![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে ভূমিকম্পের উতপত্তির কেন্দ্রস্থল । পর পর দুদিন দুটি ভূমিকম্প হয়ে গেল নেপালের পোখারার লামজুং এবং কোদানিতে। বিশ্লেষকরা বলছেন এরপর যেখান থেকে ভূমিকম্পের উতপত্তি হবে তার মধ্যে রয়েছে সিকিম, ভুটান, আসাম, নাগাল্যান্ড এবং বাংলাদেশের সিলেট ।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি গবেষক দল বলছেন এই লাইনের অ্যালাইনমেন্ট যে কোনো স্থান ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু হলে বাংলাদেশেও নেপালের মতো ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ এবং প্রাণহানির আশঙ্কা বা ঘটনা ঘটতে পারে । ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে পারে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেটসহ উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা ।
গবেষক দলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রজার বিলহাম । তাদের তৈরি প্রতিবেদনের শিরোনামে ভারত ও হিমালয়ে ভূমিকম্প টেকটোনিক প্লেটের ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থা এবং ইতিহাস ।
গবেষক দল বলছেন সাম্প্রতিক সময়েও ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের অ্যালাইনমেন্টেই ভূমিকম্পের উতপত্তিস্থল সৃষ্টি হচ্ছে । ওই গবেষকদের আরো ধারণা করেন টেকটোনিক প্লেটের অ্যালাইনমেন্টেই ভূমিকম্পের উতপত্তিস্থল তৈরি হবে ।
একই সাথে মধ্য এশীয় টেকটোনিক প্লেটও এই প্লেটের সাথে মিশেছে সিকিম থেকে নাগাল্যান্ড পয়েন্টে । এই সংযোগস্থলে ভারতীয় প্লেটটি মধ্য এশীয় প্লেটের নিচ দিয়ে চলে গেছে । ফলে ওই অংশটি আরো ঝুকিপূর্ণ অবস্থান রয়েছে ।
বিশ্লেষকরা বলছেন টেকটোনিক প্লেট বলতে বোঝায় ভূ-ত্বকের বিশাল খণ্ড যা সঞ্চরণশীল যা স্থান পরিবর্তন করে । প্লেটের এ ধরনের স্থান পরিবর্তনের ফলেই ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় ।
এ কারণেই গবেষকরা সংযোগস্থলের অংশটিকে মারাত্মক বা বেশি ঝুকিপূর্ণ বলে মনে করছেন । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ তত্ত্ববিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ সৈয়দ আক্তার হুমায়ুন বলেন শনিবার নেপালে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও বাংলাদেশে ৩ থেকে ৫ মাত্রায় অনুভূত হয়েছে। এই ভূমিকম্পের উত্পত্তিস্থল আসাম হলে ঢাকাতে ৭ মাত্রায় অনুভূত হতে পারতো । ঢাকায় ৭ মাত্রায় ভূমিকম্প হলে ধ্বংস যে অনিবার্য এটা নিশ্চিত ।
ঐ গবেষণায় আরো বলা হয়েছে টেকটোনিক প্লেটের অবস্থানের কারণে পূর্বের দিকে সংঘটিত ভূমিকম্পের গভীরতা আরো কমে আসবে । এই প্রতিবেদনের সঙ্গে সামঞ্জস্য পাওয়া গেছে গত দুদিনের ভূমিকম্পের উতপত্তিস্থলের গভীরতার ।
শনিবার লামজুংয়ে উতপত্তি হওয়া ভূমিকম্পেরে গভীরতা ছিল ১৫ কিলোমিটার । আর গতকাল কোদানিতে উতপত্তি হওয়া ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের গভীরতা ছিল ১১ কিলোমিটার । পর্যায়ক্রমে পূর্ব দিকে অগ্রসর হলে গভীরতা আরো কমে আসতে পারে । এতে ধ্বংসলীলা আরো বড় হওয়ার আশঙ্কা আছে ।
জাতীয় নগর উন্নয়ন অধিদফতরের উপ-পরিচালক ও নগর পরিকল্পনাবিদ ড. কেজেড হোসেন তৌফিক বলেন ১৮৫৭ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল । ওই ভূমিকম্পের উতপত্তিস্থল ওই লাইনেই ।
বর্তমানেও সেটা পূর্ব দিকে এগিয়ে আসছে বলে মনে হচ্ছে । তবে গভীরতা কমবে কি না সেটা নিশ্চিত করা হয় নাই । ওই লাইনকে ভূমিকম্পের ভবিষ্যত উত্স্থল ধরে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, বগুড়া, রংপুর, সৈয়দপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ শহর সবচেয়ে ঝুকির মধ্যে আছে । কিন্তু ঢাকা শহরের মাটির মান খারাপ এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে ওই শহরগুলোর চেয়ে বেশি ধ্বংসলীলার মধ্যে পড়তে পারে ঢাকা ।
©somewhere in net ltd.