![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গুণীজনেরা বলেন, ব্লগ লেখা মানে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো। আমার অনেক মোষ তাড়ানোর ইচ্ছা আছে। সমাজের অসঙ্গতি দেখলে মনটা বিদ্রোহ করতে চায়। উপায় না দেখে তখন মোষ তাড়ানোর চেষ্টা করি। দেখা যাক কতদূর কি করা যায়। কারন , ব্যস্ততা আমাকে দেয়না অবসর। ব্যস্ততার ফাঁকে চেষ্টা থাকবে ব্লগে সচল থাকার।
স্বাধীনতার চার দশক অতিক্রান্ত হলেও যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের বিষয়টি রাজনীতির গোলক ধাঁধাঁর আবর্তে ধামাচাপা পড়ে থাকে দীর্ঘ দিন। কাল পরিক্রমায় ইস্যুটি ফিকে হতে হতে এক সময় একাত্তরের হায়েনাদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়টি জাতি প্রায় বিস্মৃত হতে বসেছিল । শহীদ জননী জাহানারা ইমাম তাঁর একক প্রচেষ্টায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ১৯৯২ সালে জাতিকে একবার জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হন। কিন্তু জাহানারা ইমাম তার শুরু করা আন্দোলনের শেষ পরিনতি দেখে যেতে পারেন নি। উপরন্তু তদানীন্তন সরকারের অসহযোগিতায় দেশদ্রোহিতার অপবাদ মাথায় নিয়ে তিনি মৃত্যু বরণ করেন। এবার শাহবাগের গণজাগরণ জাতিকে আবার নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। যে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য ত্রিশ লক্ষ শহীদ আত্ম ত্যাগ করেছেন, দু লক্ষ মা বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন, লাখ লাখ শরণার্থী হয়েছেন গৃহহারা, বাস্তুহারা ; সে দেশেরই মাটিতে বসবাস করে, আলো – বাতাস, অন্ন ধ্বংস করে একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা হায়েনার হাসি হাসবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন পূর্বক আদালত চত্বরে দেশপ্রেমিক জনতাকে কটাক্ষ করে ভি চিহ্ন দেখাবে এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এ দেশের দেশপ্রেমিক তরুণ প্রজন্ম সেটা মেনে নেয় ও নি। কারণ তাদের ধমনীতে যে বইছে শহীদেরই রক্ত।
এ কথা ঠিক যে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সরকার প্রধানদের নিকট যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের অর্থনৈতিক এবং অবকাঠামোগত পুনর্গঠনের বিষয়টি বেশি অগ্রাধিকার পাওয়ায় তারা যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি সে ভাবে আমলে নেন নি। তাদের উদারতার সুযোগে পরাজিত শত্রুরা আবার মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে সংগঠিত হতে শুরু করে। পলাতক যুদ্ধাপরাধীরা দেশে ফিরে এসে মূল রাজনৈতিক ধারায় হয় পুনর্বাসিত। ইসলাম রক্ষার নামে যারা একাত্তরে মুক্তিকামী জনতার উপর বর্বরতম গনহত্যা, ধর্ষণ, লুঠতরাজ, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি ঘৃণ্য অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল; স্বাধীনতার পর এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে তারা আবার শুরু করে ধর্ম ব্যবসা। কিন্তু ধর্মের আড়ালে স্বাধীনতা বিরোধী এ দলটির মৌলবাদী চেতনা , সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রবাদিতা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য আর নাশকতা দেশের আপামর জনসাধারণ কর্তৃক প্রত্যাখাত হয়। ফলশ্রুতিতে এ পরজীবী দলটি নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে অন্য রাজনৈতিক দলের ঘাড়ে চেপে নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থের অপচেষ্টা চালিয়ে কিছুটা সফলকাম হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে স্বাধীন বাংলাদেশে রাজাকারের গাড়িতে উড়েছে জাতীয় পতাকা! এর চেয়ে আর কত কদর্যভাবে জাতীয় পতাকার অবমাননা করা সম্ভব তা আমার জানা নেই।
