![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"ছাহিবুল কাওছার, ছাহিবুল মাহশার, ছাহিবুল মাক্বামিল মাহ্মুদ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশী প্রকাশ করা তথা ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ; যা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ বা সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম ও ঈদে আকবর।
আল্লাহ জাল্লাশানুহু আমাদের জন্য তথা সারা আলমের জন্য তাঁর হাবীব, নূরে মুজাস্্সাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উছীলায়ে কুবরা তথা সবচেয়ে বড় উছীলা বানিয়েছেন। আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সারা আলমের জন্য রহমাতুল্লিল আলামীনরূপে প্রেরণ করেছেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আগমন তথা বিলাদত শরীফ এবং তাঁর বেছাল মুবারকও সারা আলমের জন্য আল্লাহ পাক-এর রহমত এবং ফজল ও করমস্বরূপ।
সারা বিশ্বে আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জাত পাক, সীরাত সূরাতকে গুরুত্বসহকারে অনুধাবন করার জন্য ঈদে মীলাদুন্্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গুরুত্ব সহকারে পালন করে আসছেন আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ইমামগণ।
প্রকৃতপক্ষে ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই হাক্বীক্বী ঈদ। কারণ, সেই দিন স্বয়ং আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যমীনে তাশরীফ আনেন।
হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম-এর সৃষ্টি, যমীনে আগমন ও বিদায় শুক্রবার দিন হওয়ার কারণে আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্ পাক-এর তরফ থেকে শুক্রবার দিনকে ঈদের দিন বা খুশীর দিন হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে ইবনে মাযাহ ও মুয়াত্তা শরীফের বরাতে “হযরত ওবায়েদ বিন সাব্বাক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুরসাল সনদে বর্ণনা করেন, আর হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুত্তাছিল সনদে বর্ণনা করেন, হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক জুমুয়ার দিনে ইরশাদ করেন, ‘হে মুসলমান সম্প্রদায়! এটি (জুমুয়ার দিন) এমন একটি দিন যাকে আল্লাহ্ পাক ঈদস্বরূপ নির্ধারণ করেছেন।
সুতরাং তোমরা এ দিনে গোসল করবে এবং যার নিকট কোন সুগন্ধি (আতর) আছে সে কোনরূপ অসুবিধা মনে না করে তা মেখে নিবে বা ব্যবহার করবে আর অবশ্যই তোমরা মিসওয়াক করবে।’
ইবনে মাযাহ ও মিশকাত শরীফের বরাতে তিনি আরো বলেন, “হযরত আবূ লায়লা ইবনে আব্দুল মুনযির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘জুমুয়ার দিন সকল দিনের সর্দার এবং সকল দিন অপেক্ষা আল্লাহ্ পাক-এর নিকট অধিক শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত।
এটি ঈদুল আযহার দিন ও ঈদুল ফিত্রের দিন অপেক্ষাও আল্লাহ্ পাক-এর নিকট অধিক শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত। এ দিনটিতে পাঁচটি (গুরুত্বপূর্ণ) বিষয় রয়েছে, (১) এ দিনে আল্লাহ্ পাক হযরত আদম আলাইহিস্ সালামকে সৃষ্টি করেছেন, (২) এ দিনে তাঁকে যমীনে প্রেরণ করেছেন, (৩) এ দিনে তাঁকে ওফাত দান করেছেন, (৪) এ দিনটিতে এমন একটি সময় রয়েছে যে সময়টিতে বান্দা আল্লাহ্ পাক-এর নিকট কিছু চাইলে তিনি অবশ্যই তাকে তা দান করেন যে পর্যন্ত না সে হারাম কিছু চায় এবং (৫) এ দিনেই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। এমন কোন ফেরেশ্তা নেই, আসমান নেই, যমীন নেই, বাতাস নেই, পাহাড় নেই, সমুদ্র নেই, যে জুমুয়ার দিন সম্পর্কে ভীত নয়।”
হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম-এর সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকার কারণে যদি জুমুয়ার দিন ঈদের দিন বা খুশীর দিন হতে পারে। শুধু তাই নয় এমনকি ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আযহার চেয়েও সম্মানিত, ফযীলতপ্রাপ্ত ও মহান হয় তাহলে যে মহান ব্যক্তিত্বের উছীলায় হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম-এর যমীনে আগমন ঘটলো সেই মহান ব্যক্তির সাথে যেই দিনটি সম্পর্কযুক্ত সেই দিনটির সম্মান, ফযীলত ও মহত্ম কতটুকু হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অর্থাৎ তা অবশ্যই ঈদের দিন হবে। এমনকি জুমুয়ার দিন অপেক্ষাও তা হবে শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত ঈদের দিন।
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম” এ আয়াত শরীফটি শেষ পর্যন্ত পাঠ করলেন। তখন তাঁর নিকট এক ইহুদী ছিল সে বলে উঠলো, “যদি এই আয়াত শরীফ আমাদের ইহুদী সম্প্রদায়ের প্রতি নাযিল হতো আমরা আয়াত শরীফ নাযিলের দিনটিকে “ঈদ” বলে ঘোষণা করতাম।” এটা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, এ আয়াত শরীফ সেই দিন নাযিল হয়েছে যেদিন এক সাথে দু’ঈদ ছিল- (১) জুমুয়ার দিন এবং (২) আরাফার দিন।” (তিরমিযী)
হাদীছ শরীফে উম্মতে মুহম্মদীর জন্য জুমুয়ার দিনের সাথে সাথে আরাফার দিনকেও ঈদের দিন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও বুখারী ও মুসলিম শরীফে হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদীছ শরীফে আরাফার দিনকে উম্মতে মুহম্মদীর জন্য ঈদের দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, হযরত রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “রোযাদারের জন্য দু’টি খুশি রয়েছে। একটি তার ফিত্র বা ইফতারের সময় এবং অপরটি তার রবের সাক্ষাতের সময়।”
বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ হতে হাদীছ শরীফ পেশ করে হাদীছ শরীফে রোযাদারের জন্য দু’টি খুশি বা ঈদের কথা বলা হয়েছে। একটি হচ্ছে তার ইন্তিকালের পর আল্লাহ্ পাক-এর সাথে সাক্ষাতের সময়। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে তার ফিত্র বা ইফতারের সময়। আর ফিত্র বা ইফতার হচ্ছে দু’প্রকার (১) কুবরা, (২) ছুগরা।
কুবরা হচ্ছে ঈদুল ফিত্র যা হাদীছ শরীফ দ্বারা ঈদের দিন হিসেবে প্রমাণিত।
আর ছুগরা হচ্ছে যা রোযাদার প্রতিদিন মাগরিবের সময় করে থাকে।
যারা বলে “শরীয়তে দু’ঈদ অর্থাৎ ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্র ব্যতীত অন্য কোন ঈদ নেই।” তাদের কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কুরআন-সুন্নাহ্র খিলাফ।
প্রকৃতপক্ষে কুরআন-সুন্নাহ্র আলোকে মু’মিন, মুসলমানদের জন্য ঈদ শুধুমাত্র দু’টিই নয়, আরোও রয়েছে। অর্থাৎ ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ যা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ বা সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম ও ঈদে আকবর।
কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ দ্বারা অকাট্টভাবে প্রমাণিত যে, “ঈদ-ই-মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছে, সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে ফযীলতপূর্ণ ঈদ।” কেননা, হাদীছ শরীফে রয়েছে, হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম জুমুয়ার’ দিন তাশরীফ এনেছেন এবং বিদায় নিয়েছেন তাই জুমুয়ার দিনকে ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্র-এর চেয়েও শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে। যদি হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম-এর আগমন ও বিদায়ের দিন ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্রের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হয় তবে যাঁকে সৃষ্টি না করা হলে হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম সৃষ্টি হতেন না, সেই আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আগমন ও বিদায়ের দিন কেন শ্রেষ্ঠ ঈদ হবে না? মূলতঃ ঈদ-ই-মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবশ্যই সবচেয়ে বড় ঈদ বা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ ও সাইয়্যিদে ঈদুল আ’যম ও ঈদুল আকবর তথা ঈদুল আ’যম বা সবশ্রেষ্ঠ ঈদ।"
©somewhere in net ltd.