ঞাতনামার মতো সন্তুষ্টি আশা করেছিলাম। ইচ্ছে ছিল এই সিনেমাগুলোর মতো প্রশংসা করে যাবো কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।


আবহ সংগীত খুব বাজে ছিল বা বড় ধরনের অসামঞ্জস্য ছিল তা বলবো না, তবে অনেকটাই টিপিকাল ছিল। তাছাড়া ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দিয়ে অনেক দৃশ্যে রহস্য তৈরি করার চেষ্টা করলেও দর্শক উল্টো হেসেছে। একজন মৌলিক সিনেমার পরিচালক ও প্রশংসনীয় ট্রেইলার দেখে প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল।

আর ব্যাক্তিগতভাবে গল্পের পরে সবচেয়ে হতাশ হয়েছি (পড়ুন খারাপ লেগেছে) প্রিয় অভিনেতা পরমব্রত ও অ্যালেন শুভ্রের অপব্যাবহার দেখে। পরমব্রতের মতো বাঘা অভিনেতাকে সাইডে বসিয়ে ভাবনাকে লীডে রেখে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার নামে একটি খোঁড়া গল্প নির্মাণ দেখতে পাওয়া খুবই হতাশাজনক। অথচ এই পরমব্রতকে লীড রোলে রেখে ভাল কোন সাইকোলজিক্যাল গল্পে সিনেমা নির্মাণ করলে হয়তো আরেকটি আয়নাবাজি পাওয়া যেত। ভুলে গেলে চলবেনা এই পরমব্রত অভিনয় করেছেন “হ্যামলক সোসাইটি”, “কাহানী”, “বাইশে শ্রাবণ”, “প্রলয়”, “অপুর প্যাঁচালী” এবং “চতুষ্কোণ” এর মতো অসাধারন সিনেমাগুলোতে। আর পরমব্রতই বা এই সিনেমা সাইন করলেন কি মনে করে? উনি ভাল জানেন!

আরো কিছু বিষয় নিয়ে হতাশামূলক আলোচনা করা যেত কিন্তু গল্প রিভিল/প্রকাশ হওয়ার স্বার্থে ও পরিচালকের কষ্টের নির্মানের প্রতি সম্মান রেখে এড়িয়ে গেলাম। সিনেমার প্রাণ “গল্প” যেখানে হতাশ করেছে সেখানে অন্যান্য দিক নিয়ে আলোচনা করাটাও অধিক সখ্যতা।


এবার আসি সিনেমার প্রশংসনীয় দিক গুলো নিয়ে। সিনেমার সবচেয়ে পজিটিভ দিক হচ্ছে কাস্টিং। অভিনয়ে যাকে যে ধরনের চরিত্র দেয়া হয়েছে তা সফলতার সহিত পালন করেছেন। শুধু মেজর ক্যারেক্টারগুলো নয়, ছোট মাইনর চরিত্রেও বেশ ভাল অভিনয় করেছে সবাই। ভাবনা, পরমব্রত, ফারুক আহমেহ, অ্যালেন শুভ্র, বিটিভি যুগের জনপ্রিয় খাইরুল ইসলাম সবুজ থেকে শুরু করে আয়নাবাজির লুৎফুল রহমান জর্জ, সবাই দারুণ পার্ফরমেন্স দিয়েছেন। অভিনয়ের দিক থেকে কোনকিছু দৃষ্টিকটু লাগেনি। সিনেমার প্রথম হাফ এঞ্জয় করার পেছনেও এদের অনেক অবদান আছে বলা যায়।
লোকেশন তথা সিনেমাটোগ্রাফিও বেশ ভাল ছিল, চোখের আরাম দিয়েছে এক কথায়। তাছাড়া সিনেমার গান গুলোও ছিল শ্রুতিমধুর।

অনিমেষ আইচের প্রথম সিনেমা “জিরো ডিগ্রী” এখনো দেখার সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্য হয়নি তবে বিশ্বস্ত সিনেমা সমালোচকদের কাছে নেগেটিভ মতামত শোনেছি আর ভয়ংকর সুন্দর তো নিজেই অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। সিনেমার অন্যান্য দিক গুলোতে দক্ষতার পরিচয় দিলেও অনিমেষ আইচের উচিত পরবর্তীতে সিনেমাগুলো নির্মাণে গল্পের প্রতি আরো সচেতন হওয়া। সিনেমা নির্মাণে কারিগরি ডিপার্টমেন্টে উনার যথেষ্ট জ্ঞ্যান রয়েছে তবে গল্প নির্বাচনে বা পর্দায় গল্প উপস্থাপনে অনেক বিজ্ঞতার প্রয়োজন।