স্বাধীনতার ৪২ বছর পর বাঙালি জাতি আবার জেগে উঠেছে তরুণ প্রজন্মের ডাকে। এ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ না দেখলেও তাদের হৃদয় হতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উৎসারিত হচ্ছে আগ্নেয়গিরির লাভার মত। দেশপ্রেমের মূলমন্ত্রে উজ্জেবিত হয়ে তারা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে দেশের আপামর জনতাকে টেনে এনেছে শাহবাগের মোহনায়। ইতিহাস বিস্মৃত, স্মৃতিভ্রষ্ট প্রবীণ সমাজ তারুণ্যের এ শক্তি দেখে আবার আশায় উদ্বেলিত হয়েছেন। শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন তাই ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী, পেশা নির্বিশেষে দেশের আপামর জনতার অংশ গ্রহনে পরিণত হয়েছে সার্বজনীন এক গণ আন্দোলনে।
স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এবং তাদের সহযোগীরা অপরাজনীতির আশ্রয় নিয়ে জনতার এ প্রানের জোয়ারকে ভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকে নাস্তিকদের আন্দোলন বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিটি দেশের কতিপয় ধর্মপ্রাণ মুসলমান দের ভুলিয়ে ভালিয়ে নাশকতা মূলক কর্মকাণ্ডে প্ররোচনা দিয়ে দেশের সর্বাত্মক ক্ষতি সাধনে তৎপর হয়েছে। তাদের এ অপ তৎপরতার প্রেক্ষিতে তরুণ প্রজন্ম নতুন করে শপথ নিয়েছে উগ্রবাদী এ সংগঠনটি নিষিদ্ধ এবং সকল চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার। আশার কথা, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে রাজাকার সাইদির ফাঁসির রায়ে দেশপ্রেমিক জনতার আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু রায় ঘোষণার পর থেকেই দুর্ভাগ্যজনক ভাবে জামাত শিবির চক্র দেশ ব্যাপী সন্ত্রাস, নৈরাজ্য আর নাশকতা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার অশুভ চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে জামাত শিবিরের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক প্রান হানি ঘটেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এ ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসলীলার দায় অবশ্যই জামাত শিবিরের উপরই বর্তায়। কারণ তারা জামাত নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হলে দেশে গৃহ যুদ্ধ বাধিয়ে দেবে বলে ইতোপূর্বে হুমকি দিয়েছিল। স্বাধীন দেশে যে কোন গোষ্ঠীর এ ধরনের হুমকি নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। এ দলটিকে অচিরেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সন্ত্রাস ও নাশকতার সাথে জড়িত সবাইকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্ত আলো বাতাসে বিচরণ করে দেশদ্রোহী এ দলটির রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার স্পর্ধা জাতি আর বরদাশত করবে না।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখন আর কোন রাজনৈতিক এজেন্ডা নয়। শাহবাগের চেতনায় এটি এখন দেশপ্রেমিক জনতার প্রানের দাবিতে পরিনত হয়েছে। তাই এ ইস্যুটিকে নিয়ে রাজনীতির চেষ্টা কোন দলের জন্যই সুখকর হবে না। গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের ব্যানারে পরিচালিত হলেও এর নেতৃত্ব এখন মূলত বাম ছাত্র সংগঠনের হাতে। ছাত্রলীগ ও আন্দোলনের সাথে পূর্ণ একাত্মতা ঘোষণা করে এ আন্দোলনের সাথে রয়েছে। উদ্দেশ্য যদি মহৎ হয় তাহলে বাঙালি জাতি সকল বিভেদ ভুলে এক হতে পারে – শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ জাতিকে এ মহান শিক্ষাই দিয়েছে। তারুণ্যের এ আন্দোলন কোন হীন রাজনৈতিক স্বার্থ প্রসূত নয় বলেই প্রায় এক মাসে পৌঁছানো এ আন্দোলন এখনো অহিংসভাবে চলছে, কোথাও কোন বিন্দুমাত্র অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, নেতৃত্ব নিয়ে কোন প্রকার কোন্দল সৃষ্টি হয় নি। দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এটি বিরল দৃষ্টান্ত হিসাবে ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তারুণ্যের সাফল্যের এ সোনার কাঠি রুপোর কাঠি নিহিত রয়েছে আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সততার মাঝে। তাই যারা এ আন্দোলনের মধ্যে রাজনীতির প্রলেপ দিয়ে দলীয় স্বার্থে ব্যবহারের স্বপ্ন দেখছেন তারা নিঃসন্দেহে বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন।
গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন নিয়ে প্রচলিত কিছু মিথঃ
ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্টগণ কোন পেশাদার রাজনীতিবিদ নন। অনেকেরই হয়তো জীবনে শ্লোগান দেওয়ার অভিজ্ঞতা এবারই প্রথম। তাদের সাংগঠনিক নেতৃত্ব দেওয়ায় অনভিজ্ঞতা থাকতে পারে। এ কারনেই হয়তো এ আন্দোলনের লাইম লাইটে রয়েছে কিছু ছাত্র সংগঠন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে এটি ওই বিশেষ ছাত্র সংগঠন গুলির দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের আন্দোলন। অথচ এ আন্দোলন নিয়ে দেশে প্রচলিত হয়ে গেছে কিছু রাজনৈতিক মিথঃ
(১) সরকার বিগত ৫ বছরের বিভিন্ন ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে নাটক করছে। সরাসরি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চলছে গন জাগরণ মঞ্চের এ আন্দোলন।
(২) এ আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে বিভিন্ন বাম রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন। তারা জনতার আবেগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডা ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের পাঁয়তারা করছে।
(৩) যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুকে ব্যবহার করে আওয়ামীলীগ জামাতকে চাপে ফেলে কৌশলে বি এন পি কে নিঃসঙ্গ করার চেষ্টা করছে।
(৪) আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যই ক্ষমতার মেয়াদের ক্রান্তিলগ্নে এসে এ ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে এসেছে। নইলে ইতিপূর্বে দুইবার ক্ষমতায় এলেও তখন তারা কেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে মাথা ঘামায় নি?
(৫) শাহবাগের আন্দোলনকারী ব্লগারেরা সব নাস্তিক। তাই গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকদের আন্দোলন।
মিথের যুক্তি খণ্ডনঃ
(১) গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন আপাতত দৃষ্টিতে সরকারের জন্য পোয়া বারো প্রতীয়মান হলেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুর বিপরীতে সরকারের অতীতের ব্যর্থতা সমূহ জনগণ একেবারে ভুলে যাবে এমনটি ভাবা বোকামির নামান্তর। কারণ শাক দিয়ে যেমন মাছ ঢেকে রাখা যায়না, তেমনি বিগত ৫ বছরের ব্যর্থতা গুলিও একটা ইস্যু দিয়ে ঢেকে রাখা সম্ভব হবে না। অবশ্য অস্বীকার করার উপায় নেই যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আওয়ামীলীগের নির্বাচনী এজেন্ডা ছিল। তাই এ ইস্যু থেকে তারা কিছুটা রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আওয়ামীলীগের কিছুটা রাজনৈতিক স্বার্থের বিনিময়ে যদি জাতির বৃহত্তর লক্ষ্য অর্জিত হয় তবে এতে দোষের কিছু দেখিনা। এ প্রসঙ্গে টিভি তে প্রচারিত একটি বিজ্ঞাপনের ভাষ্য বেশ প্রাসঙ্গিক- দাগ থেকে যদি দারুন কিছু হয় তবে দাগই ভাল।
