![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শেষ বিকেলের আকাশ তাই কিছুটা আঁধার । শূন্য আকাশে শেষ বিকেলের সারাদিন কঠর পরিশ্রমকরে বাড়ি ফেরা উড়ন্ত শ্রমজীবি হিসেবে কিছু কালো কাক আর সাদা বক ছাড়া পুরো আকাশ ফাকা ।
সাদে ফুল গাছ গুলোতে আজ দেখা যাচ্ছে অনেক ফুল ফুটেছে। সাদে এক পাশে রক্তজবা কিছু গোলাপ ।সাদের চার দিকে ঝুলিয়ে দেওয়া ঝুমকোলতা তার ফাঁকে ফাঁকে অনেক ফুল ফুটেছে ।কিছু বেলী ফুলের চারাও এনেছিলেন রিনা আপু সেগুলো আজ অনেক বড় হয়েছে।
কিছু কিছু গাছে ফুল ফুটেছে।সেগুলো যেন কাজলের দিকে চেয়ে হাসে।
রিনা আপু শেষের দিকে দুটি কদম ফুলের চারা ও দুটি কাঠালিয়ার চারা এনেছিলো সেগুলো আজ অনেক বড় হয়েছে সেগুলোমাঝে এখন বেশ কয়েকটিতে ফুল এসেছে । রিনা আপুর হাতের পুরনো গোলাপ গাছ গুলোর বেশ কয়েকটি গাছ এখনো ভালো আছে ।
কাজল বাড়ির সাদে প্রতিদিন উঠে এই রকম শেষ বিকেলের ফাকা আকাশের নিচে রিনা আপুর নিজ হাতে সাজানো ছাদে থাকা বাগান ও বাড়ির দড়জায় লাগানো সেই কদম গাছের দিকে নির্ঝুম ভাবে চেয়ে থাকে ।
রিনা আপুর হাতের লাগানো ফুলের বাগান এখনো সেই রকম অক্ষত আছে শুধু নেই প্রিয় রিনা আপু। এখন আর কেও শোনায় না কাজলা দিদির বাঁশ বাগাঁনে মাথার ওপরে চাঁদ উঠার সেই কথা।
কাজলের মনে জমে আছে শুধু কিছু রক্তাক্ত বেদনাময় স্মৃতি যা কাজলে অজানতে তার মনের গহীনে দোলা দেয়। কাজল সে ভুলতে চাইলেও স্মৃতির পাতা তাকে মনে করিয়ে দেয় পিছনের দিনে ছিড়ে পড়া কিছু স্মৃতির পাতা ।
রিনা আপু আর তপু ভাইয়া যেমন মিল ছিল তেমন তারা দুজনে দুষ্টু ছিল । তপু ভাইয়া আর রিনা আপু প্রায় সময় দুজনে ঝগড়া করতো। আর সে জন্য মা বাবা তাদের দুজনকে সব সময় খুব বকতো ।তারা কথা শুনতো না বলে মা বাবা মাঝে মাঝে তাদের সাথে মিছে অভিমানে কথা বলতো না।
সেই দিনটি ছিল রবি বার সকাল তপু ভাইয়া রিনার আপু সাথে ঝগড়া করার মধ্যে ভাইয়া আপুর গালে চিমটি কেঁটেছিল
সে জন্য মা বাবা ভাইয়াকে সকাল বেলা কি বকনিই না দিয়েছিল।আর সে অভিমানে সেইযে ভাইয়া ঘর থেকে বেরিয়েছিল ভাইয়া আর সারাদিন ঘরে ফিরে নি ।
সে দিন ঢাকার রাজ পথে বাঙালিদে মুখে শুধু একটাই দাবী ছিল রাষ্ট্রিয় ভাষা মায়ের মুখের ভাষা বাংলা হবে ।কিন্তু সেই কালো শকুনের দলেরা বাঙালিদের এ দাবী কিছুতেই মেনে নিতে পাড়লো না ।বাঙালি চাইলো রাষ্ট্র ভাষা বাংলা হোক আর নেকড়ের দল চাইলো উর্দ্দু করা হোক ।
আর এই দাবীর জন্য ঢাকার রাজ পথে রক্তের হলি খেলাহলো
ভাষা নয় যেন সেই নেকড়ের দলেরা বাঙালীদের রক্তয়ই চেয়েছিল এবং সেই নেকরের বাচ্চরা দু চার জনের রক্ত নিয়ে শান্ত হলো না । শত শত মায়ের বুক খালি করলো ।
কেড়ে নিলো সালাম বরকত রফিক জব্বার সহ শত মায়ের সন্তানদের।
ভাষার দাবী নিয়ে ভাইয়াদের কলেজ থেকে একটি মিছিল বের হয় । আর সে মিছিলে ওপরে জাপিয়ে পড়ে সেই শত্রু বাহিনী সেই নেকড়ের দল উর্দ্দু বাসী।
সে মিছিলে ছিল তপু ভাইয়ার বন্ধু করিম ভাইয়া তাদের সাথে ছিল ভাইয়ার আরো কয়েকজন বন্ধু ।মিছিলে প্রথম লাইনে ছিল করিম ভাইয়ারা তার পরের লাইনে ছিল তপু ভাইয়া সহ তাদের সকল বন্ধুরা ।
নেকড়ে কুকুরের দলের একটি নেকড়ে কুকুরের প্রথম কামড়ের দাঁত এসে লাগে করিম ভাইয়ার বুকে ।
