নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এম ই জাভেদ

প্রত্যেক মানুষই প্রতিভা নিয়ে জন্মায়, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা ধরে রাখতে পারেনা

এম ই জাভেদ

গুণীজনেরা বলেন, ব্লগ লেখা মানে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো। আমার অনেক মোষ তাড়ানোর ইচ্ছা আছে। সমাজের অসঙ্গতি দেখলে মনটা বিদ্রোহ করতে চায়। উপায় না দেখে তখন মোষ তাড়ানোর চেষ্টা করি। দেখা যাক কতদূর কি করা যায়। কারন , ব্যস্ততা আমাকে দেয়না অবসর। ব্যস্ততার ফাঁকে চেষ্টা থাকবে ব্লগে সচল থাকার।

এম ই জাভেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আট দিনে ভারত দর্শন - পর্ব ছয়ঃ এম ই জাভেদ

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:১০





একটু তাড়াহুড়ো করে আমাদের আগ্রার পথে রওনা হওয়ার উদ্দেশ্য শেষ বিকেলের আলোয় তাজমহলের অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করা। কিন্তু এবারো আমাদের সকল প্ল্যান ভেস্তে যাওয়ার যোগাড় হল। ভিলেন বরাবরের মত সেই ড্রাইভার। ব্যাটা এমন স্লো ড্রাইভ করছে যে আগ্রা পৌঁছতে কয় ঘণ্টা লাগাবে আল্লাহ মালুম। আজমির ছেড়ে আসার পথে দু পাশের পাথুরে পাহাড়গুলো আবারো নজর কাড়ল।









কিছুদূর পর আমরা পাহাড় ফুঁড়ে বানানো একটা টানেলের দেখা পেলাম। টানেলের ভেতর ঘুটঘুটে অন্ধকার….ঠিক যেন ভূতের গলি।









টানেল পার হতে গিয়ে গা একটুখানি ছমছম করে উঠল। প্রিন্সেস ডায়না এরকম কোন এক টানেলেই তো এক্সিডেন্ট করেছিলেন পাপারাজ্জিদের কবল থেকে পালাতে গিয়ে। তবে সেটা ছিল সম্ভবত প্যারিসের কোন রাস্তায়।







যে কোন জার্নিতে আমার একটা বাজে অভ্যাস হচ্ছে জানালায় সর্বক্ষণ চোখ রাখা। উদ্দেশ্য যাতে দর্শনীয় কোন জিনিস মিস হয়ে না যায়। কিন্তু অনেককে দেখি পর্যটন ট্যুরে এসেও জার্নি সময়কালীন অবসরে চোখ বন্ধ করে ঘুমায়। নির্দিষ্ট ভেনু ছাড়া অন্য জিনিষের প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। কিন্তু আমার এইম থাকে অল্প পরিশ্রম ও ব্যায়ে অভিজ্ঞতার ঝুলি যত বেশী সমৃদ্ধ করা যায়। হিসাব করলে দেখা যায় মানুষের জীবনের একটি বিরাট অংশ ঘুমের পেছনে ব্যয় হয়। তাই ঘুরতে এসে ঘুমিয়ে সময় অপচয়ের কোন মানে হয়না।











আমাদের গাড়ি ছুটে চলেছে কোন এক মফঃস্বল শহরের বুক চিরে। আশে পাশে রয়েছে প্রচুর সবুজ গাছ গাছালি। এ রকম পরিবেশে কিছু বন্য প্রানি দেখতে পাওয়া অসম্ভব কিছু না। কিছুদূর যাওয়ার পর দূরে একটা ক্ষেতের পাশে সবুজ রঙয়ের কিছু নড়েচড়ে উঠতে দেখে মন বলে উঠল ইউরেকা………. এতক্ষণ আমার অনুসন্ধিৎসু মন ওকেই যেন খুঁজে ফিরছিল। ক্ষেতের একপাশে ইটের দেওয়ালের উপর বসে আছে অদ্ভুত সুন্দর একটা ময়ূর।





সাথে সাথে আমি চিৎকার করে ড্রাইভারকে বললাম- রুখ যাও। এই প্রথম কড়া ধমক খেয়ে কিছু বুঝে উঠতে না পেরে ড্রাইভার ঘ্যাঁচ করে ব্রেক কষল। ওকে বুঝিয়ে বলা হল যে আমরা ময়ূর দেখব। আমি গাড়ি থেকে নেমে ময়ূরের ছবি তুললাম। চুপচাপ লক্ষ্মী ছেলের মত বসে আছে সে। এ রকম প্রাকৃতিক পরিবেশে ময়ূর দেখার যে থ্রিল, তা চিড়িয়াখানার খাঁচায় হাজার ময়ূর দেখেও পাওয়া যাবে না মোটেও। এরপর সামনে গিয়ে আরও অনেক ময়ূরের দেখা মিলল।