(২) দেশে বাম ধারার রাজনীতির গ্রহনযোগ্যতা অতি নগণ্য। এসব দলের মধ্যে যারা নেতা তারাই কর্মী আবার তারাই শ্রোতা। তাই বামদের এজেন্ডা ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের দাবি এ দেশে গ্রহনযোগ্যতা পাবে না। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ দেশের ৮৫ % মানুষ মুসলমান হলেও তারা একেবারে ধর্মান্ধ বা গোঁড়া নয়। এ দেশের জনগন সকল ধর্মের সহাবস্থানে বিশ্বাসী। তাই ধর্মভিত্তিক দল হিসাবে নয়, যুদ্ধাপরাধী দল হিসাবে জামাত শিবিরের রাজনীতি বন্ধের দাবিটি বেশ যৌক্তিক। জামায়াতের বর্তমানের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারনে তাদের নিষিদ্ধ করণের বিষয়টি আজ সময়ের দাবি তে পরিনত হয়েছে।
অতএব সহজে বোঝা গেল গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন সচেতন দেশপ্রেমিক জনতার আন্দোলন। এখানে কোন রাজনৈতিক দলের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের কোন সুযোগ নেই।
(৩) সমগ্র দেশ ব্যাপী সাড়া জাগানো যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে সৃষ্ট এ গণজাগরণে বি এন পি ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ বিবেচনা করে নিরবতা পালন করেছে। এ ইস্যু নিয়ে শুরুর দিকে বি এন পি’র অবস্থান ছিল অনেকটা ধরি মাছ না ছুঁই পানি টাইপের। কারন এ ইস্যুর পক্ষে থাকলে তাদেরকে রাজনৈতিক মিত্র জামাতকে হারাতে হবে। আবার বিপক্ষে থাকলে দেশের তরুন প্রজন্মের কাছে তাদের গ্রহন যোগ্যতা থাকবে না । তাই এত দিন এক ধরনের ধোঁয়াশা মূলক অবস্থানে ছিল বি এন পি। দেশের সর্বস্তরের জনতার আশা ছিল বি এন পি শীঘ্রই যুদ্ধাপরাধ বিরোধী অবস্থানের ঘোষণা দিয়ে দলকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের একটি ঐতিহ্যবাহী দল হিসাবে পুনঃ প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু বিস্ময়কর ভাবে বেগম জিয়ার সাম্প্রতিক বক্তব্যে জনগণের সে আশায় গুঁড়ে বালি হয়েছে। এটা সত্য যে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বন না করলে বি এন পি রাজনীতিতে কিছুটা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়বে। কিন্তু বি এন পি’র রাজনৈতিক ভিত কি এতই ঠুনকো যে তারা আপামর জনতার প্রানের আবেগকে বিন্দুমাত্র সম্মান না জানিয়ে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় রাজাকারদের পক্ষে সাফাই গেয়ে যাচ্ছেন? একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসাবে বেগম জিয়ার এহেন রাজাকার প্রীতি খুবই নিন্দনীয় এবং অনভিপ্রেত। দেশ জুড়ে চালানো জামাত শিবিরের তাণ্ডবকে নৈতিক সমর্থন দিয়ে তিনি দেশবাসীর নিকট নিজের অবস্থান কে বিতর্কিত করেছেন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কারি বাহিনীর সাথে জামাতের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাকে গণহত্যা বলে বি এন পি নেত্রী প্রাকারান্তরে জামাত নেতাদের একাত্তরের গনহত্যা কে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বি এন পি সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থের উর্ধে উঠে যদি জামায়াত সংশ্রব পরিত্যাগ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে জনতার কাতারে আসে তবে রাজনৈতিক ভাবে তারাই লাভবান হবে। বি এন পি জামাত জোটের সুফল যে পরজীবী দল জামায়াত পুরোপুরি ভোগ করছে তা অনুধাবনের জন্য রাজনৈতিক বিশ্লেষক হওয়ার প্রয়োজন পড়েনা। ইতিহাসের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পথে চলার এক মোক্ষম সুযোগ এখন বি এন পি’র সামনে। কিন্তু সে সুযোগ তারা হারাতে বসেছে তাদের অতিরিক্ত জামায়াত প্রীতির কারনে। বিষয়টা অত্যন্ত মর্মপীড়া দায়ক।
( ৪) আগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয়নি বলে এখন করা যাবে না এমন যুক্তি হাস্যকর। অপরাধ কখনো তামাদি হয় না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৫০-৬০ বছর পরও
