নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিজান আহামেদ

কালের সময়

সকলে ভালো থাকুন

কালের সময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনির কিছু অংশ ও বিশ্ব ভ্রমন

০৯ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:০৯



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন মূলত একজন কবি । তিনি মাত্র আট বছর বয়সে কাব্যরচনা শুরু করেন । তার প্রকাশিত মৌলিক কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৫২টি । তবে বাঙালি সমাজে তার জনপ্রিয়তা প্রধানত সংগীতস্রষ্টা হিসেবেই । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায় দুই হাজার গান লিখেছিলেন । কবিতা এবং গান ছাড়াও তিনি আরো ১৩টি উপন্যাস ও ৯৫টি ছোটগল্প ৩৬টি প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ এবং ৩৮টি নাটক রচনা করেছিলেন । রবীন্দ্রনাথের সমগ্র রচনা রবীন্দ্র রচনাবলী নামে ৩২ খণ্ডে প্রকাশিত করা হয়েছে । তাছাড়া তার সামগ্রিক চিঠিপত্র উনিশ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে । তার প্রবর্তিত নৃত্যশৈলী রবীন্দ্রনৃত্য নামে পরিচিত ।



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম জীবন

কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম জীবনে ছিলেন বিহারীলাল চক্রবর্তীর অনুসারী কবি । তার কবিকাহিনী, বনফুল এবং ভগ্নহৃদয় কাব্য তিনটিতে বিহারীলালের প্রভাব সুস্পষ্ট । সন্ধ্যাসংগীত কাব্যগ্রন্থ থেকে রবীন্দ্রনাথ নিজের বক্তব্য প্রকাশ করতে শুরু করেন ।

এই পর্বের সন্ধ্যাসংগীত, প্রভাতসংগীত, ছবি, গান ও কড়ি এবং কোমল কাব্যগ্রন্থের মূল বিষয়বস্তু ছিল মানব হৃদয়ের বিষণ্ণতা, আনন্দ, মর্ত্যপ্রীতি এবং মানবপ্রেম । ১৮৯০ সালে প্রকাশিত মানসী এবং তার পর প্রকাশিত সোনার তরী ১৮৯৪ সালে চিত্রা ১৮৯৬ সালে চৈতালি ১৮৯৬ সালে কল্পনা ও ১৯০০ সালে ক্ষণিকা এবং ১৯০০ সালে কাব্যগ্রন্থে ফুটে উঠেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেম এবং সৌন্দর্য সম্পর্কিত রোম্যান্টিক ভাবনা গুলো ।



১৯০১ সালে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতায় আধ্যাত্মিক চিন্তার প্রাধান্য লক্ষিত হয় । এই চিন্তা ধরা পড়েছে নৈবেদ্য ১৯০১ সালে খেয়া ১৯০৬ সালে গীতাঞ্জলি ও ১৯১০ সালের গীতিমাল্য ১৯১৪ সালে গীতালি এবং ১৯১৪ সালে কাব্যগ্রন্থে । ১৯১৫ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা ঘটলে বলাকা ১৯১৬ সালে কাব্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায় আধ্যাত্মিক চিন্তার পরিবর্তে আবার মর্ত্যজীবন সম্পর্কে আগ্রহ ফুটে ওঠে ।



১৯১৮ সালে কাব্যে গল্প কবিতার আকারে তিনি নারীজীবনের সমসাময়িক সমস্যাগুলি তুলে ধরেন । ১৯২৫ সালে পূরবী ও মহুয়া ১৯২৯ সালে কাব্যগ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আবার প্রেমকে উপজীব্য করেন । এরপর ১৯৩২সালে শেষ সপ্তক পুনশ্চ, ১৯৩৫ সালে পত্রপুট, ১৯৩৬ সালে শ্যামলী, ১৯৩৬ সালে চারটি গদ্যকাব্য প্রকাশিত হয় ।