এক ক্ষেতে দেখতে পেলাম বিশাল এক ময়ূরের ঝাঁক। সংখ্যায় ৫০-৬০ টা হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত ওদের ছবি তুলতে পারিনি। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম খুব কাছে থেকে ময়ূরের একটা স্ন্যাপ নিব। যেই ভাবা সেই কাজ। একটাকে টার্গেট করে আস্তে আস্তে এগুতে থাকলাম। কিন্তু কিভাবে যেন সে টের পেয়ে সচেতন হয়ে গেল। আমাকে আরও কাছে ভিড়তে দেখে সচকিত হয়ে দিল ভোঁ দৌড়…….







রাস্তার মাইল পোস্ট বলছে আগ্রা আর বেশি দূরে নয়।



কিন্তু মেঘে মেঘে কখন যে অনেক বেলা হয়ে গেল সেটা টের পাইনি ময়ূর সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে কিছুটা সম্মোহিত হয়ে পড়ার কারনে। খুব কাছ থেকে আগ্রা ফোর্ট দেখলাম। সম্রাট শাহজাহান আপন পুত্র কর্তৃক বন্দী হয়ে জীবনের শেষ দিনগুলি এখানেই কাটিয়েছিলেন।









আমরা হোটেল খুঁজতে খুঁজতে সন্ধ্যা নেমে এল। নাহ আজ আর তাজমহল দর্শন হবেনা। তাই আপাতত আশেপাশের সৌন্দর্য অবলোকনে মনস্থির করলাম। ভাল রুম খুঁজতে গিয়ে এক হোটেলের বারান্দায় গিয়ে দেখি পাশের বিল্ডিঙয়ের ছাদে কয়েকটা বাঁদর বসে ঘুড়ি উড়াচ্ছে। কি অবাক কান্ড!!!







আরও কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে অবশেষে কাঙ্ক্ষিত হোটেল পেয়ে গেলাম। খানিক ফ্রেশ হয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম একটু ইভনিং ওয়াকের পাশাপাশি সাইট সিইং করার অভিপ্রায়ে।















সাইট সিইং শেষে ইটিং পর্বও সমাধা হয়ে গেল। ব্যস এখন ঘুম পরীর দেশে না গেলেই নয়। কাল সকালে ফ্রেশ মুডে তাজমহল দেখতে যেতে হবে না ?



আগের পর্ব

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:২০

ডাইরেক্ট টু দ্যা হার্ট বলেছেন: অসাধারণ

খুব সুন্দর ছবি গুলো

ধন্যবাদ

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৮

এম ই জাভেদ বলেছেন: ব্যাপক ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:২৪

এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল স্বর্ণা বলেছেন:
আমিও ঘুমাই ;)

কিছুদিন আগে আমি চিড়িয়াখানায় গিয়েছিলাম, দেখি ময়ূর খাঁচার বাইরে হাঁটে। ভয় পেয়েছিলাম।

ভাল লেগেছে।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪১

এম ই জাভেদ বলেছেন: পর্যটকের কি ঘুমানো সাধে আপু ?

চিড়িয়া খানায় তো ময়ূর খাঁচার বাইরে হাঁটার অনুমতি নাই। আপনি বোধ হয় সাফারি পার্কে গিয়েছিলেন।

৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৭

সিস্টেম অ্যাডমিন বলেছেন: এবার আর প্লাস দিলাম না , সুন্দর বর্ণনা । খুব ভাল লাগল ।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪২

এম ই জাভেদ বলেছেন: প্লাস দেওয়া নিয়া চুদুর বুদুর চইলতনা সিস্টেম এডমিন !!!

৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৮

ঢাকাবাসী বলেছেন: ছবি আর বর্ণনা অপুর্ব। আগেরটাও পড়ে ফেললুম, ভাল লাগল।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৩

এম ই জাভেদ বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাকাবাসী। উৎসাহ বেড়ে গেল আপনার মন্তব্য পেয়ে। তা
ঢাকার কোন অঞ্চলে থাকা হয় আপনার ?

