![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সম্প্রতি জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানীতে হিজড়াদের চাঁদাবাজিসহ নানা তৎপরতায় নগরীর নারী-পুরুষদেরকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক তার বাসভবনে হিজড়াদের হামলায় গুরুতর আহত হন। ঐ অধ্যাপকের বাসায় চারজন হিজড়া চাঁদা চাইতে গিয়ে কাঙ্খিত পরিমাণ অর্থ না পেয়ে তাঁর শিশু সন্তানকে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এতে বাঁধা দিলে অধ্যাপককেপে বেদম প্রহার করতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তিন হিজড়াকে আটক করে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঢাকায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে হিজড়াদের মাধ্যমে এমন অপ্রতিকর ঘটনা ঘটে চলেছে। অথচ এসব প্রতিরোধে প্রশাসনিক বা সামাজিকভাবে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
হিজড়ারা বিশেষ কোনো প্রাণী নয়, বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপেরও বাসিন্দা নয়। তারা আমাদের মতই মানুষ। জন্মগত ত্রুটির কারণে তারা একেকজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হয়েও পুরুষ বা স্ত্রী লিঙ্গের অধিকারী নয়। সেহেতু তাদের নিজস্ব কোনো পরিবার নেই। পিতা-মাতার ঘরে জন্ম নিলেও আমাদের ঘুণে ধরা সমাজের কারণে পৈত্রিক ভিটা থেকেও তারা বিতাড়িত হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, জন্মগত ত্রুটির কারণে একজন শিশু যৌবনে হিজড়া হয়ে যায়। এটা তাদের কোনো অপরাধ নয়। অথচ কঠিন বাস্তবতা হলো তারাই পারিবারিক ও আত্মিক বন্ধন থেকে এমনকি সমাজ থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অনাদরে-অবহেলায় নিজের জীবন চালাতে গিয়ে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।কোথাও কেউ তাদের কোনো কাজ দেয় না। তাদের দেখলেই দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ক্ষুধায় তারাও কষ্ট পায়, রাতে তাদেরও আশ্রয়ের প্রয়োজন হয়। রোজগার ছাড়া জীবনের এই ব্যয় নির্বাহ কিভাবে হবে? কেউ কি এ কথা চিন্তা করে।
২০০৪ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক জরিপে দেশে ১৫ হাজার হিজড়া রয়েছে বলা হলেও প্রত্রিকান্তরে জানা যায়, শুধু ঢাকাতেই ৩০ হাজার হিজরা আছে। অবশ্য মাঝে মধ্যে নকল হিজড়ারও সন্ধান মেলে। চাঁদাবাজির সুবিধার্থে সুযোগ সন্ধানী অনেকে হিজড়া সেজে রাস্তা-ঘাটে মানুষকে উৎপাত করে-এমন খবরও জানা গেছে। পরিসংখ্যান নিয়ে বিভ্রাট যা-ই থাকুক না কেন, হিজড়াদের সংখ্যা সারা দেশে ৩০-৩৫ হাজারের বেশী হবেনা। প্রতি জেলা শহরে কিছু না কিছু হিজড়া রয়েছে। দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে বিভিন্ন বয়েসী শ্রেণী পেশার মানুষ যেমন কাজ-ব্যবসার জন্য ঢাকা নগরীকে বেছে নেয়। হিজড়ারাও সরকারের সহানুভূতি আদায়ে রাজধানীতে দলে দলে চলে আসে। প্রশাসন কিংবা সমাজের সহানুভূতি না পেয়ে জীবিকার তাগিদে তারা চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মত দুর্বৃত্তপনায় জড়িয়ে গেছে। তাদের এই অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠার দায় কি আমরা এড়াতে পারি? উপযুক্ত কর্মক্ষেত্রে তাদের প্রবেশের সুযোগ না দেওয়ার কারণেই আশ্রয় ও পেটের তাগিদে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে-এই সত্য আমাদের অনুধাবন করতে হবে।
সরকার ২০১৩ সালে হিজড়াদের বিশেষ লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু তাদের পুনর্বাসনে এ পর্যন্ত কোনো পরিকল্পিত উদ্যোগ নেয়নি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী গত ১১ ফেব্রুয়ারি এক সমাবেশে দাবি করেছেন দেশে ২০১৪-’১৫ অর্থবছরে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দেড় কোটি মানুষের চাকুরি হয়েছে। তাঁর এই বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ না করে সবিনয়ে বলতে চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বর্তমান অর্থ বছরে হিজড়াদের জন্য এক বা একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করে তাদের জন্য ৩০-৩৫ হাজার চাকুরির ব্যবস্থা করে দেন।। এতে জাতি হিসেবে আমরা দায়মুক্ত হবো।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৮
মহা সমন্বয় বলেছেন: হিজড়াদের অনেক পাওয়ার এদের বিশাল নেটওয়ার্ক.. পুলিশ ও এদের সাথে পারে না... একবার তো এরা ভাটারা থানা ঘেরাও করেছিল।