নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফিরে এলাম......

........

আহমাদ জাদীদ

আহমাদ জাদীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাখির বাসা (পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিলম্বিত পোস্ট)

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩১

অন্তু ১০ আনা বিস্ময়ের সাথে ৬ আনা দুঃখ মেশানো দৃষ্টিতে বাইরে থেকে উড়ে এসে ঘরের ভেতর আটকে যাওয়া দোয়েলটার দৌড়াদৌড়ি দেখছে । দোয়েল পাখি ঢুকে পড়েছে এজন্য সে বিস্মিত হয়নি । তার ঘরের আশপাশ এমনিতেই অনেকটা খোলামেলা, তাই মাঝেমাঝেই তাই চড়ুই পাখি ঘরের মাঝে এসে পড়ে আবার জানালা খুলে দিলেই আবার সুড়ুত করে বেরিয়ে যায় ।

কিন্তু এই দোয়েলটা বের হতে পারছে না । আলমারির উপর বসে আছে । একটু পর পর হুড়হুড় করে উড়ে এসে জানালার কাছে দিয়ে চক্কর মেরে আবার আলমারির ওপর ফিরে গেল ।

আর একারণেই অন্তুর বিস্ময় ও দুঃখ । কয়েকদিন আগেই সে তার সাধারন জ্ঞানের বইতে পড়েছে, দোয়েল বাংলাদেশের জাতীয় পাখি । এটা ভেবেই অন্তুর মন আরো খারাপ হয়ে গেল । একটা দেশের জাতীয় পাখি কেন এত ভুদাই হবে? না, না , ভুদাই বলা যাবে না । মা অন্তুকে এসব ভাষায় কথা বলতে মানা করে দিয়েছে । তাহলে কি বলা যায়, “সিলি দোয়েল!” ভাবল অন্তু ।

কিছুদিন পরের কথা, শহরের অন্য প্রান্তে অন্তুর বাবা নতুন বাসা বানিয়েছেন, অল্প কয়েদিন পরেই মালপত্র গুছিয়ে সেখানে অন্তুরা চলে যাবে । বাসা ছেড়ে যাওয়ার কথা শুনে কয়েকদিন ধরেই অন্তুর মন খারাপ । অন্তুর কাছে এই বাসাটাই বেশ লাগে, চারদিক খোলা-মেলা, চড়ুই পাখি ভয়ডর ছাড়া একেবারে কাছাকাছি ছোট ছোট লাফ দিয়ে চলে, দেখতে বেশ লাগে অন্তুর । বাসা বদল করার কথা মনে হতেই আরেকটি ঘটনা মনে পড়ে গেল অন্তুর ।

বেশ কয়েকদিন আগের কথা, বাসার দক্ষিণদিকের জানালার ফাঁক গলে একটি বুলবুলি দম্পতির আনাগোনা শুরু হয়েছিল । তারা ঢুকত আর একটু পরে বেরিয়ে যেত, হুটোপুটির শব্দ শুনে অন্তু গিয়ে বুলবুলি পাখিগুলোর কান্ডকারখানা দেখত । তারা ছোট ছোট লাফ দিয়ে ঘুরে ঘুরে বাসা বানানোর উপযুক্ত জায়গা খুঁজত । পছন্দমত জায়গা বেছে তারা বাইরে থেকে নানা রকম খড়কুটো, ছেঁড়া কাগজ, ফিতা ইত্যাদি দিয়ে একটা কাঠামো বানাত, তাদের ঘর বানানো দেখে অন্তুর ভাল লাগলেও বাসার কাজের বুয়ার ততটা লাগেনি । কারণ অনেক সময় খড়কুটো নিচে পড়ে ঘর নোংরা হত, আর মাঝে মাঝে পাখিদের ‘পটি’ও থাকত । তাই একদিন স্কুল থেকে এসে অন্তু দেখে পাখিদের বাসা সমূলে উচ্ছেদ করা হয়েছে । অন্তু ভাবল, তারা বুঝি আর আসবে না ।