৫| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৮

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: কিন্তু অনেককে দেখি পর্যটন ট্যুরে এসেও জার্নি সময়কালীন অবসরে চোখ বন্ধ করে ঘুমায়। নির্দিষ্ট ভেনু ছাড়া অন্য জিনিষের প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। কিন্তু আমার এইম থাকে অল্প পরিশ্রম ও ব্যায়ে অভিজ্ঞতার ঝুলি যত বেশী সমৃদ্ধ করা যায়। হিসাব করলে দেখা যায় মানুষের জীবনের একটি বিরাট অংশ ঘুমের পেছনে ব্যয় হয়। তাই ঘুরতে এসে ঘুমিয়ে সময় অপচয়ের কোন মানে হয়না। আমিও একমত।

রাস্তাগুলো ত খুব সুন্দর আর চওড়া! ভারতে আমি একবার খুব অল্প সময়ের জন্যে গিয়েছিলাম।ওরা ওদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে খুব সচেতন ও দেশপ্রেমিক। খুব দুঃখ লাগছিল, আহা আমার জাতিও যদি এমন হত! ওরা সবকিছু কি যত্নের সাথে রক্সা করছে আর আমাদের এখানে অবহেলায় সব হারিয়ে যাচ্ছে। :(

আপনার লেখনী ভঙ্গি খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪১

এম ই জাভেদ বলেছেন: তনিমা, ভারতের মানুষ অতিমাত্রায় দেশ প্রেমিক- কথা সত্য। কিন্তু মাঝে মাঝে তাদের মাত্রাতিরিক্ত দেশপ্রেমকে স্বার্থপরতা মনে হয়।

আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে রক্ষার ব্যাপারে সচেতন হলে কি আর বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবনের নাকের ডগার উপর তাপবিদ্যুৎ নির্মাণের পরিকল্পনা করি!!!!

লেখনি ভঙ্গি তে ভাল লাগা জানানোর জন্য ধন্যবাদ। এটা আমার নিজস্ব স্টাইল - এক সময় ডায়েরি লিখতাম কিনা...তাই লেখাটা ডায়েরির মত হয়ে যায় কিছুটা।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৬

তুষার কাব্য বলেছেন: আরে বাহ্‌!! !এখানেও দেখি ময়ূর।ময়ূর আমার পিছু ছাড়েনা :D
আপনার কথার সাথে সম্পুর্ন একমত।ঘুরতে এসে ঘুমিয়ে সময় নস্ট করতে আমিও রাজি নই।লাস্ট মে'তে আমি ৭দিনে দার্জিলিং,ডুয়ার্স ,ভূটান ঘুরে আসছি।ভালো লাগলো আপনার সাথে ঘুরতে।ভালো থাকবেন।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৬

এম ই জাভেদ বলেছেন: ভারতে ময়ূর মুরগীর মত সহজ লভ্য - এটা জুন আপু বলেছেন। আমারও তাই মনে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে ময়ুর পালতে গেলে বন বিভাগ খপ করে ধরে নিয়ে গিয়ে বন্য প্রানি আইনে মামলা ঠুকে দেবে।

আপনার ভুটান ভ্রমন কাহিনী শুনতে মঞ্চায় :D

৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৯

আরজু পনি বলেছেন:

ঘুরতে এসে ঘুমিয়ে সময় অপচয়ের কোন মানে হয়না। :D

একদম খাঁটি কথা বলেছেন ।


আপনার শিরোনামটা আশি দিনে বিশ্বভ্রমনের মতো ।
শোকেসে রাখলাম ।

শুভকামনা রইল ।।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫০

এম ই জাভেদ বলেছেন: পনি আপু,
একটা মজার ঘটনা বলি- ছোটবেলায় প্রথম প্রথম বাসে চড়ে দাদা বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কালে আমার অভ্যাস ছিল জানালায় চোখ রাখা। তখন দেখতাম বাসের গতির সাথে পাল্লা দিয়ে দূরের গাছপালা , বাড়িঘর কিভাবে ছুটে চলেছে। আমি ভাবতাম ওগুলি বুঝি সত্যি সত্যি আমার সাথে বেড়াতে যাচ্ছে দাদু বাড়ি। বাড়িতে ফিরে আবার বাড়ির আশেপাশের পরিচিত গাছগাছালির খবর নিতাম তারা কেউ মিসিং কিনা !!! সেই থেকে অভ্যাস হয়ে গেছে, জার্নিতে না ঘুমিয়ে বাইরের শোভা দেখি।

শিরোনাম সম্পর্কে আপনার মন্তব্য শুনে নিজেকে জুল্ভার্ন জুল্ভার্ন লাগছে। পোস্ট শো কেসে রেখে দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞ, পাশাপাশি এ অধমের ব্লগে আপ্নাকে সু- স্বাগতম। =p~ =p~

৮| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৯

সাজিদ ঢাকা বলেছেন: সব পর্ব পড়লাম :) :)

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৫

এম ই জাভেদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা রইল। মাঝে মাঝে ঢুঁ মারতে আসবেন কিন্তু আমার ব্লগে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.