সেখান থেকে তপু ভাইয়া করিম ভাইয়াকে কোলে নিয়ে সরে যাওয়ার সময় আরেকটি নেকড়ের কামড়ের দাঁত লাগে তপু ভাইয়ার বুকে ।
সাথে সাথে তপু ভাইয়া করিম ভাইয়াকে কোলে নিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরেন ।
ওখান থেকে ভাইয়ার কয়েকজন বন্ধুরা মিলে ভাইয়াকে ও তার বন্ধু করিম ভাইয়াকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নেন ।
হাসপাতালে যাওয়ার পথে করিম ভাইয়ের মৃত্যু হয় তাই করিম ভাইয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করলেন না। আর ভাইয়াকে হাসপাতালে রাখলেও ভাইয়া ঐ দিন রাত ১২কি তার একটু বেশি সময় পযন্ত বেঁচে ছিলেন কিন্তু অচেতন ছিলেন।
সারা দিন পার হয়ে যখন বাবা ঘড়িতে দেখলেন রাত১১টা বাজে তখনো ভাইয়া বাসায় ফিরে নাই তখন বাবা ভাইয়ার
বন্ধুদের বাসায় ও আমাদের আত্মিয়স্বজনদের বাসায় খোজ করতে লাগলো কিন্তু বাবা কোথাও কোন ছাড়া পেলেন না।
আমরা সকলে চিন্তিত হয়ে পড়লাম । ঐদিন রাত ১টার দিকে ভাইয়ার এক বন্ধু ভাইয়ার সাটের পকেটে একটি ছোট ডাইরী পান আর ডাইরী থেকে আমাদের বাসার ফোন নাম্বারটি নেন আর বাসায় ফোন দেন । ফোন পেয়ে বাবা হাসপাতালে চলে যান । রাত বেশি হয়ে যাওয়ায় ঐদিন রাতে বাবা ভাইয়ার লাশ নিয়ে বাসায় আসতে পারলেন না।
পরদিন সকালে যখন বাবা ভাইয়ার লাশ নিয়ে বাসায় আসলেন আমাদের বাসায় শুধু নয় আমাদের পুরো মহল্লায় যেন এক শোকের ছায়া নেমে এলো ।
ভাইয়ার মৃত্যুতে সব থেকে বেশি কষ্ট পান রিনা আপু। ভাইয়ার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পরে রিনা আপু সেই যে অচেতন হয়ে গেলেন তার পরে রিনা আপু স্মৃতি শক্তি হারিয়ে
কেমন জানি হয়ে যান । তার পরে রিনা আপু আর বেশিদিন বাঁচলেন না ।
এভাবে আমাদের সাজানো বাগানের ফুলগুলো অকালে ঝরে পড়লো। জানি আর কখনো কেও ফিরবেন না।আর কখনো কোন তপু ভাইয়া রিনা আপুর গালে ধরে ঝগড়ার ছলে চিমটি কাঁটবে না ।
আমাদের সাজানো বাগানটি এখনো আছে শুধু নেই সেই বাগানের সুভাস দেওয়া ফুল গুলো ।
এখনো এই বাগানের সামনে এসে দাড়ালে কানে ভেসে আছে সেই শব্দ রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই মায়ের মুখের ভাষা বাংলা চাই ।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪৫
কালের সময় বলেছেন: হ চেষ্টা করছি ভাই
২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪৪
কালের সময় বলেছেন: হ চেষ্টা করছি ভাই
৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১১
বাড্ডা ঢাকা বলেছেন: দারুন লাগলো গল্প ++++++
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫০
কালের সময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:২৪
জাফরুল মবীন বলেছেন: আপনার গল্পটি ভাষা আন্দোলনের সেই সময়ের ঘটনা প্রবাহের স্মৃতিকে জীবন্ত করে তুলল মানসপটে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫১
কালের সময় বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ মবীন ভাই
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬
নাসরীন খান বলেছেন: চালিয়ে যান।বানানের দিকে খেয়াল রাখবেন।