![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যারা পাকিস্থানি পণ্য বর্জন করতে বলে তাদের কাছে জানতে চাই উনার আগমনে কোনো বাধা নাই কেন ??
উনাকে নিয়ে আলোচনা করার জন্য সুশীলদের উপর দিলাম।
ফারিনা আরশাদ
জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ
কূটনীতিককে প্রত্যাহার করে নিল পাকিস্তান
জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় পাকিস্তানি কূটনীতিক ফারিনা আরশাদকে গতকাল বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাংলাদেশ অনানুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে প্রত্যাহার করতে বলার প্রায় এক সপ্তাহ পর পাকিস্তান এ পদক্ষেপ নিয়েছে। এই নিয়ে চলতি বছর পাকিস্তানের দুজন সরকারি কর্মকর্তাকে ঢাকা থেকে প্রত্যাহার করে নিতে হলো পাকিস্তানকে।
সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। আর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভিবাসন পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে পিআইএর ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়েন ফারিনা আরশাদ। গত আড়াই বছর তিনি ঢাকায় দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) হিসেবে কাজ করেছেন।
এর আগে জাল পাসপোর্ট ও মুদ্রা পাচারের অভিযোগে গত ১২ জানুয়ারিতে বনানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হাইকমিশনের কনস্যুলার কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহার খানকে। এরপর পাকিস্তানের হাইকমিশন মুচলেকা দিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে নেয় এবং গত ৩১ জানুয়ারি ইসলামাবাদে ফেরত পাঠায়।
সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, ফারিনা আরশাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ ওঠার পর সপ্তাহ খানেক আগে তাঁকে প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়। পাকিস্তান এতে সম্মত হয়। অবশ্য গতকাল পাকিস্তান হাইকমিশনে যোগাযোগ করলে তারা ফারিনা আরশাদকে প্রত্যাহারের বিষয়ে কিছু জানাতে চায়নি।
কয়েকজন সন্দেহভাজন জেএমবি সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং ইদ্রিস শেখ নামের একজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের এক নারী কূটনীতিকের নাম আসে। এরপর গণমাধ্যমে ফারিনা আরশাদের নামটি চলে আসে। তখন পাকিস্তান হাইকমিশন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠায়। এরপর গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবাদপত্রে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, গোয়েন্দা পুলিশের মাধ্যমে পাওয়া কাল্পনিক খবরটি কোনো রকম যাচাই না করেই ছেপেছে গণমাধ্যমের একটি অংশ।
পরে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সুনির্দিষ্ট কোনো রাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করে বা বাংলাদেশে কর্মরত কোনো কূটনীতিক বা কোনো কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে গণমাধ্যমে কোনো তথ্য দেয়নি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, গতকাল ফারিনা আরশাদ ঢাকা ছেড়ে গেছেন।
জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ফারুক চৌধুরী সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাকিস্তান তার কূটনীতিককে প্রত্যাহার করার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়, তিনি যে কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তা স্বাভাবিক কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে পড়ে না। আমি আশা করব, পাকিস্তান এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবে এবং এমন কোনো কাজ করবে না, যা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে দেয়াল সৃষ্টি করবে।’
জাল মুদ্রা পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশে গত পাঁচ বছরে অন্তত ২২ জন পাকিস্তানি নাগরিক গ্রেপ্তার হয়েছেন। মুদ্রা পাচারের নেটওয়ার্ক থেকে বিভিন্ন সময় জঙ্গি সংগঠনকে অর্থায়ন করা হচ্ছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
এদের মধ্যে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে গ্রেপ্তার হওয়া দুই পাকিস্তানি মো. দানিশ ও সাব্বির আলী ঢাকার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বলেছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান থেকে ভারতীয় জাল মুদ্রার চালান আকাশপথে এ দেশে আনে। পরে তা নেপাল হয়ে ভারতে পাঠায়।
এ ধরনের জাল মুদ্রা বাজারজাতকারী একটি চক্র বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির অর্থায়নে জড়িত। ২০০৮ সালের ২৪ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে জেএমবির তৎকালীন শুরা সদস্য রফিকুল ইসলাম ওরফে জোবায়ের ও সদস্য হযরত আলী গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ পায়। রফিক তখন জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, তাঁদের একটি গ্রুপ ভারতীয় জাল মুদ্রা পাচার করে সংগঠনের তহবিল সংগ্রহ করে থাকে।
জাল মুদ্রা ও সোনা পাচারের অভিযোগে গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের (পিআইএ) এ দেশীয় ব্যবস্থাপক আলী আব্বাসের বাসায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। তখন আলী আব্বাস ছুটিতে পাকিস্তান থাকার সময় তাঁর বাসায় তল্লাশি চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের হেনস্তা করার অভিযোগ আনে ইসলামাবাদ। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা থেকে কয়েক দিন ফ্লাইট পরিচালন বন্ধ রাখে পিআইএ। পরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকা ছেড়ে যান আলী আব্বাস।
বাংলাদেশে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরুর পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্য দিয়েই যাচ্ছে বাংলাদেশের সম্পর্ক। দণ্ডিত ব্যক্তিদের পক্ষে এমনকি বিচার নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাকিস্তান ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত পাঁচবার বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছে। সে দেশের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়েছে। প্রতিবারই পাকিস্তানের এসব তৎপরতার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২২ নভেম্বর বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির প্রতিবাদে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিও দিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার সুজা আলমকে গত ২৩ নভেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়েছে। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে গত ২৯ নভেম্বর ইসলামাবাদে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে পাকিস্তান ’৭১-এ গণহত্যার দায় অস্বীকার করেছে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির প্রথম আলোকে বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও জঙ্গি সংগঠনগুলোকে অর্থায়ন পাকিস্তানের জন্য নতুন ঘটনা নয়। তারা দেশে দেশে জঙ্গি রপ্তানি নীতি অব্যাহত রেখেছে এবং তাদের দূতাবাস এ কাজে মদদ দিচ্ছে।
সূত্র: প্রথম আলো
তাহলে পাকিস্থানিদের উপর আস্থা রাখি কি করে ????
©somewhere in net ltd.