কিন্তু না, তারা আবার এল । আগেরবারের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তারা খড়কুটো বারবার নিয়ে এসে বাসা না বানিয়ে একবারে অনেকখানি কাঁচামাল নিয়ে এসে তারপর ঘর বানাত । পাখিদুটির বুদ্ধি দেখে অন্তুর বিস্ময়ের সীমা রইল না । কিন্তু আবার একদিন স্কুল থেকে ফিরে দেখতে পায় আবার পাখির বাসার জায়গাটা পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে । এমন করে প্রায় তিন-চারবার করা হল । প্রতিবারই অন্তু ভাবে, পাখি দুটি বোধহয় আর ফিরবে না । কিন্তু তারা একটু পরেই ফিরে আসে ।

একদিন হল কি, পাখি দুটো আর ফিরে এল না । অন্তু রোজ পাখি দুটোর জন্য অপেক্ষা করে । কিন্তু তারা আর ফিরে আসেনি ।

বাসা ছেড়ে দেয়ার সময় পাখি দুটোর কথা খুব করে মনে পড়ছে অন্তুর, না জানি বাসা ভেঙ্গে দেয়ার পর তাদের কতটা খারাপ লেগেছিল । অন্তু মনে মনে ঠিক করল, তাদের নতুন বাসায় যদি কোন পাখি যদি বাসা বানাতে আসে তাহলে সে সেই বাসা কিছুতেই আর ভাংতে দেবে না, কিছুতেই না ।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ছোট অন্তুর চোট্ট গল্পে ভাল লাগা :)

+

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৬

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ওহহো .মিসাইছিলাম ;)

৫ম বর্ষপূর্তির শুভেচ্ছা :)

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৭

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ । ভালো থাকবেন । :)

৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৮

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: ভাল ছিল। পঞ্চম বর্ষের শুভেচ্ছা।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৯

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ । শুভকামনা থাকল । :)

৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৫

সুমন কর বলেছেন: অন্তুর পাখিদের কথা ভালো লাগল। +।

৫ম বর্ষপূর্তির শুভেচ্ছা..... !:#P

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫০

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানবেন । :)

৫| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৫

ভারসাম্য বলেছেন: অভিনন্দন!

পাখিরা আর বাসা বাঁধবে না। কাজেই তাড়াবার প্রয়োজনও পড়বে না। আর যদি সত্যিই কখনো বাসা বাঁধতে পারে, তাহলে পাখিরাই (অ)মানুষগুলোকে তাড়িয়ে দেবে। ;)

শুভকামনা। :)

২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ :)

৬| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৪

আরজু পনি বলেছেন:

অন্তুর ইচ্ছা বাস্তবায়িত হোক ।
বর্ষপূর্তির শুভেচ্ছা রইল, জাদীদ ।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৫

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে :) :)

৭| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৯

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: শিশুদের মধ্যে এই বোধগুলো কাজ করা খুব খুব দরকার।

পঞ্চম বর্ষপুর্তির শুভেচ্ছা রইলো। :)

২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৯

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: হুম, সত্যিই দরকার ।

ধন্যবাদ থাকল :)

৮| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বাহ মিষ্টি গল্প| লেখকের ভাগ্য খারাপ যে, ছোটরা ব্লগ পড়ে না!
পঞ্চম বছরে! বিশাল পথ! শুভেচ্ছা

২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪১

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: আমিও সেটাই ভাবছিলাম ।

আসলেই বিশাল পথ 8-| , মনে পড়তেই নিজেরে বুইড়া বুইড়া মনে হৈতেছে! =p~ :``>>

৯| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: পাখিদের ভালোবাসতাম ছোটবেলায়। এখনও কি সেই ভালোবাসার কিছু অবশিষ্ট আছে? পাখিদের বাসায় যেতে চাইলে ওরা কি আমাকে বরণ করে নেবে সানন্দে? ভাবালো আপনার লেখাটা।

পঞ্চম বর্ষপূর্তির শুভেচ্ছা।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩০

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: জেনে ভালো লাগল :)

শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.