নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শঙ্খচিল

রুপন হাবিব রহমান

রুপন হাবিব

রুপন হাবিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

১০ কোটি ডলার চুরি : সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:১৪


মানি ইজ নো প্রোবলেম। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বহুল উচ্চারিত এই ডায়ালগটি সেসময় আমাদের কাছে বেখাপ্পা-বেমানান মনে হলেও বর্তমানে সরকারের শীর্ষ মহলের কথাবার্তায় এবং দেশের প্রেক্ষাপটে সত্যি হতে চলেছে।
খাল খনন, নদী খনন, সেতু-কালভার্ট, সড়ক, মহাসড়ক, উড়াল সড়ক নির্মাণ কোন কিছুই আজ টাকার জন্য আটকায় না। পদ্মা বহুমুখী সেতুর মত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নেও আজকাল আমরা বিদেশী অর্থ সাহায্যের জন্য অপেক্ষায় থাকি না। ভবিষ্যতে পাতাল রেল এমনকি গভীর সমূদ্র বন্দর নির্মাণেও আমরা বিদেশীদের দিকে তাকিয়ে থাকবো না। রাজভান্ডারে আজ এতই অর্থ জমেছে যে, হলমার্কের মতো কেউ যদি আবারো সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বা আরও বেশী অর্থ মেরে দেয়। আমাদের অর্থমন্ত্রী হয়ত আবারও বলবেন, এ টাকা এমন বেশী কিছু নয়, অতি সামান্য। তাইতো সরকারি-আধা সরকারি কর্মকর্তারা কারণে অকারণে বিদেশ ট্যুরে যেতে চান? আমাদের রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অর্থের তো কোন অভাব নেই। খরচ তো করতেই হবে। ঋণ গ্রহিতা কোন রাঘব বোয়ালের ইচ্ছে করলো ব্যাংকের টাকা মেরে দেবে, কোন সমস্যা নেই। হাজার কোটি টাকা খেয়ে ফেললেও কোন অসুবিধা নেই। জায়গা মত গিয়ে কিছু খরচাপাতি করলেই উত্তম হজমী দাওয়াই পাওয়া যাবে। কেউ তাকে চোর বলবে না, ডাকাতও বলবে না। অবশ্য নতুন এক অভিধায় তাকে অভিহিত করা হবে- ‘ঋণ খেলাপি’। তাও আবার ব্যাংকিং পরিভাষায় সম্মানীত ঋণ খেলাপি। শেয়ার বাজারের ব্যবসায় এমন কোন অভিধা আছে কি-না তা আমার জানা নেই। তবে বাজারে কৃত্রিম মূল্যস্ফীতি ঘটিয়ে শেয়ার ব্যবসায় আমজনতাকে টেনে নিন। অবশেষে গরীব বিনিয়োগকারীর রক্ত শোষন করে তাদের কাছেই বেচে দিন এ টু জেড শেয়ার। আমজনতা জায়গা জমি বিক্রি করে তা কিনে নিবেই। তারা শেয়ার বাজারের অতশত মারিফতির বুঝে না। গরীর বিনিয়োগকার রক্ত শোষন করে মোটা তাজা হলেও তাদেরকে সবাই সম্মানীত বিনিয়োগকারী বা শেয়ার মার্কেট স্পেশিয়ালিষ্ট হিসেবে সমীহ করবে এটা গ্যারান্টি দিয়ে বলা যাবে।
এখন প্রশ্ন হলো আমাদের টাকা, আমরা খাব। তাতে কোন অসুবিধা নেই। বাইরের কেউ খেলে তা আমরা মেনে নেব না। তাই হয়ত এতদিন কেউ চেষ্টা করেনি। তবে এনিয়ে চিন্তা করতে তো সমস্যা নেই। তাই পরিকল্পনা করতে থাকলো বিদেশী চোরেরা। কিভাবে বড় দাও মারা যায়। সরকার নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলো তো দেশী চোরেরা, দুঃখিত সম্মানীত ঋণ খেলাপীরা মোটামুটি সাবাড় করে ফেলেছেন। তাই সেখানে তেমন কিছু পাওয়া নাও যেতে পারে। তাই রাষ্ট্রের প্রধান কোষাগার নিয়েই বিদেশী চোরেরা পরিকল্পনা আটতে থাকে। সময়, সুযোগ খোঁজতে থাকে। সঙ্গে নেয় দেশী চোরকেও। অবশেষে এল সেই মোক্ষম সুযোগ ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা। ৫ ফেব্রুয়ারির (শুক্রবার) প্রথম প্রহর। একে একে অর্ধ শতাধিক ভুয়া সুইফট মেসেজের মাধ্যমে ১০০ কোটি ডলার স্থানান্তরের জন্য নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বার্তা পাঠায়। তারাও পরপর চারটি মেসেজে সাড়া দিয়ে ১০ কোটি ডলার স্থানান্তর করে দেয়। পঞ্চম মেসেজে তাদের সন্দেহ হলে অর্থ স্থানান্তরের প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। তাই আমাদের গরীব-মেহনতী জনগণের ৯০ কোটি ডলার চুরি যাওয়া থেকে রক্ষা পায়। আর ১০ কোটি ডলারের মধ্য থেকে ২ কোটি ডলার ফিরিয়ে দিয়েছে আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ শ্রীলংকা। এই অর্থ তাদের একটি ব্যাংকে স্থানান্তরিত হয়ে এসেছিল। সন্দেহ জাগায় তারা এই অর্থ ছাড় না করে খোঁজ নিয়ে প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দেয়। এ এক মহতি উদ্যোগ। শ্রীলংকা সরকারকে এজন্য ধন্যবাদ দিতেই হবে।
নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে শুধু আমদের দেশেরই টাকা নয়, শতাধিক দেশের অর্থ জমা আছে। শুধু আমাদের দেশের একাউন্ট হতেই এই অর্থ চুরি হলো। নজীরবিহীন এ ঘটনায় দেশী বিদেশী তদন্ত এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে আমাদের অর্থমন্ত্রী এক সাক্ষাতকারে বলে দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কারো না কারো সংশ্লিষতা ছাড়া এটা ঘটতেই পারে না। তদন্ত ফলাফল যা-ই হোক না কেন ৮ কোটি ডলার যে কোনভাবে ফিরে পাওয়া যাবে না-তা এক প্রকার নিশ্চিত। তাই ভবিষ্যতে যাতে আর এধরনের কোন চুরির ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে সরকারকে কঠোর প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নিতে হবে।






মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.