জীবনের শেষ দশকে কবিতার আঙ্গিক এবং বিষয়বস্তু নিয়ে কয়েকটি নতুন পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । ১৯৪০ সালে এই সময়কার রোগশয্যায় ১৯৪১ সালে আরোগ্য ১৯৪১ সালে জন্মদিনে শেষ লেখা, ১৯৪১ সালে মরণোত্তর প্রকাশিত । কাব্যে মৃত্যু এবং মর্ত্যপ্রীতিকে একটি নতুন আঙ্গিকে পরিস্ফুট করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায় মধ্যযুগীয় বৈষ্ণব পদাবলি, উপনিষদ্‌, কবীরের দোহাবলি, লালনের বাউল গান এবং রামপ্রসাদ সেনের শাক্ত পদাবলি সাহিত্যের প্রভাব লক্ষিত হয় । তবে প্রাচীন সাহিত্যের দুরূহতার পরিবর্তে তিনি এক সহজ এবং সরস কাব্যরচনার আঙ্গিক গ্রহণ করেছিলেন ।



আবার ১৯৩০ এর দশকে কিছু পরীক্ষামূলক লেখালেখির মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতা এবং বাস্তবতাবোধের প্রাথমিক আবির্ভাব প্রসঙ্গে নিজ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । বহির্বিশ্বে তার সর্বাপেক্ষা সুপরিচিত কাব্যগ্রন্থটি হল গীতাঞ্জলি । এই বইটির জন্যই তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন । নোবেল ফাউন্ডেশন তার এই কাব্যগ্রন্থটিকে বর্ণনা করেছিল একটি গভীরভাবে সংবেদনশীল উজ্জ্বল এবং সুন্দর কাব্যগ্রন্থের রূপে ।



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ কবিতা 'তোমার সৃষ্টির পথ' এই কবিতাটি মৃত্যুর আট দিন আগে মৌখিকভাবে রচনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।




রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ছোট গল্প

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ছোটগল্পকার । মূলত হিতবাদী, সাধনা, ভারতী, সবুজ পত্র প্রভৃতি মাসিক পত্রিকাগুলির চাহিদা মেটাতে তিনি তার ছোটগল্পগুলি রচনা করেছিলেন । এই গল্পগুলির উচ্চ সাহিত্যমূল্য সম্পন্ন । রবীন্দ্রনাথের জীবনের 'সাধনা' পর্বটি ১৮৯১ সাল থেকে ১৮৯৫ সাল পযন্ত ছিল সর্বাপেক্ষা সৃষ্টিশীল পর্যায় । তার গল্পগুচ্ছ গল্পসংকলনের প্রথম তিন খণ্ডের চুরাশিটি গল্পের অর্ধেকই রচিত হয় এই সময়কালের মধ্যে ।



গল্পগুচ্ছ সংকলনের অন্য গল্পগুলির অনেকগুলিই রচিত হয়েছিল রবীন্দ্রজীবনের সবুজ পত্র পর্বে ১৯১৪ সাল থেকে ১৯১৭ সাল পযন্ত প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত পত্রিকার নামানুসারে তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গল্প হলোঃ 'কঙ্কাল' 'নিশীথে' 'মণিহারা''ক্ষুধিত পাষাণ' 'স্ত্রীর পত্র' 'নষ্টনীড়' 'কাবুলিওয়ালা' 'হৈমন্তী' 'দেনাপাওনা' 'মুসলমানীর গল্প' ইত্যাদি । শেষ জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিপিকা, সে ও তিনসঙ্গী গল্পগ্রন্থে নতুন আঙ্গিকে গল্পরচনা করেছিলেন ।



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার গল্পে পারিপার্শ্বিক ঘটনাবলি বা আধুনিক ধ্যানধারণা সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করতেন । কখনও তিনি মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের বৌদ্ধিক বিশ্লেষণকেই গল্পে বেশি প্রাধান্য দিতেন ।



রবীন্দ্রনাথের একাধিক ছোটগল্প অবলম্বনে চলচ্চিত্র, নাটক ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মিত হয়েছে । তার গল্পের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রায়ণ হল সত্যজিৎ রায় পরিচালিত তিন কন্যা 'মনিহারা' 'পোস্টমাস্টার' এবং সমাপ্তি অবলম্বনে ও চারুলতা 'নষ্টনীড়' অবলম্বনে । তপন সিংহ পরিচালিত অতিথি, কাবুলিওয়ালা ও ক্ষুধিত পাষাণ । পূর্ণেন্দু পত্রী পরিচালিত স্ত্রীর পত্র ইত্যাদি।




রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস রচনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোট তেরোটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন । সেগুলি হলোঃ বৌ-ঠাকুরাণীর হাট ,রাজর্ষি , চোখের বালি, নৌকাডুবি, প্রজাপতির নির্বন্ধ, গোরা, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ, যোগাযোগ, শেষের কবিতা, দুই বোন, মালঞ্চ, এবং চার অধ্যায় । বৌ ঠাকুরাণীর হাট এবং রাজর্ষি ঐতিহাসিক উপন্যাস । এদুটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম উপন্যাস রচনার প্রচেষ্টা । এরপর থেকে ছোটগল্পের মতো তার উপন্যাসগুলিও মাসিকপত্রের চাহিদা অনুযায়ী নবপর্যায় বঙ্গদর্শন, প্রবাসী, সবুজ পত্র, বিচিত্রা প্রভৃতি পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হয় ।



চোখের বালি উপন্যাসে দেখানো হয়েছে সমসাময়িককালে বিধবাদের জীবনের নানা সমস্যা । নৌকাডুবি উপন্যাসটি আবার লেখা হয়েছে জটিল পারিবারিক সমস্যাগুলিকে কেন্দ্র করে ।গোরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস । এই উপন্যাসে দেখানো হয়েছে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধের হিন্দু এবং ব্রাহ্মসমাজের সংঘাত ও ভারতের তদানীন্তন সামাজিক এবং রাজনৈতিক সমস্যাগুলি । ঘরে বাইরে উপন্যাসের বিষয়বস্তু ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে নারী ও পুরুষের সম্পর্কের জটিলতা । স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের জটিলতা আরও সূক্ষ্মভাবে উঠে এসেছে তার পরবর্তী যোগাযোগ উপন্যাসেও । চতুরঙ্গ উপন্যাসটি রবীন্দ্রনাথের 'ছোটগল্পধর্মী উপন্যাস'। স্ত্রীর অসুস্থতার সুযোগে স্বামীর অন্য স্ত্রীলোকের প্রতি আসক্তি এই বিষয়টিকে উপজীব্য করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দুই বোন এবং মালঞ্চ উপন্যাসদুটি লেখেন । এর মধ্যে প্রথম উপন্যাসটি মিলনান্তক ও দ্বিতীয়টি বিয়োগান্তক । রবীন্দ্রনাথের শেষ উপন্যাস চার অধ্যায় সমসাময়িক বিপ্লবী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে একটি বিয়োগান্তক প্রেমের উপন্যাস ।



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস অবলম্বনে কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে । এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য সত্যজিৎ রায়ের ঘরে বাইরে এবং ঋতুপর্ণ ঘোষের চোখের বালি ।




রবীন্দ্রণাথ ঠাকুর চিত্রকলা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায় সত্তর বছর বয়সে নিয়মিত ছবি আকা শুরু করেন । চিত্রাঙ্কনে কোনো প্রথাগত শিক্ষা তার ছিল না । প্রথমদিকে তিনি লেখার হিজিবিজি কাটাকুটিগুলিকে একটি চেহারা দেওয়ার চেষ্টা করতেন । এই প্রচেষ্টা থেকেই তার ছবি আকার সূত্রপাত ঘটে ।

১৯২৮ সাল থেকে ১৯৩৯ সাল পযন্ত কালপরিধিতে অঙ্কিত তার স্কেচ এবং ছবির সংখ্যা আড়াই হাজারের ওপরে যার ১৫৭৪টি শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত রয়েছে । দক্ষিণ ফ্রান্সের শিল্পীদের উৎসাহে ১৯২৬ সালে তার প্রথম চিত্র প্রদর্শনী হয় প্যারিসের পিগাল আর্ট গ্যালারিতে ।

এরপর সমগ্র ইউরোপেই কবির একাধিক চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় । ছবিতে রং এবং রেখার সাহায্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সংকেতের ব্যবহার করতেন । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রাচ্য চিত্রকলার পুনরুত্থানে আগ্রহী হলেও তার নিজের ছবিতে আধুনিক বিমূর্তধর্মিতাই বেশি প্রস্ফুটিত হয়েছে ।

তিনি মূলত কালি-কলমে আকা স্কেচ, জলরং এবং দেশজ রঙের ব্যবহার করে ছবি আঁকতেন । তার ছবিতে দেখা যায় মানুষের মুখের স্কেচ, অনির্ণেয় প্রাণীর আদল, নিসর্গদৃশ্য, ফুল, পাখি ইত্যাদি । তিনি নিজের প্রতিকৃতিও একেছেন । নন্দনতাত্ত্বিক এবং বর্ণ পরিকল্পনার দিক থেকে তার চিত্রকলা বেশ অদ্ভুত ধরণেরই বলে মনে হয় ।

তবে তিনি একাধিক অঙ্কন শৈলী রপ্ত করেছিলেন । তারমধ্যে কয়েকটি শৈলী হল নিউ আয়ারল্যান্ডের হস্তশিল্প কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশ পশ্চিম উপকূলের হাইদা খোদাইশিল্প ও ম্যাক্স পেকস্টাইনের কাঠখোদাই শিল্প ।





কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্ব ভ্রমন

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোট বারো বার বিশ্ব ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন । ১৮৭৮ সাল থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে তিনি পাঁচটি মহাদেশের ত্রিশটিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেছেন ।

প্রথম জীবনে দুই বার ১৮৭৮ সালে ও ১৮৯০ সালে তিনি ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন । তিনি ১৯১২ সালে ব্যক্তিগত চিকিৎসার জন্য তৃতীয়বার ইংল্যান্ডে গিয়ে ইয়েটস ও আরো কয়েকজন ইংরেজ কবি এবং বুদ্ধিজীবীদের কাছে সদ্যরচিত গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ পাঠ করে শোনান । কবিতাগুলি শুনে তারাও মুগ্ধ হয়েছিলেন । ইয়েটস স্বয়ং উক্ত কাব্যের ইংরেজি অনুবাদের ভূমিকাটি লিখে দিয়েছিলেন । এই ভ্রমণের সময়েই দীনবন্ধু চার্লস ফ্রিয়ার অ্যান্ড্রুজের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় ঘটে ।



১৯১৩ সালে সুইডিশ অ্যাকাডেমি তাকে নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত করে । ১৯১৬ সাল ও ১৯১৭ সালে জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাম্রাজ্যবাদ ও উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে কতকগুলি বক্তৃতা দেয় । এই বক্তৃতাগুলি সংকলিত হয় তার ন্যাশনালিজম ১৯১৭ সালের গ্রন্থে । তয় জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের বিরূপ মতামত উক্ত দুই দেশেই সেই সফরকালে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল ।



তিনি ১৯২০ সাল থেক ২১ সাল পযন্ত আবার ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান । এই সফরের সময় পাশ্চাত্য দেশগুলিতে তিনি সংবর্ধিত হয়েছিলেন । ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ যান চীন সফরে । এরপর চীন থেকে জাপানে গিয়ে সেখানেও জাতীয়তাবাদবিরোধী বক্তৃতা দেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।



১৯২৪ সালের শেষের দিকে পেরু সরকারের আমন্ত্রণে সেদেশে যাওয়ার পথে আর্জেন্টিনায় অসুস্থ হয়ে পড়েন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরে ভিক্টোরিয়া ও কাম্পোর আতিথ্যে তিন মাস কাটান তিনি । স্বাস্থ্যের কারণে পেরু ভ্রমণ তিনি স্থগিত করে দেন । পরে পেরু এবং মেক্সিকো উভয় দেশের সরকারই বিশ্বভারতীকে ১,০০,০০০ মার্কিন ডলার অর্থসাহায্য প্রদান করেছিল । ১৯২৬ সালে বেনিতো মুসোলিনির আমন্ত্রণে ইতালি সফরে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।

প্রথমে মুসোলিনির আতিথেয়তায় মুগ্ধ হলেও পরে লোকমুখে তার স্বৈরাচারের কথা জানতে পেরে মুসোলিনির কাজকর্মের সমালোচনা করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । এর ফলে উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ছেদ পড়ে । এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গ্রিস, তুরস্ক ও মিশর ভ্রমণ করে ভারতে ফিরে আসেন ।

১৯২৭ সালে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়সহ চার সঙ্গীকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গিয়েছিলেন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সফরে । এই সময় তিনি ভ্রমণ করেন বালি, জাভা, কুয়ালালামপুর, মালাক্কা, পেনাং, সিয়াম এবং সিঙ্গাপুর ।

১৯৩০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শেষবার ইংল্যান্ডে যান অক্সফোর্ডে হিবার্ট বক্তৃতা দেওয়ার জন্য । এরপর তিনি ভ্রমণ করেন ফ্রান্স, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও সোভিয়েত রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । ১৯৩২ সালে ইরাক ও পারস্য ভ্রমণে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । তারপর ১৯৩৪ সালে সিংহলে যান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । এটাই ছিল তার সর্বশেষ বৈদেশ সফর ।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে সকল বইতে তার বিদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতাগুলি লিপিবদ্ধ করে রাখেন সেগুলি হলঃ য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র, য়ুরোপ যাত্রীর ডায়ারি, জাপান যাত্রী,পশ্চিম যাত্রীর ডায়ারি এবং জাভা যাত্রীর পত্র, রাশিয়ার চিঠি, পারস্যে, ও পথের সঞ্চয় ।

ব্যাপক ভাবে বিশ্বভ্রমণ করার কারন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সমসাময়িক অরি বের্গস, আলবার্ট আইনস্টাইন, রবার্ট ফ্রস্ট, টমাস মান, জর্জ বার্নার্ড শ, এইচ জি ওয়েলস, রোম্যা রোলা প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছিলেন ।



জীবনের একেবারে শেষপর্বে পারস্য, ইরাক এবং সিংহল ভ্রমণের সময় মানুষের পারস্পরিক ভেদাভেদ ও জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে তার বিতৃষ্ণা আরও তীব্র হয়েছিল মাত্র । অন্যদিকে বিশ্বপরিক্রমার ফলে ভারতের বাইরে নিজের রচনাকে পরিচিত করে তোলার এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে রাজনৈতিক মতবিনিময়ের সুযোগও পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।



তথ্যসূত্রঃ

সংক্ষিপ্ত রবীন্দ্র-বর্ষপঞ্জি রবীন্দ্রজীবনকথা,

সর্বজনের রবীন্দ্রনাথ, অধ্যাপক শুভঙ্কর চক্রবর্তী সম্পাদিত,

বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস, চতুর্থ খণ্ড, সুকুমার সেন, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা,

বঙ্গসাহিত্যাভিধান, তৃতীয় খণ্ড, হংসনারায়ণ ভট্টাচার্য, ফার্মা কেএলএম প্রাঃ লিঃ, কলকাতা,

"শান্তিনিকেতন", প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, ভারতকোষ, পঞ্চম খণ্ড,

কৃতজ্ঞতঃ বাংলা উইকিপিডিয়া

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:১৭

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: কিছু ব্যাপার জানা গেলো :-)

০৯ ই মে, ২০১৫ রাত ১:১৭

কালের সময় বলেছেন: কষ্ট করে জানার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।

২| ০৯ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩০

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপনার পোস্টের তথ্যসূত্র অনুগ্রহ করে উল্লেখ্য করে দিন। ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখা যাচ্ছে, আপনার লেখাটির সাথে উইকিপিডিয়ার অনেক তথ্য হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। এমন ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে তথ্যঋণ পোস্টেই উল্লেখ্য করে দিতে হবে।

ধন্যবাদ। শুভ ব্লগিং!

০৯ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭

কালের সময় বলেছেন: বিদুৎ চলে যাওয়ায় তখন তথ্যগুলো দিতে পারি নাই ।
ধন্যবাদ বিষয়টি অবগতি করিয়ে দেওয়ার জন্য ।
দিয়ে দিছি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.