নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শঙ্খচিল

রুপন হাবিব রহমান

রুপন হাবিব

রুপন হাবিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডান্ডাতন্ত্রের দৌরাত্ম আর কত দিন ?

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২১

ঢাকার মিরপুরের গুদারাঘাট এলাকার চা দেদকানী বাবুল মাতুব্বরের মর্মান্তিক মৃত্যুর (বিবেকবান প্রতিটি মানুষের মতে, হত্যাকান্ড) ঘটনা সবাইকে নাড়া দিয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর স্থানীয় শাহ আলী থানার পুলিশ মিরপুরের গুদারাঘাট এলাকায় ফুটপাত ও এর আশপাশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী-দোকানীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের এক পর্যায়ে চা দোকানী বাবুলের দোকানে যায়। সেখানে চাঁদা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ সদস্যরা বুট অথবা লাঠি দিয়ে কেরোসিনের চুলায় আঘাত করেন। এতে জলন্ত চুলা ছিটকে গিয়ে বাবুলের ওপরে পড়লে তিনি তাতে গুরুতরভাবে দগ্ধ হয়ে পরদিন সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছে, তবে কোন পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখ না করেই। আর এ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে ডিবিকে। এর আগে থানার অধিকাংশ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় এবং নতুন ওসি নিয়োগ দেওয়া হয়। বিভাগীয় তদন্তে ঘটনার সাথে জড়িত ওসি(ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা)সহ পাঁচজনকে দায়ি করে তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে হয়ত বাবুলের পরিবারকে ক্ষতিপূরন হিসেবে কিছু টাকাও দেওয়া হবে। সরকারের এই আইওয়াশ প্রক্রিয়ার পর হয়ত তদন্ত প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে, সাথে বিচারও। কারণ পুলিশের বিরুদ্ধে পুলিশেরই আরেক সংস্থার তদন্ত কি হবে-তা সহজেই অনুমেয়। এরপর আম-জনতার দৃষ্টি নতুন কোন ঘটনার দিকে ঘুরে যাবে। বাবুলের অসহায় পরিবারটিও বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার খপ্পরে পড়ে হয়রান হতে হতে একসময় দীর্ঘশ্বাস ফেলে সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার চেয়ে সবুর করে নেবে। এরপরেকেউ আর খবর রাখবে না পুলিশের এই হত্যাকান্ডের বিচার হলো কি-না। কারণ ততদিনে হয়ত আরও বড় কোন ঘটনা সামনে চলে আসবে। গত এক মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা এবং এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটির পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তার বিনা কারণে পুলিশের হাতে নির্মমভাবে প্রহৃত হওয়ার ঘটনাও বর্তমানে আমরা ভুলে যাচ্ছি। এভাবেই পুলিশের অঘটনগুলোর দুষ্টু চক্রে আমরা আর কত ঘুরপাক খেতে থাকবো ? এ প্রশ্নের জবাব কারো কাছে নেই। এজন্য ক্ষোভে-দুঃখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান চৌধুরী মাস খানেক আগে বলেছিলেন, ‘মাছের রাজা ইলিশ, দেশের রাজা পুলিশ।’ তাঁর এ মন্তব্যকে ঘিরে কয়েক সপ্তাহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বেশ রসিয়ে সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ পেয়েছিল।
আসলে কেকান রাজনৈতিক দল বা শক্তি যখন জনগণের উপর নির্ভর না করে ডান্ডাতন্ত্রের উপর নির্ভর করে সরকার চালায়, তখন পুলিশের কর্মকান্ডে সেবার পরিবর্তে দৌরাত্মের প্রকাশ ঘটাই স্বাভাবিক। কারণ পুলিশের কনিষ্ঠতম পদ থেকে শুরু করে সকল স্তরের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলী, পদোন্নতিতে দুর্নীতি জড়িয়ে আছে। স্বাধীনতার পর থেকেই এটা চলে আসছে এবং দিনদিন তা প্রাতিষ্ঠানিক চেইনে রূপলাভ করে চলেছে। এ যেন দুর্নীতির দুষ্টচক্র। এ থেকে আমাদের মুক্তির কি কোনো পথ নেই?
সমাজের প্রায় প্রতিটি স্তরে যখন দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি-দলপ্রীতি বেড়ে চলেছে। তখন পুলিশ বিভাগ এ থেকে মুক্ত থাকবে- এ আশা করাটাও ভুল। আমাদের সমাজে নীতি-নৈতিকতাহীন শিক্ষা এবং দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সিস্টেম এজন্য দায়ী। তাই ইতিমধ্যে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে যারা প্রবেশ করেছে, তাদের সংশোধন করে মানবিক করে তোলা প্রচলিত সমাজ-রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বড়জোর সুশাসন দিয়ে দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি-দলপ্রীতির লাগাম টেনে ধরা সম্ভব। তাই ভবিষ্যত মানবিক সমাজ বিনির্মাণে এখন থেকেই নতুন প্রজন্মকে নিয়ে আমাদের আশাবাদী চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে এগুতে হবে। কারণ আমরা অভিভাবকরা প্রত্যেকেই আমাদের সন্তানদের ভালবাসি। আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত-মিথ্যাবাদী খারাপ মানুষ হলেও প্রত্যেকেই চাই, আমাদের সন্তানরা যাতে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে প্রকৃত অর্থেই একেকজন ভাল মানুষ হয়ে উঠে। তাই প্রাথমিক থেকেই কোমলমতি শিশুদের নৈতিক ও মানবিক শিক্ষায় দীক্ষিত করে তুলতে হবে-যাতে তারা ভবিষ্যৎ মানবিক সমাজ গঠনে অবদান রাখতে পারে।





মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনির্বাচিত স্বৈরাচারিতায় এরচে ভাল আশা করেন কিভাবে????

স্বাধীনতার ৪০ বছর পর স্বাধিনতার আন্দোলনের রুপকার দলই যখন পাকিদের মতো অনির্বচাতি অন্ধকার পথকেই ক্ষমতা আকড়ে রাখার মোক্ষম মাধ্যম মনে করে- তখন আমজনতার মূল্য আর কিসের????

বঙ্গবন্ধু নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতা পায় নি পাকি স্বৈরাচারের কাছ থেকে। আর এখন ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দানের পাশায় উল্টো সিটে তারই বংশধর!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.