![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশের মাথাপিছু আয় বর্তমানে ১ হাজার ৩১৬ মার্কিন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১২৬ ডলার বেশী। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪-’১৫ অর্থবছরের অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে এ ঘোষণা দিয়েছেন আমাদের পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মাথাপিছু আয়ের (নমিনাল) দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ৫৮তম এবং ক্রয় ক্ষমতার দিক দিয়ে (পিপিপি-পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি) বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের ৩৬ তম। দেশের মানুষের মাথাপিছু ক্রয় ক্ষমতা এখন ৩১৯০ মার্কিন ডলার।
আমাদের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) গত কয়েক বছর ধরে ৬ শতাংশের উপরে থাকছে। গত অর্থ বছরে জিডিপি ছিল ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। বাংলাদেশের অর্থনীতির এই পরিসংখ্যান খুবই ইতিবাচক। অর্থনীতির এই ক্রমবর্ধমান গতি আমাদের দেশকে কাঙ্খিত সময়ের মধ্যে নিন্ম মধ্যম আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবে। কিন্তু আমার মনে একটি বিষয় প্রায়ই ঘুরপাক খায়, রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির এই প্রবৃদ্ধি আমাদের দরিদ্রপীড়িত জনগোষ্ঠীর জীবন মানকে কতটুকু বদলে দিতে পেরেছে। এটা সত্যি যে, দেশে আগের মত কোন মানুষ এখন আর না খেয়ে মারা যায় না। তবে দু’বেলার আহার যোগাতে গিয়ে দেশের অন্তত ২ কোটি মানুষকে এখনও হিমশিম খেতে হয়। এদের মধ্যে আবার অনেকে ভিটা-মাটি হীন অবস্থায় রয়েছে। অন্যের বাড়িতে কিংবা বিভিন্ন নগরীর ফুটপাত বা ট্রেন স্টেশনে তাদের রাত্রি যাপন করতে হচ্ছে। সমাজে একটা কথা প্রচলিত আছে ‘টাকায় টাকা আনে’। তাই ধনীরা দিনদিন আরও ধনী হচ্ছে। ধনীদের আর্থিক ও রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তির বলয়ের মধ্যে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে মধ্যবিত্ত-নিন্ম মধ্যবিত্তরা। তাদের অধিকাংশই আয়-রোজগার বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি চাকুরীজীবী এবং চাকরীপ্রার্থীরাও এ প্রবণতা থেকে মুক্ত নন। এদের কেউ কেউ আবার অবৈধ-অনৈতিক পথে পা বাড়াচ্ছেন। তাই সমাজের প্রায় প্রতিটি স্তরে এখন দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি-দলপ্রীতি বেড়ে চলেছে। সমাজের অস্থিরতা-অসহিষ্ণুতার মূলে লুকায়িত এ কারণগুলোর কথা কেউ ভাবছে না।
সমাজের পিছিয়ে পড়া-অস্বচ্ছল মানুষের জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নতুন নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে বেকার জনগোষ্ঠীর জন্য পর্যাপ্ত কর্মক্ষেত্র প্রস্তুত এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে অতি দরিদ্র-অদক্ষ মানুষের জন্য বিশেষ আয় বর্ধনকারী কর্মসূচি নিতে হবে। আর তা না হলে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে ক্রম উন্নতি ঘটলেও সমাজের প্রকৃত উন্নয়ন হবে না। দেশের অস্থিরতা ও অসহিষ্ণুতাও কমবে না। সুদূরপ্রসারি জনকল্যাণমুখি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য এখন আগের মতো বৈদেশিক সহায্যে দিকে না চাইলেও আমাদের চলবে। নিজস্ব বিনিয়োগের মাধ্যেমে বিশাল ব্যয়ের পদ্মা বহুমুখি সেতু নির্মাণ প্রকল্প শুরু করার মাধ্যমে সরকার তার আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ রেখেছে। তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গণমানুষের কল্যাণে যে কোনো কর্মসূচি গ্রহণেও সরকার সফল হবে। শুধু প্রয়োজন আমাদের সরকার
ও রাজনৈতিক নেতাদের আন্তরিকতা।
©somewhere in net ltd.