সিনেমাটি নিয়ে আমার ব্যাক্তিগত মতামত প্রকাশ করলাম, একজন দর্শক হিসেবে গঠনমূলক আলোচনা করার অধিকার আমার আছেই। আর যায় হোক, নিজের দেশের সিনেমার দোঁহাই দিয়ে অথবা মন্দের ভালো বলে সৎ সমালোচনা এড়িয়ে “কবর” নাটকের হাফিজের মতো চটুকদারি করতে পারবোনা। তো এখন সিনেমাহলে গিয়ে সিনেমাটি দেখা বা না দেখার সিদ্ধান্ত আপনার। আর আমার সমালোচনার “সমালোচনা” করতে চাইলে কিংবা কোয়িন ব্রাদার্স-ইংমার বার্গম্যানকে (yeah right! :D ) রেফারেন্স টেনে আমার সিনেমা জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন করতে চাইলেও আপনাকে কমেন্ট সেকশনে স্বাগতম। ধন্যবাদ সবাইকে।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪০

রাখালছেলে বলেছেন: রিভিউ ভাল হইছে ।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪৪

হাবিব রহমানন বলেছেন: ধন্যবাদ রাখালছেলে ভাই :)

২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:০৮

রানার ব্লগ বলেছেন: এখন দেখিনি কিন্তু ট্রেইলার আমাকে আকর্ষণ করেনি । ইদানিং পরিচালকদের একটা ভুল ধারনা হচ্ছে যে ঢাকা শহরের হাইসট নিলেই বুজি কেল্লা ফতে।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:০০

হাবিব রহমানন বলেছেন: আর ড্রোন ক্যামেরা তো আছেই B-)

৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:৪৯

বিজন রয় বলেছেন: দেখিনি, দেখবো না।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:০২

হাবিব রহমানন বলেছেন: স্লোগান হিসেবে ব্যাবহার করা যাবে :D

৪| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:১১

বিজন রয় বলেছেন: আমার কাছে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় একটি হোপলেস অভিনেতা।

আপনার রিভিউ ভাল হয়েছে।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:১৪

হাবিব রহমানন বলেছেন: “হ্যামলক সোসাইটি”, “কাহানী”, “বাইশে শ্রাবণ”, “প্রলয়”, “অপুর প্যাঁচালী, “চতুষ্কোণ” এগুলো দেখেও এমন কথা বললেন নাকি দেখেননি?

৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:১৯

বিজন রয় বলেছেন: হা হা হা ............ হাসালেন এবার।

যারা অভিনয় করে তাদের তিনটি চোখ থাকতে হয়।
পরমব্রতের একটি আছে।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৬

হাবিব রহমানন বলেছেন: অহ আচ্ছা।

৬| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩

আমি ইহতিব বলেছেন: পরমব্রত আমার প্রিয় অভিনেতাদের মধ্যে একজন। এই মুভিটি হলে গিয়ে দেখবো ভাবছিলাম। রিভিউ পড়ে সে ইচ্ছে চলে গেলো :(

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৮

হাবিব রহমানন বলেছেন: পরম খুবই প্রিয় অভিনেতা। তার অপব্যবহার সবচেয়ে পীড়া দিয়েছে। তবে যতটুকো সময় পেয়েছে ফাটিয়ে দিয়েছে।

৭| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:২০

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভয়ংকর হতাশ হলুম!

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৮

হাবিব রহমানন বলেছেন: হা হা, নামের সাথে দারুণ মিল। ভয়ংকর হতাশ করলো ভয়ংকর সুন্দর।

৮| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫০

সুমন কর বলেছেন: আপনার রিভিউ পড়ে ভালো লাগল। ভালো লিখেছেন।

অনেক পরে হয়তো দেখব.....

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৯

হাবিব রহমানন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় সুমন কর ভাই :)

৯| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখব।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:১৩

হাবিব রহমানন বলেছেন: কেমন লাগলো জানাবেন।

১০| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৫

সোহানী বলেছেন: তারপরে অনিমেষের ছবি বলে দেখবো..... বাংলা ছবি বলে দেখবো... অন্তত সাকিবেকে দেখবে হবে না ................

০৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:২২

হাবিব রহমানন বলেছেন: জানাবেন কেমন লাগলো।

১১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:২১

হাসান মাহবুব বলেছেন: কেউই ভালো কইতাছে না।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৭

হাবিব রহমানন বলেছেন: ভালো বলার মতো সিনেমাও না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.