![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচতে চাই, ভালো থাকাটাই ভালোবাসি।
সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে দেখি অন্ধকার
.
আমার চেনা, নাম অতুল। একটা সময় কালাপানি থাকতো। মারবেল খেলতো। আমিও খেলতাম। আমরা একবার ঠিক করলাম দূরে যাবো। সাইজে আমরা ছোট, হাঁটতে গেলে মানুষের নিতম্বে নিতম্বে বাড়ি খাই। তবু যাকগে, আমরা ভিড়ে যাবো। পাছা ঠেলে, হাঁটতে হাঁটতে অনেকদূর এগিয়ে যাবো। অতুল খয়রাতির ছেলে, আমি মধ্যবিত্ত। বয়স সাত, আমি স্কুলে পড়ি। ও পড়ে না। টাকা নাই। একদিন, অংশুমালী তার মাইবিহীন বুক উচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেই সময় আমি স্কুল কামাই দিয়ে লাট্টু খেলি। অতুল কোপ দিয়ে আমার লাট্টুর গোশ খেয়ে ফেলে। আমি চোখে বিষাদ আনি। অতুল সেই চোখ বেয়ে নিচে নামে। আধাভেজা সিড়ির শেষে অন্ধকার কিছু। সেখানে ভিম কাটানো লাট্টুর হাহাজারি দ্যাখে। অস্ফুট আবেদন স্বমেহনের আগেই বের হওয়া ভ্রুণের মতো লেঁতিয়ে থাকে।
"খেলুম না, যাইগা", আমার ফাঁটা কণ্ঠনালী চিড়ে থুতুর মতো বের হয়ে আসে। ''লাটিম লাগলে চল আমার লগে"। আমার চোখ শুকিয়ে জিভ ভিজে ওঠে।
গার্ডিয়ান ছাড়া বাসে কখোনো উঠি নাই। সেই প্রথম, মাঝখানে জোড়া দেয়া ফ্রন্ট গ্লাস, সাদা কালিতে লেখা "১নং - লোকাল"। ফার্মগেট নামের কোনো এক বনভূমিতে নামি। দূর্বাঘাসের মতো মাজা এদিক সেদিক ঘুড়িয়ে মানুষ আর ছায়া চলছে। ছায়া নিবারণের জন্য অনেকে গাছতলায় গিয়ে দাঁড়ায়। গাছ তলায় পেট বের করে দাড়িয়ে থাকা মধ্যবয়স্কার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অতুলের মুখ চলে। "ওইডা কিন্তু বেশ্যার দালাল"। তখনো পতিতা শব্দের সাথে মিলিত হই নাই। আর বেশ্যার কোনো সংগা জানিনা। তাই অতুলের কথার কোনো অর্থ দাঁড়ায়না আমার কাছে। ধীরে সিড়ি বেয়ে উঠি। ওভারব্রিজের উপর মানুষ হাঁটে, ছায়া হাঁটে না। অংশুমালীর গরম মুত সরল পথে চলে। পথ বেঁকিয়ে ব্রিজের ছাউনি কাটায় না। সাড়ি সাড়ি লাটিম নিয়ে আমি কিংবা একটু ছোট ছায়াবিহীন শিশু। "এইডা কত?" "পাঁচ টাকা"। দাম জেনে নিয়ে অতুল আমার দিকে তাকায়। আমি উল্টো দিকে ব্রিজের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে দেখি গাড়ির সাড়ি। পেছনেরটা সামনেরটার কালো পাদ মাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। লোকাল বাসগুলো একটা আরেকটার পাছা হাতরাচ্ছে। হটাৎ আমার মোহ ভাঙ্গে। পেছন ঘুরে দেখি অতুলের চুল মুষ্টিবদ্ধ। "কিরে মাগির ছাওয়াল এই বয়সেই এই কাজ শুরু করছোস?"। সেই নাভি দেখানো মধ্যবয়স্কা, কপোল বেয়ে পানের লোহিত রস চিরিক চিরিক ছিটছে। সেই অবাধ্য রস, অাঙ্গুলি করতে করতে ক্ষয়ে যাওয়া নক বিশিষ্ট আঙ্গুল দিয়ে মুছে নিয়ে মুখে দিতে দিতে অতুলের গালে চড় পড়ে। দূর থেকে কাম পিপাসী ছায়াওয়ালা চাচা হাঁক ছাড়ে, "কিরে মাগী আহোস না ক্যান?" অতুলের চুলের মুটি আলগা হয়। লাটিম বেঁচা শিশু হাত উচিয়ে তিনটাকার লাট্টুখানা ফ্রিতে দিয়ে দেয়। আর তর্জমা করে অপৌরুষ অতুল কেমন করে নাভি দেখানো মধ্য বয়স্কার নিতম্বে ঢুকে গিয়েছিল।
অতুল বেঁচেছিলো সতের বছর। তারপর শুনেছি পকেটমারতে গিয়ে ধরা খেয়েছিল। বেদমমারে কে যেনো ওর মুষ্কথলি ফাঁটিয়ে দেয়। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে মারা যায়। আমি দৌড়ে মোল্লা বস্তিতে পৌঁছাই। লাশ হয়ে শুয়ে থাকে অতুল। আমি ওর চোখ বেয়ে নিচে নামি, দেখি মায়ের অসুখ, টাকা, ঔষুধ, বোন, বিবাহ। শব্দগুলো বসে বসে উপহাস করে, অপূর্ণতা আর অপ্রাপ্তিতে হামাগুড়ি দেয়। কে যেনো ধাক্কা দেয়! আমি লাশ দেখি। আবার চোখের গভীরে যেতে চাই। সিড়ি বেয়ে নিচে নামি। কিছু নেই সেখানে। অতুলের চোখ এখন বন্ধ।
.
JRA
২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লাগেনি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:৪৩
ঝামেলা ভাই বলেছেন: ভাল লাগলো ।