যুদ্ধাপরাধের বিচারের নজীর রয়েছে। “ ইট ইজ বেটার লেট দ্যান নেভার” তাই দেরিতে হলেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের শুভ উদ্যোগকে দল মত নির্বিশেষে সকলের সমর্থন দেশ প্রেমের পরিচায়ক। ইতিহাসের কলংক মোচন পূর্বক দায় মুক্তির এখনি শ্রেষ্ঠ সময়।
(৫) শাহবাগের গন জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তথা দেশপ্রেম থেকে। এ দুটির সাথে ধর্মের কোন বিভেদ নেই। গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ইসলাম বিরোধী কোন বক্তব্য এসেছে এমন প্রমান কেউ দিতে পারবে না। ব্লগে যদি কোন ব্লগার ইসলাম বিদ্বেষী কুরুচিপূর্ণ পোস্ট দেয় তবে তার দায় অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্লগারের। এ জন্য ঢালাওভাবে সকল ব্লগারকে কিংবা গন জাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকে ধর্মের বিরুদ্ধে নাস্তিকদের আন্দোলন বলে অপপ্রচার নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়। ব্লগে প্রকাশিত সকল লেখার দায় সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। তাই কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমাণিত হলে তাকে অবশ্যই দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে। এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে আহত করার অধিকার কারো নেই।
শেষ কথাঃ
সারা দেশ ব্যাপী জামাত শিবির চক্র যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আর নাশকতা চালাচ্ছে তাতে এ দলটিকে অনতিবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা অতীব জরুরী। দেশের স্বাধীনতা , সার্বভৌমত্ব , জাতীয় পতাকা ও শহীদ মিনারের প্রতি যাদের বিন্দু মাত্র শ্রদ্ধা আর আনুগত্য নেই এ দেশের মাটিতে তাদের রাজনীতি করার কোন অধিকার থাকতে পারে না। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধাচারন কারীরা এবার স্বাধীন দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধাচারন শুরু করেছে। তাই ওদেরকে বিন্দু মাত্র ছাড় দেওয়া হলে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হবে। হায়েনারা আবার একাত্তরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, আসুন এসব নর কীট দের দমনে আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করি। নাশকতায় জড়িত জামাত শিবির চক্রের সন্ত্রাসীদের কে পুলিশে ধরিয়ে দিন। সরকারের নিকট আবেদন- এদের দমনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ বল প্রয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হোক। জামাতের সন্ত্রাসীদের ক্ষেত্রে মানবাধিকার প্রযোজ্য নয়। কারণ ওরা কোন মানুষের কাতারে পড়ে না। ওরা নর পশু।
২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৭
এম ই জাভেদ বলেছেন: হা হা হা , ভাই , এইডা কি শুনাইলেন! হাস্তে হাসতে কাহিল হয়ে গেলাম। জামাত শিবির কত্ত বড় বলদ !!!!!!!!
৩| ০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৫৬
ফারহান ফারদিন বলেছেন: যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বন না করলে বি এন পি রাজনীতিতে কিছুটা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়বে। কিন্তু বি এন পি’র রাজনৈতিক ভিত কি এতই ঠুনকো যে তারা আপামর জনতার প্রানের আবেগকে বিন্দুমাত্র সম্মান না জানিয়ে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় রাজাকারদের পক্ষে সাফাই গেয়ে যাচ্ছেন?
এ প্রশ্ন তো আমার ও
০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০৬
এম ই জাভেদ বলেছেন: মীর মশাররফ হোসেন বলেছেন- রাজনীতি ! এর মর্ম ভেদ করা বড়ই কঠিন। বি এন পি যুদ্ধাপরাধ ইস্যু নিয়ে তরুণ প্রজন্মের আবেগকে নিয়ে কি ভাবছে তারাই ভাল জানে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৪
বাংলার হাসান বলেছেন: